সতীনাথ ভাদুড়ীর লেখা ‘ডাকাতের মা’ গল্পের ঘটনাগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো ।
উত্তর : ছেলে ও স্বামীর ডাকাত পরিচয় নিয়ে গর্ব , চৱম অভাব - অনটন , সৌখীর ঘরে ফেরা : ডাকাতের বউ ও ডাকাতের মা বলে সৌখীর বুড়ি মা কখনও নিজেকে ছােটো ভাবেনি । বরং তার গর্ব স্বামী ও পুত্রের ডাকাত পরিচয় নিয়ে । তাদের সাহস ,মেজাজ, শক্তি ও পৌরুষত্ব ছেলের নিয়ে । ছেলের বউ ও নাতির প্রতি যেমন তার স্নেহ ও মমত্ব, তেমনি নিজের ছেলের প্রতিও । জেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার বছরখানেক আগে এক রাত্রিতে ছেলে ঘরে ফিরবে বুড়ি ভাবতেই পারেনি । চরম অভাব - অনটনের মাঝে বুড়ির দিন কাটছিল । সৌখীর ডাকাত দলের লােক প্রথম দু-বছর কিছু কিছু টাকাপয়সা দিচ্ছিল, পরে হাত গুটিয়ে নেয় । ফলে ভয়ংকর অভাবের মধ্যে পড়ে সৌখীর মা বউ আর নাতিকে বউয়ের বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয় । নিজে বাড়ি বাড়ি খই আর মুড়ি বেচে কোনােরকমে দিন কাটাতে থাকে ।
মাতাদিনের লােটা চুরি ও পরের ঘটনা : এই অবস্থায় সৌখী বাড়ি ফিরে আসায় রাতে তাকে শুধু খই খেতে দেয় । সকালে তাকে কী খেতে দেবে তা ভাবতে গিয়ে মাতাদিন পেশকারের বাড়ি থেকে লােটা চুরি করে । সেই লােটা বাসনের দোকানে বেচে চাল , আলু , সরষের তেল কিনে আনে । ছেলের জন্য উনানে আলুর তরকারি বসিয়েছে , এমন সময় থানার দারােগা ও বাসনের দোকানদারকে নিয়ে মাতাদিন পেশকার বাড়িতে হাজির । স্বামীর আমল থেকে কতবারই তাে সৌখীর মা দারােগা - পুলিশের মােকাবিলা করেছে সাহসের সঙ্গে । এবার কিন্তু চুরির মতাে তুচ্ছ ব্যাপারের লজ্জায় ও ভয়ে যেন সেঁটিয়ে চুপ মেরে থাকে ।
অনুতাপে ও অনুশােচনায় ডুকরে ডুকরে কান্না : সৌখী তখনও ঘুমােচ্ছিল । দারােগার হুংকারে জেগে উঠে সব বুঝতে পেরে মায়ের চুরির অপরাধ নিজের ঘাড়ে তুলে নেয় । বুড়ি তখন চুরির অপরাধ স্বীকার করলেও দারােগা তাতে কান না দিয়ে সৌখীকে ধরে নিয়ে যান । বুড়ি মেঝেয় পড়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদতে থাকে । ওদিকে উনানে বসানাে আলুর তরকারি পুড়ে পাড়াময় গন্ধ ছড়ায় ।
কোন মন্তব্য নেই