রাজহংসের রাজধানীর নাম কী ? এটি কোন্ দেশের রাজধানী ? রাজধানীটির বর্ণনা দাও
উত্তর : রাজহংসের রাজধানীর নাম পুষ্পপুরী । ‘পুষ্পপুরী ’ মগধ দেশের রাজধানী । কথাশিল্পী মহামতি দণ্ডী তাঁর ‘ দশকুমাররচিতম ’ নামক বিশ্ববিশ্রুত গদ্যকাব্যে পুষ্পপুরীর যে মনােজ্ঞ এবং সমৃদ্ধ বর্ণনা দিয়েছেন তা অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক এবং হৃদয়গ্রাহী । কবি যেন বিশ্বের সমস্ত নগরীগুলি কষ্টিপাথরে পরীক্ষা করে এই নগরীটির শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপাদন করেছেন । কবির ভাষায় নগরীটি ছিল “ সমস্ত নগরীনিকষায়মাণা । ”
ধন - জনে পরিপূর্ণ এই নগরীর বিভিন্ন প্রান্তে ছিল অসংখ্য সজ্জিত সুসমৃদ্ধ বিপণি যেগুলি মণিমানিক্যের ছটায় ঝলমল করত । অগাধসলিল রত্নাকর যেমন গর্ভে অসংখ্য রত্ন ধারণ করে আছে , নগরীর বিপণিগুলি সেরূপ মহােজ্জ্বল মণিমাণিক্যগুলি স্ব স্ব বক্ষে ধারণ করে যেন রত্নাকরেরই রূপ অনুকরণ করে আছে । রত্নাকরের গর্ভস্থিত রত্নরাজি অপ্রকাশিত , কিন্তু বিপণিগুলির মহামূল্য অত্যুজ্জ্বল সামগ্রীর পশরা সুসজ্জিত এবং প্রকাশমান । সেদিক দিয়ে রত্নগর্ভ সমুদ্রও নগরীর কাছে যেন হার মেনেছে । মগধে বহু রাজ্য আছে , কিন্তু পুষ্পপুরী সৌন্দর্যে এবং সমৃদ্ধিতে অতুলনীয় । রাজহংসের মতাে প্রবল পরাক্রমশালী রাজা দেশের রক্ষক । সৌভাগ্যবান রাজার আনুকূল্যে রাজ্যটিও সৌভাগ্যযুক্ত । দেশে দারিদ্র্যের লেশমাত্র নেই । সেখানে যাগ -যজ্ঞ ছিল প্রাত্যহিক ব্যাপার । সেখানে বহুবিশিষ্ট ব্রাত্মণ বাস করতেন যাঁরা ছিলেন শাস্ত্রজ্ঞ,বিনয়াদি গুণসম্পন্ন , যশস্বী এবং মহাবিদ্বান । এঁদের দ্বারা দেশের রাজারাও ছিলেন বিদ্যোৎসাহিত এবং নানা শাস্ত্রে পারঙ্গম । সুতরাং , নিঃসন্দেহে বলা যায় রাজ্যে সৌরাজ্য সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল । কবি এইভাবে পুষ্পপুরীর এক মনােজ্ঞ বর্ণনা দিয়েছেন ।
কোন মন্তব্য নেই