‘কর্তার ভূত’ রচনা অবলম্বনে কর্তার চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করাে ।
উত্তর : কর্তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য : কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘লিপিকা ' গ্রন্থ থেকে সংকলিত ‘কর্তার ভূত ’ রচনার কর্তার ভূত হলেন ভূতেদের কর্তা । রচনাটি রূপকধর্মী । কাজেই ‘কর্তার ভূত ’- এর চরিত্রগুলি রূপকাশ্রয়ী । বুড়াে কর্তা তাদেরই একজন । চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে বুড়াে কর্তা কিছু স্বতন্ত্র গুণের অধিকারী । তিনি নিজের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন । তার মধ্যে দেখা যায় মানবিকতার প্রকাশ ।
কিন্তু প্রতি শক্তিমান শাসককে ঘিরে থাকে কিছু স্বার্থান্বেষী পারিষদবর্গ । তারাই স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে তাকে আড়ালে রাখে । তার যে ভালাে গুণ তার প্রকাশ ও প্রয়ােগ হয় বিঘ্নিত। দেশের যারা আত্মসচেতন , মানবদরদি , যুক্তিবাদী ও সমাজসেবী , সেসব মানুষজনকে কর্তার ভূতের ভয় দেখিয়ে কর্তার ভূতের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে । সব জেনেও কর্তামশায় ঠুটো জগন্নাথ হয়ে জনমানবহীন স্থানে ‘রক্তকরবী’- র রাজার মতাে অবস্থান করেন । কর্তামশায়ের ব্যক্তিসত্তার প্রকাশ লক্ষিত হয় না । তিনি জনকল্যাণকর কাজ করতে পারেন না । জনগণকে আত্মসচেতন করার দায়দায়িত্ব পালন করতে অসমর্থ হন । কোনাে বিচ্ছিন্ন লগ্নে নিতান্ত নিরালায় কেউ কেউ তাঁর কাছাকাছি এসে মুক্তি পাওয়ার আবেদন রাখলে , তার পরামর্শ থাকে , ‘ওরে অবােধ ,আমার ধরাও নেই, ছাড়াও নেই , তােরা ছাড়লেই আমার ছাড়া ।’ তাঁর সারকথা হল ভয়ই হল ভূত । ভয় জয় করলেই ভূতও যাবে ছেড়ে ।
কোন মন্তব্য নেই