শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২

“আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক ।” —কে বলেছে ? এ দাবি কার কাছে ? কেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক কে বলেছে এ দাবি কার কাছে কেন amader shukno vate loboner babostha hok ke boleche a dabi kar kache keno

উত্তর : প্রখ্যাত কবি জয় গােস্বামীর ‘নুন’ কবিতার কথক শ্রমজীবী হতদরিদ্র মানুষটি । ‘ আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক ।’ এই দাবি সেই কর্তাব্যক্তিদের কাছে , সামান্য নুনটুকু জোগান দেওয়ার দায়দায়িত্ব যাঁদের । 

ন্যায্য অধিকার দাবি : ধনতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সম্পদের অসম বণ্টনের ফলেই সমাজে ধনী ও গরিবের শ্রেণিবৈষম্য । শ্রমজীবী মানুষের শ্রমজাত সম্পদ ধনীর কুক্ষিগত হয় । শােষণ ও বঞ্চনার ফলে ধনী হয় আরও ধনী । গরিব নিঃস্ব থেকে আরও নিঃস্ব ও নিরন্ন হতে থাকে । তাদের আয়ের নিশ্চয়তা থাকে না । তাদের শ্রমের জোগানও থাকে না নিয়মিত । তাদের জীবন চলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে , ধারদেনা করে । ‘ সাধারণ ভাতকাপড়ে ’ । মাঝে মাঝে আয়ের অঙ্ক শূন্যতে থাকায় বাজার করাও হয় না । সেদিন বাড়ি ফিরতে মাঝরাত গড়িয়ে যায় । উদরপূর্তির জন্য জোটে সকালের ঠান্ডা শুকনাে ভাত । সামান্য নুনটুকুরও সংস্থান না থাকায় আলােনা ভাত মুখে বিস্বাদ ঠেকে । তখনই মাথায় রাগ চড়ে । তা নিয়ে বাপ ব্যাটায় কিংবা ভাইয়ে ভাইয়ে চেঁচামেচি শুরু হয় । চেঁচামেচিতে পাড়া মাথায় করে । ওই অপ্রিয় অসহিষ্ণুতার জন্য পরে তারা নিজেরাও ব্যথিত হয় । তাই তাদের কাতর আবেদন —নিদেনপক্ষে তাদের শুকনাে ভাতে নুনটুকুর ব্যবস্থা হোক । তাদের আর্জি এই সভ্যসমাজে , হতদরিদ্র  , মানুষের বেঁচে থাকার জন্য এই প্রশাসনিক মানবিকতাটুকু তাদের ওপর বর্ষিত হােক । দয়া নয়, করুণা নয়, এ হল ন্যায্য অধিকারের বিনীত দাবি । 

 





শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২

‘ শিক্ষার সার্কাস ’ কবিতার উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer শিক্ষার সার্কাস কবিতার উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করাে sikkhar sarkas kobitar ullekhjoggo boishistoguli alochona koro


উত্তর : মালয়ালম কবি আইয়াপ্পা পানিকরের লেখা ‘ শিক্ষার সার্কাস ’ কবিতাটি নানা বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ ।

এক - ‘তুমি’ ও ‘আমি ’ দুই ব্যক্তিবাচক সর্বনামের প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ বাচনে শিক্ষা বিষয়ক আলােচনাটি অনেকাংশে যেন সংলাপধর্মী ।

দুই - তাদের পাস করার ব্যাপারটা যেন শর্তসাপেক্ষ । ‘তুমি যদি প্রথম শ্রেণিতে পাস করাে ?/ আমি দ্বিতীয় শ্রেণিতে যেতে পারি ।’ ছ -টি পঙক্তিতে ছ -বার ‘যদি ’- র ব্যবহার শর্তসাপেক্ষ অর্থকে স্পষ্টতর করেছে ।


তিন - একটা অপ্রত্যক্ষ প্রতিযােগিতার চোরা স্রোত আছে শিক্ষার্থীদের পাস করাকে ঘিরে , এক ক্লাস থেকে আর -এক ক্লাসে ওঠার ব্যাপারে । 


চার - কবিতার প্রথমার্ধে এই শিক্ষা ব্যাপারকে ঘিরে কেমন যেন হেঁয়ালির রহস্য আলাে -আঁধারির মতাে ব্যাপ্ত , যা পাঠককে কবিতার বক্তব্য আত্মস্থ করতে কৌতূহলী ও সচেতন করে তােলে । 

পাঁচ - কবিতার ভাষায় কঠিন শব্দের ব্যবহার নেই , সাদামাঠা ,অথচ অর্থবহ । বক্তব্য ঋজু , বর্ণনা সম্পূর্ণ মেদহীন । একটি অনাবশ্যক শব্দের ব্যবহার নেই ।


ছয় - শিক্ষার চলমানতা ও অগ্রগতি কবি মাত্র দুটি পঙক্তিতে চমৎকার স্পষ্ট করে দিয়েছেন- ‘যদি সব শ্রেণি শেষ হয়ে যায়,/ আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব ।’

সাত - এদেশীয় শিক্ষা সম্পর্কে কবির তীক্ষ শ্লেষ ও ব্যঙ্গের পরিচয়  ‘ সব শিক্ষা একটি সার্কাস ’। তা ছাড়া জ্ঞানহীন , চেতনাহীন শিক্ষার স্বরূপ ফুটে উঠেছে শেষ দুই পঙক্তিতে ‘ জ্ঞান কোথায় গেল ?/ সে যেখানে গেছে , সেটা ধোকা !






বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২২

‘বাড়ির মালিকদের অবশ্য বিলাপ কোনােই কারণ ছিল না ।’ - বাড়ির মালিকদের নাম কী ? তাদের বিলাপ করার কারণ ছিল না কেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer বাড়ির মালিকদের অবশ্য বিলাপ কোনােই কারণ ছিল না বাড়ির মালিকদের নাম কী তাদের বিলাপ করার কারণ ছিল না কেন barir malikder aboshyo bilap konoi karon chilo na barir malikder nam ki tader bilap korar karon chilo na keno


উত্তর : গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের লেখা ‘বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়াে’ গল্পের বিশিষ্ট চরিত্র  পেলাইও ও তার স্ত্রী এলিসেন্দা । তাদের বাড়িতে এক বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়াের অবস্থিতিকে ঘিরে গল্পের যা কিছু ঘটনা ঘটেছিল । কাজেই ‘ বাড়ির মালিক ’ বলতে ওই বাড়ির কর্তা ও গিন্নি পেলাইও ও এলিসেন্দা । 

[         ] সেবার শহরে আসে এক মেয়ের ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী । তার টিকিটের দাম ছিল দেবদূত দেখার দর্শনীর চেয়ে কম । তা ছাড়া মাকড়সায় পরিণত হওয়া মেয়েটির সম্পর্কে যা কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেত , তাকে খুঁটিয়ে দেখা যেত, তার মেয়ে থেকে মাকড়সা বনে যাওয়া করুণ কাহিনি তার গলায় শােনা যেত । এসব কারণে পেলাইও ও এলিসেন্দার বাড়িতে দেবদূত দেখার আকর্ষণ পুরােপুরি টেনে নেয় মাকড়সা -মেয়েটি । ফলে তাদের আয়ও একেবারে শূন্যতে এসে ঠেকে । কাজেই এ নিয়ে তাদের মনস্তাপ ও বিলাপ করা স্বাভাবিক । 

[      ] কিন্তু পেলাইও ও এলিসেন্দার বিলাপের কোনাে কারণই ছিল না । দেবদূতকে দেখার দর্শনীবাবদ তারা প্রচুর টাকা কামিয়েছিল । তা দিয়ে তারা এক চকমেলানাে দোতলা বাড়ি বানিয়েছিল । বাড়ির ছিল অলিন্দ । সামনে বাগান । উচু তারের জাল দিয়ে প্রাচীরের মতাে চারদিক ঘেরা । শীতকালে সমুদ্রের কাঁকড়া ভিতরে ঢুকতে পারবে না তারই ব্যবস্থা । জানালায় লােহার গরাদ । দেবদূত আচমকা ঢুকে পড়তে না পারে তার ব্যবস্থা । পেলাইও সাধ্যপালের কাজে চিরদিনের জন্য ইস্তফা দিয়েছে । কেন - না শহরের কাছে খরগােশ পালনের জন্য ঘিঞ্জি গােলকধাধার মতাে একটা কেন্দ্র বানিয়েছে । এলিসেন্দা আর গরিবিভাবে থাকে না । কতকগুলি উচু ক্ষুরওয়ালা জুতাে কিনেছে । কয়েক প্রস্থ পােশাকও কিনেছে রামধনু রং - এর রেশমি কাপড়ে তৈরি । সবই অভিজাত বিলাসিতার নিদর্শন । 





বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০২২

“এলিসেন্দা একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললে— ” -এলিসেন্দা কী দেখেছিল ? এলিসেন্দা কেন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল ? সে কেমনভাবে উড়ে যাচ্ছিল ? এলিসেন্দা কেন তাকিয়ে তাকে দেখতে থাকে ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer এলিসেন্দা একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললে এলিসেন্দা কী দেখেছিল এলিসেন্দা কেন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল সে কেমনভাবে উড়ে যাচ্ছিল এলিসেন্দা কেন তাকিয়ে তাকে দেখতে থাকে alisenda ki dekechilo alisenda keno swastir niswas felechilo se kemonvabe ure jachilo alisenda keno takiye dekhte thake


উত্তর : এলিসেন্দা দেখেছিল দেবদূত এই প্রথম ডানা ছড়িয়ে ওড়বার চেষ্টা করছে । দেবদূত নড়বড়ে ভাবে হলেও একটু ওপরে উঠতে পারায় এলিসেন্দা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল । দেবদূত এখন শেষ বাড়িগুলির ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে কোনােরকমে সে নিজেকে ধরে রেখেছে উড়ালটায় , কোনাে মতিচ্ছন্ন জরাগ্রস্ত শকুনের ঝুঁকি ভরা ডানা ঝাপটানি দিয়ে । পিঁয়াজ কাটা সারা হয়ে যাওয়ার পরেও এলিসেন্দা দেবদূতকে তাকিয়ে দেখতেই থাকে । একসময় আর দেখা সম্ভব হয় না, কারণ দেবদূত উড়তে উড়তে চলে যায় সমুদ্রের দিকচক্রবালে নিছকই একটা কাল্পনিক ফুটকির মতাে ।

 

মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২

‘ কৌতূহলীরা এল দূর -দূরান্তর থেকে ।’ কৌতূহলী মানুষগুলির পরিচয় লেখাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer কৌতূহলীরা এল দূর দূরান্তর থেকে কৌতূহলী মানুষগুলির পরিচয় লেখাে koutuholi manushgulir porichoy lekho



উত্তর : মুরগি খাঁচায় বন্দি দেবদূতকে দেখতে কৌতূহলী মানুষের ভিড় পেলাইওদের উঠোনে । দূর- দূরান্ত থেকে আসছে তারা । এক ভ্রাম্যমাণ সার্কাস দলও এসে পৌঁছেচে । সেই দলে আছে এক উড়ন্ত দড়বাজিকর । সে বারকয়েক ভিড়ের ওপর ভোঁ ভোঁ করে উড়লে । কিন্তু তাকে কেউ পাত্তা দিল না । কারণ তার ডানাগুলি দেবদূতের ডানার মতাে ছিল না । সেগুলি দেখাচ্ছিল কোনাে নক্ষত্র বাদুড়ের ডানার মতাে । যারা সবচেয়ে দুর্ভাগা ও অশক্ত , তারা  এসেছে স্বাস্থ্য উদ্ধারের খোঁজে । সেই আশায় দেবদূতের শরণাপন্ন হয়েছে তারা । এক বেচারি মেয়ে জন্ম থেকেই গুনে আসছে তার বুকের ধুকধুক । গুনতে গুনতে এখন শেষ সংখ্যায় সে হাজির । এসেছে এক পাের্তুগিজ, সে ঘুমােতে পারে না কখনও । কারণ তারাদের কোলাহল তার ঘুম চটিয়ে দেয় । এক ঘুমে -হাঁটা লােক এসেছে । সে দিনে জেগে থাকা অবস্থায় যা যা করে রাতে যখন ঘুমােয় , তখন ঘুমের ঘােরে সে সবকিছু গুবলেট করে বসে । তা ছাড়া আরও কত মানুষ এসেছে নানা ব্যাধিগ্রস্ত হয়ে । অবশ্য তাদের রােগ তত ভয়ংকর নয় ।
 



সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০২২

“পড়ে -থাকা শরীরটার দিকে তাকিয়ে তারা কেমন হতভম্ব হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়েরইল ।” — কারা , কেন ‘চুপচাপ’ দাঁড়িয়ে রইল ? ‘পড়ে -থাকা শরীরটার’ বিবরণ নিজের ভাষায় লেখাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer পড়ে থাকা শরীরটার দিকে তাকিয়ে তারা কেমন হতভম্ব হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়েরইল কারা কেন  চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল পড়ে থাকা শরীরটার বিবরণ নিজের ভাষায় লেখাে kara keno chupchap dariye roilo pore thaka shorirtar biborno nijer bhashai lekho


উত্তর : পেলাইও ঘরে গিয়ে তার স্ত্রী এলিসেন্দাকে ডেকে নিয়ে তাদের উঠোনের পিছনকোণায় আসে । সেখানে কাদার মধ্যে মুখ গুঁজে বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়াে পড়ে আছে । তার শরীরের দিকে তাকিয়ে পেলাইও ও এলিসেন্দা হতভম্ব হয়ে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকে । তারাই হল চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা হতভম্ব দর্শক ।
[        ] কাদার মধ্যে মুখ গুঁজে পড়ে থাকা বিশাল ডানাওয়ালা থুরথুরে বুড়াের পরনে ন্যাকড়াকুড়ুনির পােশাক । তার টাক - পড়া চকচকে মাথায় কয়েকটা মাত্র বিবর্ণ চুল । ফোগলা মুখে খুব কম দাঁত ।এককালে শরীরে জাকজমক থাকলেও এখন তার করুণ দশা প্র-প্রপিতামহের । জাকজমকের ছিটেফোঁটা তার শরীরে নেই । উধাও হয়েছে । তার বিশাল ডানা অতিকায় শিকারি পাখির ডানার মতাে । নােংরা, তা ছাড়া অর্ধেকটা পালক খসা । কাদায় জট পাকিয়েছে চিরকালের মতাে ।





রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২

দেবদূত সম্পর্কে পাদ্রে গোনসাগার ভূমিকা সংক্ষেপে বর্ণনা করাে ।


একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer দেবদূত সম্পর্কে পাদ্রে গোনসাগার ভূমিকা সংক্ষেপে বর্ণনা করাে debdut somporke padre gonosagar bhumika songkhepe bornona koro


উত্তর : সকাল সাতটার আগেই পাদ্রে গােনসাগা ছুটে এলেন হন্তদন্ত হয়ে দেবদূতকে দেখার জন্যে । পাদ্রে গােনসাগা সােজা বেড়ার ধারে এসে দাঁড়িয়ে দেবদূতকে জেরা করবার জন্যে কী কী প্রশ্নোত্তর করা হবে তা ভেবে তৈরি হলেন । তারপর দরজাটা খুলে দিতে বললেন । যাতে কাছ থেকে দেবদূতকে খুঁটিয়ে দেখে নিতে পারেন । ভিতরে গিয়ে পাদ্রে গােনসাগা লাতিনে সুপ্রভাত জানালেন দেবদূতকে ।দেবদূতের কাছে জগতের ধৃষ্টতা ও ঔদ্ধত্য অচেনা । কাজেই সে তার প্রাচীন চোখ তুলে গুনগুন করে তার ভাষায় কী যেন বলল । তাতেই পাদ্রে মশায়ের ক্ষোভের শেষ নেই । তিনি তাকে জোচ্চোর ফেরেববাজ বলে সন্দেহ প্রকাশ করলেন । ঈশ্বরের ভাষা যে বােঝে না, ঈশ্বরের উজির - নজিরদের সম্ভাষণ করতে যে জানে না, সে ঈশ্বরের দূত হয় কী করে ? কাছ থেকে দেখে তাঁর মনে হল চেহারায় বড্ড মানুষ মানুষ দেখতে । ডানা দুটির হতশ্রী অবস্থা দেবদূতের পরিচয় দিচ্ছে না । তিনি তারপর মুরগির খাঁচা থেকে বেরিয়ে এলেন । দেবদূত সম্পর্কে সমবেত দর্শকদের সতর্কবাণী শােনালেন । এ কথাও বললেন যে, ছলাকলাহীন সাদাসিধে ভালাে মানুষ হওয়ার ঝুঁকি কতটা । শয়তানের বিষম বদভ্যেস আছে রােমান ক্যাথলিকদের হুল্লোড়ে উৎসবে এসে আচমকা ল্যাং মেরে ফায়দা লােটার । তিনি যুক্তি দিয়ে বােঝানাের চেষ্টা করলেন যে, ডানার দিক থেকে বাজপাখি ও উড়ােজাহাজের তফাত বােঝার ক্ষমতা না থাকলে দেবদূতকে শনাক্ত করা তাদের । পক্ষে সহজ ব্যাপার নয় । তিনি এ কথাও দিলেন যে,বিশপকে এ মর্মে চিঠি দেবেন যে আর্চবিশপ লেখেন । আর্চবিশপকে লিখবেন সর্বোচ্চ মােহান্তকে ,যাতে উচ্চতম আদালত থেকে দেবদূত  সম্পর্কে সর্বাধিনায়কের চূড়ান্ত রায়টি পাওয়া যায় ।



শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২

‘জ্ঞান কোথায় গেল ?’ —জ্ঞানের অভাব ‘ শিক্ষার সার্কাস ’ কবিতায় কীভাবে ব্যঞ্জিত হয়েছে ?


একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer জ্ঞান কোথায় গেল জ্ঞানের অভাব শিক্ষার সার্কাস কবিতায় কীভাবে ব্যঞ্জিত হয়েছে sikkhar sarkas kobitai kivabe banchito hoyeche

উত্তর :  খ্যাতনামা কবি ও শিক্ষাবিদ আইয়াপ্পা পানিকর এদেশীয় শিক্ষার ছবি ‘শিক্ষার সার্কাস’ কবিতায় চমৎকার এঁকেছেন । এদেশীয় শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষার শুরু থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্লাসের পর ক্লাস টপকে এগােতে থাকে । প্রথমের পর দ্বিতীয় , দ্বিতীয়ের পর তৃতীয় । এভাবে যেন সিঁড়ির ধাপ ভেঙে এক , দুই, তিন - এর পর চারে ওঠা । বিদ্যার্থীদের এ যেন ধাপ ভাঙার খেলা । কে কাকে পিছনে ফেলে এগােতে পারে যেন তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা । প্রাথমিক স্তরের সব শ্রেণি পার হওয়ার পরেও কিন্তু এগিয়ে চলা থামে না । 


[        ]  অধ্যাপক পানিকর সব শিক্ষাকে একটি সার্কাস বলেছেন । সার্কাস হল ক্রীড়াচক্র । চক্রাকার বা বৃত্তাকার ক্রীড়াক্ষেত্রের চারদিকে গ্যালারিতে দর্শকেরা বসে খেলা দেখে । মাঝে খেলার জায়গায় খেলােয়াড়রা ঘােড়া প্রভৃতি জীবজন্তু ঘুরে ঘুরে খেলা দেখায় । প্রতিযােগিতা কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ থাকে খেলা দেখানাের মধ্যে । কে কাকে টপকে যাবে এ মরিয়াপনা খেলােয়াড়দের মধ্যে যেমন থাকে , তেমনি শিক্ষায় শ্রেণি টপকানাের মধ্যেও থাকে একই রকমের প্রতিযােগিতার জেদি মনােভাব । তাই কবি বলেছেন , ‘যার সাহায্যে আমরা পরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হই ।’ ঠিকই । আমরা শ্রেণির পর শ্রেণি টপকে শিক্ষার উচ্চস্তরে পৌঁছে যাই । কত ডিগ্রি ডিপ্লোমা আমাদের ঝােলায় এসে যায় । কিন্তু প্রকৃত জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে যে শিক্ষা , তা কি শিক্ষার্থীপায় ?

[       ]  দুঃখের কথা , আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় জ্ঞানার্জনের ঘাটতি থেকে যায় বলেই কবির প্রশ্ন  ‘জ্ঞান কোথায় গেল ?’ বর্তমান শিক্ষায় শংসাপত্র এক কাঁড়ি মেলে । কিন্তু প্রকৃত জ্ঞানার্জন থাকে অধরা । কবি রূঢ় সত্য উচ্চারণ করতে দ্বিধা করেননি । জ্ঞানার্জনের নামে এদেশীয় শিক্ষা এক প্রচণ্ড ধোঁকাবাজি । ডিগ্রির তকমা লাভের জন্য কী মরিয়াপনা চেষ্টা । কত কত টিউশন । প্যাকেজ ভিত্তিতে কত কত নােট গলাধঃকরণ করে পরীক্ষা বৈতরণি পার । ওই শুষ্ক বিচ্ছিন্ন শিক্ষায় জ্ঞান লাভের দিকটা থাকে উপেক্ষিত । প্রকৃত জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে যে শিক্ষা, সে শিক্ষা থাকে অবহেলিত । 







বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০২২

আমাদের দেশে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে ‘শিক্ষার সার্কাস’ কবিতায় কবির অনাস্থার কারণ কি ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমাদের দেশে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে শিক্ষার সার্কাস কবিতায় কবির অনাস্থার কারণ কি sikhar sikkhas kobitai kobir anasthar karon ki


উত্তর : কবি আইয়াপ্পা পানিকর ছিলেন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ । সারাজীবন অধ্যাপনা করেছেন । কাজেই এদেশীয় বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার প্রকৃত পরিচয় তিনি জানতেন । তার বাইরের ও ভিতরের রূপ ও চেহারা তাঁর অজানা ছিল না । তিনি ‘শিক্ষার সার্কাস’ কবিতায় এদেশীয় বর্তমান শিক্ষার বাইরের ও ভিতরের রূপটিকে শ্লেষাত্মক ভঙ্গিতে চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছেন । 

[          ] শিক্ষার্থী ক্লাসের পর ক্লাস উত্তীর্ণ হয়ে তার শিক্ষার ধারাটিকে এগিয়ে নিয়ে চলে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকের দিকে । পরে উচ্চমাধ্যমিকের বৃত্ত টপকে কলেজীয় শিক্ষাস্তরে । এভাবে স্তরের পর স্তর ডিঙিয়ে এগিয়ে চলে শিক্ষার্থীর শিক্ষাধারা । শিক্ষাধারা অনুসরণে শিক্ষার্থীর এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে আছে একে অপরকে টপকে যাওয়ার প্রতিযােগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা । সেজন্য কবি পানিকর শিক্ষাকে বলেছেন সার্কাস , শিক্ষার ক্রীড়াচক্র । চক্রাকারে আবর্তমান শিক্ষার্থী শিক্ষার স্তরের পর স্তর অতিক্রম করে চলমান । কিন্তু শিক্ষা যেহেতু পুথিসর্বস্ব, পরীক্ষার মাধ্যমে ক্লাস টপকানাের  ডিগ্রি ডিপ্লোমা পাওয়ার মরিয়াপনা চেষ্টা তাই শিক্ষা জ্ঞানহীন ,প্রাণহীন , নিরানন্দ ও নীরস । নীরস ও জ্ঞান অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করে , অন্তরকে আলােকিত করে, মানবিক গুণে সমৃদ্ধ করে ,তার চর্চা হয় না এদেশীয় শিক্ষায় । কাজেই জ্ঞানচর্চার নামে এক মস্ত ধোঁকাবাজি চলে । ধোকা মানেই ধাপ্পা বা ফাঁকি । তাই উচ্চশিক্ষিত হয়েও কত মানুষ অমানুষ থেকে যায় ।






বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০২২

‘মাঝে মাঝে চলেও না দিন দুপুররাতে ’ - কাদের দিন চলে না ? মাঝে মাঝে দিন না চলার কী কারণ হতে পারে বলে তােমার মনে হয় ? ‘দুপুররাতের’ অর্থ কী ? দুপুররাতে বাড়ি ফেরে কেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer মাঝে মাঝে চলেও না দিন দুপুররাতে কাদের দিন চলে না মাঝে মাঝে দিন না চলার কী কারণ হতে পারে বলে তােমার মনে হয় দুপুররাতের অর্থ কী দুপুররাতে বাড়ি ফেরে কেন majhe majhe choleo na din dupurrate kader din chole na majhe majhe din na cholar ki karon hote pare bole tomar mone hoi dupurrater artho


উত্তর :  উদ্ধৃতাংশটি কবি জয় গােস্বামীর লেখা ‘ নুন কবিতার ষষ্ঠ স্তবকের প্রথম চরণ । এতে কথিত মাঝে মাঝে যাদের দিন চলে না, তারা হল নিম্নবিত্ত শ্রমজীবী মানুষ ।
[        ]  এরা ভূমিহীন সম্পদহীন দিনমজুর । শরীর খাটালে তবে রােজগার । দিনের রােজগারের ওপর দিনের খাওয়া -পরার সংস্থান । শরীর আর শ্রমই হল এদের দিন চলার মূলধন । শরীর শ্রম করার উপযােগী না থাকলে রােজগারের ঘরে শূন্য । তার অর্থ সংসারে অরন্ধন , অনাহার । সেদিন অচল । এ তাে গেল শরীরের ভালাে - মন্দের দিক । শরীর শ্রমের উপযােগী থাকলেই হল না, শ্রমেরও ব্যবস্থা থাকা চাই । অর্থাৎ শ্রম করার উপযােগী কাজ । দিনমজুরের অনেক সময়ই কাজ থাকে না । বেকার দিন কাটাতে হয় । সেরকম অভিশপ্ত দিনগুলিতে সংসার অচল হয়ে পড়ে । সে -অর্থে বলা হয়েছে ‘মাঝে মাঝে চলেও না দিন ।’ সংসারের এমন অভাব - অনটন ও দারিদ্র্যের ভয়াবহতা দিনমজুর শ্রেণির মানুষের সংসারে অতি পরিচিত ঘটনা । অনাহারে অর্ধাহারে দিনযাপনের চিত্রএ ধরনের সংসারে প্রায়শ দেখা যায় । ‘ দুপুররাত ’ হল দ্বিপ্রহর রাত বা মাঝরাত । 


[        ] দিনমজুর বা শ্রমজীবী মানুষ রাত হলে হয় গাঁজায় দম দেয়, নয় তাে চোলাই মদ গলায় ঢালে । নেশাভাঙে আধখানা রাত কাটিয়ে বাড়ি ফেরে । অথবা এখানে ওখানে নানা ঠেকে তাসপাশায় আড্ডা জমিয়ে বাড়ি ফিরতে মাঝরাত কাবার । কিংবা কাজের হিল্লায় নানা জায়গায় ঢু দিয়ে বাড়িমুখাে হতে রাতদুপুর ।