শ্রীভগবানের কল্কি অবতাররূপে আবির্ভাবের কাহিনি বর্ণনা করাে
উত্তর : কবি জয়দেব তাঁর ‘ গীতগােবিন্দম ’ কাব্যারম্ভে যে-দশজন অবতারের প্রশস্তি করেছেন , তন্মধ্যে কল্কিই হলেন দশম অবতার । কিন্তু পুরাণমতে কল্কিদেবের আবির্ভাব এখনও ঘটেনি । ঋষিরা মানসচক্ষে তাঁর ভাবী আবির্ভাবের কথা জানতে পেরে পুরাণে তা বিবৃত করেছেন । তাঁরা অন্তদৃষ্টির দ্বারা যা দেখেছেন , তা হল
[ ] কলিকালে আয়ু , বীরত্ব, বল ও তেজ ক্রমেই হ্রাসপ্রাপ্ত হবে । মানুষ কপটাচারী হবে । সত্য পৃথিবী থেকে তিরােহিত হবে । সত্যের হানিতে আয়ুর অল্পতা , আয়ুর অল্পতাবশত বিদ্যার্জনে অক্ষমতা , বিদ্যার অল্পতাহেতু অজ্ঞান , অজ্ঞান থেকে লােভ , লােভ থেকে ক্রোধ, ক্রোধ থেকে মােহ জন্মাবে । মানুষ লােভ , ক্রোধ, মােহ ও কামের বশবর্তী হয়ে পরস্পর পরস্পরের প্রতি জিঘাংসু হয়ে উঠবে । সমস্ত জগৎ হয়ে উঠবে ম্লেচ্ছ । যাগযজ্ঞাদি ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে । মানুষ নিরানন্দ ও নিরুৎসাহ হয়ে উঠবে । জাতিবৈষম্য একেবারে দূরীভূত হবে এবং সকল মানুষ একজাতি হয়ে যাবে । সর্ব বিষয়ে নৈরাজ্য দেখা যাবে ।
[ ] সমগ্র পৃথিবীতে যখন এরূপ বিপর্যয় দেখা যাবে তখন শম্ভল গ্রামে বিষ্ণুযশ নামে এক ব্রাত্মণ জন্মগ্রহণ করবেন । সেই বংশেই কল্কিদেবের আবির্ভাব হবে । তিনি ভার্গবের সকল শাস্ত্র শিক্ষা করে তপস্যার দ্বারা মহাদেবের নিকট সর্বগ অশ্ব ও সর্বজ্ঞ শুক লাভ করবেন । অতঃপর সেই দেবদত্ত অশ্বে আরােহণ করে এবং দেবদত্ত অসি ধারণ করে ম্লেচ্ছদিগকে সমূলে নির্মূল করবেন । তিনি অশ্বমেধ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করে দক্ষিণস্বরূপ ব্রাত্মণদিগকে সমগ্র পৃথিবী দান করবেন । তারপর মহাপ্রলয়ে পৃথিবী লয়প্রাপ্ত হলে কল্কিদেবও অন্তর্হিত হবেন । পরিশেষে পুনরায় সত্যযুগের আবির্ভাব হবে ।
কোন মন্তব্য নেই