বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ‘গুরু ’ নাটক অনুসরণে পঞ্চক চরিত্র আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গুরু নাটক অনুসরণে পঞ্চক চরিত্র আলােচনা করাে guru natok anusorone ponchok choritroti alochona koro


উত্তর :  অচলায়তনের মহানিষ্ঠ সাধক মহাপঞ্চকের ভাই । ভাই হলেও পঞক স্বভাবধর্মে মহাপঞকের বিপরীত । অচলায়তনের রুদ্ধ ও দম বন্ধ করা  নিস্প্রাণ পরিবেশের ব্যতিক্রমী চরিত্র । যেন মূর্তিমান বিদ্রোহ । আচার - অনুষ্ঠান  সর্বস্ব অন্ধ সংস্কারের মায়াজালে তার যুক্তিবাদী মন বাঁধা থাকতে নারাজ । শুষ্ক নীরস কঠিন জ্ঞানচর্চার পরিবেশে , নিষ্প্রাণ যান্ত্রিকতার গতানুগতিক জীবনাচরণে সে যেন প্রাণের বন্যা । সে যেন দুরন্ত এক ঝােড়াে হাওয়া । সে যেন মুক্ত প্রাণের স্পন্দন । সত্যের সন্ধানী । সুদূরের পিয়াসি । বাইরের পরিবেশ ও মানুষজনের সঙ্গে তার অবাধ মেলামেশা । যুনক ও দর্ভকপল্লির সঙ্গে তার আত্মিক যােগ । অন্তরের ভাবভাষায় জারিত গান তার কণ্ঠস্থ । সুরের শত ধারায় সে স্বচ্ছন্দে নিজেকে , নিজের অন্তরকে মেলে ধরতে পারে । তখন মনে হয়, সে যেন প্রাণের মূর্ত প্রতীক । প্রাণের রাজ্যে বুঝি তার অবাধ আনাগােনা । 

[        ] আবার এই পঞকই অচলায়তনে যেন শানিত ব্যঙ্গস্ত্র । দাদা মহাপঞকের কঠোর সংযম -নিষ্ঠা, অর্থহীন মন্ত্রাভ্যাস, নীরস জপতপ ও জ্ঞানচর্চার বিরােধী বলেই , ওই সংক্রান্ত প্রসঙ্গ উঠলেই পঞ্চকের ব্যঙ্গাস্ত্র ঝলসে ওঠে । 


[         ] পঞ্চকের ব্যঙ্গের মধ্যেও আছে হাস্যরসের ফল্গুধারা । যেমন— “তােমরা বােঝা বয়ে মর , আমি হালকা হয়ে বসে আছি ।” অথবা “তিনদিনের দিন যে সাপটা এসে আমাকে নিশ্চয় কামড়াবে কথা ছিল , সে আজ পর্যন্ত আমাকে খুঁজে বের করতে পারে নি ।” 


[       ] পঞ্চক স্নেহশীল , মমত্বপরায়ণ । মহাপাপের আশঙ্কায় কান্নায় ভেঙে পড়া সুভদ্রকে সে পরম স্নেহভরে সান্ত্বনা দিয়েছে । ‘চুপ চুপ ! ভয় নেই সুভদ্র, কাঁদছিস কেন ভাই ?’ তাকে আশ্বস্ত করে বলেছে ‘তােমার জয়জয়কার হবে সুভদ্র । তিন - শাে পঁয়তাল্লিশ বছরের আগল তুমি ঘুচিয়েছ ।’


[       ] পঞক বিনম্র স্বভাবেরও । সে দাদাঠাকুরকে বিনীতভাবে বলেছে , “প্রভু,তুমি তাহলে আমার দুইই । আমাকে আমি চালাচ্ছি , আর আমাকে তুমিই চালাচ্ছ ..........।”

 রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘গুরু' নাটকে পঞক একটি অনন্য চরিত্র।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন