‘ নীলধ্বজের প্রতি জনা ’ কবিতায় জনা অর্জুনের কাপুরুষতার কী কী দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন ?
উত্তর : মাহেশ্বরী রানি জনার দৃঢ় উপস্থাপনা বিশ্বাস তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন (পার্থ নামেও পরিচিত ) অন্যায় যুদ্ধে জনার প্রিয়পুত্র প্রবীরকে হত্যা করেছেন । পুত্রহস্তা অর্জুনকে তিনি নরনারায়ণ বলে মনে করেন না । তাঁর স্বামী তাঁকে নরনারায়ণরূপে পূজা করছেন শুনে তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, এ কি তাঁর প্রান্তি ?অর্জুনের প্রতি তাঁর বিরূপ ধারণার স্বপক্ষে যুক্তি ও দৃষ্টান্তও খাড়া করেছেন ।
এই প্রসঙ্গে অর্জুনের অবৈধ জন্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জনা । তিনি অর্জুনের মাতা কুন্তীকে স্বৈরিণী আখ্যা দিয়েছেন । তাঁর যুক্তি হল কুলটা বশ্যা মায়ের গর্ভে নরনারায়ণরুপী হৃষীকেশের জন্ম হতে পারে না । শাস্ত্রে বা পুরাণে এরকম কাহিনির উল্লেখ নেই । মহাভারত রচয়িতা বেদব্যাস , যিনি পাণ্ডবদের গুণগান করেছেন , তিনি নিজেও জন্মসূত্রে শুচিশুদ্ধ ছিলেন না, জনার অভিমত । অর্জুন নররূপী নারায়ণ হলে তাঁর স্ত্রী দ্রৌপদী, যার পঞ্চ স্বামী , সেই ভ্রষ্টা রমণী লােকমাতা লক্ষ্মী হন কীভাবে ? তা ছাড়া জীবনভর যেসব অন্যায় কাজ করেছেন , সেগুলি একদিকে যেমন রথীকুলপ্রথা বিরােধী , আর একদিকে তেমনি নরনারায়ণ হওয়ার অনুপযােগী কাজ । যেমন - —ব্রাক্ষ্মণের ছদ্মবেশে স্বয়ংবরসভায় হাজির হয়ে ক্ষত্রিয় যােদ্ধাদের ধোঁকা দিয়ে বিজয়ী হওয়া ; কৃষ্ণের সাহায্য নিয়ে খাণ্ডব দাহন করা , কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে শিখণ্ডীকে দাঁড় করিয়ে বৃদ্ধ পিতামহ ভীষ্মকে নিধন করা , অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্যকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা , কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কর্ণের রথের চাকা মাটিতে পুঁতে গেলে অসহায় কর্ণকে বর্বরের মতাে হত্যা করা ।
কোন মন্তব্য নেই