সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

“ শিক্ষার সার্কাস ” কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer শিক্ষার সার্কাস কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা আলােচনা করাে sikkhar sarkas kobitatir namkoroner sarthokota alochona koro


উত্তর : খ্যাতনামা মালয়ালম কবি আইয়াপ্পা পানিকর কবিতার নাম দিয়েছেন ‘শিক্ষার সার্কাস’। কবিতার নামকরণটি কতখানি যথাযথ ও সার্থক,তা আমাদের আলােচ্য বিষয় । 

[       ] কবি সাম্প্রতিক ভারতীয় শিক্ষার চালচিত্র খানিকটা অপ্রত্যক্ষ প্রতিযােগিতার শর্তসাপেক্ষে ও হেঁয়ালির রহস্যঘন ভঙ্গিতে উপস্থাপিত করেছেন । প্রথম শিক্ষার্থীর প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার শর্তসাপেক্ষে দ্বিতীয় শিক্ষার্থীর দ্বিতীয় শ্রেণিতে পৌছানাের ব্যাপারটা নির্ভর করছে । একইভাবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে পাসের ব্যাপারটাও যেন পারস্পরিক শর্তনির্ভর । একটাই ভালাে লক্ষণ যে , একটা চোরা স্রোতের মতাে অপ্রত্যক্ষ প্রতিযােগিতা ভিতরে ভিতরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রিয়াশীল । অবশ্য প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের সব শ্রেণি অতিক্রমের পরেও শিক্ষার্থীর শিক্ষা ব্যাপারে চলমানতা অব্যাহত । কারণ তারপরও শিক্ষার্থীর উক্তি :‘ আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব ।’ অবশ্যই যাবে । কারণ তারপরও মাধ্যমিক , উচ্চমাধ্যমিক , কলেজীয় প্রভৃতি শিক্ষার কত স্তর, কত শ্রেণিই তখনও বাকি ।
[        ] কবি এদেশীয় সাম্প্রতিক শিক্ষা সম্পর্কে ব্যঙ্গ্যোক্তি করলেন : ‘সব শিক্ষা একটি সার্কাস ।’ সার্কাস হল ক্রীড়াচক্র । অর্থাৎ , চক্রাকার বা বৃত্তাকার ক্রীড়াক্ষেত্রে অশ্বাদি ক্রীড়া উপাদান নিয়ে ক্রীড়াবিদরা ক্রীড়া প্রদর্শন করে থাকেন । এদেশীয় শিক্ষার্থীরা যেন সার্কাসের মতাে বৃত্তাকার ক্ষেত্রে শ্রেণির পর শ্রেণি টপকে এগিয়ে চলেছে । শিক্ষার এই চক্রাকার বাঁধাধরা পথটাই হল নীরস , নিরানন্দ , সে অর্থে প্রাণহীন জ্ঞানহীন , পুথিসর্বস্ব । বৃত্তাকার ঘূর্ণায়মান চলমান শক্তি শিক্ষার স্তর ও শ্রেণি টপকাতে সাহায্য করছে ঠিকই । শিক্ষাও হচ্ছে , কিন্তু শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জ্ঞানার্জন, চেতনার বিকাশ — তা অর্জিত হচ্ছে না । শিক্ষার্থীর ব্যর্থতার এই যে ধোকাসর্বস্ব মহা ফাঁকি , সে -কথা কে মনে রাখে ? সবাই আপাতদৃষ্টিতে দেখছে , শিক্ষা এগিয়ে চলেছে চক্রাকার বাঁধাধরা যান্ত্রিক পথে সার্কাসের বৃত্তাকার ক্ষেত্রে ‘মা ফলেষু কদাচন’ ঔদাস্যে । কাজেই ব্যঙ্গার্থে হলেও কবিতার ‘শিক্ষার সার্কাস’ নামকরণ যথাযথ ও সার্থক ।




রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘ আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব । ’ — উদ্ধৃত চরণের মধ্যে কবি - ভাবনার প্রতিফলন বুঝিয়ে দাও ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব উদ্ধৃত চরণের মধ্যে কবি ভাবনার প্রতিফলন বুঝিয়ে দাও ami tobu porer sreenite jabo udhrito choroner modhey kobi vabnar protifolon bujhiye dao


উত্তর : উদ্ধৃত চরণটি প্রখ্যাত মালয়ালম কবি আইয়াপ্পা পানিকরের লেখা ‘ শিক্ষার সার্কাস ' কবিতার অংশবিশেষ । কবি দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেছেন । ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে ওতপ্রােতভাবে জড়িত ছিলেন । শিক্ষাসংক্রান্ত তাঁর কবি -ভাবনা ‘শিক্ষার সার্কাস’ কবিতাটিতে চমৎকার প্রকাশিত হয়েছে । আলােচ্য উদ্ধৃত পঙক্তিটিতে তার প্রতিফলন লক্ষ্যণীয় । 

[         ] এদেশীয় বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে পরীক্ষা পাসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে । একজন অপরজনকে অতিক্রম করে ক্লাসের সিঁড়ির ধাপ ভেঙে ওপরে উঠতে থাকে পরীক্ষায় পাস করে । প্রথম জন প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলে , দ্বিতীয় জন দ্বিতীয় শ্রেণি পার হয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে যায় । এভাবে পরীক্ষায় পাসের খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভালােই জমে ওঠে । তাতেই ‘এক , দুই, তিন ......চার’ গণনা চলে ক্লাস অতিক্রমের । চতুর্থ শ্রেণিতে এসে প্রাথমিক স্তর শেষ হয়ে যায় । ধাপ -ভাঙা অঙ্কের মতাে শিক্ষার্থী পরের ধাপে ওঠার জন্য মনের দৃঢ়তা নিয়ে বলে , ‘ যদি সব শ্রেণি শেষ হয়ে যায়,/আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব ।’ প্রাথমিকের পর মাধ্যমিক , উচ্চমাধ্যমিক , কলেজীয় শিক্ষার কত স্তর, কত শ্রেণি । পরীক্ষায় পাসের পর পাস করতে করতে শিক্ষার্থীর চলমানতা অব্যাহত থাকে ।




শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘গুরু’ নাটক অবলম্বনে ‘গুরু’ চরিত্রের স্বরুপ বিশ্লেষণ করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer গুরু নাটক অবলম্বনে গুরু চরিত্রের স্বরুপ বিশ্লেষণ করাে guru natok abolombone guru choritrer swarup bishleshon koro


উত্তর : ‘ গুরু ’ নাটকে গুরুর উপস্থিতি নেপথ্যে কিংবা স্বশরীরে নাটকের শুরু থেকে শেষ অবধি । তাঁরই নামে নাটকের নামকরণ । তিনি অসীম , অনন্ত  ও সর্বশক্তির আধার । অন্যায়- অবিচারের বিরুদ্ধে, জীর্ণ প্রাণহীন সমাজকে ধ্বংস করার কাজে তিনি খরগহস্ত রুদ্র । জ্ঞান-কর্ম ভক্তির সমন্বয়ে সাধনাকে সফল করে জগৎ ও জীবনকে গতিশীল করার কাজে তিনি শক্তিমান পরমসুন্দর । একাধিক রূপে তাঁর প্রকাশ । তিনি গুরু, তিনি দাদাঠাকুর , তিনিই গোঁসাই । অথচ তিনি একই । জ্ঞানমার্গের আয়তনিকদের কাছে তিনি গুরু, কর্মমার্গের যুনকদের কাছে তিনি দাদাঠাকুর , আর ভক্তিমার্গের দর্ভকদের কাছে তিনি গোঁসাই । প্রকৃতপক্ষে তিন মার্গের মানুষই নিজ নিজ ক্ষেত্রে অচলায়তনের ঘেরাটোপে আবদ্ধ । গুরু তিন রূপে হাজির হয়ে তিনেরই সাধনপথের বাধা সরিয়ে জ্ঞান-কর্ম- ভক্তির ত্রিবেণি সংগম ঘটিয়েছেন । তিনি জ্ঞানমার্গীদের অচলায়তনের পাষাণ প্রাচীর গুঁড়িয়ে দিয়েছেন যােদ্ধৃবেশে । দীর্ঘদিনের প্রথা ও সংস্কারের মূল উপড়ে ফেলেন তিনি । বাইরের জগৎ ও জীবনের সঙ্গে মিলন ঘটিয়ে শুষ্ক প্রাণহীন জ্ঞানচর্চায় তিনি এনেছেন সরসতা ও জীবনের প্রাণােচ্ছ্বাস। 



বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ‘গুরু ’ নাটক অনুসরণে পঞ্চক চরিত্র আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গুরু নাটক অনুসরণে পঞ্চক চরিত্র আলােচনা করাে guru natok anusorone ponchok choritroti alochona koro


উত্তর :  অচলায়তনের মহানিষ্ঠ সাধক মহাপঞ্চকের ভাই । ভাই হলেও পঞক স্বভাবধর্মে মহাপঞকের বিপরীত । অচলায়তনের রুদ্ধ ও দম বন্ধ করা  নিস্প্রাণ পরিবেশের ব্যতিক্রমী চরিত্র । যেন মূর্তিমান বিদ্রোহ । আচার - অনুষ্ঠান  সর্বস্ব অন্ধ সংস্কারের মায়াজালে তার যুক্তিবাদী মন বাঁধা থাকতে নারাজ । শুষ্ক নীরস কঠিন জ্ঞানচর্চার পরিবেশে , নিষ্প্রাণ যান্ত্রিকতার গতানুগতিক জীবনাচরণে সে যেন প্রাণের বন্যা । সে যেন দুরন্ত এক ঝােড়াে হাওয়া । সে যেন মুক্ত প্রাণের স্পন্দন । সত্যের সন্ধানী । সুদূরের পিয়াসি । বাইরের পরিবেশ ও মানুষজনের সঙ্গে তার অবাধ মেলামেশা । যুনক ও দর্ভকপল্লির সঙ্গে তার আত্মিক যােগ । অন্তরের ভাবভাষায় জারিত গান তার কণ্ঠস্থ । সুরের শত ধারায় সে স্বচ্ছন্দে নিজেকে , নিজের অন্তরকে মেলে ধরতে পারে । তখন মনে হয়, সে যেন প্রাণের মূর্ত প্রতীক । প্রাণের রাজ্যে বুঝি তার অবাধ আনাগােনা । 

[        ] আবার এই পঞকই অচলায়তনে যেন শানিত ব্যঙ্গস্ত্র । দাদা মহাপঞকের কঠোর সংযম -নিষ্ঠা, অর্থহীন মন্ত্রাভ্যাস, নীরস জপতপ ও জ্ঞানচর্চার বিরােধী বলেই , ওই সংক্রান্ত প্রসঙ্গ উঠলেই পঞ্চকের ব্যঙ্গাস্ত্র ঝলসে ওঠে । 


[         ] পঞ্চকের ব্যঙ্গের মধ্যেও আছে হাস্যরসের ফল্গুধারা । যেমন— “তােমরা বােঝা বয়ে মর , আমি হালকা হয়ে বসে আছি ।” অথবা “তিনদিনের দিন যে সাপটা এসে আমাকে নিশ্চয় কামড়াবে কথা ছিল , সে আজ পর্যন্ত আমাকে খুঁজে বের করতে পারে নি ।” 


[       ] পঞ্চক স্নেহশীল , মমত্বপরায়ণ । মহাপাপের আশঙ্কায় কান্নায় ভেঙে পড়া সুভদ্রকে সে পরম স্নেহভরে সান্ত্বনা দিয়েছে । ‘চুপ চুপ ! ভয় নেই সুভদ্র, কাঁদছিস কেন ভাই ?’ তাকে আশ্বস্ত করে বলেছে ‘তােমার জয়জয়কার হবে সুভদ্র । তিন - শাে পঁয়তাল্লিশ বছরের আগল তুমি ঘুচিয়েছ ।’


[       ] পঞক বিনম্র স্বভাবেরও । সে দাদাঠাকুরকে বিনীতভাবে বলেছে , “প্রভু,তুমি তাহলে আমার দুইই । আমাকে আমি চালাচ্ছি , আর আমাকে তুমিই চালাচ্ছ ..........।”

 রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘গুরু' নাটকে পঞক একটি অনন্য চরিত্র।


মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

“ আমি তার কান্না আমার বুকের মধ্যে করে এনেছি । ” —বক্তা কে ? কোন্ প্রসঙ্গে, কাকে উদ্দেশ্য করে বক্তা এ কথা বলেছেন ? এই বক্তব্যের মধ্যে বক্তার চরিত্রের কোন্ দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমি তার কান্না আমার বুকের মধ্যে করে এনেছি বক্তা কে কোন্ প্রসঙ্গে কাকে উদ্দেশ্য করে বক্তা এ কথা বলেছেন এই বক্তব্যের মধ্যে বক্তার চরিত্রের কোন্ দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে ami tar kanna amar buker modhye kore anechi bokta ke kon prosonge kake uddeshya kore bokta akotha bolechen


উত্তর . : অচলায়তনের আচার্য অদীনপুণ্য এই উক্তির বক্তা । 

[         ] আচার্য অদীনপুণ্য দকপল্লীতে নির্বাসিত । সেখানে নির্বাসিত পঞকও হাজির । পঞক ও আচার্যের মধ্যে কথা হচ্ছে । আচার্য বলছেন , তাঁর যেন মনে হচ্ছে অচলায়তনে সুভদ্র কাঁদছে । পঞকের বক্তব্য হল অচলায়তন থেকে এতদূরে কান্না শুনতে পাওয়ার কথা নয় । আচার্য মশাই অন্য কিছু শুনছেন । আচার্য আদীনপুণ্য তা মেনে নিলেন , কিন্তু তিনি তাে সুভদ্রের কান্না বুকে করে এনেছেন । এই হল তাঁর উক্তির প্রসঙ্গ ।

[         ] আচার্য অদীনপুণ্যের বক্তব্যের মধ্যে তাঁর চরিত্রের এই দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে যে, বালক সুভদ্রকে প্রায়শ্চিত্তের জন্য । প্রাণহননকারী কঠিন মহাতামস ব্রতের মধ্যে আচার্য বসাতে চান না । কারণ অচলায়তনের পাষাণকারায় দমবন্ধ করা বন্ধন থেকে মুক্তির ডাক তিনি শুনেছেন । তাঁর হৃদয় এখন স্নেহ ও করুণায় কোমল ও দ্রবীভূত । সুভদ্রের অপরাধকে আচার্য নিজের অপরাধ বলে মনে করেছেন । তাই প্রায়শ্চিত্তের প্রতিবাদ করে তিনি বলেছেন , ‘যদি কোনাে অপরাধ ঘটে সে আমার ।’ তিনি নির্বিকার  চিত্তে সুভদ্রের কান্না বুকে নিয়ে দভকপল্লীতে নির্বাসিত হয়েছেন । 






সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘তাঁর রাগটা কীরকম সেইটা দেখার জন্যেই তো একাজ করেছি !’ - বক্তা কে ? এখানে কার রাগের কথা বলা হয়েছে ? তিনি রেগে গেলে কী হয় ? তাঁর রাগের ধরন দেখার জন্য বক্তা কী করেছিল ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer তাঁর রাগটা কীরকম সেইটা দেখার জন্যেই তো একাজ করেছি বক্তা কে এখানে কার রাগের কথা বলা হয়েছে তিনি রেগে গেলে কী হয় তাঁর রাগের ধরন দেখার জন্য বক্তা কী করেছিল tar ragta kirokom seita dekhar jonnoi to akaj korechi bokta ke


উত্তর : এই উক্তির বক্তা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘গুরু’ নাটকের অন্যতম চরিত্র পঞ্চক । 

এখানে মহাময়ূরী দেবীর রাগের কথা বলা হয়েছে ।
 মহাময়ূরী দেবী রেগে গেলে যার ওপর রুষ্ট হন, তাকে তিন দিনের দিন সাপ এসে দংশন করে ।
 

[        ] মহাময়ূরী দেবীর রাগের ধরন দেখার জন্য পঞ্চক ইচ্ছা করে ও মাসে শনিবারে যেদিন মহাময়ূরী দেবীর পুজোর দিন ছিল, সেদিন সে কাঁসার থালায় ইঁদুরের গর্তের মাটি রেখে ,তার ওপর পাঁচটা শেয়ালকাঁটার পাতা আর তিনটে মাসকলাই সাজিয়ে নিজে আঠারাে বার ফু দিয়েছিল । পঞক মহাময়ূরী দেবীর রাগ দেখেনি । তিন দিনের দিন সাপ এসে কামড়ানাের কথা । সাপ এসে তাকে দংশনও করেনি ।
 



রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘তােমার এই অসামান্য সাহস দেখে উপাধ্যায়মশায়ের মুখে আর কথা নেই ।’ এখানে কার সাহসের কথা বলা হয়েছে ? সে কীভাবে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিল ? উপাধ্যায়ের মুখে কথা নেই কেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer তােমার এই অসামান্য সাহস দেখে উপাধ্যায়মশায়ের মুখে আর কথা নেই এখানে কার সাহসের কথা বলা হয়েছে সে কীভাবে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিল উপাধ্যায়ের মুখে কথা নেই কেন tomar ai asamanno sahosh dekhe upadhyaymoshaiyer mukhe ar kotha nei akhane kar sahoser kotha bola hoyeche se kivabe sahosikotar porichoy diyechilo


উত্তর : এখানে যার সাহসের কথা বলা হয়েছে , সে হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘গুরু’ নাটকের ‘ অচলায়তন ’- এর অন্যতম শিক্ষার্থী সুভদ্র । 

[        ] সুভদ্র কৌতূহলবশে অচলায়তনের উত্তরদিকের জানালা খুলে বাইরের দৃশ্য দেখে ।অচলায়তনের বিধান অনুযায়ী এ এক ভয়ানক পাপ কাজ । আচলায়তনের উত্তরদিক একজটা দেবীর । জানালা খােলার ফলে উত্তরদিকের প্রবেশ করা বাতাস নাকি ওদিকের সমস্ত যজ্ঞপাত্রকে কলুষিত করেছে । এজন্য সুভদ্র নাকি মহাপাপী । তাকে কঠোর প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে । কিন্তু পঞকের অভিমত হল ওই কাজ সুভদ্রের পাপকাজ নয়, বরং তার সাহসিকতার পরিচয় । সে ওই কাজের দ্বারা তিনশাে পঁয়তাল্লিশ বছরের আগল দিয়েছে ঘুচিয়ে । অচলায়তনে গুরুর আসার পথ করেছে প্রশস্ত ।  

[        ] উপাধ্যায় কিন্তু পঞকের মতাে উদার ও খােলা মনের মানুষ নন । তিনি নানাবিধ সংস্কারের জালে আবদ্ধ । কাজেই সুভদ্রের অত বড়াে পাপ কাজের কথা শুনে তিনি স্তম্ভিত ও বাকরুদ্ধ । তিনি ভেবে পাচ্ছেন না ওই মহাপাপের কী প্রায়শ্চিত্ত হতে পারে ! অচলায়তনই বা কতখানি অশুচি হয়েছে ? অশুচিতা দূর করে কীভাবে শুচিতা ফিরে আসবে ।
 


শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

মহাপঞকের সঙ্গে আচার্য অদীনপুণ্যের বিরােধ বাধল কেন ? কে , কোথায় অদীনপুণ্যের নির্বাসন দিলেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer মহাপঞকের সঙ্গে আচার্য অদীনপুণ্যের বিরােধ বাধল কেন কে কোথায় অদীনপুণ্যের নির্বাসন দিলেন mohaponchoker songe adinpunner birodh badhlo keno ke kothay adinpunner nirbashon dilen


উত্তর : একটি সমস্যাই নাট্যকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘গুরু' নাটকের শুরু থেকে শেষ অবধি প্রবহমান ঘটনাবলিকে প্রত্যক্ষ কিংবা পরােক্ষভাবে প্রভাবিত করেছে । ঘটনাটি হল অচলায়তনের বালক সুভদ্র খানিকটা কৌতহূলের বশে আয়তনের উত্তরদিকের জানালা খুলে বাইরের দৃশ্য দেখে ফেলেছে । ওদিকটা হল একজটা দেবীর । খােলা জানালা ওদিকের আলাে -বাতাস অচলায়তনের মন্ত্রপূত বাতাসকে নাকি কলুষিত করেছে । অশুচি হয়েছে অচলায়তন ও আয়তনিকরা । কাজেই এই মহাপাপের জন্য বালক পুরােপুরি দায়ী । মহাপাপী সুভদ্রকে প্রায়শ্চিত্ত করে পাপক্ষালন করতে হবে । প্রায়শ্চিত্তের বিধান উপাধ্যায়, উপাচার্য কারও জানা নেই বা স্মৃতিতে নেই । মহাপঞক একমাত্র ভগবান জ্বলনানন্তকৃত আধিকর্মিক বর্ষায়ণে পেয়েছেন ওই পাপের প্রায়শ্চিত্তের বিধান । পাপীকে ছ -মাস ধরে মহাতামস সাধন করতে হবে । এই প্রায়শ্চিত্তের সমস্যা নাটকের উল্লিখিত সমস্যা , যার কথা প্রথমেই বলা হয়েছে । 

[         ] মহাতামস সাধন প্রায়শ্চিত্ত বড়ােই কঠিন । ছ- মাস অন্ধকার বন্ধ ঘরে থাকতে হবে বন্দি হয়ে । আলাের এক কণা রশ্মিও যেন সেখানে ঢুকতে না পারে । কারণ আলাে দিয়ে যে পাপ কাজ করা হয়েছে অন্ধকার দিয়ে তার ক্ষালন হবে । প্রায়শ্চিত্ত নিঃসন্দেহে প্রাণঘাতী । পঞ্চক প্রথম থেকেই সুভদ্রকে রক্ষা করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । আয়তনের কর্তৃত্বে থাকা আচার্যও হয়েছেন প্রায়শ্চিত্তের বিরােধী । কারণ আচার্য জানেন অচলায়তনে অনেক ভুল - ত্রুটিও অন্যায় কাজ হচ্ছে । কিন্তু তা সংশােধনের মতাে সাহসী পদক্ষেপ নিতে তিনি পারেননি । সে- পরিতাপ ও অনুশােচনা তাঁকে মনের দিক থেকে বিদ্ধ করেছে । এবার আর সমর্থন করে অন্যায়ের বােঝা  বাড়াতে চান না । তিনি সুভদ্রের প্রায়শ্চিত্তের ব্যাপারে সম্মতি দিলেন না । 
[          ] তাতেই বিরােধ বাধল উপাধ্যায়, উপাচার্য ও মহাপঞকের সঙ্গে । উপাধ্যায় বললেন , ‘তুচ্ছ  মানুষের প্রাণ আজ আছে কাল নেই , কিন্তু সনাতন ধর্মবিধি তাে চিরকালের ।’ মহাপঞ্চক প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে মন্তব্য করলেন যে ,সুভদ্রকে বাঁচাতে গিয়ে আচার্য সনাতন ধর্মকে বিনাশ করবেন । আচার্যের এরকম বুদ্ধিবিকার বিস্ময়কর । তাঁকে আচার্য বলে আর গণ্য করাই চলে না । আচার্য বুঝতে পারলেন আয়তনিকদের সামনে তাঁর বিচারের দিন এসেছে । তিনি তাঁর অপরাধের কথা স্বীকার করে প্রায়শ্চিত্ত করতে প্রস্তুত বলে জানালেন । তবে তিনি সুভদ্রের প্রায়শ্চিত্তের আদেশ দিলেন না । 

[        ] স্থবিরপত্তনের রাজার কাছে আচার্যের শাস্ত্রবিরােধী কাজের অভিযােগ উঠল । রাজা আচার্যকে দর্ভকপল্লিতে নির্বাসিত করলেন । অচলায়তনের আচার্যের পদ পেলেন মহাপঞ্চক । শেষাবধি মহাপঞক ও আচার্যের বিরােধের ফল দাঁড়াল এই । 

 




বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

“একটু উৎপাত হলে যে বাঁচি ”—কে বলেছে ? কোন্ উৎপাত ? সে উৎপাত চায় কেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer একটু উৎপাত হলে যে বাঁচি কে বলেছে কোন্ উৎপাত সে উৎপাত চায় কেন aktu utpat hole je bachi ke boleche kon utpat se utpat chai keno

উত্তর : এ কথা বলেছে পঞ্চক ।
[       ] ‘উৎপাত’ বলতে গুরুর উপস্থিতিতে প্রবল আলােড়ন । পঞক উৎপাত চায়, কারণ পুথিসর্বস্ব শিক্ষার  চায় জগদ্দল পাথর শিক্ষার্থীদের মনের ওপর চেপে বসেছে । পুথিনির্ভর শুষ্ক নীরস শিক্ষা জীবনের আনন্দ - উল্লাস, সরসতা ও সজীবতাকে গ্রাস করে জীবনকে জড়বৎ নিষ্প্রাণ করে তুলেছে । পদে পদে নানা বিধান ও নিয়মকানুনের শিকল আঁটোসাঁটো করে চেপে ধরে প্রাণ ওষ্ঠাগত করেছে । তাই অচলায়তনের ভিত ধরে প্রচণ্ড কম্পন বা উৎপাতের প্রয়ােজন । এই প্রচণ্ড নাড়া বা কম্পনই স্থবিরত্ব দূর করে প্রাণের স্পন্দন ফিরিয়ে আনবে । গুরুই পারেন ওই কাক্ষিত বাসনা পূর্ণ করতে । 




বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২

“উনি গেলে তােমাদের অচলায়তনের পাথরগুলাে সুদ্ধ নাচতে আরম্ভ করবে , পুঁথিগুলাের মধ্যে বাঁশি বাজবে । ” — বক্তা কে ? ‘উনি’ বলতে কাকে চিহ্নিত করা হয়েছে ? উক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer উনি গেলে তােমাদের অচলায়তনের পাথরগুলাে সুদ্ধ নাচতে আরম্ভ করবে পুঁথিগুলাের মধ্যে বাঁশি বাজবে বক্তা কে উনি বলতে কাকে চিহ্নিত করা হয়েছে উক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে uni gele tomader acholaitoner pathorgulo sudho nachte aromvo korbe puthigulor modhey banshi bajbe


উত্তর : এই উক্তির বক্তা হল প্রথম যুনক । 

‘ উনি ’ বলতে দাদাঠাকুরকে চিহ্নিত করা হয়েছে ।
[        ] দাদাঠাকুর উদার ও মুক্তপ্রাণের প্রতীক । তিনি সবরকম আচার অনুষ্ঠান , মন্ত্রতন্ত্র, বিধিবিধানের আগল বা বাধা ভেঙে প্রাণের প্রবাহ বইয়ে দেন । প্রথম যুনকের কথা হল দাদাঠাকুর অচলায়তনে গেলে তাঁর স্পর্শে পাথরগুলি নাচতে শুরু করবে । পুথিগুলিতে বাঁশির সুর ধ্বনিত হবে । অর্থাৎ, তাঁর ছোঁয়ায় অচলায়তনের নিষ্প্রাণ পাথর ও পুথিগুলি প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে । আচার - অনুষ্ঠানের আধিক্য , জপতপ , মন্ত্রতন্ত্রের পেষণ ও শুষ্ক পুথিসর্বস্বতার যে নিষ্প্রাণতা তা নতুন প্রাণের স্পর্শে ও শিহরণে সঞ্জীবিত হয়ে উঠবে ।