কবি জয় গােস্বামী ‘নুন’ কবিতায় সমাজের শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার যে ছবি এঁকেছেন , তা বর্ণনা করাে ।
উত্তর : কবি জয় গােস্বামী ‘নুন' কবিতায় সমাজের অতিসাধারণ শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার ছবি এঁকেছেন । তারা শ্রমজীবী , ‘দিন আনে দিন খায়’ এমনি হতদরিদ্র বটে , কিন্তু তারা অল্পে খুশি । তারা জানে দুঃখ করে দুঃখকষ্টের সুরাহা হয় না । দুঃখ কার কাছেই বা করবে ? দুঃখ জানিয়ে দুঃখের সুরাহা হবে এমন দরদি সমাজ -সংসার এদেশে নেই । কাজেই সাধারণ ভাতকাপড়ে তাদের দিন চলে । তাদের দিন চলে অসুখেবিসুখে ধারদেনা করে । কিন্তু দুঃখদারিদ্র, অসুখবিসুখ , দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা সবকিছু ভুলে থাকার জন্য রাতে দু-ভাই মিলে গাঁজার কলকেতে টান দেয় । অভাবের সংসারে সবদিন বাজার করা হয় না । যেদিন হয় সেদিন বেহিসেবিপনা মাত্রা ছাড়িয়ে যায় । কারণ গরিবের সংসারে অপ্রয়ােজনীয় গােলাপের চারা কিনে বাড়ি ফেরে গােলাপচারা পুঁতে বাগান বানাবে , তেমন জায়গাটুকু তাে নেই । কষ্ট ভােলার জন্য তারা যথারীতি গাঁজাতে টান দেয় । নেশাভাঙেই তাদের আনন্দ তাতেই তারা খুশি । এভাবে হেসেখেলে কষ্ট করে তাদের দিন চলে যায় । মাঝে মাঝে অভাব - অনটনে সংসার অচল হয়ে যায় । সেদিন মাঝরাতে তারা বাড়ি ফেরে । ভাত তখন ঠান্ডা । সামান্য নুনের জোগাড়টুকুও হয়নি । ফলে খেতে বসে মাথায় রাগ চড়ে । রাগ চড়ে গিয়ে এমন হয় যেন রাগের চড়ে বসে । ফলে বাপব্যাটায় কিংবা দু-ভাইয়ে মিলে মারামারি ও চেঁচামেচি করে সারাপাড়া মাথায় করে । অবশ্য তাদের রাগারাগি ও আত্মকলহে কাদের কী এসে যায় ? তারা খেটে -খাওয়া অতি নগণ্য মানুষ । তাদের চাওয়া বলতে ‘আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক ।’ সমাজের কাছে , রাষ্ট্ৰচালকদের কাছে এটুকুই তাদের আর্জি ।
কোন মন্তব্য নেই