‘ যাঃ, টোপ খুলে গেল । হাঙ্গার পালাল ।’ টোপ খুলে হাঙর কীভাবে পালিয়েছিল তা রচনাংশ অবলম্বনে লেখাে ।
উত্তর : স্বামী বিবেকানন্দ ‘ সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার ’ প্রবন্ধে তাঁর ভাষায় কথিত ‘বাঘা’ হাঙরের উপস্থিতি , টোপ খাওয়া ও বড়শি ফসকে পালিয়ে যাওয়ার অপূর্ব বর্ণনা দিয়েছেন । বাঘার উপস্থিতির আগেই দ্বিতীয় শ্রেণির এক ফৌজি হাঙর শিকার করার জন্য ব্যবস্থাদি করে রেখেছেন । জাহাজে খুঁজে-পেতে এক ভীষণ বড়শি জোগাড় করেছেন । তাতে সেরখানেক মাংস টোপ হিসেবে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বাঁধা হয়েছে । বড়শির সুতাে হয়েছে একখানা মােটা কাছি । তাতে ফাতনার জন্য লাগানাে হয়েছে একখানা মস্ত কাঠ । ফাতনাসুদ্ধ বড়শি জলে নামানাে হয়েছে ।
এই প্রস্তুতি নেওয়ার পর কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকতে হয়েছে হাঙরের প্রতীক্ষায় । তারপর জাহাজ থেকে আওয়াজ ওঠে , ওই হাঙর , ওই হাঙর । ‘চুপ চুপ হাঙ্গর পালাবে’ বলে যখন সতর্ক করা হচ্ছে ভিড় -করা দর্শকদের , তখন বৃহৎ ভিস্তির মশকের মতাে চেহারার হাঙর বড়শিতে বাঁধা মাংসের তালটি উদরস্থ করার বাসনায় বড়শির টোপের কাছে হাজির হয় । টোপের কাছে আসার পর হাঙরের মুখ টোপে ঠেকে । বড়শিতে বাঁধা মাংসপিণ্ডটি গিলবার জন্য সে টান দেয় । ল্যাজের ঝাপটা দিয়ে চক্রাকারে ঘুরে কয়েক বারের চেষ্টায় মাংসপিণ্ডটি মুখে নিতেই ৪০/৫০ জন মিলে টান দেয় দড়িতে । প্রাণপণে টান। তার কী শক্তি ! কী মুখব্যাদন ! কী ঝটপট ! এদিকে কাছিতে টান চলেছে । তবে তাড়াহুড়াে করতে গিয়ে হাঙরের মুখে বড়শির টোপ যায় ফসকে । ‘বাঘা’ হাঙর পালায় । সে পালানাের সঙ্গে সঙ্গে ‘আড়কাটী ’ , ‘রক্তচোষা’ , সবই পালায় ।
কোন মন্তব্য নেই