‘বাড়ির মালিকদের অবশ্য বিলাপ কোনােই কারণ ছিল না ।’ - বাড়ির মালিকদের নাম কী ? তাদের বিলাপ করার কারণ ছিল না কেন ?
উত্তর : গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের লেখা ‘বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়াে’ গল্পের বিশিষ্ট চরিত্র পেলাইও ও তার স্ত্রী এলিসেন্দা । তাদের বাড়িতে এক বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়াের অবস্থিতিকে ঘিরে গল্পের যা কিছু ঘটনা ঘটেছিল । কাজেই ‘ বাড়ির মালিক ’ বলতে ওই বাড়ির কর্তা ও গিন্নি পেলাইও ও এলিসেন্দা ।
[ ] সেবার শহরে আসে এক মেয়ের ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী । তার টিকিটের দাম ছিল দেবদূত দেখার দর্শনীর চেয়ে কম । তা ছাড়া মাকড়সায় পরিণত হওয়া মেয়েটির সম্পর্কে যা কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেত , তাকে খুঁটিয়ে দেখা যেত, তার মেয়ে থেকে মাকড়সা বনে যাওয়া করুণ কাহিনি তার গলায় শােনা যেত । এসব কারণে পেলাইও ও এলিসেন্দার বাড়িতে দেবদূত দেখার আকর্ষণ পুরােপুরি টেনে নেয় মাকড়সা -মেয়েটি । ফলে তাদের আয়ও একেবারে শূন্যতে এসে ঠেকে । কাজেই এ নিয়ে তাদের মনস্তাপ ও বিলাপ করা স্বাভাবিক ।
[ ] কিন্তু পেলাইও ও এলিসেন্দার বিলাপের কোনাে কারণই ছিল না । দেবদূতকে দেখার দর্শনীবাবদ তারা প্রচুর টাকা কামিয়েছিল । তা দিয়ে তারা এক চকমেলানাে দোতলা বাড়ি বানিয়েছিল । বাড়ির ছিল অলিন্দ । সামনে বাগান । উচু তারের জাল দিয়ে প্রাচীরের মতাে চারদিক ঘেরা । শীতকালে সমুদ্রের কাঁকড়া ভিতরে ঢুকতে পারবে না তারই ব্যবস্থা । জানালায় লােহার গরাদ । দেবদূত আচমকা ঢুকে পড়তে না পারে তার ব্যবস্থা । পেলাইও সাধ্যপালের কাজে চিরদিনের জন্য ইস্তফা দিয়েছে । কেন - না শহরের কাছে খরগােশ পালনের জন্য ঘিঞ্জি গােলকধাধার মতাে একটা কেন্দ্র বানিয়েছে । এলিসেন্দা আর গরিবিভাবে থাকে না । কতকগুলি উচু ক্ষুরওয়ালা জুতাে কিনেছে । কয়েক প্রস্থ পােশাকও কিনেছে রামধনু রং - এর রেশমি কাপড়ে তৈরি । সবই অভিজাত বিলাসিতার নিদর্শন ।
কোন মন্তব্য নেই