শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০২১

চর্যাপদ কোন শতাব্দীতে রচিত ? এর ভাষাকে " সন্ধ্যা ভাষা " বলা হয় কেন

 

একাদশ শ্রেণী চর্যাপদ কোন শতাব্দীতে রচিত ? এর ভাষাকে " সন্ধ্যা ভাষা " বলা হয় কেন , একাদশ শ্রেণী বাংলা সাজেশন,


প্রশ্ন: চর্যাপদ কোন শতাব্দীতে রচিত ? এর ভাষাকে " সন্ধ্যা ভাষা " বলা হয় কেন ? 


উত্তর :- চর্যাপদ দশম - দ্বাদশ শতাব্দীতে লেখা ।

[  ] বাংলা ভাষায় লেখা প্রাচীনতম সাহিত্যিক নিদর্শন চর্যাপদ । মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপালের রাজ দরবার থেকে পুঁথিটি  আবিষ্কার করেন । পুঁথি টি প্রাচীন বাংলা ও নেপালী অক্ষরে লিখিত । আর এর ভাষা ছিল রহস্যময় । চর্যাপদের ভাষাতত্ত্ব আলোচনা করে অনেক পণ্ডিত এর রচনাকাল দশম দ্বাদশ শতাব্দী বলেই মনে করেন । চর্যাপদের প্রথম পদ কর্তা লুইপাদ দশম শতাব্দীতে বর্তমান ছিলেন বলে দশম শতাব্দী থেকেই এই পদ সমূহ রচনা ও সংকলন কার্য চলতে থাকে । এর ভাষা দেখেও মনে হয় , খিষ্ট দশম শতাব্দীর দিকে বা তার সামান্য পূর্বে যখন মাগধী খোলস ছেড়ে বাংলা ভাষা সবেমাত্র ভূমিষ্ট হয়েছিল । তখন সেই অপরিনত ভাষায় সিদ্ধাচার্জ গণ পদ গুলি রচনা করেছিলেন । এ ভাষার মূল বুনিয়াদ মাগধী থেকে জাত প্রাচীনতম বাংলা ভাষার উপর প্রতিষ্ঠিত । পয়ার ও ত্রিপদি ছন্দেরও আদিম নিদর্শন ও এই চর্যাপদে দুর্লভ নয় । এই জন্য ভাষা ও ছন্দের দিক দিয়ে চর্যাপদ বাংলার নিকটতম যদিও এতে প্রত্যন্ত প্রদেশের শব্দ ও আছে ।

[   ] কিছুটা দুর্বোধ্য রহস্যময় ভাষায় এই পদগুলি রচিত হয়েছে । এই হেয়ালি ভাষার নাম " সন্ধ্যা ভাষা " যার অর্থ , যে ভাষা রহস্যময় এবং যা বুঝতে বিলম্ব হয় অথবা যার অর্থ সম্যক দ্বারা বুঝতে হয় , তা " সন্ধ্যা ভাষা "  বা " সন্ধাভাষা " । ' চর্যাচযবিনিচিয় ' - এ যুক্ত মুনি দত্তের সংস্কৃত টিকাটি না থাকলে চর্যাপদের তাৎপর্য চিরদিন দুর্বোধ্যই থাকতো । অন্য সম্প্রদায়ের প্রতিকূল ব্যাক্তি বা গোড়া ব্রামন সম্পদায় , যারা সহজিয়া বৌদ্ধদের প্রতি প্রসন্ন ছিলেন না তাদের শুন্য চক্ষু থেকে এই ধর্মাচরণ আড়াল করে রাখার জন্যই বৌদ্ধ তান্ত্রিক সিদ্ধাচার্যেরা এই রকম " সন্ধ্যা ভাষা " র ছদ্মবেশ ধারণ করেছিল ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন