তেলেনাপোতার অভিযাত্রীরা যে ঘরে রাত কাটায় তার বর্ণনাসহ কীভাবে রাত কাটাল লেখাে ।
উত্তর : অপেক্ষাকৃত বাসযােগ্য ঘরে আশ্রয় : তেলেনাপােতার ধ্বংসস্তুপের মধ্যে একটি ভাঙাচোরা অট্টালিকার অপেক্ষাকৃত বাসযােগ্য ঘরে তেলেনাপােতার তিন যাত্রীর থাকার ব্যবস্থা হল । তাদের জন্য একটি ভাঙা লণ্ঠন, এক কলশি জল গাড়ােয়ান রেখে গেল ।
আশ্রিত স্থানের পরিবেশ : ভাঙাচোরা বাড়িটি বেশ বড়ােসড়াে । তার ভাঙা ছাদ , ধসে -পড়া দেয়াল , মণিহীন চোখের কোটরের মতাে পাল্লাহীন জানালা । সবে আশ্রয় -পাওয়া অভিযাত্রীরা বুঝতে পারল বহুযুগ পরে তারাই মনুষ্যজাতির প্রতিনিধি হয়ে আশ্রিত । ঘরে ঝল , জঞ্জাল ও ধুলাে হয়তাে কেউ আগে পরিষ্কার করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে । একটা অস্পষ্ট ভ্যাপসা গন্ধ ঘরময় ছড়িয়ে আছে । সামান্য চলাফেরা করলেই ছাদ ও দেয়াল থেকে পলেস্তারা ঝরে পড়ে অভিশাপের মতাে । ঘরের আধিপত্য নিয়ে দু-তিনটে চামচিকা রাতভর অভিযাত্রীদের সঙ্গে বিবাদে রত ।
পানাসক্ত ও নিদ্রাগত বন্ধু, অন্ধ লণ্ঠন ও মশকের দল : অভিযাত্রী নায়কের দুই সঙ্গী বন্ধুর একজন পানরসিক , অপরজন নিদ্রাবিলাসী । নিদ্রাবিলাসী বন্ধুটি মেঝেতে শতরঞ্জি পাতার সঙ্গে সঙ্গে শরীরটা ফেলে নাসিকা গর্জন শুরু করে । আর পারসিক বন্ধুটি পানপাত্রে নিজেকে সঁপে দেয় । ভাঙা লণ্ঠনটি কালিমালিপ্ত হতে হতে অন্ধ হয়ে যায় । আর মশকের দল হয়তাে বেতার সংকেতে নবাগতদের আগমনের সুসংবাদ পেয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে এসে পড়ে । ম্যালেরিয়া দেবীর অদ্বিতীয় বাহন অ্যানােফিলিসও এসে যায় ।
ছাদের অভিজ্ঞতা , বাকি রাত ঘুমিয়ে কাটানাে : নায়ক ইট বা টালি ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় ভয় না পেয়ে ছাদে উঠে যায় । নায়কের চোখে হঠাৎ পড়ে জানালায় ক্ষীণ আলাের রেখা আড়াল করে কোনাে রহস্যময়ী ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে । এসব বিস্ময় নিয়ে নায়ক সন্তর্পণে নীচে নেমে দুই বন্ধুর পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে রাত কাটিয়ে দেয় ।
কোন মন্তব্য নেই