বাংলা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বাংলা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০২২

‘গুরু’ নাটকের ঘটনাস্থলগুলি উল্লেখ করে কোন্ ঘটনাটিকে তােমার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বলে মনে হয়েছে তা লেখাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer গুরু নাটকের ঘটনাস্থলগুলি উল্লেখ করে কোন্ ঘটনাটিকে তােমার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বলে মনে হয়েছে তা লেখাে guru natoker ghotonastholguli ullekh kore kon ghotonatike tomar sobcheye akorshonio bole mone hoyeche ta lekho


উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ‘গুরু’ নাটকের প্রথম ঘটনাস্থল অচলায়তন । এটি নাটকের প্রথম দৃশ্য। এই দৃশ্যে অনেক ঘটনা ঘটে । গুরু আসছেন সে বার্তা যেমন প্রচারিত , তেমনি তাঁর শুভ আগমন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে । সুভদ্র আয়তনের উত্তরদিকের জানালা খুলে বাইরের দৃশ্য দেখায় সে নাকি মহাপাপ নাকি করেছে , তার প্রায়শ্চিত্তের বিধান বড়ােই ভয়ানক ও প্রাণঘাতী । ওই ঘটনাকে ঘিরে আচার্যের অন্তরের পরিবর্তনের পরিচয় , পঞকের মুক্ত ও উদার প্রাণের প্রকাশ , মহাপক ও উপাধ্যায়ের আচার্য -বিরােধিতা , পরিশেষে পঞক ও আচার্যের দর্ভকপল্লিতে নির্বাসন , মহাপঞকের আচার্যের আসনে উপবেশন ইত্যাদি ঘটনার সন্নিবেশ । দ্বিতীয় ঘটনার স্থল পাহাড় মাঠ । যুনকদের মাঝে পঞ্চক , দাদাঠাকুরের উপস্থিতি , যুনকদের নিয়ে দাদাঠাকুরের স্থবিরপত্তনের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা । তৃতীয় ঘটনার স্থল দর্ভকপল্লি । দৰ্ভকদের মাঝে আচার্য ও পঞ্চক । দাদাঠাকুর দর্ভকদের গোঁসাই হয়ে হাজির । অচলায়তন ভাঙার জন্য যুদ্ধযাত্রা । চতুর্থ ঘটনা স্থল অচলায়তন । অচলায়তনের প্রাচীর ভেঙে ধূলিসাৎ । গুরুরূপী দাদাঠাকুর , যুনক ও দর্ভকদের উপস্থিতি । মহাপঞক বাদে আর সকলের তাঁকে গুরু বলে মেনে নেওয়া ।

[          ] এই ঘটনাগুলির মধ্যে শেষ দৃশ্যে যুনক ও দর্ভকদের নিয়ে যােদ্ধার বেশে দাদাঠাকুরের অচলায়তনে প্রবেশ ও ওই ঘটনাক্রমে নাটকের সমাপ্তির ঘটনা আমার কাছে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় । অচলায়তনের প্রাচীর ভেঙে পড়ায় ধ্বংসস্তুপের মধ্যে অচলায়তনের স্থবিরতার অবসান , অন্ধত্ব-গোঁড়ামি- আচার অনুষ্ঠানসর্বস্ব জীবনাচরণের সমাপ্তি, অপরদিকে নবীন প্রাণের নতুন ভাবনা - চেতনার প্রতিষ্ঠা, সরস মুক্তপ্রাণের জয়যাত্রা — যা নাটকের মর্মার্থ , তার প্রকাশ অপূর্ব নাটকীয়ভাবে অর্থবহ হয়েছে । এই কারণে ঘটনাটি আমার কাছে আকর্ষণীয় ।
 


রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২২

“অন্ধ গোঁড়ামির বিরােধিতা ও নতুন ভাবনাকে স্বাগত জানানাে তার লেখা বৈশিষ্ট্য ।” উদ্ধৃতিটির আলােকে ‘গুরু’ নাটকের বিষয়বস্তু সংক্ষেপে আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer অন্ধ গোঁড়ামির বিরােধিতা ও নতুন ভাবনাকে স্বাগত জানানাে তার লেখা বৈশিষ্ট্য উদ্ধৃতিটির  আলােকে গুরু নাটকের বিষয়বস্তু সংক্ষেপে আলােচনা করাে guru natoker bishoyabostu songkhepe alochona koro

উত্তর : রবীন্দ্র-ভাবনার বৈশিষ্ট্যই হল অন্ধ গোঁড়ামির বিরােধিতা এবং নবতন চিন্তাভাবনাকে স্বাগত জানানাে । একাধিক রবীন্দ্র - নাটকের কেন্দ্রীয় ভাববস্তু হল তাই । ‘ গুরু ’ নাটকে রবীন্দ্রনাথের এই ভাবনা আরও স্পষ্টাকারে প্রকাশিত । তাঁর ‘গুরু’ নাটকের বিষয়বস্তু পর্যালােচনা করলে এই সত্যতা পরিস্ফুট হয়ে উঠবে । 

[          ] স্থবিরপত্তনের শিক্ষায়তনটি অচলায়তন । অচল বা স্থবিরতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানটিতে আলাে ও বাতাস ঢােকার সব পথ বন্ধ । বৃহত্তর জগৎ ও জীবন থেকে পুরােপুরি বিচ্ছিন্ন । আয়তনিকরা যুক্তিহীন, প্রাণহীন অভ্যাস ও গোঁড়ামির দাস । তন্ত্রমন্ত্রের অন্ধ অনুগত । নানা বিধিনিষেধের শৃঙ্খলে আষ্টেপৃষ্ঠে আবদ্ধ । অন্ধতা , অজ্ঞানতা ও সংকীর্ণতার ঘেরাটোপে ঢাকা । নানা আচার - অনুষ্ঠান, প্রথা ও পুথির চাপে তারা পিষ্ট । নিয়ম ও রীতির সামান্যতম লঙ্ন হলেই প্রায়শ্চিত্তের জাঁতাকলে পিষ্ট হতে হয় । এভাবে রক্ষণশীলতার গণ্ডিতে আবদ্ধ হয়ে প্রাণহীন স্থবিরে পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি । 




[         ] ‘ গুরু ’ নাটকে এরই বিরুদ্ধে নবীন প্রাণের নব চেতনা ও নতুন ভাবনার অভিঘাতে নাটকে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি–অন্ধ গোঁড়ামির বিরুদ্ধে নতুন ভাবনার ঘােরতর সংঘাত । পঞ্চক হল নবীন প্রাণের প্রতীক , নতুনের অগ্রদূত । সে যেন মূর্তিমান বিদ্রোহ । সে যেন মুক্তপ্রাণের স্পন্দন । ‘গুরু’- র উপস্থিতিতে অচলায়তনের আচার - অনুষ্ঠান সর্বস্ব অন্ধত্ব ও গোঁড়ামির প্রাচীর যে ভেঙে পড়বে , পঞকই যেন তার প্রস্তুতিপর্ব সেরে রাখে তার নতুন প্রাণের নবতন ভাবনা ও চেতনার প্রবাহে । অন্ধত্ব গোঁড়ামির ধ্বংসস্তুপের ওপর নতুন ভাবনা ও চেতনার যে মন্দির গড়ে উঠবে , পঞ্চকই হবে তার ঋত্বিক ।
 


শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২২

“ আমি তার মাথায় চড়ি ” —কে , কার মাথায় চড়ে ? পঙক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমি তার মাথায় চড়ি কে কার মাথায় চড়ে পঙক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে ami tar mathay chori ke kar mathay chore ponktitir tatporjo bankha koro


উত্তর : ক্ষুধার্ত হতদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষটি তার রাগের মাথায় চড়ে । 

[        ] ‘আমার’ মানুষটি একটি হতদরিদ্র শ্রমজীবী লোক । ‘দিন খাটে দিন খায়’ এমনি আর্থিক অবস্থা সংসারের । সংসারের এই দুঃখকষ্ট , অভাব -অনটন মুখ বুজে সয়ে নেয় । ফলাও করে বলে না । প্রতিবাদে সােচ্চার হয় না । কারণ বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে তার ধারণা এভাবে দুঃখকষ্টের কথা বলে দুঃখের প্রতিকার হয় না । তার বক্তব্য ‘কী হবে দুঃখ করে ?’ আর সেজন্য যেটুকু উপায় করে তাতেই খুশি থাকে । সাধারণ ভাতকাপড়ে দিন চললে তাতেই সন্তুষ্ট । ধারদেনা করে অসুখ -বিসুখ সামাল দেয় । অবশ্য গঞ্জিকার কলকেতে টান দেয় রাত্রিতে ।কখনাে -সখনাে বাড়ি ফেরে মাঝরাতে । তখন ব্যঞ্জনহীন ঠান্ডা ভাতে নুনের সংস্থান না থাকায় ভাত বিস্বাদ হয় । একদিকে ভয়াবহ দারিদ্র্যের কশাঘাত । তার ওপর ক্ষুধার্ত পেটে বিস্বাদ ভাত গলা দিয়ে না নামায় রাগ মাথায় চড়ে । রাগ চড়ার কারণ হল এই ।


[        ] রাগ যখন সংযমের সীমা টপকে যায়, তখন দিকবিদিক জ্ঞান থাকে না । তখন মানুষের জ্ঞান, বােধবুদ্ধি, ন্যায় - অন্যায়ের বিচারবিবেচনা সব লােপ পায় । মনুষ্যত্ব লােপ পেয়ে পশুত্ব প্রাধান্য পায় । হিতাহিত বােধের অস্তিত্বটুকুও থাকে না । রাগের থেকে বড়াে হয়ে দাঁড়ায় ক্রোধােন্মত্ত মানুষটির মনুষ্যত্বহীন পশুত্ব । হিতাহিত জ্ঞানহীন অন্ধ ক্রোধােন্মত্ততা । তা যেন রাগের মাথার ওপর ক্রোধােন্মত্ত মানুষটির চড়ে বসা । তার ফলও হাতে হাতে মেলে । বাপব্যাটায় বচসা হয়, ভাইয়ে ভাইয়ে কলহ বাধে । তাতে পাড়ার লােকের ঘুম ছুটিয়ে সারা পাড়া যেন মাথায় করে ।




শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০২২

কবি জয় গােস্বামী ‘নুন’ কবিতায় সমাজের শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার যে ছবি এঁকেছেন , তা বর্ণনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer কবি জয় গােস্বামী নুন কবিতায় সমাজের শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার যে ছবি এঁকেছেন তা বর্ণনা করাে kobi joy goswami nun kobitai somajer shromjibi nimnobitto manusher jibonjatrar je chobi akechen ta bornona koro


উত্তর : কবি জয় গােস্বামী ‘নুন' কবিতায় সমাজের অতিসাধারণ শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার ছবি এঁকেছেন । তারা শ্রমজীবী , ‘দিন আনে দিন খায়’ এমনি হতদরিদ্র বটে , কিন্তু তারা  অল্পে খুশি । তারা জানে দুঃখ করে দুঃখকষ্টের সুরাহা হয় না । দুঃখ কার কাছেই বা করবে ? দুঃখ জানিয়ে দুঃখের সুরাহা হবে এমন দরদি সমাজ -সংসার এদেশে নেই । কাজেই সাধারণ ভাতকাপড়ে তাদের দিন চলে । তাদের দিন চলে অসুখেবিসুখে ধারদেনা করে । কিন্তু দুঃখদারিদ্র, অসুখবিসুখ , দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা সবকিছু ভুলে থাকার জন্য রাতে দু-ভাই মিলে গাঁজার কলকেতে টান দেয় । অভাবের সংসারে সবদিন বাজার করা হয় না । যেদিন হয় সেদিন বেহিসেবিপনা মাত্রা ছাড়িয়ে যায় । কারণ গরিবের সংসারে অপ্রয়ােজনীয় গােলাপের চারা কিনে বাড়ি ফেরে  গােলাপচারা পুঁতে বাগান বানাবে , তেমন জায়গাটুকু তাে নেই । কষ্ট ভােলার জন্য তারা যথারীতি গাঁজাতে টান দেয় । নেশাভাঙেই তাদের আনন্দ তাতেই তারা খুশি । এভাবে হেসেখেলে কষ্ট করে তাদের দিন চলে যায় । মাঝে মাঝে অভাব - অনটনে সংসার অচল হয়ে যায় । সেদিন মাঝরাতে তারা বাড়ি ফেরে । ভাত তখন ঠান্ডা । সামান্য নুনের জোগাড়টুকুও হয়নি । ফলে খেতে বসে মাথায় রাগ চড়ে । রাগ চড়ে গিয়ে এমন হয় যেন রাগের চড়ে বসে । ফলে বাপব্যাটায় কিংবা দু-ভাইয়ে মিলে মারামারি ও চেঁচামেচি  করে সারাপাড়া মাথায় করে । অবশ্য তাদের রাগারাগি ও আত্মকলহে কাদের কী এসে যায় ? তারা খেটে -খাওয়া অতি নগণ্য মানুষ । তাদের চাওয়া বলতে ‘আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক ।’ সমাজের কাছে , রাষ্ট্ৰচালকদের কাছে এটুকুই তাদের আর্জি ।






বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২২

দর্শক টানার দিক থেকে পল্লাইওদের মুরগির খাঁচায় বন্দি দেবদূতের চেয়ে শহরে আসা একটি মেয়ের ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীর আকর্ষণ বেশি কেন , তুলনামূলক আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer দর্শক টানার দিক থেকে পল্লাইওদের মুরগির খাঁচায় বন্দি দেবদূতের চেয়ে শহরে আসা একটি মেয়ের ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীর আকর্ষণ বেশি কেন  তুলনামূলক আলােচনা করাে dorshok tanar dik theke pollaioder murgir khanchai bondi debduter cheye shohore asa akti meyer bhraman prodoshonir akorshon beshi keno tulonamulok alochona koro

উত্তর : পেলাইওদের মুরগির খাঁচায় বন্দি দেবদূত আর শহরে আসা ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীর ভাগ্যবিড়ম্বিত মেয়েটির মাকড়সা -আকৃতি দুই-ই অস্বাভাবিক ও কৌতূহল - উদ্দীপক ঘটনা ,যা দর্শক আকর্ষণের সহায়ক । দুই- ই দর্শক আকর্ষণ করেছে , কিন্তু শেষাবধি দেবদূত হয়ে পড়েছে দর্শকশূন্য । কারণ —


              এক । দেবদূত দর্শনির চেয়ে মাকড়সারূপী মেয়েটির দশনি বাবদ পয়সা কম । 

              

              দুই । দেবদূত নিয়ে দর্শকের প্রশ্ন করার অবকাশ নেই , কিন্তু মেয়েটিকে নিয়ে দর্শক তার খুশিমতাে প্রশ্ন করার সুযােগ পেয়েছে । 

              

              তিন । মুরগির খাঁচার তারের জালের বাইরে থেকে দর্শক দেবদূতকে দেখে তার কৌতূহল মিটিয়েছে , কিন্তু মাকড়সারূপী মেয়েটিকে খুঁটিয়ে দেখার সুযােগ পেয়েছে । 

              

              চার । দেবদূত প্রাসঙ্গিক সত্য -মিথ্যা যাচাইয়ের আদৌ সুযােগ নেই , কিন্তু তা আছে মেয়েটির ব্যাপারে । 

              

              পাঁচ । করুণ কণ্ঠে মেয়েটি তার বিড়ম্বিত মাকড়সায় পরিণত হওয়ার কাহিনি প্রকাশ করে দর্শককে বিমােহিত করে । অনেকে তার প্রতি দয়ায়,করুণায় তার মুখে মাংসের বড়া ছুড়ে দেয় । দেবদূতের ক্ষেত্রে সে সুযােগ আদৌ নেই । সে কেবল দর্শকের দিকে প্রাচীন চোখ মেলে তাকিয়ে থাকে নীরবে । 

              

              ছয় । মেয়েটির মাকড়সায় বদলে যাওয়া দৃশ্যে এতই মানবিক সত্য আর এমন ভয়ংকর শিক্ষা আছে যা সহজে দেবদূতের প্রদর্শনীকে নস্যাৎ করে দিতে পারে , যে দেবদূত মর্তবাসীর দিকে নাক সিঁটকে তাকায় । তা ছাড়া দেবদূতের ওপর আরােপিত আলৌকিকত্ব এমন কিছু জম্পেশ ছিল না , যা ভক্তিনভ্রো দর্শক ধরে রাখতে পারে । ফলে মাকড়সা মেয়েটির জনপ্রিয়তা ও দর্শকটানার ক্ষেত্রে দেবদূত পিছু হটে পড়ে । দেবদূতের মানসম্ভ্রমের খ্যাতি ধুলােয় লুটিয়ে যায় ।






বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০২২

‘রাগ চড়ে মাথায় আমার , আমি তার মাথায় চড়ি’ - ‘আমার’ বলতে কার ? তার মাথায় রাগ চড়ে কেন ? ‘ আমি তার মাথায় চড়ি ’ - এর তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer রাগ চড়ে মাথায় আমার আমি তার মাথায় চড়ি আমার বলতে কার তার মাথায় রাগ চড়ে কেন আমি তার মাথায় চড়ি এর তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে rag chore mathay amar ami tar chori amar bolte kar tar mathay chori amar bolte kar tar mathay rag chore keno ami tar mathay chori ar tatporjo bishleshon koro


উত্তর : আলােচ্য উদ্ধৃতিটি কবি জয় গােস্বামীর লেখা ‘নুন’ কবিতার অংশবিশেষ । এখানে ‘আমার’ বলতে  ‘নুন’ কবিতার কথক । যার জবানিতে বিষয় কথিত । 

[        ] ‘আমার’ মানুষটি একটি হতদরিদ্র শ্রমজীবী লােক । ‘দিন খাটে দিন খায়’ এমনি আর্থিক অবস্থা সংসারের । সংসারের এই দুঃখকষ্ট , অভাব -অনটন মুখ বুজে সয়ে নেয় । ফলাও করে বলে না । প্রতিবাদে সােচ্চার হয় না । কারণ বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে তার ধারণা এভাবে দুঃখকষ্টের কথা বলে দুঃখের প্রতিকার হয় না । তার বক্তব্য ‘কী হবে দুঃখ করে ?’ আর সেজন্য যেটুকু উপায় করে তাতেই খুশি থাকে । সাধারণ ভাতকাপড়ে দিন চললে তাতেই সন্তুষ্ট । ধারদেনা করে অসুখ - বিসুখ সামাল দেয় । অবশ্য গঞ্জিকার কলকেতে টান দেয় রাত্রিতে । কখনাে -সখনাে বাড়ি ফেরে মাঝরাতে । তখন ব্যঞ্জনহীন ঠান্ডা ভাতে নুনের সংস্থান না থাকায় ভাত বিস্বাদ হয় । একদিকে ভয়াবহ দারিদ্র্যের কশাঘাত । তার ওপর ক্ষুধার্ত পেটে বিস্বাদ ভাত গলা দিয়ে না নামায় রাগ মাথায় চড়ে । রাগ চড়ার কারণ হল এই ।


[          ]  রাগ যখন সংযমের সীমা টপকে যায় , তখন দিকবিদিক জ্ঞান থাকে না । তখন মানুষের জ্ঞান, বােধবুদ্ধি , ন্যায়-অন্যায়ের বিচারবিবেচনা সব লােপ পায় । মনুষ্যত্ব লােপ পেয়ে পশুত্ব প্রাধান্য পায় । হিতাহিত বােধের অস্তিত্বটুকুও থাকে না । রাগের থেকে বড়াে হয়ে দাঁড়ায় ক্রোধােন্মত্ত মানুষটির মনুষ্যত্বহীন পশুত্ব । হিতাহিত জ্ঞানহীন অন্ধ ক্রোধােন্মত্ততা । তা যেন রাগের মাথার ওপর ক্রোধােন্মত্ত মানুষটির চড়ে বসা । তার ফলও হাতেহাতে মেলে । বাপব্যাটায় বচসা হয় , ভাইয়ে ভাইয়ে কলহ বাধে । তাতে পাড়ার লােকের ঘুম ছুটিয়ে সারা পাড়া যেন মাথায় করে ।




মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২

‘আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাত কাপড়ে ।’ – ‘সাধারণ ভাতকাপড়’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে ? এই দিন চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বক্তা কী বােঝাতে চেয়েছেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাত কাপড়ে সাধারণ ভাতকাপড় বলতে কী বােঝানাে হয়েছে এই দিন চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বক্তা কী বােঝাতে চেয়েছেন amader din chole jai sadharon vat kapore sadharon vatkapor bolte ki bojhano hoyeche ai din chole jaoyar modhey diye bokta ki bojhate cheyechen

উত্তর : ‘সাধারণ ভাতকাপড় ’কথার তাৎপর্য :
‘সাধারণ ভাতকাপড় ’ - এর আক্ষরিক অর্থ মােটা চালের সাধারণ ভাতের সঙ্গে মাঠ -ঘাট থেকে কুড়িয়ে আনা শাক - পাতার একটু তরকারি । গরিবের আর্থিক সামর্থ্যে কেনার উপযােগী মােটা সুতাের সস্তা কাপড় । তা ছাড়া, ‘সাধারণ ভাতকাপড়’ কথার দ্বারা কবি বােঝাতে চেয়েছেন নিম্ন আয়ের হতদরিদ্র মানুষের সাধারণ জীবনধারণ— নিতান্ত খেয়ে -পরে বেঁচে থাকা । 

‘ দিন চলে যায় ’ কথাৱ অর্থ : এই দিন চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বক্তা বােঝাতে চেয়েছেন তাদের সামান্য আয়ে ভালাে খাওয়া - পরার স্বপ্ন দেখা দিবাস্বপ্নতুল্য অবাস্তব । কাজেই সাধারণ ভাতকাপড়েই দিন চালাতে হয় তাদের । দৈনন্দিন জীবনযাপন ব্যাপারে তাদের এরকম বােধ ও ভাবনাচিন্তা । সম্পদে বৈভবে অভিজাত জীবনযাপনের স্বপ্নতারা দেখে না। বিলাসিতা তাদের কাছে দুঃস্বপ্ন । সাধারণ বাঙালি জীবনের ভাবনাচিন্তা হল খেয়ে পরে জীবনটা চলে গেলেই হল । যেজন্য ঈশ্বরী পাটনীর কামনা ছিল , ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে -ভাতে ।’ এ প্রত্যাশ্যা সাধারণ বাঙালির । তাদের আবহমানকালের মনস্কামনা । তাদের সংসারে দুঃখদারিদ্র্য থাকলেও তারা অকপটে ও অক্লেশে বলতে পারে আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাতকাপড়ে ।






সোমবার, ২২ আগস্ট, ২০২২

‘কিন্তু পুঁতবাে কোথায় ? ফুল কি হবেই তাতে ?’ —উদ্ধৃতির উৎস লেখাে । প্রসঙ্গ উল্লেখসহ উদ্ধৃতির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer কিন্তু পুঁতবাে কোথায় ফুল কি হবেই তাতে উদ্ধৃতির উৎস লেখাে প্রসঙ্গ উল্লেখসহ উদ্ধৃতির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও kintu putbo kothay ful ki hobei tate udhritir utsho lekho proshongo udhritir tatporjo bujhiye dao


উত্তর : আলােচ্য উদ্ধৃতিটি কবি জয় গােস্বামীর লেখা ‘নুন’ কবিতা থেকে গৃহীত । উদ্ধৃত পঙক্তিটি কবিতার চতুর্থ স্তবকের প্রথম চরণ । 


[      ]  কবিতার কথক হল জনৈক শ্রমজীবী নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ । এদেশীয় সমাজে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের অভাব - অনটন নিত্যসঙ্গী । তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় । তাদের চাওয়াপাওয়া ও প্রত্যাশা অতি সামান্য । তারা অল্পতে খুশি । সাধারণ ভাতকাপড়ে দিন চালিয়ে নেয় । অসুখেবিসুখে ধারদেনা করে দিন চলে । দুঃখদারিদ্র্যের কষ্ট - যন্ত্রণা ভােলার জন্য রাত্রিতে দু-ভাই মিলে গাঁজার কলকেতে টান দেয় । সব দিন নির্দিষ্ট আয়ের নিশ্চয়তা নেই । সেজন্য যেদিন আয় হয় না সেদিন বাজার হয় না । আবার যেদিন হাতে বেশি কিছু টাকাপয়সা আসে , সেদিন বেহিসেবিপনা ঘাড়ে ভর করায় বাজার মাত্রা ছাড়িয়ে যায় । শখ বা শৌখিনতার বশে বাড়ি ফেরার পথে গােলাপচারা কিনে ফেলে । 



[        ] গােলাপের চারা পুঁতে বাগান বানানাের শখ বড়ােলােকের শৌখিন বিলাস । সেজন্য প্রশস্ত জায়গা চাই । চারা লাগিয়ে নিয়মিত পরিচর্যার জন্য লােক ও সময় চাই । সেজন্য অর্থব্যয়ের দিকও আছে । গরিবের কুঁড়েটুকুই হয়তাে সম্বল । গােলাপ লাগানাের জন্য প্রয়ােজনীয় জায়গা নেই । সেজন্য গােলাপচারা কিনেও তার সংশয় দেখা যায় । ‘কিন্তু পুঁতবাে কোথায় ?’ হয়তাে পোতার মতাে একটু জায়গার ব্যবস্থা হলেও তার পরিচর্যা করে বাঁচিয়ে তুলে তাতে ফুল ফোটানাে কি সম্ভব হবে ? তা নিয়েও তার মনে সংশয় । কিন্তু শখ , শৌখিনতা সৌন্দর্যপ্রিয় মানুষ মাত্রেরই থাকে । অর্থবানেরা তা সার্থক করে তােলে । তার শখ ও বাসনাকে চরিতার্থ করতে পারে না দারিদ্র্যের রূঢ় বাস্তবতার কারণে । 





রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২

‘ কী হবে দুঃখ করে ?’ — কী নিয়ে দুঃখ করার কথা বলা হয়েছে ? কবির এ মন্তব্যের কারণ কী ? তবুও তাদের খেতে বসে রাগ চড়ে যায় কেন ?


একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer কী হবে দুঃখ করে কী নিয়ে দুঃখ করার কথা বলা হয়েছে কবির এ মন্তব্যের কারণ কী তবুও তাদের খেতে বসে রাগ চড়ে যায় কেন ki hobe dukho kore ki niye dukho korar kotha bola hoyeche kobir a montobbor karon ki tobuo tader khete bose rag jai keno


উত্তর : অশেষ দুঃখকষ্ট : ‘দিন আনে দিন খায়’ এমন অল্প আয়ের মানুষের জীবন চলে সাধারণ ভাতকাপড়ে । কানাকড়িও সঞ্চয় না থাকায় অসুখ -বিসুখে দিন চলে ধারদেনা করে । ওই হতদরিদ্র মানুষের জীবনধারণের অশেষ দুঃখকষ্ট । এখানে সেই দুঃখের কথা বলা হয়েছে ।
মন্তব্যের কারণ : দুঃখ নিয়ে মন্তব্যের কারণ হল  দুঃখ প্রকাশ করে দুঃখী মানুষ যদি দুঃখের সুরাহার উপযােগী সহানুভূতি , মমত্ব ও সাহায্য পায় , তাহলে তার দুঃখ প্রকাশের সার্থকতা । যে সমাজে সে সাহায্য - সহযােগিতা , মমত্ব ও সহানুভূতি মেলে না, সে সমাজে দারিদ্র্যপীড়িত দুঃখী মানুষেরা জানে দুঃখ প্রকাশ করে লাভ নেই । তাই ভুক্তভােগী হতদরিদ্র মানুষের উক্তি ‘কী হবে দুঃখ করে ?’ 


খেতে বসে রাগ চড়ার কারণ : যেদিন খাটুনে মানুষের কাজ থাকে না , সেদিন হাতশূন্য থাকায় চাল -ডাল কেনা হয় না, হাঁড়ি চড়ে না । হতাশায় দীর্ণ মানুষটা ঘরে ফেরে মাঝরাতে । বাসি শুকনাে ভাত খেতে বসে সামান্য নুনটুকুও মেলে না । বিস্বাদভরা ভাত মুখে তুলেই দুঃখ প্রকাশ না করার যে সংযম , তা হারিয়ে ফেলে রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে । তারই ভয়াবহ প্রকাশ মাঝরাতে বাপ - ব্যাটায়, ভাইয়ে ভাইয়ে রাগারাগি , চেঁচামেচি করে পাড়া মাথায় করা । এজন্য বলা হয়েছে ‘তবুও ....রাগ চড়ে ।’
  


শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২

“আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক ।” —কে বলেছে ? এ দাবি কার কাছে ? কেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক কে বলেছে এ দাবি কার কাছে কেন amader shukno vate loboner babostha hok ke boleche a dabi kar kache keno

উত্তর : প্রখ্যাত কবি জয় গােস্বামীর ‘নুন’ কবিতার কথক শ্রমজীবী হতদরিদ্র মানুষটি । ‘ আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক ।’ এই দাবি সেই কর্তাব্যক্তিদের কাছে , সামান্য নুনটুকু জোগান দেওয়ার দায়দায়িত্ব যাঁদের । 

ন্যায্য অধিকার দাবি : ধনতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সম্পদের অসম বণ্টনের ফলেই সমাজে ধনী ও গরিবের শ্রেণিবৈষম্য । শ্রমজীবী মানুষের শ্রমজাত সম্পদ ধনীর কুক্ষিগত হয় । শােষণ ও বঞ্চনার ফলে ধনী হয় আরও ধনী । গরিব নিঃস্ব থেকে আরও নিঃস্ব ও নিরন্ন হতে থাকে । তাদের আয়ের নিশ্চয়তা থাকে না । তাদের শ্রমের জোগানও থাকে না নিয়মিত । তাদের জীবন চলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে , ধারদেনা করে । ‘ সাধারণ ভাতকাপড়ে ’ । মাঝে মাঝে আয়ের অঙ্ক শূন্যতে থাকায় বাজার করাও হয় না । সেদিন বাড়ি ফিরতে মাঝরাত গড়িয়ে যায় । উদরপূর্তির জন্য জোটে সকালের ঠান্ডা শুকনাে ভাত । সামান্য নুনটুকুরও সংস্থান না থাকায় আলােনা ভাত মুখে বিস্বাদ ঠেকে । তখনই মাথায় রাগ চড়ে । তা নিয়ে বাপ ব্যাটায় কিংবা ভাইয়ে ভাইয়ে চেঁচামেচি শুরু হয় । চেঁচামেচিতে পাড়া মাথায় করে । ওই অপ্রিয় অসহিষ্ণুতার জন্য পরে তারা নিজেরাও ব্যথিত হয় । তাই তাদের কাতর আবেদন —নিদেনপক্ষে তাদের শুকনাে ভাতে নুনটুকুর ব্যবস্থা হোক । তাদের আর্জি এই সভ্যসমাজে , হতদরিদ্র  , মানুষের বেঁচে থাকার জন্য এই প্রশাসনিক মানবিকতাটুকু তাদের ওপর বর্ষিত হােক । দয়া নয়, করুণা নয়, এ হল ন্যায্য অধিকারের বিনীত দাবি । 

 





শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২

‘ শিক্ষার সার্কাস ’ কবিতার উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer শিক্ষার সার্কাস কবিতার উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করাে sikkhar sarkas kobitar ullekhjoggo boishistoguli alochona koro


উত্তর : মালয়ালম কবি আইয়াপ্পা পানিকরের লেখা ‘ শিক্ষার সার্কাস ’ কবিতাটি নানা বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ ।

এক - ‘তুমি’ ও ‘আমি ’ দুই ব্যক্তিবাচক সর্বনামের প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ বাচনে শিক্ষা বিষয়ক আলােচনাটি অনেকাংশে যেন সংলাপধর্মী ।

দুই - তাদের পাস করার ব্যাপারটা যেন শর্তসাপেক্ষ । ‘তুমি যদি প্রথম শ্রেণিতে পাস করাে ?/ আমি দ্বিতীয় শ্রেণিতে যেতে পারি ।’ ছ -টি পঙক্তিতে ছ -বার ‘যদি ’- র ব্যবহার শর্তসাপেক্ষ অর্থকে স্পষ্টতর করেছে ।


তিন - একটা অপ্রত্যক্ষ প্রতিযােগিতার চোরা স্রোত আছে শিক্ষার্থীদের পাস করাকে ঘিরে , এক ক্লাস থেকে আর -এক ক্লাসে ওঠার ব্যাপারে । 


চার - কবিতার প্রথমার্ধে এই শিক্ষা ব্যাপারকে ঘিরে কেমন যেন হেঁয়ালির রহস্য আলাে -আঁধারির মতাে ব্যাপ্ত , যা পাঠককে কবিতার বক্তব্য আত্মস্থ করতে কৌতূহলী ও সচেতন করে তােলে । 

পাঁচ - কবিতার ভাষায় কঠিন শব্দের ব্যবহার নেই , সাদামাঠা ,অথচ অর্থবহ । বক্তব্য ঋজু , বর্ণনা সম্পূর্ণ মেদহীন । একটি অনাবশ্যক শব্দের ব্যবহার নেই ।


ছয় - শিক্ষার চলমানতা ও অগ্রগতি কবি মাত্র দুটি পঙক্তিতে চমৎকার স্পষ্ট করে দিয়েছেন- ‘যদি সব শ্রেণি শেষ হয়ে যায়,/ আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব ।’

সাত - এদেশীয় শিক্ষা সম্পর্কে কবির তীক্ষ শ্লেষ ও ব্যঙ্গের পরিচয়  ‘ সব শিক্ষা একটি সার্কাস ’। তা ছাড়া জ্ঞানহীন , চেতনাহীন শিক্ষার স্বরূপ ফুটে উঠেছে শেষ দুই পঙক্তিতে ‘ জ্ঞান কোথায় গেল ?/ সে যেখানে গেছে , সেটা ধোকা !






বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২২

‘বাড়ির মালিকদের অবশ্য বিলাপ কোনােই কারণ ছিল না ।’ - বাড়ির মালিকদের নাম কী ? তাদের বিলাপ করার কারণ ছিল না কেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer বাড়ির মালিকদের অবশ্য বিলাপ কোনােই কারণ ছিল না বাড়ির মালিকদের নাম কী তাদের বিলাপ করার কারণ ছিল না কেন barir malikder aboshyo bilap konoi karon chilo na barir malikder nam ki tader bilap korar karon chilo na keno


উত্তর : গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের লেখা ‘বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়াে’ গল্পের বিশিষ্ট চরিত্র  পেলাইও ও তার স্ত্রী এলিসেন্দা । তাদের বাড়িতে এক বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়াের অবস্থিতিকে ঘিরে গল্পের যা কিছু ঘটনা ঘটেছিল । কাজেই ‘ বাড়ির মালিক ’ বলতে ওই বাড়ির কর্তা ও গিন্নি পেলাইও ও এলিসেন্দা । 

[         ] সেবার শহরে আসে এক মেয়ের ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী । তার টিকিটের দাম ছিল দেবদূত দেখার দর্শনীর চেয়ে কম । তা ছাড়া মাকড়সায় পরিণত হওয়া মেয়েটির সম্পর্কে যা কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেত , তাকে খুঁটিয়ে দেখা যেত, তার মেয়ে থেকে মাকড়সা বনে যাওয়া করুণ কাহিনি তার গলায় শােনা যেত । এসব কারণে পেলাইও ও এলিসেন্দার বাড়িতে দেবদূত দেখার আকর্ষণ পুরােপুরি টেনে নেয় মাকড়সা -মেয়েটি । ফলে তাদের আয়ও একেবারে শূন্যতে এসে ঠেকে । কাজেই এ নিয়ে তাদের মনস্তাপ ও বিলাপ করা স্বাভাবিক । 

[      ] কিন্তু পেলাইও ও এলিসেন্দার বিলাপের কোনাে কারণই ছিল না । দেবদূতকে দেখার দর্শনীবাবদ তারা প্রচুর টাকা কামিয়েছিল । তা দিয়ে তারা এক চকমেলানাে দোতলা বাড়ি বানিয়েছিল । বাড়ির ছিল অলিন্দ । সামনে বাগান । উচু তারের জাল দিয়ে প্রাচীরের মতাে চারদিক ঘেরা । শীতকালে সমুদ্রের কাঁকড়া ভিতরে ঢুকতে পারবে না তারই ব্যবস্থা । জানালায় লােহার গরাদ । দেবদূত আচমকা ঢুকে পড়তে না পারে তার ব্যবস্থা । পেলাইও সাধ্যপালের কাজে চিরদিনের জন্য ইস্তফা দিয়েছে । কেন - না শহরের কাছে খরগােশ পালনের জন্য ঘিঞ্জি গােলকধাধার মতাে একটা কেন্দ্র বানিয়েছে । এলিসেন্দা আর গরিবিভাবে থাকে না । কতকগুলি উচু ক্ষুরওয়ালা জুতাে কিনেছে । কয়েক প্রস্থ পােশাকও কিনেছে রামধনু রং - এর রেশমি কাপড়ে তৈরি । সবই অভিজাত বিলাসিতার নিদর্শন । 





বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০২২

“এলিসেন্দা একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললে— ” -এলিসেন্দা কী দেখেছিল ? এলিসেন্দা কেন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল ? সে কেমনভাবে উড়ে যাচ্ছিল ? এলিসেন্দা কেন তাকিয়ে তাকে দেখতে থাকে ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer এলিসেন্দা একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললে এলিসেন্দা কী দেখেছিল এলিসেন্দা কেন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল সে কেমনভাবে উড়ে যাচ্ছিল এলিসেন্দা কেন তাকিয়ে তাকে দেখতে থাকে alisenda ki dekechilo alisenda keno swastir niswas felechilo se kemonvabe ure jachilo alisenda keno takiye dekhte thake


উত্তর : এলিসেন্দা দেখেছিল দেবদূত এই প্রথম ডানা ছড়িয়ে ওড়বার চেষ্টা করছে । দেবদূত নড়বড়ে ভাবে হলেও একটু ওপরে উঠতে পারায় এলিসেন্দা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল । দেবদূত এখন শেষ বাড়িগুলির ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে কোনােরকমে সে নিজেকে ধরে রেখেছে উড়ালটায় , কোনাে মতিচ্ছন্ন জরাগ্রস্ত শকুনের ঝুঁকি ভরা ডানা ঝাপটানি দিয়ে । পিঁয়াজ কাটা সারা হয়ে যাওয়ার পরেও এলিসেন্দা দেবদূতকে তাকিয়ে দেখতেই থাকে । একসময় আর দেখা সম্ভব হয় না, কারণ দেবদূত উড়তে উড়তে চলে যায় সমুদ্রের দিকচক্রবালে নিছকই একটা কাল্পনিক ফুটকির মতাে ।

 

মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২

‘ কৌতূহলীরা এল দূর -দূরান্তর থেকে ।’ কৌতূহলী মানুষগুলির পরিচয় লেখাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer কৌতূহলীরা এল দূর দূরান্তর থেকে কৌতূহলী মানুষগুলির পরিচয় লেখাে koutuholi manushgulir porichoy lekho



উত্তর : মুরগি খাঁচায় বন্দি দেবদূতকে দেখতে কৌতূহলী মানুষের ভিড় পেলাইওদের উঠোনে । দূর- দূরান্ত থেকে আসছে তারা । এক ভ্রাম্যমাণ সার্কাস দলও এসে পৌঁছেচে । সেই দলে আছে এক উড়ন্ত দড়বাজিকর । সে বারকয়েক ভিড়ের ওপর ভোঁ ভোঁ করে উড়লে । কিন্তু তাকে কেউ পাত্তা দিল না । কারণ তার ডানাগুলি দেবদূতের ডানার মতাে ছিল না । সেগুলি দেখাচ্ছিল কোনাে নক্ষত্র বাদুড়ের ডানার মতাে । যারা সবচেয়ে দুর্ভাগা ও অশক্ত , তারা  এসেছে স্বাস্থ্য উদ্ধারের খোঁজে । সেই আশায় দেবদূতের শরণাপন্ন হয়েছে তারা । এক বেচারি মেয়ে জন্ম থেকেই গুনে আসছে তার বুকের ধুকধুক । গুনতে গুনতে এখন শেষ সংখ্যায় সে হাজির । এসেছে এক পাের্তুগিজ, সে ঘুমােতে পারে না কখনও । কারণ তারাদের কোলাহল তার ঘুম চটিয়ে দেয় । এক ঘুমে -হাঁটা লােক এসেছে । সে দিনে জেগে থাকা অবস্থায় যা যা করে রাতে যখন ঘুমােয় , তখন ঘুমের ঘােরে সে সবকিছু গুবলেট করে বসে । তা ছাড়া আরও কত মানুষ এসেছে নানা ব্যাধিগ্রস্ত হয়ে । অবশ্য তাদের রােগ তত ভয়ংকর নয় ।
 



সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০২২

“পড়ে -থাকা শরীরটার দিকে তাকিয়ে তারা কেমন হতভম্ব হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়েরইল ।” — কারা , কেন ‘চুপচাপ’ দাঁড়িয়ে রইল ? ‘পড়ে -থাকা শরীরটার’ বিবরণ নিজের ভাষায় লেখাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer পড়ে থাকা শরীরটার দিকে তাকিয়ে তারা কেমন হতভম্ব হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়েরইল কারা কেন  চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল পড়ে থাকা শরীরটার বিবরণ নিজের ভাষায় লেখাে kara keno chupchap dariye roilo pore thaka shorirtar biborno nijer bhashai lekho


উত্তর : পেলাইও ঘরে গিয়ে তার স্ত্রী এলিসেন্দাকে ডেকে নিয়ে তাদের উঠোনের পিছনকোণায় আসে । সেখানে কাদার মধ্যে মুখ গুঁজে বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়াে পড়ে আছে । তার শরীরের দিকে তাকিয়ে পেলাইও ও এলিসেন্দা হতভম্ব হয়ে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকে । তারাই হল চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা হতভম্ব দর্শক ।
[        ] কাদার মধ্যে মুখ গুঁজে পড়ে থাকা বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়াের পরনে ন্যাকড়াকুড়ুনির পােশাক । তার টাক - পড়া চকচকে মাথায় কয়েকটা মাত্র বিবর্ণ চুল । ফোগলা মুখে খুব কম দাঁত ।এককালে শরীরে জাকজমক থাকলেও এখন তার করুণ দশা প্র-প্রপিতামহের । জাকজমকের ছিটেফোঁটা তার শরীরে নেই । উধাও হয়েছে । তার বিশাল ডানা অতিকায় শিকারি পাখির ডানার মতাে । নােংরা, তা ছাড়া অর্ধেকটা পালক খসা । কাদায় জট পাকিয়েছে চিরকালের মতাে ।





রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২

দেবদূত সম্পর্কে পাদ্রে গোনসাগার ভূমিকা সংক্ষেপে বর্ণনা করাে ।


একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer দেবদূত সম্পর্কে পাদ্রে গোনসাগার ভূমিকা সংক্ষেপে বর্ণনা করাে debdut somporke padre gonosagar bhumika songkhepe bornona koro


উত্তর : সকাল সাতটার আগেই পাদ্রে গােনসাগা ছুটে এলেন হন্তদন্ত হয়ে দেবদূতকে দেখার জন্যে । পাদ্রে গােনসাগা সােজা বেড়ার ধারে এসে দাঁড়িয়ে দেবদূতকে জেরা করবার জন্যে কী কী প্রশ্নোত্তর করা হবে তা ভেবে তৈরি হলেন । তারপর দরজাটা খুলে দিতে বললেন । যাতে কাছ থেকে দেবদূতকে খুঁটিয়ে দেখে নিতে পারেন । ভিতরে গিয়ে পাদ্রে গােনসাগা লাতিনে সুপ্রভাত জানালেন দেবদূতকে ।দেবদূতের কাছে জগতের ধৃষ্টতা ও ঔদ্ধত্য অচেনা । কাজেই সে তার প্রাচীন চোখ তুলে গুনগুন করে তার ভাষায় কী যেন বলল । তাতেই পাদ্রে মশায়ের ক্ষোভের শেষ নেই । তিনি তাকে জোচ্চোর ফেরেববাজ বলে সন্দেহ প্রকাশ করলেন । ঈশ্বরের ভাষা যে বােঝে না, ঈশ্বরের উজির - নজিরদের সম্ভাষণ করতে যে জানে না, সে ঈশ্বরের দূত হয় কী করে ? কাছ থেকে দেখে তাঁর মনে হল চেহারায় বড্ড মানুষ মানুষ দেখতে । ডানা দুটির হতশ্রী অবস্থা দেবদূতের পরিচয় দিচ্ছে না । তিনি তারপর মুরগির খাঁচা থেকে বেরিয়ে এলেন । দেবদূত সম্পর্কে সমবেত দর্শকদের সতর্কবাণী শােনালেন । এ কথাও বললেন যে, ছলাকলাহীন সাদাসিধে ভালাে মানুষ হওয়ার ঝুঁকি কতটা । শয়তানের বিষম বদভ্যেস আছে রােমান ক্যাথলিকদের হুল্লোড়ে উৎসবে এসে আচমকা ল্যাং মেরে ফায়দা লােটার । তিনি যুক্তি দিয়ে বােঝানাের চেষ্টা করলেন যে, ডানার দিক থেকে বাজপাখি ও উড়ােজাহাজের তফাত বােঝার ক্ষমতা না থাকলে দেবদূতকে শনাক্ত করা তাদের । পক্ষে সহজ ব্যাপার নয় । তিনি এ কথাও দিলেন যে,বিশপকে এ মর্মে চিঠি দেবেন যে আর্চবিশপ লেখেন । আর্চবিশপকে লিখবেন সর্বোচ্চ মােহান্তকে ,যাতে উচ্চতম আদালত থেকে দেবদূত  সম্পর্কে সর্বাধিনায়কের চূড়ান্ত রায়টি পাওয়া যায় ।



শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২

‘জ্ঞান কোথায় গেল ?’ —জ্ঞানের অভাব ‘ শিক্ষার সার্কাস ’ কবিতায় কীভাবে ব্যঞ্জিত হয়েছে ?


একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer জ্ঞান কোথায় গেল জ্ঞানের অভাব শিক্ষার সার্কাস কবিতায় কীভাবে ব্যঞ্জিত হয়েছে sikkhar sarkas kobitai kivabe banchito hoyeche

উত্তর :  খ্যাতনামা কবি ও শিক্ষাবিদ আইয়াপ্পা পানিকর এদেশীয় শিক্ষার ছবি ‘শিক্ষার সার্কাস’ কবিতায় চমৎকার এঁকেছেন । এদেশীয় শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষার শুরু থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্লাসের পর ক্লাস টপকে এগােতে থাকে । প্রথমের পর দ্বিতীয় , দ্বিতীয়ের পর তৃতীয় । এভাবে যেন সিঁড়ির ধাপ ভেঙে এক , দুই, তিন - এর পর চারে ওঠা । বিদ্যার্থীদের এ যেন ধাপ ভাঙার খেলা । কে কাকে পিছনে ফেলে এগােতে পারে যেন তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা । প্রাথমিক স্তরের সব শ্রেণি পার হওয়ার পরেও কিন্তু এগিয়ে চলা থামে না । 


[        ]  অধ্যাপক পানিকর সব শিক্ষাকে একটি সার্কাস বলেছেন । সার্কাস হল ক্রীড়াচক্র । চক্রাকার বা বৃত্তাকার ক্রীড়াক্ষেত্রের চারদিকে গ্যালারিতে দর্শকেরা বসে খেলা দেখে । মাঝে খেলার জায়গায় খেলােয়াড়রা ঘােড়া প্রভৃতি জীবজন্তু ঘুরে ঘুরে খেলা দেখায় । প্রতিযােগিতা কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ থাকে খেলা দেখানাের মধ্যে । কে কাকে টপকে যাবে এ মরিয়াপনা খেলােয়াড়দের মধ্যে যেমন থাকে , তেমনি শিক্ষায় শ্রেণি টপকানাের মধ্যেও থাকে একই রকমের প্রতিযােগিতার জেদি মনােভাব । তাই কবি বলেছেন , ‘যার সাহায্যে আমরা পরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হই ।’ ঠিকই । আমরা শ্রেণির পর শ্রেণি টপকে শিক্ষার উচ্চস্তরে পৌঁছে যাই । কত ডিগ্রি ডিপ্লোমা আমাদের ঝােলায় এসে যায় । কিন্তু প্রকৃত জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে যে শিক্ষা , তা কি শিক্ষার্থীপায় ?

[       ]  দুঃখের কথা , আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় জ্ঞানার্জনের ঘাটতি থেকে যায় বলেই কবির প্রশ্ন  ‘জ্ঞান কোথায় গেল ?’ বর্তমান শিক্ষায় শংসাপত্র এক কাঁড়ি মেলে । কিন্তু প্রকৃত জ্ঞানার্জন থাকে অধরা । কবি রূঢ় সত্য উচ্চারণ করতে দ্বিধা করেননি । জ্ঞানার্জনের নামে এদেশীয় শিক্ষা এক প্রচণ্ড ধোঁকাবাজি । ডিগ্রির তকমা লাভের জন্য কী মরিয়াপনা চেষ্টা । কত কত টিউশন । প্যাকেজ ভিত্তিতে কত কত নােট গলাধঃকরণ করে পরীক্ষা বৈতরণি পার । ওই শুষ্ক বিচ্ছিন্ন শিক্ষায় জ্ঞান লাভের দিকটা থাকে উপেক্ষিত । প্রকৃত জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে যে শিক্ষা, সে শিক্ষা থাকে অবহেলিত । 







বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০২২

আমাদের দেশে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে ‘শিক্ষার সার্কাস’ কবিতায় কবির অনাস্থার কারণ কি ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমাদের দেশে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে শিক্ষার সার্কাস কবিতায় কবির অনাস্থার কারণ কি sikhar sikkhas kobitai kobir anasthar karon ki


উত্তর : কবি আইয়াপ্পা পানিকর ছিলেন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ । সারাজীবন অধ্যাপনা করেছেন । কাজেই এদেশীয় বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার প্রকৃত পরিচয় তিনি জানতেন । তার বাইরের ও ভিতরের রূপ ও চেহারা তাঁর অজানা ছিল না । তিনি ‘শিক্ষার সার্কাস’ কবিতায় এদেশীয় বর্তমান শিক্ষার বাইরের ও ভিতরের রূপটিকে শ্লেষাত্মক ভঙ্গিতে চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছেন । 

[          ] শিক্ষার্থী ক্লাসের পর ক্লাস উত্তীর্ণ হয়ে তার শিক্ষার ধারাটিকে এগিয়ে নিয়ে চলে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকের দিকে । পরে উচ্চমাধ্যমিকের বৃত্ত টপকে কলেজীয় শিক্ষাস্তরে । এভাবে স্তরের পর স্তর ডিঙিয়ে এগিয়ে চলে শিক্ষার্থীর শিক্ষাধারা । শিক্ষাধারা অনুসরণে শিক্ষার্থীর এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে আছে একে অপরকে টপকে যাওয়ার প্রতিযােগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা । সেজন্য কবি পানিকর শিক্ষাকে বলেছেন সার্কাস , শিক্ষার ক্রীড়াচক্র । চক্রাকারে আবর্তমান শিক্ষার্থী শিক্ষার স্তরের পর স্তর অতিক্রম করে চলমান । কিন্তু শিক্ষা যেহেতু পুথিসর্বস্ব, পরীক্ষার মাধ্যমে ক্লাস টপকানাের  ডিগ্রি ডিপ্লোমা পাওয়ার মরিয়াপনা চেষ্টা তাই শিক্ষা জ্ঞানহীন ,প্রাণহীন , নিরানন্দ ও নীরস । নীরস ও জ্ঞান অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করে , অন্তরকে আলােকিত করে, মানবিক গুণে সমৃদ্ধ করে ,তার চর্চা হয় না এদেশীয় শিক্ষায় । কাজেই জ্ঞানচর্চার নামে এক মস্ত ধোঁকাবাজি চলে । ধোকা মানেই ধাপ্পা বা ফাঁকি । তাই উচ্চশিক্ষিত হয়েও কত মানুষ অমানুষ থেকে যায় ।






বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০২২

‘মাঝে মাঝে চলেও না দিন দুপুররাতে ’ - কাদের দিন চলে না ? মাঝে মাঝে দিন না চলার কী কারণ হতে পারে বলে তােমার মনে হয় ? ‘দুপুররাতের’ অর্থ কী ? দুপুররাতে বাড়ি ফেরে কেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer মাঝে মাঝে চলেও না দিন দুপুররাতে কাদের দিন চলে না মাঝে মাঝে দিন না চলার কী কারণ হতে পারে বলে তােমার মনে হয় দুপুররাতের অর্থ কী দুপুররাতে বাড়ি ফেরে কেন majhe majhe choleo na din dupurrate kader din chole na majhe majhe din na cholar ki karon hote pare bole tomar mone hoi dupurrater artho


উত্তর :  উদ্ধৃতাংশটি কবি জয় গােস্বামীর লেখা ‘ নুন কবিতার ষষ্ঠ স্তবকের প্রথম চরণ । এতে কথিত মাঝে মাঝে যাদের দিন চলে না, তারা হল নিম্নবিত্ত শ্রমজীবী মানুষ ।
[        ]  এরা ভূমিহীন সম্পদহীন দিনমজুর । শরীর খাটালে তবে রােজগার । দিনের রােজগারের ওপর দিনের খাওয়া -পরার সংস্থান । শরীর আর শ্রমই হল এদের দিন চলার মূলধন । শরীর শ্রম করার উপযােগী না থাকলে রােজগারের ঘরে শূন্য । তার অর্থ সংসারে অরন্ধন , অনাহার । সেদিন অচল । এ তাে গেল শরীরের ভালাে - মন্দের দিক । শরীর শ্রমের উপযােগী থাকলেই হল না, শ্রমেরও ব্যবস্থা থাকা চাই । অর্থাৎ শ্রম করার উপযােগী কাজ । দিনমজুরের অনেক সময়ই কাজ থাকে না । বেকার দিন কাটাতে হয় । সেরকম অভিশপ্ত দিনগুলিতে সংসার অচল হয়ে পড়ে । সে -অর্থে বলা হয়েছে ‘মাঝে মাঝে চলেও না দিন ।’ সংসারের এমন অভাব - অনটন ও দারিদ্র্যের ভয়াবহতা দিনমজুর শ্রেণির মানুষের সংসারে অতি পরিচিত ঘটনা । অনাহারে অর্ধাহারে দিনযাপনের চিত্রএ ধরনের সংসারে প্রায়শ দেখা যায় । ‘ দুপুররাত ’ হল দ্বিপ্রহর রাত বা মাঝরাত । 


[        ] দিনমজুর বা শ্রমজীবী মানুষ রাত হলে হয় গাঁজায় দম দেয়, নয় তাে চোলাই মদ গলায় ঢালে । নেশাভাঙে আধখানা রাত কাটিয়ে বাড়ি ফেরে । অথবা এখানে ওখানে নানা ঠেকে তাসপাশায় আড্ডা জমিয়ে বাড়ি ফিরতে মাঝরাত কাবার । কিংবা কাজের হিল্লায় নানা জায়গায় ঢু দিয়ে বাড়িমুখাে হতে রাতদুপুর ।

 

মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট, ২০২২

‘গুরু’ নাটক অবলম্বনে উপাধ্যায় ও উপাচার্য চরিত্র আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer গুরু নাটক অবলম্বনে উপাধ্যায় ও উপাচার্য চরিত্র আলােচনা করাে guru natok abolombone upadhyay o uparcharjo choritro alochona koro

উত্তর : ‘গুরু’ নাটকের একটি উল্লেখযােগ্য চরিত্র হল উপাধ্যায় । উপাধ্যায় উপাধি হতে পারে , উপাধ্যায় নাম হিসেবেও প্রযুক্তহতে পারে , আবার পাণ্ডিত্য অর্থে উপাধ্যায় পদের ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে । যাই হােক , উপাধ্যায়ের শাস্ত্রীয় বিধান কণ্ঠস্থ । কোথায় কোন শিক্ষার্থী বিধিবিধান ও নিয়মশৃঙ্খলা ভঙ্গ করছে , কিংবা করে থাকলে তার পাপক্ষালনের প্রায়শ্চিত্তের বিধান আওড়ানাের জন্য তিনি সবসময় তৎপর । পঞক তাই বলেছে , “পাপের একটুকু গন্ধ পেলে একেবারে মাছির মতাে ছােটে ।”

[          ]  কুলদত্তের ক্রিয়াসংগ্রহ কিংবা ভরদ্বাজ মিশ্রের প্রয়ােগপ্রজ্ঞপ্তি তাঁর জিভের ডগায় । সুভদ্র ‘ উত্তরদিকের জানালা ’ শব্দ উচ্চারণ করতেই উপাধ্যায় জানতে চেয়েছেন জানালায় সে আঁক কেটেছে কিনা , কেটে থাকলে চৌকোণা না গােলাকার , আর যদি কনুই ঠেকিয়ে থাকে , তাহলে সেদিকে সব যজ্ঞপাত্র অশুচি হওয়ার জন্য ফেলা যাবে , সাত মাসের বাছুরকে দিয়ে জানালা চাটিয়ে শােধন করতে হবে । 



[          ] আয়তনের আচার্যও জানেন উপাধ্যায়  কোন বালক কী নিয়ম লঙ্ঘন করে কী পাপ কাজ করেছে তার খবরাদি রাখেন । তাই আচার্য জিজ্ঞেস করেন , ‘উপাধ্যায় , কোনাে সংবাদ আছে নাকি ?’ উপাধ্যায় পরছিদ্রান্বেষী । শুধু তাই নয়, প্রায়শ্চিত্ত যথাযথ হােক , সে -ব্যাপারে তৎপরও বটে । আবার এই মানুষই কৌতুকরসের ভিয়ান চড়াতে পারেন । প্রথম যুনক যখন বলে , “ অচলায়তনের দরজার কথা বলছ — সে আরাে আকাশের সঙ্গে দিব্যি সমান করে দিয়েছি ।” তখন উপাধ্যায় বলেন , “বেশ করেছ ভাই । আমাদের ভারি অসুবিধা হচ্ছিল । এত তালাচাবির ভাবনাও ভাবতে হত ।”

 [          ]  উপাচার্য আচার্যের সহকারী । তিনি শান্ত,সংযত ও প্রাজ্ঞ মানুষ । আয়তনের দায় - দায়িত্ব ছিল আচার্যের হাতে । তাঁকে এবং তাঁর কাজে সাহায্যকারী মানুষটি হলেন উপাচার্য । নাম সূতসােম । তিনি কিন্তু আয়তনের কর্মধারায় বড়ােই সন্তুষ্ট।তিনি মনে করেন , আয়তন চলছে বড়াে শান্তিতে ।তিনি মনে করেন , তার সার্থকতায় প্রসন্ন হয়ে গুরু দীর্ঘকাল পরে অচলায়তনে আসছেন । তিনি এ কথাও মনে করেন বজ্রশুদ্ধিব্রত এই আয়তনে এবার নিয়ে সাতাত্তর বার পূর্ণ হয়েছে , যা অন্য কোনাে আয়তনে সম্ভবপর হয়নি । এ কৃতিত্ব অচলায়তনের গর্ব । শুধু তাই নয় , উপাচার্য আয়তনে লেশমাত্র ত্রুটি বা বিচ্যুতি দেখতে পান না । তিনি মনে করেন , সমস্ত শিক্ষা এই আয়তনে সমাধা হয়ে গেছে । উপাচার্য এরকম স্বভাব - প্রকৃতির মানুষ ।