উত্তর : শ্রী যতীন্দ্রবিমল চৌধুরী বিরচিত ‘ভারতবিবেক ’ নাট্যাংশে শ্রীরামকৃষ্ণ ছিলেন এক মহাযােগী । ভবতারিণীর পূজারি । শয়নে স্বপনে তিনি জগজ্জননী ভবতারিণীর চিন্তায় মগ্ন । দেবীই ছিলেন তাঁর ধ্যান - জ্ঞান । সুতরাং , মধুর সন্ধ্যায় ভক্তবৃন্দপরিবেষ্টিত শ্রীরামকৃষ্ণ গৃহীভক্ত সুরেন্দ্রনাথের গৃহে আমন্ত্রিত হয়েও মাতৃনামকীর্তন থেকে বিরত হননি । তিনি ভবতারিণীর উদ্দেশ্যে প্রণাম জানিয়ে তার মনের আবেদন মায়ের কাছে নিবেদন করলেন
জগজ্জননী ভবতারিণীই যােগিজনের উদ্ধারকত্রী ।তিনি শত শত সন্তানের মঙ্গলবিধায়িনী , ভববন্ধন থেকে মুক্তিদাত্রী । কোটি কোটি সন্তানের কোটি কোটি দুঃখ দূর করে মমতাঘন কৃপাদৃষ্টির দ্বারা তাপিতদের শান্তিবিধান করেন । তাঁর করুণা অহৈতুকী । কৃপাময়ী মায়ের কাছে তাঁর বিনীত নিবেদন তিনি অকুণ্ঠচিত্তে নিবেদন করলেন ।
তিনি মায়ের সুসন্তান । মায়ের কাছে তাঁর কামনা -বাসনা নিছক আত্মকেন্দ্রিক নয় । জগদ্ধিতায় তাঁর আবির্ভাব । জগতের
শত শত দুঃখকষ্ট তাঁর হৃদয়কে দীর্ণ-বিদীর্ণ করছে । জগতের কল্যাণই তাঁর একমাত্র কাম্য । তিনি তাে নিজেকে কেবল নিজের বলে মনে করতেন না ; তিনি বিশ্বের, তিনি বিশ্বদেবতার । অতএব , তাঁর চিন্তা বিশ্বজনীন চিন্তা । বিশ্বের কল্যাণের জন্য তাঁর মনে কত স্বপ্ন ! কত আশা -আকাঙ্ক্ষা ! কিন্তু সেই স্বপ্ন, সেই আশা - আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য চাই একজন সুযােগ্য উত্তরসাধক । মা ভবতারিণী তাঁকে নানাভাবে কৃপা করলেও এখনও তাঁর উত্তরসাধকের কোনাে সন্ধান দেননি । মায়ের কাছে তাঁর আকুল আবেদন তিনি যেন একজন শিবসম উত্তরসাধক তাঁকে উপহার দেন , যার জন্য তিনি অহর্নিশ অপেক্ষা করে আছেন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন