পঞক প্রথমে যুনকের ছোঁয়াছুঁয়ির ব্যাপারে দোলাচলে থাকলেও পরে পরে তার মনে হয় , সে যুনকদের দলের হয়ে যাচ্ছে এবং ওই সূত্রে দাদাঠাকুরের সঙ্গে তার পরিচয় হয় । পঞকের এই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দাও ।
উত্তর : পাহাড় মাঠে পঞ্চক আপন মনে গান গাইছিল । খেয়াল করেনি তার পিছনে কখন থেকে যুনকের দল গানের তালের সঙ্গে পা মিলিয়ে নাচছিল । তাদের দেখে পঞ্চক অবাক হয় । যুনকরা তাকে কাঁধে করে নিয়ে নাচতে চাইলে সে তাদের ছুঁতে নিষেধ করে । কথা প্রসঙ্গে পঞ্চক তাদের জানায়, অচলায়তনে গুরু আসবে । যুনকরা বলে তাদের গুরু নেই । তারা হল দাদাঠাকুরের দলের লােক । পঞ্চক তার পূর্বপুরুষ থেকে জেনে এসেছে , যুনকরা সবরকম কাজ করে । এটাই তাদের সবচেয়ে বড়াে দোষ । এজন্যই নাকি তারা অচ্ছুত । কাঁকুড় , খেসারি এসব চাষ করা নাকি পাপ কাজ । দাদাঠাকুরের কোনাে কিছুতেই নিষেধ নেই । কোনাে বিধিবিধান নেই । তিনি কোনাে বিশেষ দলের নন , তিনি সব দলের শতদল পদ্ম ।
[ ] পঞ্চকের ক্রমশ মনে হয় , দোলাচল অবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে সে যেন যুনক দলের হয়ে যাচ্ছে । দাদাঠাকুর আসায় পঞ্চকের পুথিপত্র পড়া হচ্ছে না । পঞ্চক যুনকদের জানায়, দাদাঠাকুরকে একান্তে পেয়ে সে কথা বলতে চায় । দাদাঠাকুরের কাছে পঞ্চকের একান্ত আবেদন যে , তাকে হয় ওই পাহাড়- মাঠের খােলা হাওয়ায় ছেড়ে রাখা হােক , নয়তাে পুথির চাপে তাকে আগাগােড়া সমান চ্যাপটা করে ফেলা হােক । এমন সময় প্রথম যুনক খবর নিয়ে আসে যে , স্থবিরপত্তনের রাজা তাদের যুনক চণ্ডককে মেরে ফেলেছে । দাদাঠাকুর আশ্বস্ত করেন এই বলে যে, পাপ প্রাচীরের আকার নিলে তাকে ভেঙে ধুলােয় মিশিয়ে দেবেন । পঞ্চক দাদাঠাকুরের কাছে জানতে চায় দাদাঠাকুরকে সে দাদাঠাকুর , না গুরু কী বলে ডাকবে । উত্তরে দাদাঠাকুর বলেন যে, যাকে তিনি চালনা করছেন , সে জানতে না চাইলে তিনি তার দাদাঠাকুর । যে তাঁর আদেশ নিয়ে চলে তিনি তার গুরু । পঞ্চক দাদাঠাকুর ও গুরু দুই - ই চায় । সে দাদাঠাকুরের বােঝা মাথায় নিয়ে বেরিয়ে পড়তে চায় । দাদাঠাকুর পঞ্চকের জন্য জায়গা ঠিক করে রেখেছেন । তা হল অচলায়তন । শুনেই পঞ্চক আঁতকে ওঠে । অচলায়তন ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবেন তিনি । সেখানে পঞ্চককে মন্দির গড়তে হবে ।
কোন মন্তব্য নেই