‘গুরু’ নাটকে মােট কটি গান আছে ? নাটকটিতে সংগীতের ভূমিকা আলােচনা করাে ।
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ‘গুরু’ নাটকে সাতটি গান আছে ।
[ ] রবীন্দ্রনাথের ‘ অচলায়তন ’ নাটকে তেরােটি গান আছে । অচলায়তনের রূপান্তরিত ‘ গুরু’ নাটকে অচলায়তনের ছটি গান নেওয়া হয়েছে । একটি নতুন গান সংযােজিত হয়েছে ‘গুরু’নাটকের শেষে । ‘গুরু’ নাটকে নাট্যকার গানের সংখ্যা কমিয়ে এনেছেন সম্ভবত নাটককে সংক্ষিপ্ত, গতিময় ও নাট্যদ্বন্দ্বকে তীক্ষ্ণতর করার উদ্দেশ্যে ।
[ ] ‘গুরু’ নাটকের প্রথম গানটি পঞকের । গান গাইতে গাইতে পঞকের প্রবেশ । গানটি আট চরণের । চারভাগে গানটি গাওয়া 1হয়েছে সংলাপের মাঝে মাঝে । দীর্ঘদিন পরে গুরু যে অচলায়তনে আসছেন , পঞকের গানের মধ্যে তা আভাসিত । গুরুর জন্য, ব্যাকুলতা , তা প্রকাশিত আকাশে । তাঁর আগমনের বার্তা বাতাসে । এভাবে গুরুর আগমনবার্তা অচলায়তনের সর্বত্র প্রচারিত ।
[ ] প্রথম গানের মতাে দ্বিতীয় গানটিও পঞকের একক কণ্ঠে । অপূর্ব এক নাটকীয় পরিস্থিতিতে গানটি গেয়েছে পঞ্চক , অবশ্য আরও অন্যান্য আয়তনিকদের সঙ্গে নৃত্য সহযােগে । অচলায়তনের জীর্ণ পুথিসর্বস্ব নীরস নিষ্প্রাণ জীবন থেকে মুক্তির জন্যে আচার্য গুরুর কাছে কামনা করেছেন হৃদয়ের বাণী ,প্রাণকে প্রাণ দিয়ে জাগিয়ে তােলার শক্তি । পঞকেরও একই কামনা । তাই তার নৃত্যসহ উদাত্ত কণ্ঠে গান : ‘ওরে ওরে ওরে আমার মন মেতেছে ......’ তৃতীয় গানও পঞকের একক কণ্ঠে, অবশ্য তার পিছনে যুনকরা দলবদ্ধ হয়ে নৃত্য করেছে । পাহাড়- মাঠের মুক্ত পরিবেশে মুক্তির সন্ধানে পঞক । পরের গান যুনকের । তারা মনের আনন্দে চাষ করে । চাষ করাই তাদের কর্ম ও ধর্ম । পরের গানও তাদের । যার মর্মার্থ হল তাদের কাজের বাছবিচার নেই । তারা সব কাজেই হাত লাগায় ।কর্মমার্গই হল তাদের সাধন পথ । দর্ভকদের গান পরের গান । তারা শাস্ত্র জানে না, তারা নামগান করে । সেই নামগানই তারা শােনায় । নাটকের শেষ গান একেবারে সমাপ্তি লগ্নে । যুনক ও দর্ভকেরা গুরুকে প্রদক্ষিণ করে গুরুর জয়গান গেয়েছে — ‘ভেঙেছে দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়/তােমার হউক জয় ।’
কোন মন্তব্য নেই