ডাকাতের মা গল্প অবলম্বনে ডাকাতের মায়ের মাতৃত্ব বোধের পরিচয় দাও
উত্তর: সতীনাথ ভাদুড়ীর " ডাকাতের মা " গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সৌখির মা । তারই পরিচয় ডিয়ে গল্পের শুরু আর তারই কান্নার মধ্যে দিয়ে গল্পের পরিসমাপ্তি । সৌখীর মায়ের ভাবনা , কর্ম , মমত্ব , এক অব্যক্ত মানসিক যন্ত্রণা হৃদয়স্পশী হয়ে ধরা পড়ে পাঠকের কাছে ।
[ ] দরিদ্র , নিরক্ষর , গ্রাম্য এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার অদন্ত্য পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল সৌখীর মা । তাই সে ছেলের হাতের প্রচন্ড প্রহার সহ্য করে বলেছে - " বাপের বেটা , তাই মেজাজ এমন করা "।
সৌখি জেলে গেলে দলের লোকেরা দুবছর বাদে টাকা দেওয়া বন্ধ করলে অত্যন্ত কষ্ট ও পরিশ্রমী এই মহিলা বাড়ী বাড়ী খই মুড়ি বেচেঁ জীবন ধারণ করেছে । আত্মমর্যাদা বোধে কারো ও কাছে হাত পাতেনি , ধার বা ভিক্ষা ও করেনি । তার বউমার দুর্বল শরীরের জন্য , নাতির মুখে দুধ তুলে দিতে তাদের বেয়ায় বাড়ি পাঠিয়েছে আবার ছেলে জেল থেকে ফিরলে তাকে গয়না দিয়ে মুড়ে দেবে এবং তাঁর নাতি যে পথের ভিখারী নয় একথা বলে কন্যা সম পুত্র বধূ ও নাতির প্রতি উপযুক্ত সামাজিক বোধ দীপ্ত ভূমিকা পালন করেছে ।
[ ] প্রবল অপত্যস্নেহে পুত্রের চিন্তা ভাবনা , আচার আচরণ , কাজ সব কিছুকে একদিকে যেমন প্রশ্রয় দিয়েছে সে , তেমনি ছেলে জেল থেকে ফিরলে দারিদ্রের কথা গোপন করে সামান্য আলু চোচচরি ভাত খাওয়ানোর জন্য মর্যাদা হানিকর ছিচকে চোরের কাজ করেছে । গভীর রাতে পেশকারের বাড়ী থেকে লোটা চুরি করে দোকানে বিক্রি করার পরে ধরা পড়ে সৌখির মা । মায়ের সম্মান বাঁচানোর জন্য ছিঁচকে চোরের কলঙ্ক মাথায় নিয়ে তাঁর গর্বের ডাকাত ছেলে জেলে যেতে বসেছে এটা কখনোই সে মেনে নিতে পারেনি । তাই তাঁর কান্নার মধ্যে দিয়ে গ্লানি ও অনুশোচনার অভিব্যাক্তিতে অসাধারণ মাতৃত্ব বোধের প্রকাশ ঘটেছে ।
কোন মন্তব্য নেই