বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২২

কালিদাসের মেঘদূতম নাটক গীতিকাব্যে যক্ষ কেন মেঘকে দূত হিসেবে নিয়ােগ করতে চাইল

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh কালিদাসের মেঘদূতম নাটকে গীতিকাব্যে যক্ষ কেন মেঘকে দূত হিসেবে নিয়ােগ করতে চাইল jokkho keno meghke dite hisebe niyog korte chailo


উত্তর : ‘ মেঘদূতম্ কাব্যে প্রথমেই আমরা নায়ক বিরহী যক্ষের পরিচয় পাই । যক্ষরাজ কুবেরের সে ছিল এক অনুচর । তরুণ সে , গৃহে তার উদ্ভিন্নযৌবনা নববিবাহিত বধূ । তরুণী প্রিয়ার প্রথম প্রেমের আবেগে সে তখন অভিভূত । তৎকালীন মনের অবস্থা নিয়ে প্রভুর কাজে অবহিত থাকা কোনাে তরুণের পক্ষেই সম্ভবপর নয় । তাই যক্ষের কাজে প্রতিদিন ভুল হতে লাগল । অতঃপর যক্ষপতি রুষ্ট হয়ে এক বছরের জন্য তাকে অলকা থেকে রামগিরি আশ্রমে নির্বাসিত করলেন । অভিশপ্ত যক্ষ মনের দুঃখে রামগিরি আশ্রমে এসে বসবাস করতে লাগল । কিন্তু মন তার পড়ে রইল সেই সুদূর অলকায় , যেখানে তার পরানপ্রিয়া তার বিরহে একাকিনী নয়নাশ্রুজলে কালযাপন করছে । গুরু বিরহভার বক্ষে ধারণ করে গভীর মনস্তাপে তার দিন যেন আর কাটতে চাইছিল না । বেচারি প্রিয়ার জন্য ভেবে ভেবে একেবারে শীর্ণ হয়ে গেছে । তার হাতের বালা ঢিলে হয়ে কখন যে একগাছি বালা মণিবন্ধ থেকে খসে পড়েছে সেদিকে তার খেয়ালই নেই । সে দিনের - পর -দিন রামগিরি শিখরে বসে উত্তরে অলকার পানে চেয়ে স্তব্ধ হয়ে মনে মনে শুধু তার প্রিয়তমার বিরহমলিন রূপ ধ্যান করছে । নিবিড়ঘন -ছায়াতরু-ঘেরা রামগিরি আশ্রম , সে এক রমণীয় পার্বত্যকুঞ্জ । তার প্রতিটি চূড়ায় শ্রীরামচন্দ্রের সুচারু পাদপদ্ম অঙ্কিত রয়েছে । প্রত্যেক গিরিনিঝরিণীটি স্নানার্থিণী জনকতনয়ার পবিত্র অঙ্গ স্পর্শে পুণ্যোদক হয়ে উঠেছে । প্রতি পদক্ষেপে রামগিরি বিরহব্যথাতুর যক্ষকে রাম -সীতার মিলনানন্দে অরণ্যবাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাকে অধিকতর আকুল করে তুলল ।

[        ] নিদারুণ বিরহ যন্ত্রণায় সে যতই কাতর হচ্ছে, ততই ভাবছে তার প্রেয়সী এই বিরহ যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছে তাে ? শাপান্তের পর ফিরে গিয়ে তাকে যক্ষ জীবিত দেখবে তাে ? সে উতলা হয়ে উঠল । যেভাবেই হােক প্রেয়সীকে নিজের কুশল সংবাদটুকু পাঠাতে সে বদ্ধপরিকর । এমন সময় আষাঢ় মাসের প্রথম দিকে আকাশে মেঘের সঞ্চার দেখতে পেল ।মেঘ তাে পূর্ব থেকে উত্তরেই ভেসে চলেছে । তা হলে সে মেঘকেই বার্তাবহরূপে প্রেরণ করতে চাইল । একবারও ভেবে দেখল না মেঘ অচেতন । যে প্রেমােন্মত্ত, যে প্রণয়িণীর বিচ্ছেদে অতিব্যাকুল মিলনের , আকাঙ্ক্ষায় অধীর আত্মহারা , সে চেতন - অচেতনের ভেদাভেদ ভুলে যায় । “কামার্তা হি প্রকৃতিকৃপণাশ্চেতনাচেতনে্যু । ” সুতরাং , যক্ষ মেঘকেই দূতরূপে বরণ করতে স্থিরসংকল্প হয়ে নবপ্রস্ফুটিত কুটজ পুষ্পের অর্ঘ্য রচনা করে মেঘকে স্বাগত জানাল । 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন