নারায়ণের কূর্মরূপ ধারণের পৌরাণিক কাহিনি বিবৃত করাে
উত্তর : দেবগণ সুমেরু পর্বতের শিখরদেশে অবস্থানপূর্বক অমৃতপ্রাপ্তি বিষয়ক মন্ত্রণা করছিলেন । এরূপ মন্ত্রণাকালে নারায়ণ ব্ৰত্মাকে বললেন যে , দেবগণ এবং অসুরগণ একত্র হয়ে সমুদ্র মন্থন করলে সমুদ্র থেকে অমৃত উত্থিত হবে । অতঃপর দেবতাদিগকে বললেন “ হে দেবগণ , সমুদ্র মন্থন করাে । কিন্তু বহুবিধ ঔষধি ও রত্নসমূহ পেয়েও মন্থন থেকে ক্ষান্ত হয়াে না । পরিশেষে অমৃতলাভ হবে ।”
[ ] নারায়ণের বাক্যে দেবগণ ও অসুরগণ সম্মিলিতভাবে সমুদ্র মন্থনে প্রবৃত্ত হন । মন্দর পর্বতকে মন্থন দণ্ড এবং বাসুকিকে মন্থন রঞ্জু করে সমুদ্রমন্থনে যত্নবান হলেন । কিন্তু মন্দর পর্বতের ঘর্ষণে পৃথিবী ব্যথিত হতে লাগলেন । তিনি নারায়ণের শরণাপন্ন হলেন । নারায়ণ পৃথিবীকে রক্ষা করার মানসে স্বয়ং কূর্মরূপ ধারণ করে সমুদ্রে অবতরণ করে মন্দর পর্বতের ভার আপন বিশাল পৃষ্ঠে ধারণ করেন । মন্থনের ফলে একে একে সমুদ্র থেকে চন্দ্র,লক্ষ্মী,উচ্চৈঃশ্রবা নামক অশ্ব , মহােজ্জ্বল কৌস্তভমণি ইত্যাদি বস্তুনিচয় উত্থিত হতে লাগল । পরিশেষে মূর্তিমান ধন্বন্তরি অমৃতপূর্ণ শ্বেতবর্ণ কমণ্ডলু হস্তে নিয়ে সমুদ্র থেকে আবির্ভূত হলেন । দেবতারা অমৃতের সন্ধান পেলেন ।
[ ] এদিকে মন্দর পর্বতের ঘর্ষণের ফলে কূর্মরূপধারী নারায়ণের পৃষ্ঠে চাকার মতাে বড়াে বড়াে ক্ষতের সৃষ্টিহল । পরে ক্ষত শুকিয়ে গেলেও সেই গােলাকার ক্ষতচিহ্নগুলি চিরতরে কূর্মপৃষ্ঠে অঙ্কিত হল । সেইজন্য আজ সকল কূর্মের পৃষ্ঠে ওইরূপ চক্রাকার দাগ পরিলক্ষিত হয় ।
কোন মন্তব্য নেই