“ তবু লক্ষ যােজন ফাঁক রে । ” — কার সঙ্গে এই ব্যবধান ? একত্র থেকেও এই ব্যবধানের । তাৎপর্য কী ?
উত্তর : পড়শি আর লালন উভয়ের মধ্যে লক্ষ যােজন ব্যবধান ।
লালনের পড়শি হলেন তাঁর ‘ মনের মানুষ ’। লালন হৃদয় উজাড় করে তাঁকে ভালােবাসেন । হাসিকান্নার খেলাও চলে তাঁর সঙ্গে । কখনও বা ‘দেখা দিয়ে ওহে রসুল ছেড়ে যেও না’ বলে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন লালন । ভক্ত ভগবানের এই যে পরস্পরের ভালােবাসা , তার মধ্য দিয়ে যে প্রেম ভাব, তাতে কবি লালন পড়শিকে দেখতে না পেলে উতলা হয়ে বলেন , ‘আমি একদিনও না দেখিলাম তারে’ অথচ পড়শি বা লালনের ‘মনের মানুষ’ তাঁর কাছাকাছি আরশিনগরে অর্থাৎ, তাঁর বােধবুদ্ধির মধ্যে ‘চিৎ’ বা আত্মা রূপে বিরাজ করছেন । এভাবে পড়শি আর লালন একত্রে থাকেন । সেই অর্থে ভক্ত ও ভগবান একাত্ম । তবু তাঁদের উভয়ের মধ্যে আছে লক্ষ যােজন ব্যবধান । আসলে দেহ ও চেতনা ( পড়শি ) একত্রে থাকে বটে, কিন্তু দেহকে সাধনায় পৃথক দেখা যায় । যার নাম স্বরূপদর্শন । প্রকৃতপক্ষে ভাবাধিক্যে দেহ আর চেতনার মধ্যে সৃষ্টি হয় লক্ষ যােজন ব্যবধান ।
কোন মন্তব্য নেই