মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২

‘গুরু’ নাটকে মােট কটি গান আছে ? নাটকটিতে সংগীতের ভূমিকা আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer গুরু নাটকে মােট কটি গান আছে নাটকটিতে সংগীতের ভূমিকা আলােচনা করাে guru natoke mot koti gan ache natoktite songeeter bhumika alochona koro

উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ‘গুরু’ নাটকে সাতটি গান আছে । 

[          ] রবীন্দ্রনাথের ‘ অচলায়তন ’ নাটকে তেরােটি গান আছে । অচলায়তনের রূপান্তরিত ‘ গুরু’ নাটকে অচলায়তনের ছটি গান নেওয়া হয়েছে । একটি নতুন গান সংযােজিত হয়েছে ‘গুরু’নাটকের শেষে । ‘গুরু’ নাটকে নাট্যকার গানের সংখ্যা কমিয়ে এনেছেন সম্ভবত নাটককে সংক্ষিপ্ত, গতিময় ও নাট্যদ্বন্দ্বকে তীক্ষ্ণতর করার উদ্দেশ্যে । 


[        ] ‘গুরু’ নাটকের প্রথম গানটি পঞকের । গান গাইতে গাইতে পঞকের প্রবেশ । গানটি আট চরণের । চারভাগে গানটি গাওয়া 1হয়েছে সংলাপের মাঝে মাঝে । দীর্ঘদিন পরে গুরু যে অচলায়তনে আসছেন , পঞকের গানের মধ্যে তা আভাসিত । গুরুর জন্য, ব্যাকুলতা , তা প্রকাশিত আকাশে । তাঁর আগমনের বার্তা বাতাসে । এভাবে গুরুর আগমনবার্তা অচলায়তনের সর্বত্র প্রচারিত । 

[        ] প্রথম গানের মতাে দ্বিতীয় গানটিও পঞকের একক কণ্ঠে । অপূর্ব এক নাটকীয় পরিস্থিতিতে গানটি গেয়েছে পঞ্চক , অবশ্য আরও অন্যান্য আয়তনিকদের সঙ্গে নৃত্য সহযােগে । অচলায়তনের জীর্ণ পুথিসর্বস্ব নীরস নিষ্প্রাণ জীবন থেকে মুক্তির জন্যে আচার্য গুরুর কাছে কামনা করেছেন হৃদয়ের বাণী ,প্রাণকে প্রাণ দিয়ে জাগিয়ে তােলার শক্তি । পঞকেরও একই কামনা । তাই তার নৃত্যসহ উদাত্ত কণ্ঠে গান : ‘ওরে ওরে ওরে আমার মন মেতেছে ......’  তৃতীয় গানও পঞকের একক কণ্ঠে, অবশ্য তার পিছনে যুনকরা দলবদ্ধ হয়ে নৃত্য করেছে । পাহাড়- মাঠের মুক্ত পরিবেশে মুক্তির সন্ধানে পঞক । পরের গান যুনকের । তারা মনের আনন্দে চাষ করে । চাষ করাই তাদের কর্ম ও ধর্ম । পরের গানও তাদের । যার মর্মার্থ হল তাদের কাজের বাছবিচার নেই । তারা সব কাজেই হাত লাগায় ।কর্মমার্গই হল তাদের সাধন পথ । দর্ভকদের গান পরের গান । তারা শাস্ত্র জানে না, তারা নামগান করে । সেই নামগানই তারা শােনায় । নাটকের শেষ গান একেবারে সমাপ্তি লগ্নে । যুনক ও দর্ভকেরা গুরুকে প্রদক্ষিণ করে গুরুর জয়গান গেয়েছে — ‘ভেঙেছে দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়/তােমার হউক জয় ।’

 





সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০২২

‘গুরু’ নাটকের ঘটনাস্থলগুলি উল্লেখ করে কোন্ ঘটনাটিকে তােমার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বলে মনে হয়েছে তা লেখাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer গুরু নাটকের ঘটনাস্থলগুলি উল্লেখ করে কোন্ ঘটনাটিকে তােমার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বলে মনে হয়েছে তা লেখাে guru natoker ghotonastholguli ullekh kore kon ghotonatike tomar sobcheye akorshonio bole mone hoyeche ta lekho


উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ‘গুরু’ নাটকের প্রথম ঘটনাস্থল অচলায়তন । এটি নাটকের প্রথম দৃশ্য। এই দৃশ্যে অনেক ঘটনা ঘটে । গুরু আসছেন সে বার্তা যেমন প্রচারিত , তেমনি তাঁর শুভ আগমন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে । সুভদ্র আয়তনের উত্তরদিকের জানালা খুলে বাইরের দৃশ্য দেখায় সে নাকি মহাপাপ নাকি করেছে , তার প্রায়শ্চিত্তের বিধান বড়ােই ভয়ানক ও প্রাণঘাতী । ওই ঘটনাকে ঘিরে আচার্যের অন্তরের পরিবর্তনের পরিচয় , পঞকের মুক্ত ও উদার প্রাণের প্রকাশ , মহাপক ও উপাধ্যায়ের আচার্য -বিরােধিতা , পরিশেষে পঞক ও আচার্যের দর্ভকপল্লিতে নির্বাসন , মহাপঞকের আচার্যের আসনে উপবেশন ইত্যাদি ঘটনার সন্নিবেশ । দ্বিতীয় ঘটনার স্থল পাহাড় মাঠ । যুনকদের মাঝে পঞ্চক , দাদাঠাকুরের উপস্থিতি , যুনকদের নিয়ে দাদাঠাকুরের স্থবিরপত্তনের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা । তৃতীয় ঘটনার স্থল দর্ভকপল্লি । দৰ্ভকদের মাঝে আচার্য ও পঞ্চক । দাদাঠাকুর দর্ভকদের গোঁসাই হয়ে হাজির । অচলায়তন ভাঙার জন্য যুদ্ধযাত্রা । চতুর্থ ঘটনা স্থল অচলায়তন । অচলায়তনের প্রাচীর ভেঙে ধূলিসাৎ । গুরুরূপী দাদাঠাকুর , যুনক ও দর্ভকদের উপস্থিতি । মহাপঞক বাদে আর সকলের তাঁকে গুরু বলে মেনে নেওয়া ।

[          ] এই ঘটনাগুলির মধ্যে শেষ দৃশ্যে যুনক ও দর্ভকদের নিয়ে যােদ্ধার বেশে দাদাঠাকুরের অচলায়তনে প্রবেশ ও ওই ঘটনাক্রমে নাটকের সমাপ্তির ঘটনা আমার কাছে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় । অচলায়তনের প্রাচীর ভেঙে পড়ায় ধ্বংসস্তুপের মধ্যে অচলায়তনের স্থবিরতার অবসান , অন্ধত্ব-গোঁড়ামি- আচার অনুষ্ঠানসর্বস্ব জীবনাচরণের সমাপ্তি, অপরদিকে নবীন প্রাণের নতুন ভাবনা - চেতনার প্রতিষ্ঠা, সরস মুক্তপ্রাণের জয়যাত্রা — যা নাটকের মর্মার্থ , তার প্রকাশ অপূর্ব নাটকীয়ভাবে অর্থবহ হয়েছে । এই কারণে ঘটনাটি আমার কাছে আকর্ষণীয় ।
 


রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২২

“অন্ধ গোঁড়ামির বিরােধিতা ও নতুন ভাবনাকে স্বাগত জানানাে তার লেখা বৈশিষ্ট্য ।” উদ্ধৃতিটির আলােকে ‘গুরু’ নাটকের বিষয়বস্তু সংক্ষেপে আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer অন্ধ গোঁড়ামির বিরােধিতা ও নতুন ভাবনাকে স্বাগত জানানাে তার লেখা বৈশিষ্ট্য উদ্ধৃতিটির  আলােকে গুরু নাটকের বিষয়বস্তু সংক্ষেপে আলােচনা করাে guru natoker bishoyabostu songkhepe alochona koro

উত্তর : রবীন্দ্র-ভাবনার বৈশিষ্ট্যই হল অন্ধ গোঁড়ামির বিরােধিতা এবং নবতন চিন্তাভাবনাকে স্বাগত জানানাে । একাধিক রবীন্দ্র - নাটকের কেন্দ্রীয় ভাববস্তু হল তাই । ‘ গুরু ’ নাটকে রবীন্দ্রনাথের এই ভাবনা আরও স্পষ্টাকারে প্রকাশিত । তাঁর ‘গুরু’ নাটকের বিষয়বস্তু পর্যালােচনা করলে এই সত্যতা পরিস্ফুট হয়ে উঠবে । 

[          ] স্থবিরপত্তনের শিক্ষায়তনটি অচলায়তন । অচল বা স্থবিরতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানটিতে আলাে ও বাতাস ঢােকার সব পথ বন্ধ । বৃহত্তর জগৎ ও জীবন থেকে পুরােপুরি বিচ্ছিন্ন । আয়তনিকরা যুক্তিহীন, প্রাণহীন অভ্যাস ও গোঁড়ামির দাস । তন্ত্রমন্ত্রের অন্ধ অনুগত । নানা বিধিনিষেধের শৃঙ্খলে আষ্টেপৃষ্ঠে আবদ্ধ । অন্ধতা , অজ্ঞানতা ও সংকীর্ণতার ঘেরাটোপে ঢাকা । নানা আচার - অনুষ্ঠান, প্রথা ও পুথির চাপে তারা পিষ্ট । নিয়ম ও রীতির সামান্যতম লঙ্ন হলেই প্রায়শ্চিত্তের জাঁতাকলে পিষ্ট হতে হয় । এভাবে রক্ষণশীলতার গণ্ডিতে আবদ্ধ হয়ে প্রাণহীন স্থবিরে পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি । 




[         ] ‘ গুরু ’ নাটকে এরই বিরুদ্ধে নবীন প্রাণের নব চেতনা ও নতুন ভাবনার অভিঘাতে নাটকে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি–অন্ধ গোঁড়ামির বিরুদ্ধে নতুন ভাবনার ঘােরতর সংঘাত । পঞ্চক হল নবীন প্রাণের প্রতীক , নতুনের অগ্রদূত । সে যেন মূর্তিমান বিদ্রোহ । সে যেন মুক্তপ্রাণের স্পন্দন । ‘গুরু’- র উপস্থিতিতে অচলায়তনের আচার - অনুষ্ঠান সর্বস্ব অন্ধত্ব ও গোঁড়ামির প্রাচীর যে ভেঙে পড়বে , পঞকই যেন তার প্রস্তুতিপর্ব সেরে রাখে তার নতুন প্রাণের নবতন ভাবনা ও চেতনার প্রবাহে । অন্ধত্ব গোঁড়ামির ধ্বংসস্তুপের ওপর নতুন ভাবনা ও চেতনার যে মন্দির গড়ে উঠবে , পঞ্চকই হবে তার ঋত্বিক ।
 


শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২২

“ আমি তার মাথায় চড়ি ” —কে , কার মাথায় চড়ে ? পঙক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমি তার মাথায় চড়ি কে কার মাথায় চড়ে পঙক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে ami tar mathay chori ke kar mathay chore ponktitir tatporjo bankha koro


উত্তর : ক্ষুধার্ত হতদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষটি তার রাগের মাথায় চড়ে । 

[        ] ‘আমার’ মানুষটি একটি হতদরিদ্র শ্রমজীবী লোক । ‘দিন খাটে দিন খায়’ এমনি আর্থিক অবস্থা সংসারের । সংসারের এই দুঃখকষ্ট , অভাব -অনটন মুখ বুজে সয়ে নেয় । ফলাও করে বলে না । প্রতিবাদে সােচ্চার হয় না । কারণ বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে তার ধারণা এভাবে দুঃখকষ্টের কথা বলে দুঃখের প্রতিকার হয় না । তার বক্তব্য ‘কী হবে দুঃখ করে ?’ আর সেজন্য যেটুকু উপায় করে তাতেই খুশি থাকে । সাধারণ ভাতকাপড়ে দিন চললে তাতেই সন্তুষ্ট । ধারদেনা করে অসুখ -বিসুখ সামাল দেয় । অবশ্য গঞ্জিকার কলকেতে টান দেয় রাত্রিতে ।কখনাে -সখনাে বাড়ি ফেরে মাঝরাতে । তখন ব্যঞ্জনহীন ঠান্ডা ভাতে নুনের সংস্থান না থাকায় ভাত বিস্বাদ হয় । একদিকে ভয়াবহ দারিদ্র্যের কশাঘাত । তার ওপর ক্ষুধার্ত পেটে বিস্বাদ ভাত গলা দিয়ে না নামায় রাগ মাথায় চড়ে । রাগ চড়ার কারণ হল এই ।


[        ] রাগ যখন সংযমের সীমা টপকে যায়, তখন দিকবিদিক জ্ঞান থাকে না । তখন মানুষের জ্ঞান, বােধবুদ্ধি, ন্যায় - অন্যায়ের বিচারবিবেচনা সব লােপ পায় । মনুষ্যত্ব লােপ পেয়ে পশুত্ব প্রাধান্য পায় । হিতাহিত বােধের অস্তিত্বটুকুও থাকে না । রাগের থেকে বড়াে হয়ে দাঁড়ায় ক্রোধােন্মত্ত মানুষটির মনুষ্যত্বহীন পশুত্ব । হিতাহিত জ্ঞানহীন অন্ধ ক্রোধােন্মত্ততা । তা যেন রাগের মাথার ওপর ক্রোধােন্মত্ত মানুষটির চড়ে বসা । তার ফলও হাতে হাতে মেলে । বাপব্যাটায় বচসা হয়, ভাইয়ে ভাইয়ে কলহ বাধে । তাতে পাড়ার লােকের ঘুম ছুটিয়ে সারা পাড়া যেন মাথায় করে ।




শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০২২

কবি জয় গােস্বামী ‘নুন’ কবিতায় সমাজের শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার যে ছবি এঁকেছেন , তা বর্ণনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer কবি জয় গােস্বামী নুন কবিতায় সমাজের শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার যে ছবি এঁকেছেন তা বর্ণনা করাে kobi joy goswami nun kobitai somajer shromjibi nimnobitto manusher jibonjatrar je chobi akechen ta bornona koro


উত্তর : কবি জয় গােস্বামী ‘নুন' কবিতায় সমাজের অতিসাধারণ শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার ছবি এঁকেছেন । তারা শ্রমজীবী , ‘দিন আনে দিন খায়’ এমনি হতদরিদ্র বটে , কিন্তু তারা  অল্পে খুশি । তারা জানে দুঃখ করে দুঃখকষ্টের সুরাহা হয় না । দুঃখ কার কাছেই বা করবে ? দুঃখ জানিয়ে দুঃখের সুরাহা হবে এমন দরদি সমাজ -সংসার এদেশে নেই । কাজেই সাধারণ ভাতকাপড়ে তাদের দিন চলে । তাদের দিন চলে অসুখেবিসুখে ধারদেনা করে । কিন্তু দুঃখদারিদ্র, অসুখবিসুখ , দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা সবকিছু ভুলে থাকার জন্য রাতে দু-ভাই মিলে গাঁজার কলকেতে টান দেয় । অভাবের সংসারে সবদিন বাজার করা হয় না । যেদিন হয় সেদিন বেহিসেবিপনা মাত্রা ছাড়িয়ে যায় । কারণ গরিবের সংসারে অপ্রয়ােজনীয় গােলাপের চারা কিনে বাড়ি ফেরে  গােলাপচারা পুঁতে বাগান বানাবে , তেমন জায়গাটুকু তাে নেই । কষ্ট ভােলার জন্য তারা যথারীতি গাঁজাতে টান দেয় । নেশাভাঙেই তাদের আনন্দ তাতেই তারা খুশি । এভাবে হেসেখেলে কষ্ট করে তাদের দিন চলে যায় । মাঝে মাঝে অভাব - অনটনে সংসার অচল হয়ে যায় । সেদিন মাঝরাতে তারা বাড়ি ফেরে । ভাত তখন ঠান্ডা । সামান্য নুনের জোগাড়টুকুও হয়নি । ফলে খেতে বসে মাথায় রাগ চড়ে । রাগ চড়ে গিয়ে এমন হয় যেন রাগের চড়ে বসে । ফলে বাপব্যাটায় কিংবা দু-ভাইয়ে মিলে মারামারি ও চেঁচামেচি  করে সারাপাড়া মাথায় করে । অবশ্য তাদের রাগারাগি ও আত্মকলহে কাদের কী এসে যায় ? তারা খেটে -খাওয়া অতি নগণ্য মানুষ । তাদের চাওয়া বলতে ‘আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক ।’ সমাজের কাছে , রাষ্ট্ৰচালকদের কাছে এটুকুই তাদের আর্জি ।






বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২২

দর্শক টানার দিক থেকে পল্লাইওদের মুরগির খাঁচায় বন্দি দেবদূতের চেয়ে শহরে আসা একটি মেয়ের ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীর আকর্ষণ বেশি কেন , তুলনামূলক আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer দর্শক টানার দিক থেকে পল্লাইওদের মুরগির খাঁচায় বন্দি দেবদূতের চেয়ে শহরে আসা একটি মেয়ের ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীর আকর্ষণ বেশি কেন  তুলনামূলক আলােচনা করাে dorshok tanar dik theke pollaioder murgir khanchai bondi debduter cheye shohore asa akti meyer bhraman prodoshonir akorshon beshi keno tulonamulok alochona koro

উত্তর : পেলাইওদের মুরগির খাঁচায় বন্দি দেবদূত আর শহরে আসা ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীর ভাগ্যবিড়ম্বিত মেয়েটির মাকড়সা -আকৃতি দুই-ই অস্বাভাবিক ও কৌতূহল - উদ্দীপক ঘটনা ,যা দর্শক আকর্ষণের সহায়ক । দুই- ই দর্শক আকর্ষণ করেছে , কিন্তু শেষাবধি দেবদূত হয়ে পড়েছে দর্শকশূন্য । কারণ —


              এক । দেবদূত দর্শনির চেয়ে মাকড়সারূপী মেয়েটির দশনি বাবদ পয়সা কম । 

              

              দুই । দেবদূত নিয়ে দর্শকের প্রশ্ন করার অবকাশ নেই , কিন্তু মেয়েটিকে নিয়ে দর্শক তার খুশিমতাে প্রশ্ন করার সুযােগ পেয়েছে । 

              

              তিন । মুরগির খাঁচার তারের জালের বাইরে থেকে দর্শক দেবদূতকে দেখে তার কৌতূহল মিটিয়েছে , কিন্তু মাকড়সারূপী মেয়েটিকে খুঁটিয়ে দেখার সুযােগ পেয়েছে । 

              

              চার । দেবদূত প্রাসঙ্গিক সত্য -মিথ্যা যাচাইয়ের আদৌ সুযােগ নেই , কিন্তু তা আছে মেয়েটির ব্যাপারে । 

              

              পাঁচ । করুণ কণ্ঠে মেয়েটি তার বিড়ম্বিত মাকড়সায় পরিণত হওয়ার কাহিনি প্রকাশ করে দর্শককে বিমােহিত করে । অনেকে তার প্রতি দয়ায়,করুণায় তার মুখে মাংসের বড়া ছুড়ে দেয় । দেবদূতের ক্ষেত্রে সে সুযােগ আদৌ নেই । সে কেবল দর্শকের দিকে প্রাচীন চোখ মেলে তাকিয়ে থাকে নীরবে । 

              

              ছয় । মেয়েটির মাকড়সায় বদলে যাওয়া দৃশ্যে এতই মানবিক সত্য আর এমন ভয়ংকর শিক্ষা আছে যা সহজে দেবদূতের প্রদর্শনীকে নস্যাৎ করে দিতে পারে , যে দেবদূত মর্তবাসীর দিকে নাক সিঁটকে তাকায় । তা ছাড়া দেবদূতের ওপর আরােপিত আলৌকিকত্ব এমন কিছু জম্পেশ ছিল না , যা ভক্তিনভ্রো দর্শক ধরে রাখতে পারে । ফলে মাকড়সা মেয়েটির জনপ্রিয়তা ও দর্শকটানার ক্ষেত্রে দেবদূত পিছু হটে পড়ে । দেবদূতের মানসম্ভ্রমের খ্যাতি ধুলােয় লুটিয়ে যায় ।






বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০২২

‘রাগ চড়ে মাথায় আমার , আমি তার মাথায় চড়ি’ - ‘আমার’ বলতে কার ? তার মাথায় রাগ চড়ে কেন ? ‘ আমি তার মাথায় চড়ি ’ - এর তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer রাগ চড়ে মাথায় আমার আমি তার মাথায় চড়ি আমার বলতে কার তার মাথায় রাগ চড়ে কেন আমি তার মাথায় চড়ি এর তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে rag chore mathay amar ami tar chori amar bolte kar tar mathay chori amar bolte kar tar mathay rag chore keno ami tar mathay chori ar tatporjo bishleshon koro


উত্তর : আলােচ্য উদ্ধৃতিটি কবি জয় গােস্বামীর লেখা ‘নুন’ কবিতার অংশবিশেষ । এখানে ‘আমার’ বলতে  ‘নুন’ কবিতার কথক । যার জবানিতে বিষয় কথিত । 

[        ] ‘আমার’ মানুষটি একটি হতদরিদ্র শ্রমজীবী লােক । ‘দিন খাটে দিন খায়’ এমনি আর্থিক অবস্থা সংসারের । সংসারের এই দুঃখকষ্ট , অভাব -অনটন মুখ বুজে সয়ে নেয় । ফলাও করে বলে না । প্রতিবাদে সােচ্চার হয় না । কারণ বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে তার ধারণা এভাবে দুঃখকষ্টের কথা বলে দুঃখের প্রতিকার হয় না । তার বক্তব্য ‘কী হবে দুঃখ করে ?’ আর সেজন্য যেটুকু উপায় করে তাতেই খুশি থাকে । সাধারণ ভাতকাপড়ে দিন চললে তাতেই সন্তুষ্ট । ধারদেনা করে অসুখ - বিসুখ সামাল দেয় । অবশ্য গঞ্জিকার কলকেতে টান দেয় রাত্রিতে । কখনাে -সখনাে বাড়ি ফেরে মাঝরাতে । তখন ব্যঞ্জনহীন ঠান্ডা ভাতে নুনের সংস্থান না থাকায় ভাত বিস্বাদ হয় । একদিকে ভয়াবহ দারিদ্র্যের কশাঘাত । তার ওপর ক্ষুধার্ত পেটে বিস্বাদ ভাত গলা দিয়ে না নামায় রাগ মাথায় চড়ে । রাগ চড়ার কারণ হল এই ।


[          ]  রাগ যখন সংযমের সীমা টপকে যায় , তখন দিকবিদিক জ্ঞান থাকে না । তখন মানুষের জ্ঞান, বােধবুদ্ধি , ন্যায়-অন্যায়ের বিচারবিবেচনা সব লােপ পায় । মনুষ্যত্ব লােপ পেয়ে পশুত্ব প্রাধান্য পায় । হিতাহিত বােধের অস্তিত্বটুকুও থাকে না । রাগের থেকে বড়াে হয়ে দাঁড়ায় ক্রোধােন্মত্ত মানুষটির মনুষ্যত্বহীন পশুত্ব । হিতাহিত জ্ঞানহীন অন্ধ ক্রোধােন্মত্ততা । তা যেন রাগের মাথার ওপর ক্রোধােন্মত্ত মানুষটির চড়ে বসা । তার ফলও হাতেহাতে মেলে । বাপব্যাটায় বচসা হয় , ভাইয়ে ভাইয়ে কলহ বাধে । তাতে পাড়ার লােকের ঘুম ছুটিয়ে সারা পাড়া যেন মাথায় করে ।




মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২

‘আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাত কাপড়ে ।’ – ‘সাধারণ ভাতকাপড়’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে ? এই দিন চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বক্তা কী বােঝাতে চেয়েছেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাত কাপড়ে সাধারণ ভাতকাপড় বলতে কী বােঝানাে হয়েছে এই দিন চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বক্তা কী বােঝাতে চেয়েছেন amader din chole jai sadharon vat kapore sadharon vatkapor bolte ki bojhano hoyeche ai din chole jaoyar modhey diye bokta ki bojhate cheyechen

উত্তর : ‘সাধারণ ভাতকাপড় ’কথার তাৎপর্য :
‘সাধারণ ভাতকাপড় ’ - এর আক্ষরিক অর্থ মােটা চালের সাধারণ ভাতের সঙ্গে মাঠ -ঘাট থেকে কুড়িয়ে আনা শাক - পাতার একটু তরকারি । গরিবের আর্থিক সামর্থ্যে কেনার উপযােগী মােটা সুতাের সস্তা কাপড় । তা ছাড়া, ‘সাধারণ ভাতকাপড়’ কথার দ্বারা কবি বােঝাতে চেয়েছেন নিম্ন আয়ের হতদরিদ্র মানুষের সাধারণ জীবনধারণ— নিতান্ত খেয়ে -পরে বেঁচে থাকা । 

‘ দিন চলে যায় ’ কথাৱ অর্থ : এই দিন চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বক্তা বােঝাতে চেয়েছেন তাদের সামান্য আয়ে ভালাে খাওয়া - পরার স্বপ্ন দেখা দিবাস্বপ্নতুল্য অবাস্তব । কাজেই সাধারণ ভাতকাপড়েই দিন চালাতে হয় তাদের । দৈনন্দিন জীবনযাপন ব্যাপারে তাদের এরকম বােধ ও ভাবনাচিন্তা । সম্পদে বৈভবে অভিজাত জীবনযাপনের স্বপ্নতারা দেখে না। বিলাসিতা তাদের কাছে দুঃস্বপ্ন । সাধারণ বাঙালি জীবনের ভাবনাচিন্তা হল খেয়ে পরে জীবনটা চলে গেলেই হল । যেজন্য ঈশ্বরী পাটনীর কামনা ছিল , ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে -ভাতে ।’ এ প্রত্যাশ্যা সাধারণ বাঙালির । তাদের আবহমানকালের মনস্কামনা । তাদের সংসারে দুঃখদারিদ্র্য থাকলেও তারা অকপটে ও অক্লেশে বলতে পারে আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাতকাপড়ে ।






সোমবার, ২২ আগস্ট, ২০২২

‘কিন্তু পুঁতবাে কোথায় ? ফুল কি হবেই তাতে ?’ —উদ্ধৃতির উৎস লেখাে । প্রসঙ্গ উল্লেখসহ উদ্ধৃতির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer কিন্তু পুঁতবাে কোথায় ফুল কি হবেই তাতে উদ্ধৃতির উৎস লেখাে প্রসঙ্গ উল্লেখসহ উদ্ধৃতির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও kintu putbo kothay ful ki hobei tate udhritir utsho lekho proshongo udhritir tatporjo bujhiye dao


উত্তর : আলােচ্য উদ্ধৃতিটি কবি জয় গােস্বামীর লেখা ‘নুন’ কবিতা থেকে গৃহীত । উদ্ধৃত পঙক্তিটি কবিতার চতুর্থ স্তবকের প্রথম চরণ । 


[      ]  কবিতার কথক হল জনৈক শ্রমজীবী নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ । এদেশীয় সমাজে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের অভাব - অনটন নিত্যসঙ্গী । তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় । তাদের চাওয়াপাওয়া ও প্রত্যাশা অতি সামান্য । তারা অল্পতে খুশি । সাধারণ ভাতকাপড়ে দিন চালিয়ে নেয় । অসুখেবিসুখে ধারদেনা করে দিন চলে । দুঃখদারিদ্র্যের কষ্ট - যন্ত্রণা ভােলার জন্য রাত্রিতে দু-ভাই মিলে গাঁজার কলকেতে টান দেয় । সব দিন নির্দিষ্ট আয়ের নিশ্চয়তা নেই । সেজন্য যেদিন আয় হয় না সেদিন বাজার হয় না । আবার যেদিন হাতে বেশি কিছু টাকাপয়সা আসে , সেদিন বেহিসেবিপনা ঘাড়ে ভর করায় বাজার মাত্রা ছাড়িয়ে যায় । শখ বা শৌখিনতার বশে বাড়ি ফেরার পথে গােলাপচারা কিনে ফেলে । 



[        ] গােলাপের চারা পুঁতে বাগান বানানাের শখ বড়ােলােকের শৌখিন বিলাস । সেজন্য প্রশস্ত জায়গা চাই । চারা লাগিয়ে নিয়মিত পরিচর্যার জন্য লােক ও সময় চাই । সেজন্য অর্থব্যয়ের দিকও আছে । গরিবের কুঁড়েটুকুই হয়তাে সম্বল । গােলাপ লাগানাের জন্য প্রয়ােজনীয় জায়গা নেই । সেজন্য গােলাপচারা কিনেও তার সংশয় দেখা যায় । ‘কিন্তু পুঁতবাে কোথায় ?’ হয়তাে পোতার মতাে একটু জায়গার ব্যবস্থা হলেও তার পরিচর্যা করে বাঁচিয়ে তুলে তাতে ফুল ফোটানাে কি সম্ভব হবে ? তা নিয়েও তার মনে সংশয় । কিন্তু শখ , শৌখিনতা সৌন্দর্যপ্রিয় মানুষ মাত্রেরই থাকে । অর্থবানেরা তা সার্থক করে তােলে । তার শখ ও বাসনাকে চরিতার্থ করতে পারে না দারিদ্র্যের রূঢ় বাস্তবতার কারণে । 





রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২

‘ কী হবে দুঃখ করে ?’ — কী নিয়ে দুঃখ করার কথা বলা হয়েছে ? কবির এ মন্তব্যের কারণ কী ? তবুও তাদের খেতে বসে রাগ চড়ে যায় কেন ?


একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer কী হবে দুঃখ করে কী নিয়ে দুঃখ করার কথা বলা হয়েছে কবির এ মন্তব্যের কারণ কী তবুও তাদের খেতে বসে রাগ চড়ে যায় কেন ki hobe dukho kore ki niye dukho korar kotha bola hoyeche kobir a montobbor karon ki tobuo tader khete bose rag jai keno


উত্তর : অশেষ দুঃখকষ্ট : ‘দিন আনে দিন খায়’ এমন অল্প আয়ের মানুষের জীবন চলে সাধারণ ভাতকাপড়ে । কানাকড়িও সঞ্চয় না থাকায় অসুখ -বিসুখে দিন চলে ধারদেনা করে । ওই হতদরিদ্র মানুষের জীবনধারণের অশেষ দুঃখকষ্ট । এখানে সেই দুঃখের কথা বলা হয়েছে ।
মন্তব্যের কারণ : দুঃখ নিয়ে মন্তব্যের কারণ হল  দুঃখ প্রকাশ করে দুঃখী মানুষ যদি দুঃখের সুরাহার উপযােগী সহানুভূতি , মমত্ব ও সাহায্য পায় , তাহলে তার দুঃখ প্রকাশের সার্থকতা । যে সমাজে সে সাহায্য - সহযােগিতা , মমত্ব ও সহানুভূতি মেলে না, সে সমাজে দারিদ্র্যপীড়িত দুঃখী মানুষেরা জানে দুঃখ প্রকাশ করে লাভ নেই । তাই ভুক্তভােগী হতদরিদ্র মানুষের উক্তি ‘কী হবে দুঃখ করে ?’ 


খেতে বসে রাগ চড়ার কারণ : যেদিন খাটুনে মানুষের কাজ থাকে না , সেদিন হাতশূন্য থাকায় চাল -ডাল কেনা হয় না, হাঁড়ি চড়ে না । হতাশায় দীর্ণ মানুষটা ঘরে ফেরে মাঝরাতে । বাসি শুকনাে ভাত খেতে বসে সামান্য নুনটুকুও মেলে না । বিস্বাদভরা ভাত মুখে তুলেই দুঃখ প্রকাশ না করার যে সংযম , তা হারিয়ে ফেলে রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে । তারই ভয়াবহ প্রকাশ মাঝরাতে বাপ - ব্যাটায়, ভাইয়ে ভাইয়ে রাগারাগি , চেঁচামেচি করে পাড়া মাথায় করা । এজন্য বলা হয়েছে ‘তবুও ....রাগ চড়ে ।’