বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ভারতের সংবিধানে স্বীকৃত সাম্যর অধিকারটি আলোচনা করো ।

 

একাদশ শ্রেণী class 11 xi eleven ভারতের সংবিধানে স্বীকৃত সাম্যর অধিকারটি আলোচনা করো প্রশ্নোত্তর india songbidhane swikrito sammer odhikarti alochona koro questions answer

প্রশ্ন: ভারতের সংবিধানে স্বীকৃত সাম্যর অধিকারটি আলোচনা করো ।

উত্তর:- ভারতীয় সংবিধানে ১৪-১৮ নং ধারায় সাম্যর অধিকার ঘোষিত ও স্বীকৃত হয়েছে ।


[ ১  ] আইনগত সাম্য প্রতিষ্ঠা : সংবিধানের ১৪নং ধারায় দুটি অধিকারের উল্লেখ রয়েছে 



[  i  ] আইনের দৃষ্টিতে সমতা : আইনের দৃষ্টিতে সমতার অর্থ হল সব নাগরিক আইনের চোখে সমান । ক্ষমতা , পদমর্যাদা ও অবস্থা নির্বিশেষে কোনো ব্যক্তি দেশের আইনের ঊর্ধেব নয় । কিন্তু ভারতীয় সংবিধানে " আইনের দৃষ্টিতে সমতা " নীতির কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ব্যাতিক্রম রয়েছে । যেমন (১) সাধারণ নাগরিকের তুলনায় পুলিশ কর্মচারীরা ব্যাপক ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন এবং (২) সংবিধানের ৩৬নং ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি  , প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যপালের বিরূদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের করা যায় না ।


[  ii  ] আইন কতৃক সমভাবে সংরক্ষিত হওয়ার অধিকার : আইন সমূহ কতৃক সমভাবে সংরক্ষিত হওয়ার অধিকারের মাধ্যমে সমপর্যায়ভুক্ত ব্যাক্তি দের ক্ষেত্রে আইন সমভাবে প্রযুক্ত হবে । এই অধিকারের অর্থ হল লোকের অবস্থা বা প্রকৃতির বিভিন্নতা বিচার করে প্রত্যেক আইনকে সব ব্যাক্তির ক্ষেত্রে সমভাবে প্রয়োগ করতে হবে । অবশ্য রাষ্ট্র যুক্তিযুক্ত ভাবে বিভিন্ন ব্যাক্তি কে শ্রেণী বিভক্ত করতে পারে এবং পৃথক পৃথক শ্রেণীর জন্য রাষ্ট্র পৃথক আইন প্রয়নয় করতে পারে । উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় , প্রত্যেকে সমান ভাবে কর দেবে এরূপ নয় । আয়কর নিধারণের ক্ষেত্রে ব্যাক্তি গণকে আয়ের পরিমাণ অনুযায়ী বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে বিভিন্ন হারে আয়কর ধার্য করা হয় ।



[  ২  ] বৈষম্যমূলক আচরণ নিষিদ্ধকরন : সংবিধানের ১৫নং ধারায় বলা হয়েছে যে ধর্ম জাতি বর্ন স্ত্রী পুরুষ এবং জন্মস্থানজনিত কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্যমূলক আচরণ করবে না । এছাড়া কোনো নাগরিককে উপরোক্ত যে কোনো করণের জন্য দোকান , সাধারণের ব্যাবহায রেস্তোরাঁ , হোটেল ও প্রমদস্থলে প্রবেশ এবং রাষ্ট্র কতৃক পূর্ণভাবে বা আংশিকভাবে তৈরী করা কূপ , জলাশয় , স্নানের ঘাট , রাস্তা ও আশ্রয়স্থল ব্যাবহার করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা চলবে না । তবে রাষ্ট্র নারী , শিশু ও সামাজিক বা শিক্ষাগত দিক থেকে অনগ্রসর শ্রেণী সমূহ , তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য বিশেষ ব্যাবস্থা অবলম্বন করতে পারে ।


[   ৩  ] সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সমানাধিকার : ১৬নং ধারায় বলা হয়েছে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে জাতি , ধর্ম , স্ত্রী , পুরুষ বংশধারা , বর্ন , জন্মস্থান বা বাসস্থানের ভিত্তিতে কোনো নাগরিকের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা চলবে না । নিয়োগ ছাড়াও বেতন , ছুটি , পেনশন ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর হবে । অবশ্য এই অধিকারের কিছু ব্যাতিক্রম আছে । যেমন 


(i ) ধর্ম বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত চাকরি সংশ্লিষ্ট ধর্মাবল্মিদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে ।


(ii) সংসদ আইন করে কোনো রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সরকারী চাকরীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে বসবাসগত যোগ্যতা কে আবশিক শর্ত হিসেবে আরোপ করতে পারে ।



[ ৪ ] উপাধি নিষিদ্ধকরন : সংবিধানে ১৮নং ধারায় নাগরিকদের মধ্যে গণতন্ত্র সুলভ সাম্য প্রতিষ্ঠাকল্পে বলা হয়েছে যে , কোনো ভারতীয় নাগরিক দেশী বা বিদেশী পদবি বা উপাধি গ্রহণ করতে পারবে না , কিন্ত সামরিক বা শিক্ষা সংস্কৃতিমূলক উপাধির ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না ।

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন