সংস্কৃত লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সংস্কৃত লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০২২

মালবরাজের সঙ্গে মগধরাজের যুদ্ধের একটি বাণীচিত্র অঙ্কন করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh মালবরাজের সঙ্গে মগধরাজের যুদ্ধের একটি বাণীচিত্র অঙ্কন করাে malobrajer songe mogodhrajer judher akti banichitro ankan koro


উত্তর: কবি দণ্ডী বিরচিত ‘ দশকুমারচরিতম ’ পাঠ্যাংশে বর্ণিত মালব ও মগধ দুটি পরস্পর বিবদমান দেশ হিসেবে উল্লিখিত হয়েছে । মালবরাজ মানসারের সঙ্গে মগধরাজ রাজহংসের প্রায়ই যুদ্ধ সংঘটিত হত । আলােচ্য পাঠ্যাংশ থেকে জানা যায়, অচিরকাল পূর্বে মালবরাজের সঙ্গে মগধরাজের একবার যুদ্ধ হয়েছিল এবং তাতে মালবরাজ বিজয়ী হয়েছিলেন । তারই প্রতিশােধকল্পে মগধরাজ রাজহংস মালবরাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করেন । নানাবিধ ভয়ংকর অস্ত্রের শিক্ষাকৌশলে সংঘটিত অসংখ্য যুদ্ধে বিপক্ষবিজেতা মহারাজ মগধাধিপতি রাজহংস নিতান্ত ক্রোধাবিষ্ট হয়ে গত যুদ্ধে জয়লাভ করায় গর্বিত মালবাধিপতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নিমিত্ত চতুরঙ্গ সেনার সঙ্গে রাজধানী থেকে নির্গত হলেন ।


 [        ] তাঁর যুদ্ধযাত্রাকালে দুন্দুভির শব্দে সমুদ্রকল্লোলের মহাভয়ংকর শব্দও তিরােহিত হয়ে গেল । ঐরাবত প্রভৃতি দিগগজগুলি সেই শব্দ শুনে ভীতিবিহ্বল চিত্তে কাঁপতে লাগল । সৈন্যগণের পদভারে পৃথিবীমণ্ডল এতই অবনত হয়ে পড়ল যে , অনন্তনাগের মস্তকও পৃথিবী ধারণে যেন অশক্ত হয়ে পড়েছিল । 
 

[          ] এদিকে মালবাধিপতি মানসারও বহুসংখ্যক হস্তী, অশ্বাদি বহু সৈন্য সঙ্গে নিয়ে মূর্তিমান সমরের ন্যায় ক্রোধাবিষ্ট হয়ে পরম আগ্রহের সহিত মগধরাজের অভিমুখে পুনরায় নির্গত হলেন । শুরু হল তুমুল যুদ্ধ । উভয়পক্ষীয় সৈন্য পরস্পর পরস্পরকে অস্ত্রের দ্বারা,পরস্পর পরস্পরকে হস্তের দ্বারা আঘাত করতে লাগল । সেই যুদ্ধে উভয়পক্ষের বহু সৈন্য নিহত হল । অতঃপর মগধরাজ , মালবরাজের সকল সৈন্য বিনষ্ট করে তাঁকে জীবন্ত অবস্থায় ধরেও দয়াপরবশ হয়ে তাঁকে ( মানসারকে ) তদীয় রাজ্যে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করলেন ।



 

রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২

পিশাচ এবং চোর উভয়েই কীভাবে আপন আপন কর্মসাধনে ব্যর্থ হল , তা বিবৃত করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh পিশাচ এবং চোর উভয়েই কীভাবে আপন আপন কর্মসাধনে ব্যর্থ হল , তা বিবৃত করাে pisach abong chor uvoyei kivabe apon apon kormosadhoner bartho holo bibroto koro



উত্তর: ‘ ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা ’ গল্পে চোরটি হতদরিদ্র ব্রাক্ষ্মণের একমাত্র সম্বল যজমান প্রদত্ত গােরু দুটি চুরি করার বাসনা নিয়ে রাতে যাত্রা করে অর্ধপথে হঠাৎ এক ব্ৰহূরাক্ষসের সাক্ষাৎ পেল । উভয়ে উভয়ের পরিচয় দিল এবং উভয়ে উভয়ের ব্রাত্মণের গৃহে গমনের উদ্দেশ্য ব্যক্ত করল । অতপর দুজনে গিয়ে সময়ের অপেক্ষা করতে লাগল । ব্রাহ্মণ নিদ্রিত হলে ব্ৰহূরাক্ষসটি ব্রাহ্মণকে খেতে উদ্যত হলে চোরটি বাধা দিয়ে বলল যে , এটি ঠিক হচ্ছে না । সে (চোর ) আগে গােরু দুটি চুরি করে নিয়ে যাক , তারপর রাক্ষস ব্রাত্মণকে ভক্ষণ করুক । কিন্তু দুজনেই আগে আপন আপন কর্ম সম্পাদন করতে চাইল । দুজনেই নিজ নিজ দাবির সপক্ষে যুক্তি দেখাল । পরিশেষে , উভয়ের মধ্যে বিবাদ উপস্থিত হল । তাদের বাদানুবাদ এমন পর্যায়ে পৌছােল যে, তাদের চিৎকারে ব্রাক্ষ্মণের ঘুমভেঙে গেল ।

[      ] ব্রাহ্মণ কিছু বুঝে ওঠার আগেই চোরটি ব্রাক্ষ্মণকেজানাল যে , এই রাক্ষস ব্রাক্ষ্মণকে ব্রাত্মণকে ভক্ষণ করার জন্য এসেছে । রাক্ষসটিও ব্রাত্মণকে জানাল যে , ওই চোরটি ব্রাক্ষ্মণের গােরু দুটি চুরি করার জন্য এসেছে । তাদের কথা শুনে ব্রাক্ষ্মণ সতর্ক হয়ে উঠলেন এবং ইষ্টদেবতার মন্ত্রজপের দ্বারা ব্ৰত্মরাক্ষসটিকে তার কর্ম থেকে নিরস্ত করে নিজের জীবন বাঁচালেন এবং পরে লগুড় উদ্যত করে চোরটিকে তাড়িয়ে দিলেন । 


[        ] ‘ আমি আগে কাজ সারি ’ — এই দাবিটিই হল ব্ৰহ্রারাক্ষস ও চোরের বিবাদের মূল কারণ । আর এই যে-বিবাদের সূত্রপাত হল , তা এমন পর্যায়ে পৌঁছােল যে তাদের চিৎকারে ব্রাত্মাণের ঘুম ভেঙে গেল । চোর এবং রাক্ষস উভয়েই আপন আপন কর্মসাধন্যে ব্যর্থ হল । 



 

শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২২

রাজহংসের রাজধানীর নাম কী ? এটি কোন্ দেশের রাজধানী ? রাজধানীটির বর্ণনা দাও

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh রাজহংসের রাজধানীর নাম কী এটি কোন্ দেশের রাজধানী  রাজধানীটির বর্ণনা দাও rajhongser rajdhanir nam kon desher rajdhani bornona dao


উত্তর : রাজহংসের রাজধানীর নাম পুষ্পপুরী । ‘পুষ্পপুরী ’ মগধ দেশের রাজধানী । কথাশিল্পী মহামতি দণ্ডী তাঁর ‘ দশকুমাররচিতম ’ নামক বিশ্ববিশ্রুত গদ্যকাব্যে পুষ্পপুরীর যে মনােজ্ঞ এবং সমৃদ্ধ বর্ণনা দিয়েছেন তা অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক এবং হৃদয়গ্রাহী । কবি যেন বিশ্বের সমস্ত নগরীগুলি কষ্টিপাথরে পরীক্ষা করে এই নগরীটির শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপাদন করেছেন । কবির ভাষায় নগরীটি ছিল “ সমস্ত নগরীনিকষায়মাণা । ” ধন - জনে পরিপূর্ণ এই নগরীর বিভিন্ন প্রান্তে ছিল অসংখ্য সজ্জিত সুসমৃদ্ধ বিপণি যেগুলি মণিমানিক্যের ছটায় ঝলমল করত । অগাধসলিল রত্নাকর যেমন গর্ভে অসংখ্য রত্ন ধারণ করে আছে , নগরীর বিপণিগুলি সেরূপ মহােজ্জ্বল মণিমাণিক্যগুলি স্ব স্ব বক্ষে ধারণ করে যেন রত্নাকরেরই রূপ অনুকরণ করে আছে । রত্নাকরের গর্ভস্থিত রত্নরাজি অপ্রকাশিত , কিন্তু বিপণিগুলির মহামূল্য অত্যুজ্জ্বল সামগ্রীর পশরা সুসজ্জিত এবং প্রকাশমান । সেদিক দিয়ে রত্নগর্ভ সমুদ্রও নগরীর কাছে যেন হার মেনেছে । মগধে বহু রাজ্য আছে , কিন্তু পুষ্পপুরী সৌন্দর্যে এবং সমৃদ্ধিতে অতুলনীয় । রাজহংসের মতাে প্রবল পরাক্রমশালী রাজা দেশের রক্ষক । সৌভাগ্যবান রাজার আনুকূল্যে রাজ্যটিও সৌভাগ্যযুক্ত । দেশে দারিদ্র্যের লেশমাত্র নেই । সেখানে যাগ -যজ্ঞ ছিল প্রাত্যহিক ব্যাপার । সেখানে বহুবিশিষ্ট ব্রাত্মণ বাস করতেন যাঁরা ছিলেন শাস্ত্রজ্ঞ,বিনয়াদি গুণসম্পন্ন , যশস্বী এবং মহাবিদ্বান । এঁদের দ্বারা দেশের রাজারাও ছিলেন বিদ্যোৎসাহিত এবং নানা শাস্ত্রে পারঙ্গম । সুতরাং , নিঃসন্দেহে বলা যায় রাজ্যে সৌরাজ্য সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল । কবি এইভাবে পুষ্পপুরীর এক মনােজ্ঞ বর্ণনা দিয়েছেন ।


শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০২২

নারায়ণের মৎস্যাবতাররূপে আবির্ভাবের পৌরাণিক কাহিনি বিবৃত করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh নারায়ণের মৎস্যাবতাররূপে আবির্ভাবের পৌরাণিক কাহিনি বিবৃত করাে narayaner motsobotar rupe abirvaber pouranik kahini bibroto koro


উত্তর : কোনাে একসময় বৈবস্বত মনু নামে এক মহর্ষি (মতান্তরে সত্যব্রত নামে এক রাজা ) ছিলেন । তিনি অযুত বছর অতি কঠোর তপস্যা করেছিলেন । একদিন তিনি আদ্র বস্ত্র বস্ত্রপরিধান করে জটাধারী হয়ে চারিণী নদীতীরে তপস্যা করছিলেন । সেই  সময় একটি ছােট্ট মৎস্য তাঁর কাছে এসে জানালেন , “মহারাজ , দেশে মাৎস্যন্যায় দেখা দিয়েছে । বড়াে মাছগুলি ছােটো মাছগুলিকে গিলে ফেলছে । আমি নিতান্ত ছােট্ট মৎস্য । আপনি আমাকে রক্ষা করুন । আমিও আপনাকে রক্ষা করব ।” মনু জিজ্ঞাসা করলেন , “তুমি কীভাবে আমাকে রক্ষা করবে ? ” মৎস্যটি বলল , “মহাশয় , জগতের সংহার -সময় উপস্থিত হয়েছে । অচিরে এক মহাপ্লাবন সংঘটিত হবে । সেই প্লাবনে জগৎ লয়প্রাপ্ত হবে । আপনি পূর্বেই রজ্জুসংযুক্ত একটি সুদৃঢ় নৌকা নির্মাণ করিয়ে রাখুন এবং সপ্তর্ষিগণ,বেদসমূহ এবং সৃষ্টির বীজ সংগ্রহ করে রাখুন । প্লাবন উপস্থিত হলে আপনি পূর্বসংগৃহীত বীজাদি - সহ নৌকায় আরােহণ করবেন । তখন একটি শৃঙ্গধারী মৎস্য আপনার কাছে উপস্থিত হবে । মৎস্যের শৃঙ্গে আপনি নৌকাটি বেঁধে দেবেন । সেই মৎস্য আপনাকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেবে ।”মনু সদয়হৃদয় হয়ে মৎস্যটিকে জল থেকে তুলে আপন কমণ্ডলুতে রেখে দিলেন । পরদিন দেখেন মৎস্যটি এমন বড়াে হয়ে গেছে যে, সে কমণ্ডলুতে ঘােরাফেরা করতে পারছে । মাছটি মনুকে অন্য বৃহৎ জলাশয়ে রাখতে বলেন । মাছটিকে এক বৃহৎ জলাশয়ে রাখা হল । পুনরায় মাছটি দ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে লাগল । তখন মৎস্যের অনুরােধে তাকে গঙ্গায় এবং গঙ্গা থেকে সাগরে রাখা হল ।



[        ] অতঃপর সেই ভয়ংকর দিন উপস্থিত হল । দেখা দিল মহাপ্লাবন । মনু , সপ্তর্ষিগণ,বেদসমূহ এবং সৃষ্টির বীজসমূহ নিয়ে নৌকায় অবস্থান করলেন । উপস্থিত হল সেই শৃঙ্গধারী মৎস্য । মনু যত্নপূর্বক মৎস্যের শূঙ্গে নৌকাটি বেঁধে দিলেন । মৎস্য নৌকা নিয়ে হিমালয়ের সুউচ্চ স্থানে গেল । পুনরায় মৎস্যটি বলল , “ আপনি এখানে নিরাপদে থাকুন । ক্রমে ক্রমে জল যখন কমতে থাকবে , আপনিও ধীরে ধীরে অবতরণ করবেন ।” সেই কারণে হিমালয়ের ওই শৃঙ্গ ‘নৌবন্ধনশৃঙ্গ ’-রূপে পরিচিত । অতঃপর মৎস্যের নির্দেশে মহাত্মা মনু স্থাবর, জঙ্গম ,দেবাসুর , মানুষ প্রভৃতি প্রজাবর্গও লােকসকল সৃষ্টি করলেন ।


 

বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২২

কালিদাসের মেঘদূতম নাটক গীতিকাব্যে যক্ষ কেন মেঘকে দূত হিসেবে নিয়ােগ করতে চাইল

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh কালিদাসের মেঘদূতম নাটকে গীতিকাব্যে যক্ষ কেন মেঘকে দূত হিসেবে নিয়ােগ করতে চাইল jokkho keno meghke dite hisebe niyog korte chailo


উত্তর : ‘ মেঘদূতম্ কাব্যে প্রথমেই আমরা নায়ক বিরহী যক্ষের পরিচয় পাই । যক্ষরাজ কুবেরের সে ছিল এক অনুচর । তরুণ সে , গৃহে তার উদ্ভিন্নযৌবনা নববিবাহিত বধূ । তরুণী প্রিয়ার প্রথম প্রেমের আবেগে সে তখন অভিভূত । তৎকালীন মনের অবস্থা নিয়ে প্রভুর কাজে অবহিত থাকা কোনাে তরুণের পক্ষেই সম্ভবপর নয় । তাই যক্ষের কাজে প্রতিদিন ভুল হতে লাগল । অতঃপর যক্ষপতি রুষ্ট হয়ে এক বছরের জন্য তাকে অলকা থেকে রামগিরি আশ্রমে নির্বাসিত করলেন । অভিশপ্ত যক্ষ মনের দুঃখে রামগিরি আশ্রমে এসে বসবাস করতে লাগল । কিন্তু মন তার পড়ে রইল সেই সুদূর অলকায় , যেখানে তার পরানপ্রিয়া তার বিরহে একাকিনী নয়নাশ্রুজলে কালযাপন করছে । গুরু বিরহভার বক্ষে ধারণ করে গভীর মনস্তাপে তার দিন যেন আর কাটতে চাইছিল না । বেচারি প্রিয়ার জন্য ভেবে ভেবে একেবারে শীর্ণ হয়ে গেছে । তার হাতের বালা ঢিলে হয়ে কখন যে একগাছি বালা মণিবন্ধ থেকে খসে পড়েছে সেদিকে তার খেয়ালই নেই । সে দিনের - পর -দিন রামগিরি শিখরে বসে উত্তরে অলকার পানে চেয়ে স্তব্ধ হয়ে মনে মনে শুধু তার প্রিয়তমার বিরহমলিন রূপ ধ্যান করছে । নিবিড়ঘন -ছায়াতরু-ঘেরা রামগিরি আশ্রম , সে এক রমণীয় পার্বত্যকুঞ্জ । তার প্রতিটি চূড়ায় শ্রীরামচন্দ্রের সুচারু পাদপদ্ম অঙ্কিত রয়েছে । প্রত্যেক গিরিনিঝরিণীটি স্নানার্থিণী জনকতনয়ার পবিত্র অঙ্গ স্পর্শে পুণ্যোদক হয়ে উঠেছে । প্রতি পদক্ষেপে রামগিরি বিরহব্যথাতুর যক্ষকে রাম -সীতার মিলনানন্দে অরণ্যবাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাকে অধিকতর আকুল করে তুলল ।

[        ] নিদারুণ বিরহ যন্ত্রণায় সে যতই কাতর হচ্ছে, ততই ভাবছে তার প্রেয়সী এই বিরহ যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছে তাে ? শাপান্তের পর ফিরে গিয়ে তাকে যক্ষ জীবিত দেখবে তাে ? সে উতলা হয়ে উঠল । যেভাবেই হােক প্রেয়সীকে নিজের কুশল সংবাদটুকু পাঠাতে সে বদ্ধপরিকর । এমন সময় আষাঢ় মাসের প্রথম দিকে আকাশে মেঘের সঞ্চার দেখতে পেল ।মেঘ তাে পূর্ব থেকে উত্তরেই ভেসে চলেছে । তা হলে সে মেঘকেই বার্তাবহরূপে প্রেরণ করতে চাইল । একবারও ভেবে দেখল না মেঘ অচেতন । যে প্রেমােন্মত্ত, যে প্রণয়িণীর বিচ্ছেদে অতিব্যাকুল মিলনের , আকাঙ্ক্ষায় অধীর আত্মহারা , সে চেতন - অচেতনের ভেদাভেদ ভুলে যায় । “কামার্তা হি প্রকৃতিকৃপণাশ্চেতনাচেতনে্যু । ” সুতরাং , যক্ষ মেঘকেই দূতরূপে বরণ করতে স্থিরসংকল্প হয়ে নবপ্রস্ফুটিত কুটজ পুষ্পের অর্ঘ্য রচনা করে মেঘকে স্বাগত জানাল । 

বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০২২

তােমাদের পাঠ্যাংশে কবি বিরহী যক্ষের যে- চিত্র এবং তার অন্তর্বেদনার করুণ অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুলেছেন , তা ব্যক্ত করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত  প্রশ্নোত্তর সাজেশন class11Sanskrit question answer class xi eleventh তােমাদের পাঠ্যাংশে কবি বিরহী যক্ষের যে- চিত্র এবং তার অন্তর্বেদনার করুণ অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুলেছেন , তা ব্যক্ত করাে kobi birohi jokher je chitro abong tar antobedonar korun ovibakti futiye tulechen ta bakto koro


উত্তর : পাঠ্যাংশের প্রথমেই আমরা ‘মেঘদূতম ’-এর বিরহী যক্ষের পরিচয় পাই । অলকাধিপতি যক্ষরাজ কুবেরের সে ছিল এক অনুচর । তরুণী প্রিয়ার প্রথম প্রেমের প্রবল আবেগে অভিভূত যক্ষের প্রভুর কাজে অবহিত থাকা সবসময় সম্ভব নয় । ফলে যক্ষ কর্তব্যকর্ম ঠিক ঠিক সম্পাদন করতে না -পারায় প্রভুর দ্বারা অভিশপ্ত হল । তার সকল মহিমা খর্ব করে তাকে এক বছরের জন্য অলকা থেকে রামগিরির আশ্রমে নির্বাসিত করা হল । অসহায় যক্ষ রামগিরিতে অবস্থান করলেও তার মন পড়ে রইল অলকায় —যেখানে তার প্রাণপ্রিয়া একাকী নয়নাশ্রুবর্ষণ করে কালযাপন করছে । গুরু বিরহভার অন্তরে বহন করে গভীর মনস্তাপে যক্ষের দিন কাটছিল । প্রিয়ার জন্য ভেবে ভেবে সে একেবারে শীর্ণ হয়ে গেছে । বালা ঢিলে হয়ে কখন যে মণিবন্ধ থেকে খসে পড়েছে সে-বিষয়ে যক্ষের খেয়ালই নেই । সে অস্থির চঞ্চল । রামগিরির কোনাে একটি আশ্রমে সে স্থায়ীভাবে বাস করতে পারছে না। আশ্রম থেকে আশ্ৰমান্তরে ঘুরে ঘুরে কাটায় । সেইজন্য কবি লিখেছেন “রামগির্যাশ্রমেষু” । রামগিরির প্রত্যেক চূড়ায় শ্রীভগবান রামচন্দ্রের সুচারু পাদপদ্ম অঙ্কিত রয়েছে । তার প্রত্যেক গিরিনিঝরিণীটি জনকতনয়ার পবিত্র । অঙ্গস্পর্শে পুণ্যোদক হয়ে উঠেছে । প্রতিটি মুহূর্তে বিরহব্যথাতুর যক্ষকে রাম - সীতার মিলনানন্দে অরণ্যবাসের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রামগিরি তাকে অধিকতর আকুল করে তুলেছিল । 
নিবিড় - ঘন - ছায়াতরু ঘেরা রামগিরি আশ্রম এক রমণীয় । পার্বত্যকুঞ্জ হলেও ওই কুঞ্জ তাকে সুখ দিতে পারেনি । সে দিনের - পর -দিন রামগিরি শিখরে বসে উত্তরে অলকার পানে চেয়ে স্তব্ধ হয়ে মনে মনে শুধু প্রিয়তমার স্বপ্ন রচনা করে । নিদারুণ বিরহ যন্ত্রণায় যক্ষ যতই কাতর হয়ে পড়ে , ততই তার ভাবনা হচ্ছে সেই গৃহে ফেলে আসা বিরহিণী তরুণী প্রিয়ার জন্য, তার ভয় হয় এত বিরহ যন্ত্রণা সহ্য করে তার প্রিয়া জীবন ধারণ । করতে পারবে তাে ? শাপান্তে ফিরে গিয়ে সে তার প্রিয়াকে জীবন্ত দেখতে পাবে তাে ? কোনােরকমে প্রিয়ার কাছে তার কুশলময়ী বার্তা এবং শাপাবসানের দিনটি জানাতে পারলে যক্ষ আশ্বস্ত হয় । কিন্তু এই দুর্গম পথে কাকেই বা পাঠায় ? এমন সময় পূর্বাকাশে আষাঢ়ের প্রথম ঘনঘটা দেখা দিল । আষাঢ়ের প্রথম দিবসে মেঘকে আকাশে সঞ্চারিত হতে দেখে চেতন - অচেতনের ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে যক্ষ মেঘকেই তার দূতরূপে অলকায় পাঠাবার থির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল । যক্ষ যে এখন প্রেমােন্মত্ত, মিলনের জন্য অধীর ও আত্মহারা । তার কাছে চেতন - অচেতনের ভেদাভেদ দূর হয়ে গেছে । অতএব , সদ্যপ্রস্ফুটিত কুটজ কুসুমের অর্ঘ্য সাজিয়ে সে মেঘকে স্বাগত জানাল ।

 কবি কালিদাস যক্ষের অন্তর্বেদনাকে যেভাবে পরিস্ফুট করেছেন , তা শুধু মেঘদূতের যক্ষের অন্তর্বেদনা নয়, বিশ্বের সকল বিরহীর এক মর্মন্তুদ বিরহবেদনা , বেদনভরা হৃদয়ের এক অব্যক্ত আর্তি ।

মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০২২

দশ অবতারের কাহিনি নিজের ভাষায় লেখাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh দশ অবতারের কাহিনি নিজের ভাষায় লেখাে dosh abotarer kahini nijer bhashay lekho


উত্তর : ‘ গীতবােবিন্দম ’ নামক গীতিকাব্যের সামােদদামােদর নামক প্রথম সর্গের অন্তর্গত বিয়ুর দশাবতার গুলি হল- ১ ) মৎস্য , ) ২ ) কূর্ম, ( ৩ ) বরাহ , ( ৪ ) নৃসিংহ , ৫ ) বামন , ৬ ) পরশুরাম , ৭ ) রাম , ৮ ) বলরাম , ৯ ) বুদ্ধ এবং ১০) কল্কি । কবি এই  সকল অবতারের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের  কার্যকলাপসমূহ বর্ণনা করেছেন এবং সেখানে বিষ্ণুর বিশেষণরূপে কেশব , জগদীশ , হরি ইত্যাদি সম্বােধন ব্যবহার করেছেন । 
    ( ১ ) মৎস্যাবতারে পয়ােধিজলমগ্ন বেদরাশি রক্ষিত হয়েছিল । 
    
    ২ ) কূর্মাবতারে পৃষ্ঠদেশে ধরণী ধৃত হয়েছিল ।  
    
    ৩)এই অবতারে শ্রীহরি দাঁতের অগ্রভাগে সমগ্র পৃথিবীকে ধারণ করেন । 
    
    ৪ ) নৃসিংহাবতারে হিরণ্যকশিপু নিধনের ফলে ধরিত্রী বিপন্মুক্ত হয় । 
    
    ৫ ) বামনাবতারে বলিকে বধ করায় জগৎ পবিত্র হয়েছিল । 
    
    ৬ ) পরশুরামাবতারে একুশ বার ক্ষত্রিয় নাশ করায় অত্যাচারের হাত থেকে মানবজাতি রক্ষিত হয়েছিল । 
    
    ৭ ) রামাবতারে অত্যাচারী রাবণের বধ সংঘটিত হয়েছিল । 
    
    ৮ ) এই অবতারে শ্রীহরি লাঙল - এর সাহায্যে বাঁধ নির্মাণ করে যমুনার জলপ্লাবন থেকে মথুরাবাসীকে রক্ষা করেন । 
    
    ৯ ) বুদ্ধাবতারে বেদরাশির নিন্দাকরা হয়েছিল । 
    
    ১০) কল্কি অবতারে স্মচ্ছবধ সাধিত হবে , এইরূপ ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে । 
    

এই হল বিষ্ণুর দশ অবতারের অতিসংক্ষিপ্ত কার্যাবলি, যা যুগে যুগে দুষ্টের বিনাশসাধন করে এই পৃথিবীকে রক্ষা করেছে ।

সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২

গদ্যসাহিত্যে দণ্ডীর অবদান উল্লেখ করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh গদ্যসাহিত্যে দণ্ডীর অবদান উল্লেখ করাে goddo sahitya dondir obodan koro



উত্তর :  গদ্যকাব্যের জগতে দণ্ডী, বাণ এবং সুবন্ধুরই একচ্ছত্র আধিপত্য । সুতরাং , এই কবিত্রয়ের পূর্বে গদ্যকাব্যের অস্তিত্ব থাকলেও এই তিন কবির লেখনীতে গদ্যকাব্যের যে সুবর্ণযুগ দেখা যায় , তা নিঃসন্দেহে পূর্বসূরিদের প্রতিভাকে ম্লান করে দিয়েছে  এই তিন কবিকেই মূলত গদ্যকাব্যের পথিকৃৎ বলা যায় । 
        “ এয়াে দণ্ডিপ্রবন্ধাশ্চ ত্ৰিষু লােকেষু বিশুতাঃ । ” — এই উক্তি থেকে স্পষ্টতই বােঝা যায়, দণ্ডী তিনখানি গ্রন্থের রচয়িতা । তাঁর প্রসিদ্ধ গ্রন্থগুলির মধ্যে ‘ দশকুমারচরিতম্ ’ নামক গদ্যসাহিত্য এবং ‘ কাব্যাদর্শ ’ নামক অলংকারশাস্ত্র সুবিদিত । বহু মতানৈক্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত ‘অবন্তিসুন্দরীকথা ’ নামক আখ্যায়িকাটিকে দণ্ডীর রচনা বলেই স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে । 
        
        
[        ]  দণ্ডীর গদ্যকাব্যগুলির মধ্যে দশকুমারচরিতম ’- ই সর্বাধিক সমাদৃত । দশজন কুমারের জীবনচরিত অবলম্বন করে গ্রন্থখানি রচিত । এই গ্রন্থের কেন্দ্রীয় চরিত্র হল রাজকুমার রাজবাহন । মগধরাজ রাজহংস মালবরাজ মানসারের কাছে পরাজিত হয়ে সস্ত্রীক বিন্ধ্যগিরিতে বাস করতে থাকেন । সেইখানেই রাজবাহনের জন্ম । রাজার মন্ত্রীদের এবং বন্ধুর আরও ৯ জন কুমার রাজার নিকট প্রেরিত হয় এবং এই দশজন কুমারের লালনপালন ও শিক্ষাদীক্ষার দায়িত্ব রাজার ওপর বর্তায় । পরে যৌবনপ্রাপ্ত কুমারগণ দিগবিজয়ে যাত্রা করে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন । দীর্ঘকাল পরে তাঁদের পুনর্মিলন ঘটে এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ জীবনের ঘটনা ও অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন । এই কাহিনি নিয়েই ‘দশকুমারচরিতম্ । ‘

[       ]  দশকুমারচরিতম্ নাম অনুসারে দশজন কুমারের বৃত্তান্ত আশা করা যায় । তন্মধ্যে আটটি উচ্ছ্বাসে আট জন কুমারের কাহিনি লিপিবদ্ধ আছে । পরে এই অসম্পূর্ণতা দূর করার জন্য পূর্বপীঠিকা এবং উত্তরপীঠিকা নামে দুটি অংশ মূলগ্রন্থের সঙ্গে যুক্ত করা হয় । বর্তমানে কাব্যটি যেভাবে পাওয়া যায়, তা মূলত তিনভাগে বিভক্ত— (১ ) পূর্বপীঠিকা , (২ ) উত্তরপীঠিকা এবং ( ৩ ) উপসংহার । 


কবির অপর একটি গদ্যকাব্য হল ‘ অবন্তিসুন্দরীকথা ' । সম্ভবতঃ অবন্তিসুন্দরীর কাহিনি ছিল দশকুমারচরিতে বর্ণিত মূল কাহিনির প্রারম্ভিক অংশ এবং পরবর্তীকালে উক্ত রচনাটি লুপ্ত হলে তার সারাংশ দশকুমারের পূর্বপীঠিকারূপে যুক্ত হয় । 

তাই পণ্ডিতদের অনুমান অবন্তিসুন্দরীর মূল কাহিনি বৃহৎকথার কোনাে গল্প থেকে সংগৃহীত । অবন্তিসুন্দরীতে সমুদ্রদত্ত ও কাদম্বরী এবং শৌনক ও বন্ধুমতীর আখ্যান বিবৃত । গদ্য রচয়িতা হিসেবে দণ্ডীর রচনায় সামঞ্জস্যবােধ আছে । শ্লেষ , অর্থহীন শব্দভাণ্ডার বা সুদীর্ঘ সমাসের দ্বারা অযথা তাঁর রচনা কোথাও ভারাক্রান্ত হয়নি । ছন্দের প্রত্যক্ষ যােগ না থাকলেও কাব্যে ছন্দগত দোলা , ধ্বনি, মাধুর্য এবং শব্দ ঝংকারের বৈচিত্র্য সুস্পষ্ট । তাঁর রচনা পড়ে “গদ্যং কবীনাং নিকষং বদন্তি ” —এই বােধ জাগে । তাঁর বক্তব্য স্পষ্ট,ভাষা সরল , ললিত এবং সাবলীল । আর কাহিনিও চিত্তাকর্ষক । এই জন্যই বলা হয়— “ দণ্ডিনঃ পদলালিত্যম । ” 


 চরিত্রচিত্রণে কবি সিদ্ধহস্ত । মুখ্য চরিত্রগুলি তাে বটেই , এমনকি কামমঞ্জরী , বসুপালিত , মরীচি প্রভৃতি গৌণচরিত্রগুলিও তাঁর রচনায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে । তৎকালীন সমাজের নৈতিক অবনতি , যথা লােভ , অসাধুতা , প্রতারণা, গুপ্তপ্রেম, নারীহরণ , চুরি , জুয়াচুরি প্রভৃতি কুৎসিত দিকগুলিও ব্যক্ত করতে কবি কুণ্ঠিত হননি । কাল্পনিক আদর্শ সমাজচিত্র রচনা করা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না । বাস্তব জীবনের প্রতি তাঁর দৃষ্টি অধিক নিবদ্ধ ছিল । দণ্ডীর কবিপ্রতিভা ছিল অনন্যসাধারণ । প্রাকৃতিক বর্ণনায়, মানবিক রূপ ও গুণ বর্ণনায় , ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ - পরিহাসে , বাচাতুর্যে এবং হাস্যরস সৃষ্টিতে তাঁর নৈপুণ্য অসাধারণ । তিনি ছিলেন একজন কুশলী কথাশিল্পী ।

রবিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২২

রাজা রাজহংসের মন্ত্রীও তৎপুত্রদের পরিচয়

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh রাজা রাজহংসের মন্ত্রীও তৎপুত্রদের পরিচয় raj hongser montri o totputroder porichoy


উত্তর : কবি দণ্ডী বিরচিত ‘ দশকুমারচরিতম্ রাজা ‘ গদ্যাংশে রাজা রাজহংসের ধর্মপাল পদ্মেদ্ভব এবং সিতবর্মা নামে তিনজন মন্ত্রী ছিলেন । সকলেই ছিলেন রাজার একান্ত অনুগত এবং ধীশক্তিসম্পন্ন । তাঁদের মধ্যে সিতবর্মার সুমতি ও সত্যবর্মা নামে দুই পুত্র জন্মে । সত্যবর্মা ছিলেন ধর্মপরায়ণ । তিনি সংসারের অসারতা এবং অনিত্যতার কথা চিন্তা করে সংসারত্যাগী হয়ে তীর্থে তীর্থে পরিভ্রমণ করতে থাকেন । ধর্মপালের তিন পুত্র — সুমিত্র , সুমন্ত্র , এবং কামপাল । পুত্রদের মধ্যে কামপাল ছিলেন দুর্বিনীত এবং বিপথগামী । তিনি কখনও লম্পটের সঙ্গে মিশে , কখনও নাটকের দলে অভিনেতা রূপে প্রবেশ করে কখনও বা বেশ্যাতে আসক্ত হয়ে নানা স্থানে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন । পদ্মেদ্ভবের দুই পুত্র — সুশ্রুত এবং রত্নেদ্ভব । তন্মধ্যে রত্নেদ্ভব ব্যাবসা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে সমুদ্রযাত্রা করেন । সাত মন্ত্রীপুত্রের মধ্যে অবশিষ্ট চারজন - সুমতি , সুমন্ত্র , সুমিত্র এবং সুশ্রুত তাঁদের পিতৃগণের মৃত্যুর পর রাজা রাজহংসের মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করেন ।

শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০২২

পণ্ডিত বিষ্ণুশর্মার রচনাশৈলী সম্বন্ধে আলােচনা করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh পণ্ডিত বিষ্ণুশর্মার রচনাশৈলী সম্বন্ধে আলােচনা করাে pondit bishnusharmar rochonashoili sombondhe alochona koro

উত্তর: খ্রিস্টপূর্ব যুগের এক বিরল প্রতিভাধর পণ্ডিত হলেন পঞ্চতন্ত্র -এর লেখক বিষ্ণুশর্মা । রূপকথা ও গল্পের কল্পলােকে মানুষের অতৃপ্ত বাসনা , অপূর্ণ শক্তি, অসাধ্য ক্ষমতা এবং অবিশ্বাস্য ঘটনা সবই মনােজগতে পরিপূর্ণ সার্থক হয়ে ওঠে । মানুষের মনে গল্প-কাহিনির আকর্ষণ চিরন্তনকালের । বাস্তবের চেয়ে গল্পে বর্ণিত কল্পনার জগৎ অধিক রমণীয় । সেটি লক্ষ্য করেই কবি পশুপাখির মুখে কথা ফুটিয়ে গল্প রচনা করেছেন । রাজা অমরশক্তির তিন জড়বুদ্ধিসম্পন্ন পুত্রকে শাস্ত্রজ্ঞ করে তোলার জন্য কবির ‘ পঞ্চতন্ত্রম ’ রচনা । ছােটো ছােটো গল্পের মাধ্যমে তিনি বালকদের ধর্মশাস্ত্র এবং নীতিশাস্ত্রের উপদেশ দিয়েছেন । পশুপাখির রূপকের মধ্য দিয়ে তিনি সমাজের জ্ঞানী-গুণী,শঠ ধূর্ত ,ভণ্ড- প্রতারক -সকল মানুষের চরিত্র সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন । তাঁর কাব্যে গল্পের রাজ্যে বাস্তব ও কল্পনার আশ্চর্য সংমিশ্রণ ঘটেছে । অঘটনঘটনপটীয়সী কল্পনার রঙে রাঙানাে সর্বসাধারণের চিত্তবিনােদনের অমূল্য উপকরণরূপে চেতন ও জড় জগতের মনুষ্য ও মনুষ্যেতর সকলকে নিয়েই কথাসাহিত্যের বিচিত্র রসের কারবার । তাঁর রচিত সাহিত্যের উপাদান ও বৈশিষ্ট্য অনুধাবন করলে তার বহুধা বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায় । ধর্ম,রাজনীতি ও সমাজনীতির আদর্শ , গুরুগম্ভীর ও লঘুচপল বক্তব্য, ব্যঙ্গ-কৌতুক প্রভৃতি সর্বজনবােধ্য ভাষার মাধ্যমে উপস্থাপিত ।

[         ]  কবি তাঁর গ্রন্থের কথামুখে বলেছেন— “এতৎ পঞতন্ত্র বালকদের নাম নীতিসারং বালকবােধনার্থং ভূতলে প্রবৃত্ত । ” বালকদের অববোধনের জন্য তাঁর রচনা । সুতরাং , তাঁর ভাষা সহজ , সরল এবং সুপাঠ্য । তিনি নিজের পাণ্ডিত্য জাহির করার কোথাও সুদীর্ঘ সমাসের দ্বারা , নানাবিধ অলংকার প্রয়োগের দ্বারা দুরুচ্ছায শব্দের দ্বারা গ্রন্থটিকে পাঠকদের কাছে দুর্বোধ্য করে তোলেননি । তাঁর ভাষা সহজ সরল অথচ হৃদয়গ্রাহী । গ্রন্থখানি বালক বালিকারা যতই পড়ে , ততই তারা আনন্দে আপ্লুত হয় । ‘পঞ্চতন্ত্রম’ এর ভাষা সহজ , অনাড়ম্বর । গল্পের অঙসৌষ্টব সন্নন্ধ এবং নীতি আদর্শের ভাবনা শিল্পসম্মতভাবে বিন্যস্ত ।


[         ] মূল রচনা গদ্যে নিবন্ধ , মাঝে মাঝে নীতি উপদেশাত্মক শ্লোকসংযুক্ত । উক্ত শ্লোকগুলি প্রাচীণ যুগেই বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল এবং মহাভারত , স্মৃতিপুরাণ প্রভৃতি গ্রন্থে এ জাতীয় বহূ শ্লোক উদ্বৃত আছে ।

শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০২২

রামায়ণে ক -টি কাণ্ড আছে ? কাণ্ডগুলি কী কী ? রামায়ণের কাণ্ডভিত্তিক বিষয়বস্তু আলােচনা করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস  প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh রামায়ণে ক -টি কাণ্ড আছে কাণ্ডগুলি কী কী রামায়ণের কাণ্ডভিত্তিক বিষয়বস্তু আলােচনা করাে ramayana koti kando ache kando guli ki ki kando bhittik bishoyabostu alochona koro


উত্তর :  আদি কবি বাল্মীকি রচিত ‘রামায়ণ ’ আদি মহাকাব্য । চব্বিশ হাজার শ্লোকে রচিত এই মহাকাব্যখানি সাতটি কাণ্ডে বিভক্ত । কাণ্ডগুলি যথাক্রমে -( ১ ) আদিকাণ্ড বা বালকাণ্ড ( ২ ) অযােধ্যাকাণ্ড ( ৩ ) অরণ্যকাণ্ড , ( ৪) কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড ( ৫ ) সুন্দরকাণ্ড ( ৬ ) লঙ্কাকাণ্ড বা যুদ্ধকাণ্ড এবং ( ৭ ) উত্তরকাণ্ড । 

প্রাচীন ভারতের মহৎ এবং ঐতিহ্যপূর্ণ ইতিহাসরূপে রামকথা তথা রামায়ণ সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ধর্মীয় পুরাবৃত্ত । এই মহাকাব্যখানির কাণ্ডভিত্তিক বিষয়বস্তু হল  

আদিকাণ্ড বা বালকাণ্ড : কোশল দেশের রাজধানী  অযােধ্যার রাজা দশরথ । তাঁর তিন রানি কৌশল্যা , কৈকেয়ী এবং সুমিত্রা । তিনি নিঃসন্তান । বশিষ্ঠের পরামর্শে ঋষ্যশৃঙ্গ মুনির তত্ত্বাবধানে যজ্ঞ করে চার পুত্রলাভ করেন । কৌশল্যার গর্ভে রাম , কৈকেয়ীর গর্ভে ভরত , সুমিত্রার গর্ভে লক্ষ্মণ ও শত্রুঘ্ন । রাক্ষসদের অত্যাচার নিবারণের জন্য বিশ্বামিত্র দশরথের কাছে রাম - লক্ষ্মণের সাহায্য প্রার্থনা করলে রাজা প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও পুত্রদ্বয়কে পাঠাতে বাধ্য হলেন । তাড়কা , সুবাহু প্রভৃতি রাক্ষসদের বধ করে রাম - লক্ষ্মণ বিশ্বামিত্রের সঙ্গে মিথিলায় উপস্থিত হলেন । মিথিলারাজ জনকের আয়ােজিত সীতার স্বয়ংবরসভায় রামচন্দ্র হরধনু ভঙ্গ করলেন । বিশ্বামিত্রের প্রস্তাবে দশরথকে মিথিলায় আনিয়ে রাম - লক্ষ্মণের সঙ্গে যথাক্রমে জনককন্যা সীতা ও ঊর্মিলার এবং ভরত ও শত্রুঘ্নের সঙ্গে জনকের ভ্রাতুস্পুত্রী মাণ্ডবী এবং শ্রুতকীর্তির বিবাহ সম্পন্ন হল । অতঃপর পুত্র ও পুত্রবধূদের নিয়ে দশরথ অযােধ্যায় ফেরেন এবং দীর্ঘ বারাে বছর আনন্দে অতিবাহিত হল । 
 অযােধ্যাকাণ্ড : যথাসময়ে দশরথ জ্যেষ্ঠপুত্র রামচন্দ্রকে রাজ্যে অভিষিক্ত করতে চাইলেন । অভিষেক অনুষ্ঠানের অয়ােজন করা হল । কৈকেয়ী স্বামী প্রদত্ত পূর্ব প্রতিশ্রুতি মতাে রামের চোদ্দো বছর বনবাস এবং ভরতের জন্য অযােধ্যার সিংহাসন — এই দুটি বর চাইলেন । পিতৃসত্য পালনের জন্য রাম বনে গেলেন । লক্ষ্মণ এবং সীতা অনুগামী হলেন । দশরথ পুত্রশােকে মারা গেলেন । ভরত - শত্রুঘ্নকে মাতুলালয় থেকে আনা হল । ভরত মাতাকে তীব্র ভৎসনা করে রামচন্দ্রকে ফিরিয়ে আনতে গেলেন । রামচন্দ্র পিতৃসত্য ভঙ্গ করতে রাজি হলেন না । ভরত রামচন্দ্রের পাদুকাদ্বয় এনে সিংহাসনে বসিয়ে ও তাঁর প্রতিনিধি হয়ে রাজ্য পরিচালনা করতে লাগলেন ।
 

অরণ্যকাণ্ড : সীতা এবং লক্ষ্মণকে সঙ্গে নিয়ে রাম অত্রি মুনির আশ্রম থেকে দণ্ডকারণ্যে প্রবেশ করলেন । সেখানে বিরাধ রাক্ষসকে বধ করে সুতীক্ষ্ণ,অগস্ত্য প্রভৃতি মুনিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পঞ্চবটী বনে উপস্থিত হলেন । সেখানে কুটির নির্মাণ করে বাস করতে লাগলেন । রাবণের বিধবা ভগ্নী শূর্পণখা বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে রাম - লক্ষ্মণের কাছে উপস্থিত হলে লক্ষ্মণ তার নাসা ও কর্ণ ছেদন করেন । শূর্পণখার ভাই খর সসৈন্যে রামকে আক্রমণ করে নিহত হয় । শূর্পণখার মুখে সমস্ত ঘটনা শুনে রাবণ সীতাহরণের সিদ্ধান্ত নেন । মারীচের ছলনায় রাম -লক্ষ্মণ প্রতারিত হলে রাবণ ছদ্মবেশে সীতাকে হরণ করলেন । সীতার অনুসন্ধান করতে করতে রাম -লক্ষ্মণ জটায়ুর মুখে সীতাহরণের সংবাদ শুনে বিষাদগ্রস্ত হলেন । 

কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড : রাম -লক্ষ্মণ ঋষ্যমুখ পর্বতে গমন করলেন এবং পম্পা সরােবরের তীরে উপস্থিত হলেন । বানররাজ বালীর ভ্রাতা সুগ্রীবের সঙ্গে তাঁরা মৈত্রী স্থাপন করলেন । পরস্পর শর্তানুসারে বন্ধুত্বস্থাপিত হল । রাম যুদ্ধে বালীকে বধ করে সুগ্রীবকে কিষ্কিন্ধ্যার সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করলেন । অতঃপর সুগ্রীবও আপন সেনাদলকে সঙ্ঘবদ্ধ করে সীতার সন্ধানে চর পাঠালেন । বানর সেনাপতি হনুমান সীতার অন্বেষণে দক্ষিণ দেশে যাত্রা করলেন । 

সুন্দরকাণ্ড : হনুমান সমুদ্র অতিক্রম করে লঙ্কায় প্রবেশ করলেন । রাবণের অন্তঃপুরে সীতার সন্ধান না- পেয়ে তিনি । । অশােক বনে প্রবেশ করলেন । সেখানে সীতা রাক্ষসীদের হাতে বন্দিনী । সীতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সত্বর তাকে উদ্ধারের পরিকল্পনা জানানাে হল । হনুমান লঙ্কা দগ্ধ করে সীতার  অভিজ্ঞান সঙ্গে নিয়ে কিষ্কিন্ধ্যায় রামের কাছে প্রত্যাবর্তন করলেন । 

লঙ্কাকাণ্ড বা যুদ্ধকাণ্ড : রাম লঙ্কা অভিযানের পরিকল্পনা করে সমুদ্রের ওপর সেতু বন্ধনের কর্ম সম্পূর্ণ করলেন । উভয় পক্ষে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হল । বিভীষণ অগ্রজ রাবণকে এই যুদ্ধের ভয়ংকর পরিণতির কথা জানালে রাবণের দ্বারা অপমাণিত হয়ে রামের পক্ষ অবলম্বন করলেন । শুরু হল রাম -রাবণের যুদ্ধ । রাবণ সবংশে নিহত হলেন । রামচন্দ্র বিভীষণকে লঙ্কার সিংহাসনে অভিষিক্ত করলেন । অতঃপর সীতার চরিত্র সম্বন্ধে লােকনিন্দার অপবাদ মােচনের জন্য সীতার অগ্নিপরীক্ষা করা হল । রামচন্দ্র সীতা এবং লক্ষ্মণের সঙ্গে অযােধ্যায় প্রত্যাবর্তন করে রাজ্যভার গ্রহণ করলেন ।


উত্তরকাণ্ড ; অযােধ্যার প্রজারা সীতার চরিত্র সম্বন্ধে সন্দেহ প্রকাশ করলে রামচন্দ্র সীতাকে বাল্মীকির তপােবনে নির্বাসিতা করেন । সেখানে সীতা লব - কুশ নামক যমজ পুত্র প্রসব করেন । কিছুকাল পর রামচন্দ্র অশ্বমেধ যজ্ঞ করলে লব - কুশ যজ্ঞের অশ্ব ধরলেন । যুদ্ধে রামচন্দ্রের পরাজয় হল । বাল্মীকি মুনি লব - কুশকে নিয়ে রামের যজ্ঞসভায় উপস্থিত হয়ে সুধীমণ্ডলীকে রামায়ণ গান শােনালেন । পুত্রদের প্রকৃত পরিচয় পেয়ে রাম দূতের দ্বারা সীতাকে রাজসভায় আনলেন । সীতাকে পুনরায় অগ্নিপরীক্ষা দিতে অনুরােধ করা হল । সীতা ক্ষোভে অপমানে পাতালে প্রবেশ করলেন । যুধাজিতের বার্তাপেয়ে রাম ভরত ও ভরতের দুই পুত্রের সৈনাপত্যে সিন্ধুতীরবর্তী গান্ধর্বরাজ্য জয় করেন এবং স্বয়ং কারাপথ জয় করে লক্ষ্মণের দুই পুত্রকে সেই দেশের রাজা করেন । অতঃপর মহাকাল তপস্বীর বেশে এসে রামকে ইহলীলা ত্যাগ করে স্বর্গে ফিরে যাওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন । লক্ষ্মণ সরযূ নদীর জলে দেহত্যাগ করলেন । রাম কুশ ও লবকে যথাক্রমে দক্ষিণ ও উত্তর কোশল রাজ্যে অভিষিক্ত করে মহাসমারােহে সরযূ নদীর তীরে গেলেন এবং নদীতে স্নান করে বিষ্ণুরূপে স্বর্গে গমন করলেন । 

বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০২২

ভারতের সমাজ , ধর্ম এবং সাহিত্যের ওপর মহাভারতের প্রভাব কী

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh ভারতের সমাজ , ধর্ম এবং সাহিত্যের ওপর মহাভারতের প্রভাব কী bharoter somaj dhormo abong sahitter opor mahabharater provab ki


উত্তর : সমাজ ; ভারতীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাসে মহাভারতের প্রভাব সর্বতােমুখী । অতি শৈশবেই ভারতের জনসাধারণ মাতাপিতা এবং বয়ােজ্যেষ্ঠদের মুখ থেকে শুনে মহাভারতের কাহিনি এবং চরিত্রগুলির সঙ্গে পরিচিত হন । বয়ােবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই পরিচয় ক্রমেই নিবিড়তা লাভ করে ,
আর সামাজিক জীবনেও মহাভারতের বিশিষ্ট চরিত্রগুলির প্রভাব পড়তে থাকে । ভারতীয় সমাজে এবং জনমানসে মহাভারতের এই প্রভাব যুগ যুগ ধরে অব্যাহত রয়েছে । ভীষ্মের স্বার্থত্যাগ, কর্ণের দানশীলতা , যুধিষ্ঠিরের সত্যনিষ্ঠা, দ্রৌপদীর ওজস্বিতা , বিদুরের নীতিপরায়ণতা এবং আরও বিভিন্ন চরিত্রের বিবিধ গুণাবলি ভারতীয় জনজীবনে চিরকাল নৈতিক প্রেরণা সঞ্চারিত করে আসছে । ভারতীয় জীবনধারার সঙ্গে মহাভারতের চরিত্রগুলি ওতপ্রােতভাবে মিশে রয়েছে । বাঙালির জনজীবনে মহাভারতের কাহিনি এবং চরিত্রগুলি কত দূর প্রভাব বিস্তার করেছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় ‘ ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা ‘ ’ , বিদুরের খুদ ’ ,‘ ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির’ , ‘ দাতা কর্ণ’, ‘শকুনি মামা ’, দ্রৌপদীর ভাণ্ডার ’ প্রভৃতি অতি প্রচলিত প্রবাদগুলি থেকেই । 

ধর্ম : ভারতের জনগণের কাছে মহাভারত কেবল একটি মহাকাব্যই নয় , এটি তাদের দর্শন এবং ধর্মগ্রন্থের স্থানও অধিকার করেছে । মহাভারত পাঠ ও শ্রবণে পাপ এবং অমঙ্গলের নাশ হয়, এই বিশ্বাস হিন্দুদের মনে দৃঢ়মূল । “যাহা নাই ভারতে , তাহা নাই ভারতে ” —এই প্রসিদ্ধ প্রবাদটির মধ্য দিয়ে মহাভারতের প্রতি ভারতীয় জনগণের অপরিসীম শ্রদ্ধা পরিস্ফুট । মহাভারতে বর্ণিত বিষয়গুলি কবিমানস থেকে স্বতােৎসারিত হওয়ায় তাদের আবেদন সকল শ্রেণির পাঠক চিত্তে সুগভীর । মহাভারতে বর্ণিত প্রত্যেকটি চরিত্র ধ্রুবসত্য বলে ভারতীয়দের বিশ্বাস । এই বিশ্বাস নিয়ে পাঠ ও শ্রবণের ফলে মহাভারতের নীতিধর্ম এবং দর্শন বিষয়ক শিক্ষাসমূহ লাভ করে মানুষ ধন্য হয়েছে । মহাভারতের মহানায়ক ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ভারতের সর্বত্র মন্দিরে মন্দিরে আরাধিত । 1 শ্রীমদ্ভগবদগীতা ভারতীয়দের শ্রেষ্ঠ দর্শনশাস্ত্র । হিন্দুদের শ্রাদ্ধবাসরে অবশ্য পঠিতব্য ধর্মগ্রন্থ । গীতার শিক্ষাও ধর্ম বিষয়ক এবং আত্মতত্ত্ব বিষয়ক শ্রেষ্ঠ শিক্ষা । “যতাে ধর্মস্ততে জয়ঃ ” বা “ সত্যমেব জয়তে ” এই মহান আদর্শটি স্বাধীন ভারতে রাষ্ট্রীয় আদর্শরূপে গৃহীত হয়ে দিকে দিকে ঘােষিত হচ্ছে । 

সাহিত্যঃ এই মহাভারতকে অবলম্বন করে পরবর্তীকালে কত কবি , কত নাট্যকার তাঁদের সাহিত্যকৃতির পরিচয় রেখে গেছেন । মহাকবি ভাস রচিত সাতখানি নাটকের আখ্যানভাগ মহাভারত থেকে গৃহীত । কালিদাসের ‘ বিক্রমাের্কশীয়ম ’ ও ‘ অভিজ্ঞানশকুন্তলম ’ নাটক এবং ভট্টনারায়ণের ‘ বেণীসংহারম ’ নাটক মহাভারতের বিষয় অবলম্বনে রচিত । ভারবি রচিত কিরাতাজুনীয় , মাঘ  রচিত শিশুপালবধ , এবং শ্রীহর্ষ রচিত নৈষধচরিতম ,  প্রভৃতি বিখ্যাত মহাকাব্য বা নাটকগুলির বিষয়বস্তু মহাভারত থেকে গৃহীত । খ্যাত বা অখ্যাত বহু কবি ও  নাট্যকার মহাভারতের কাহিনিকে উপজীব্য করেই সংস্কৃত ভাষায় বহু বিচিত্র সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন ।


 মহাভারতে নল -দময়ন্তীর কাহিনিকে অবলম্বন করে রচিত হয়েছে ২৭ টি কাব্য, ২৭ টি নাটক এবং একটি চকাব্য । মহাভারত অবলম্বনে ত্রিবিক্রমভট্ট বিরচিত ‘ নলচম্পূ ’বিশেষ প্রসিদ্ধ । বৌদ্ধ ও জৈন কবি ও সাহিত্যিকগণ নিজ নিজ ধর্মমতের অনুকূলে মহাভারতের কাহিনিকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পরিবেশন করেছেন । শিবিজাতক , কুণালজাতক , ঘটজাতক প্রভৃতি পালি ভাষায় মহাভারতের ছায়া লক্ষ করা যায় । মহাভারতের দ্বারা প্রভাবিত জৈন গ্রন্থগুলির মধ্যে হরিবংশপুরাণ , উত্তরপুরাণ , পাণ্ডবচরিত , জৈন মহাভারত , বা পাণ্ডবপুরাণ , উল্লেখযােগ্য ।
 

বাংলা সাহিত্যে ও মহাভারতের প্রভাব অপরিসীম । কাশীরাম দাসের মহাভারত বাঙালির ঘরে ঘরে সমাদৃত । বাংলা সাহিত্যের বহু উল্লেখযােগ্য রচনার ভিত্তি হল মহাভারত । মহাভারতের বহু কাহিনির দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে রবীন্দ্রনাথ বহু অমূল্য বিষয় রচনা করেছেন । তাঁর কর্ণকুন্তীসংবাদ , গান্ধারীর আবেদন , কচ ও দেবযানী উপাখ্যান , প্রভৃতি উপাদেয় নাট্যকাব্য মহাভারতাশ্রয়ী । বহির্ভারতে যবদ্বীপ প্রভৃতি দেশেও মহাভারতের প্রভাব পরিলক্ষিত হয় । পৃথিবীর নানা ভাষায় অনুবাদের মাধ্যমে মহাভারতের প্রভাব দিকে দিকে বিস্তার লাভ করেছে ।

বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০২২

চোর এবং ব্রহ্মরাক্ষসের কথােপকথনটি নিজের ভাষায় লেখাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh চোর এবং ব্রহ্মরাক্ষসের কথােপকথনটি নিজের ভাষায় লেখাে chor abong brommo rakosher kothopokothonti nijer bhashai lekho


উত্তর : ‘ ব্রাত্মণচৌরপিশাচকথা ’ গল্পে চোরটি হতদরিদ্র ব্রাত্মণের হৃষ্টপুষ্ট গােরু দুটি দেখে সেগুলি অপহরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাত্রে গােরুগুলির জন্য বন্ধনরজ্জু নিয়ে ব্রাক্ষ্মণের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করল । অর্ধপথে দেখা হল ব্রহ্মরাক্ষসের সঙ্গে । চোরটি ভীতসন্ত্রস্ত হয়েও সাহস অবলম্বন করে রাক্ষসটির পরিচয় জানতে চাইলে রাক্ষসটি জানাল যে , সে সত্যবচন নামে এক ব্রহ্মরাক্ষস । রাক্ষসটি চোরের পরিচয় জানতে চাইলে চোরটি জানাল যে , সে চোর , এক ক্রুরকর্মা । দরিদ্র ব্রাহ্মণের গােরু দুটি চুরি করার উদ্দেশ্যে সে যাত্রা করেছে । চোরটি অপকর্মে প্রবৃত্ত জেনে রাক্ষসটি জানাল যে ভালােই হল । তাদের দুজনের কর্ম একই । কারণ সেও দু-রাত্রি অন্তর তৃতীয় রাত্রিতে একবার ভক্ষণ করে । আজ তার খাওয়ার পালা । সেও দরিদ্র ব্রাহ্মণটিকে ভক্ষণ করার জন্যই যাত্রা করেছে । 

[        ] তারপর তারা সুযােগের প্রতীক্ষা করতে লাগল । ব্রাক্ষ্মণ নিদ্রা গেলে ব্রহ্মরাক্ষসটি যখন তাঁকে খেতে উদ্যত হল তখন চোরটি জানাল যে, এটি ঠিক হচ্ছে না । সে আগে গােরু দুটি চুরি করে নিয়ে যাক , তারপর রাক্ষসটি ব্রাক্ষ্মণকে ভক্ষণ করুক । ব্রহ্মরাক্ষস বলল , তা ঠিক নয় । কারণ , গােরুর শব্দে যদি ব্রাহ্মণ জেগে ওঠেন তাহলে রাক্ষসের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে । চোরটিও বলল যে, রাক্ষসটির ব্রাহ্মণকে খেতে যাওয়ার ব্যাপারে যদি কোনাে অন্তরায় ঘটে তাহলে সেও আর গােরু দুটি চুরি করতে পারবে না । অতএব , সে (চোর ) আগে গােরু দুটি চুরি করে নিয়ে যাক ; তারপর রাক্ষসটি ব্রাহ্মণকে ভক্ষণ করুক । 



[           ] রাক্ষস ও চোর — দুজনেই ‘আমি আগে কাজ সারি ’ বলে বিবাদে লিপ্ত হলে তাদের চিৎকারে ব্রাক্ষ্মণের ঘুম ভেঙে গেল । তাদের কারােরও কাজই সিদ্ধ হল না।


সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০২২

রামায়ণের রচনাকাল আলােচনা করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত  প্রশ্নোত্তর সাজেশন class11Sanskrit question answer class xi class eleventh রামায়ণের রচনাকাল আলােচনা করাে ramayoner rochonakal alochona koro

উত্তর :  আদিকবি বাল্মীকি রচিত মহাকাব্য রামায়ণ লৌকিক সংস্কৃত সাহিত্যের আদি মহাকাব্য । বর্তমানে রামায়ণকে আমরা যে - আকারে পাই তাতে এটি স্পষ্ট যে এতে বহুপ্রক্ষিপ্ত অংশ সন্নিবিষ্ট । এই প্রক্ষিপ্ত অংশগুলি আবার বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন কবির রচনা । সুতরাং , রামায়ণ কোনাে একটি নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে রচিত হয়নি । এই সর্বজনসমাদৃত মহাকাব্যটির রচনা প্রথম কবে শুরু হয়েছিল এবং কবেই বা শেষ হয়েছিল সে সম্বন্ধে কোনাে প্রামাণ্য ইতিহাস নেই । এটা আজও বিতর্কের বিষয় । এই মহাকাব্যের রচনাকাল সম্পর্কে আজও । বহু বিভ্রান্তিও বিতর্ক দেখা যায় । রামায়ণের রচনাকাল সম্বন্ধে মােটামুটি যে - তথ্যগুলি পাওয়া যায় তা নিম্নরূপ

( ১ ) বৈদিক সাহিত্যে রামায়ণের কোনাে উল্লেখ পাওয়া যায় না । সুতরাং , এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে , রামায়ণ বেদের পরে রচিত । 

( ২ ) ত্রিপিটক বা প্রাচীন পালি গ্রন্থে রামায়ণের কোনাে উল্লেখ না - থাকলেও বৌদ্ধ ও জৈন গ্রন্থে রামায়ণের বিভিন্ন কাহিনি চিত্রিত । এ প্রসঙ্গে ‘দশরথজাতক ’- এর কথা বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য । এইসব গ্রন্থে রামায়ণের প্রভাব অস্বীকার করার উপায় নেই । এর দ্বারা প্রমাণিত হয় রামায়ণ বৌদ্ধযুগের পূর্ববর্তী।


( ৩ ) রামায়ণ সংস্কৃত লৌকিক ভাষায় রচিত । সাধারণভাবে ধরে নেওয়া যায় যে ,সাধারণের জন্য যে -কাব্য রচিত তা সাধারণের ব্যবহৃত ভাষাতেই রচিত হয় । তাহলে যে- যুগে রামায়ণ রচিত হয়েছিল , সেই যুগে মানুষের কথ্যভাষা ছিল সংস্কৃত । অশােকের শিলালেখ - এ বা বুদ্ধদেবের উপদেশে সংস্কৃত ভাষা ব্যবহার করা হয়নি , তৎকালীন কথ্যভাষার প্রয়ােগ আছে । সুতরাং যে -যুগে রামায়ণ রচিত হয়েছিল সে - যুগে যদি সংস্কৃত, কথ্যভাষা ছিল বলে ধরে নেওয়া – হয় , তাহলে তা অবশ্যই প্রাকবৌদ্ধযুগে । জ্যাকোবি এই মত পােষণ করে বলেন , রামায়ণের রচনাকাল খ্রিস্টপূর্ব ৮০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ । 

( 8 ) ভিটারনিৎস বলেন যে ,বর্তমান রামায়ণ খ্রিস্টাব্দ দ্বিতীয় শতকে শেষ হয়েছিল , আর মূল রামায়ণ সম্ভবত তারও ৫০০ বছর পূর্বে খ্রি.পূ. তৃতীয় শতকে বাল্মীকি কর্তৃক রচিত হয়েছিল । 

( ৫ ) কীথ সাহেব মনে করেন , রামায়ণের রচনাকাল পাণিনির পরবর্তী খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতক । 

( ৬ ) ওয়েবর রামায়ণের রচনাকাল নির্ধারণ প্রসঙ্গে যে - যুক্তিগুলি লিপিবদ্ধ করেছেন সেই যুক্তিগুলির মধ্যে কয়েকটি নিম্নে উদ্ধৃত করা হচ্ছে

( ক ) রামায়ণে ‘ যবন ’ শব্দটি দু-বার ব্যবহৃত হয়েছে । যবন শব্দের দ্বারা যে কেবল গ্রিকদেরই বােঝানাে হয়েছে এমন নিশ্চয় করা যায় না । বরং উত্তর - পশ্চিম ভারতে একসময় যত বৈদেশিক জাতি আক্রমণ করেছিল তাদের সকলকে বােঝায় । অতএব বলা যায়, গ্রিকদের ভারত আক্রমণের পূর্বে রামায়ণ রচিত হয়েছিল ।

( খ ) খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে পাটলিপুত্র নগরী নির্মিত হয় এবং খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০ অব্দে তা এক বিশাল সাম্রাজ্যের রাজধানীতে পরিণত হয় । রামায়ণে এই প্রসিদ্ধ নগরীর কোনো উল্লেখ নেই । এ থেকে অনুমান করা যায় যে , রামায়ণ পাটলিপুত্র নগরী প্রতিষ্ঠার পূর্বে রচিত হয়েছিল ।

( গ ) রামায়ণে কোশলের রাজধানীর নাম অযোধ্যা । বৌদ্ধ ও জৈনযুগে এর নাম ছিল সাকেত । সুতরাং , বৌদ্ধ যুগের বহু পূর্বেই রামায়ণ রচিত হয়েছিল বলে মনে করা যায় ।

( ঘ ) রামায়ণে মিথিলা ও বিশালা দুটি পৃথক নগরী ছিল । বুদ্ধের সময় দুটি নগরী মিলে রাজ্যের নাম হয়েছিল বৈশালী । এই তথ্যও বৌদ্ধযুগের পূর্বে রামায়ণ রচিত হয়েছিল এরূপ অনুমান সমর্থন করে ।

( ঙ ) বাল্মীকির রামায়ণে বহু ক্ষেত্রেই পাণিনির সংস্কৃত আদর্শ লঙ্ঘিত হয়েছে । সুতরাং , এটি পাণিনির পূর্ববর্তী ।

( ৭ ) এই সমস্ত তথ্য ছাড়াও আর একটি কথা বলা যায় যে , রামায়ণ ও মহাভারতের পৌর্বাপর্য নিয়ে যেসব তথ্য আলোচিত হয়েছে তাতে শেষ পর্যন্ত ধরে নেওয়া হয়েছে যে রামায়ণই মহাভারতের পূর্বে রচিত । খ্রিস্টাব্দ চতুর্থ শতকে যদি মহাভারত রচনা সম্পূর্ন হয়ে থাকে , তাহলে রামায়ণের রচনা তারও দু একশো বছর পূর্বে সম্পূর্ন হয়েছিল — এই সিদ্ধান্ত মোটেই অযৌক্তিক নয় । 

উপসংহারে বলা যায়, সমস্ত যুক্তি ও মতবাদ গুলি পর্যালোচনা করে অধিকাংশ ঐতিহাসিক এবং সমালোচক স্বীকার করেন যে , রামায়ণ মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকে রচিত হয়েছিল ।



শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০২২

পুরুষপরীক্ষা ও বিদ্যাপতি প্রশ্নোত্তর

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh পুরুষপরীক্ষা ও বিদ্যাপতি প্রশ্নোত্তর purushpariksha obiddaypoti question answer


উত্তর : ‘ পুরুষপরীক্ষা ’ গ্রন্থটি কথাসাহিত্যের অংশবিশেষ । এটি হাস্যপরিহাসের এক অনবদ্য নিদর্শন । গ্রন্থের রচয়িতা বিদ্যাপতি । ইনি - ই পদাবলি রচনা করে ‘মৈথিল কোকিল ’ বা ‘ অভিনব জয়দেব ’ আখ্যা পান । যার পদাবলিতে মানবমনের অজস্র উচ্ছ্বাস  এবং অন্তঃস্থলশায়ী গভীর ভাবাবেগ চরমােৎকর্ষতা লাভ করেছে ,  তারই আর এক রচনায় তারল্য , এক হালকা চালের হাস্যকৌতুক , এক চটুল পরিহাস অবশ্যই বিস্ময়কর বলে মনে  হয় । তাঁর এই ভিন্নধর্মী রচনাগুলি দেখে নিঃসন্দেহে বলা যায় , তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ।
 রাজসভার পরিমণ্ডলে চটুল পরিহাস ও কৌতুকের উচ্ছ্বাসে গল্পের আসর জমাতে বিদ্যাপতি কম দক্ষ ছিলেন না । এর ফলেই পুরুষপরীক্ষার আবির্ভাব । এই গ্রন্থের কৌতুক , পরিহাস ও নীতি উপদেশ সংস্কৃত গল্পসাহিত্যের ভাণ্ডারে উপাদেয় বৈচিত্র্যের আস্বাদ দেয় । শুধু বালক -বালিকারা নয় , বয়স্ক ব্যক্তিরাও এই গল্পগুলির মধ্যে মনােরঞ্জনের সামগ্রী পেয়ে চরিতার্থ হয় । বিদ্যপতি এই গ্রন্থটিতে নানা বর্ণের ও নানা গন্ধের বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ গল্প - পুষ্পের মালা গেঁথেছেন । গ্রন্থের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে  ‘ রাজা শিবসিংহের আদেশে বালক -বালিকাদের নীতি শিক্ষা এবং পুরস্ত্রীগণের হর্ষ ’ বিধানের জন্য তাঁর এই মনােরম কথাকাহিনি রচনার প্রয়াস । 
 
গ্রন্থের মূল কাহিনি —রাজকন্যার বিবাহের বয়স সমাগত । উপযুক্ত পাত্রের সন্ধানে রাজা উদবিগ্ন । এমন সময় এক বিজ্ঞ ব্রাহ্ণ রাজসভায় এসে উপস্থিত । আছে কি না জিজ্ঞাসা করা হলে ব্রাত্মণ রাজার প্রস্তাবে বেশ গম্ভীরভাবে জিজ্ঞাসা করেন — তিনি তাঁর কন্যার জন্য পুরুষ পাত্র খুঁজছেন কি না। রাজা তাে স্তম্ভিত । তিনি তাঁর বক্রোক্তির তাৎপর্য বুঝতে পারলেন না । তিনি উত্তরে বললেন কন্যার পাত্র তাে পুরুষই হয়ে থাকে । এতে আবার প্রশ্ন করার কী আছে ? ব্রাত্মণ বললেন এই জগতে আকারে পুরুষ অনেকেই আছে । পুচ্ছরহিত পুরুষাকার পশুর অভাব নেই । কিন্তু পুরুষােচিত গুণেই মানুষ যথার্থ পুরুষপদবাচ্য হয় । তাই পুরুষপরীক্ষার প্রয়ােজন । পুরুষপরীক্ষার কষ্টিপাথরে পুরুষের গুণাগণ বিচার করা দরকার । এই প্রসঙ্গ ধরে বিদ্যাপতি ভালােমন্দ নানা চরিত্রের পুরুষের আলেখ্য উপহার দিয়েছেন । সুন্দর কৌতুকব্যঞ্জনায় গ্রন্থটির বিষয়বস্তু উপন্যস্ত ।দানবীর , দয়াবীর ,যুদ্ধবীর, সত্যবীর এরূপ বিবিধ গুণবান চরিত্রের কথা ,আবার চোর , অলস , কপট প্রভৃতি গুণহীন চরিত্রের কথা একের পর এক কাহিনির বিস্ময়কর সমাবেশে উপস্থাপিত হয়েছে ।


গ্রন্থটিতে ৫২ টি গল্প আছে , সবই মানুষের গল্প । অতএব , মনুষ্য সমাজের ঘটনার আকর্ষণীয়তা এতে সুস্পষ্ট । রাজকন্যার বর যাচাই করার জন্যই ‘ পুরুষপরীক্ষা’ পুস্তকটিতে দোষগুণের চরিত্রের নানা কৌতূহলােদ্দীপক চিত্র উদ্ভাসিত হয়েছে । 

সমাজের উচ্চ - নীচ, ছােটো -বড়াে, ভালাে -মন্দ , সাধু - চোর কোনাে কিছুই ভূয়ােদশী কবির পরীক্ষা -নিরীক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে পাশ কাটিয়ে যায়নি । সমাজের উচ্চ - নীচ সকল শ্রেণির মানুষের প্রতি দরদি কবি বিদ্যাপতি সহানুভূতির স্পর্শ দিয়ে তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীবনকাহিনিকে সরস ও সজীব করে তুলেছেন । নীতিশিক্ষা ও কৌতূহল সৃষ্টির আগ্রহে ভালােমন্দ বিচারের প্রয়ােজনীয়তা তিনি অবশ্যই স্বীকার করেছেন । উচ্চ আদর্শকেও তিনি উচ্চকণ্ঠেই ঘােষণা করেছেন । কিন্তু তথাকথিত মন্দলােকের সব কিছুই মন্দ নয় — সেই ধারণার পরিচয়ও তিনি দিয়েছেন । 

তিনি যে -একজন সার্থক কথাসাহিত্যিক সে বিষয়ে কোনাে সন্দেহের অবকাশ নেই । ‘পুরুষপরীক্ষা ’ গ্রন্থটি এক ধরনের চটুল হাস্যরসের গ্রন্থ হলেও এর রচনায় কবির কৃতিত্ব অনস্বীকার্য ।


শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০২২

দণ্ডীকৃত মঙ্গলাচরণটির অর্থ বিবৃত করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh দণ্ডীকৃত মঙ্গলাচরণটির অর্থ বিবৃত করাে dondikrito mongolachorontir ortho bibroto koro


উত্তর :  কবি দণ্ডী বিরচিত ‘ দশকুমারচরিতম্ ’ গদ্যাংশে গ্রন্থারম্ভের পূর্বে গ্রন্থের বিঘ্নবিনাশ কামনায় সংস্কৃত কবিগণ একটি স্তুতিমূলক শ্লোকের অবতারণা করে থাকেন । একে বলে নান্দী । এই নান্দী চারপ্রকার - আশীঃ , নমস্ক্রিয়া, মাঙ্গলিকী এবং পত্রাবলি । দণ্ডী তাঁর কাব্যে ‘আশীঃ নান্দীটি গ্রহণ করেছেন । তিনি পাঠক -পাঠিকাবৃন্দকে আশীর্বাদ জানিয়েছেন যে , বামনরূপী নারায়ণের নাভিদেশ থেকে নির্গত তৃতীয় চরণটি যেন সকলকে মঙ্গল দান করেন ।

[        ]  বামনাবতারের তৃতীয় চরণটি কেমন তাই এখানে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে । জগৎকে যদি একটি ছত্ররূপে কল্পনা করা হয় তাহলে সেই পদ ওই ছত্রের ধারণদণ্ড । পদ্মযােনি ব্রহ্মা যে পদ্মের ওপর সমাসীন , ওই পদ সেই পদ্মের নালদণ্ড তথা অবলম্বন । পৃথিবীকে একটি নৌকারূপে কল্পনা করলে নারায়ণের ওই তৃতীয় পদ তার মাস্তুল যা নৌকাকে ঠিক পথে পরিচালিত করে । স্বর্গগঙ্গা মন্দাকিনীকে একটি পতাকারূপে কল্পনা করলে সেই পদ পতাকার ধ্বজযষ্টি তথা অবলম্বন । ওই পদ নক্ষত্রচক্রের মধ্যসংলগ্ন দারু অর্থাৎ চক্রের অর (spoke ) যা চক্রকে সচল রাখে । বলিযজ্ঞে নারায়ণ যে ত্রিভুবন পরিব্যাপ্ত করেছিলেন তাঁর সেই ত্রিভুবন জয়ের ওটি জয়স্তম্ভ । অতএব বিশ্বব্রহ্লাণ্ডে যা কিছু আছে , বামনদেবের ওই তৃতীয় চরণটি সবকিছুরই অবলম্বন । তাঁর ওই চরণই হল দেবহিংসক অসুরগণের কাছে কালদণ্ডস্বরূপ অর্থাৎ মূর্তিমান মৃত্যু । বামনাবতারের সেই তৃতীয় চরণ জগৎকে তথা জগৎবাসীকে মঙ্গল প্রদান করুক — এটিই কবির প্রার্থনা ।

 

বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০২২

মহাভারতের ক -টি পর্ব ও কী কী মহাভারতের সাহিত্যিক মূল্য পর্যালােচনা করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর class11Sanskrit question answer class xi class eleventh মহাভারতের কটি পর্ব ও কী কী মহাভারতের সাহিত্যিক মূল্য পর্যালােচনা করাে mahabharater koti porbo o ki ki mahabharater sahitya mullo porjalochona koro

উত্তর : মহাভারতের ১৮ টি পর্ব । যথা — আদি , সভা , বন , বিরাট , উদ্যোগ , ভীষ্ম, দ্রোণ, শল্য , কর্ণ, সৌপ্তিক , স্ত্রী,শান্তি, অনুশাসন , আমেধিক , আশ্রমবাসিক , মৌষল , মহাপ্রস্থানিক এবং স্বর্গারােহণ ।

মহর্ষি বেদব্যাস প্রণীত মহাভারত প্রসিদ্ধ ভরতবংশের সামগ্রিক ইতিহাসের মহৎ কাহিনি । মহত্ত্বও ভারবত্ত্বের দিক দিয়ে বিচার করলে এটি একটি সুবিশাল ‘মহাকাব্য’ । রচনাশৈলী এবং কাহিনির বিচারে মহাভারত ইতিহাস ও পুরাণ । এই গ্রন্থেই  সমগ্র রচনাকে জয় , সংহিতা , আখ্যান , উপাখ্যান , ইতিহাস , কাব্য প্রভৃতি আখ্যায় ভূষিত করা হয়েছে । এটি প্রাচীন ভারতের পঞ্চমবেদ , ধর্মশাস্ত্র , কামশাস্ত্রও মােক্ষশাস্ত্র—অর্থাৎ ভারতকোশ । অজস্র আখ্যান -উপাখ্যানের ভাণ্ডারস্বরূপ এই মহাকাব্যটি ভারতীয় সাহিত্যের অগণিত পাঠকের নিকট যেমন অতিশয় মনােহারী , তেমনি ধর্মশাস্ত্ররূপেও ভারতীয় জনমানসে এর অমূল্য অবদান আছে । সাহিত্যের আদর্শে ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে ভারতযুদ্ধ শুধুমাত্র জ্ঞাতিবিবাদের ভয়ংকর সংগ্রাম নয় , এটি ধর্মযুদ্ধ । কুরুক্ষেত্র কুরুক্ষেত্র নয়, এটি ধর্মক্ষেত্র । মহাভারতের সামাজিক আদর্শ ও রীতিনীতির ধারা ,জাতিগত ও রাষ্ট্রগত ভেদবৈচিত্র্য থেকে তৎকালীন সমাজকাঠামাে ও জীবনযাত্রা পদ্ধতির বহুমুখী রূপ প্রত্যক্ষগােচর হয় । সুতরাং , মহাভারতের সাহিত্যিক মূল্য অপরিমেয় ।


 মহাভারতের কাহিনি অবলম্বনে খ্রিস্টপূর্ব যুগ থেকে খ্রিস্টীয় ষােড়শ - সপ্তদশ শতক পর্যন্ত অসংখ্য কাব্য, নাটক , মহাকাব্য , চম্পূ প্রভৃতি রচিত হয়েছিল । উক্ত রচনাগুলির মধ্যে প্রধান প্রধান গ্রন্থগুলির নাম উল্লেখ করা বাঞ্ছনীয় । ভারবির কিরাতাৰ্জুনীয় , মাঘের শিশুপালবধ , শ্রীহর্ষের নৈষধচরিতম , ক্ষেমেন্দ্রের মহাভারতমঞ্জরী , নীতিবর্মার কীচকবধ, বাসুদেবের যুধিষ্ঠিরবিজয়, এবং অমরচন্দ্র সূরির বালভারতম প্রভৃতি মহাকাব্য বিশেষরূপে প্রসিদ্ধ ।

 

মহাভারত প্রসিদ্ধ ‘নল - দময়ন্তী’ কাহিনি অবলম্বনে রচিত ছােটো - বড়াে ২৭ টি নাটক এবং একাধিক চম্পুকাব্য পাওয়া যায় । মহাকবি ভাসের মধ্যমব্যায়ােগ , দূতবাক্যম্ , ঊরুভঙ্গম , কর্ণভার , দূতঘটোৎকচ , পঞরাত্রম নামক কালিদাসের অভিজ্ঞানশকুন্তলম্‌ , ভট্টনারায়ণের বেণীসংহার , কুলশেখরের সুভদ্রাধনঞ্জয়ম্, কুমারপালের দ্রৌপদীস্বয়ংবরম্ প্রভৃতি নাটকগুলি সংস্কৃত নাট্যজগতে বিশেষ খ্যাতিলাভ করেছে । 


নব্য ভারতীয় সাহিত্যেও মহাভারতের প্রভাব ও অবদান অনস্বীকার্য । তার প্রধান নিদর্শন বাংলা ভাষায় রচিত সর্বজনপ্রিয় কাশীরাম দাসের  ‘মহাভারত’ । সেই সঙ্গে বাংলা ভাষায় রচিত কবীন্দ্র পরমেশ্বরের ‘পাণ্ডববিজয় ’ শ্রীকর নন্দীর ‘ অশ্বমেধকথা ’ গ্রন্থ দুটির নামও শ্রদ্ধাসহকারে উল্লেখ করা যায় । 


মহাভারতের ভীষ্মপর্বীয় ‘ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ’- কে সকল উপনিষদের সারবস্তু বলা হয়েছে এবং এটি এখন শ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থের স্থান পেয়েছে । 

মহাভারতের অমৃতবাণী , মহাভারতের শিক্ষা , মহাভারতের উপদেশ এবং মহাভারতের আখ্যান - উপাখ্যান যুগ যুগ ধরে কবিচিত্তকে আকর্ষণ করেছে । এই গ্রন্থের রসধারায় পরিপুষ্ট সংস্কৃত কবিগণ প্রাচীন সাহিত্যের আঙ্গিক , আদর্শ , বহিরঙ্গ উপাদান এবং অন্তরঙ্গ বৈশিষ্ট্য ও ভাবধারাকে আত্মসাৎ করে নতুন ধারায় নব নব সাহিত্যের সৃষ্টিকরেছেন ।


বৈশম্পায়নের নিম্নোক্ত উক্তিটিই মহাভারতের শ্রেষ্ঠত্বের কথা প্রচার করেছে

      “ ধর্মে চার্থে চ কামে চ মােক্ষে চ ভরতৰ্ষভ ।   

       যদিহাস্তি তদন্যত্র যন্নেহান্তি ন তৎ কৃচিৎ ।। ”


বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০২২

শ্রীভগবানের কল্কি অবতাররূপে আবির্ভাবের কাহিনি বর্ণনা করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh শ্রীভগবানের কল্কি অবতাররূপে আবির্ভাবের কাহিনি বর্ণনা করাে shreebhagbaner kolki abotarrupe abirvaber kahini bornona koro


উত্তর : কবি জয়দেব তাঁর ‘ গীতগােবিন্দম ’ কাব্যারম্ভে যে-দশজন অবতারের প্রশস্তি করেছেন , তন্মধ্যে কল্কিই হলেন দশম অবতার । কিন্তু পুরাণমতে কল্কিদেবের আবির্ভাব এখনও ঘটেনি । ঋষিরা মানসচক্ষে তাঁর ভাবী আবির্ভাবের কথা জানতে পেরে পুরাণে তা বিবৃত করেছেন । তাঁরা অন্তদৃষ্টির দ্বারা যা দেখেছেন , তা হল 

[       ]  কলিকালে আয়ু , বীরত্ব, বল ও তেজ ক্রমেই হ্রাসপ্রাপ্ত হবে । মানুষ কপটাচারী হবে । সত্য পৃথিবী থেকে তিরােহিত হবে । সত্যের হানিতে আয়ুর অল্পতা , আয়ুর অল্পতাবশত বিদ্যার্জনে অক্ষমতা , বিদ্যার অল্পতাহেতু অজ্ঞান , অজ্ঞান থেকে লােভ , লােভ থেকে ক্রোধ, ক্রোধ থেকে মােহ জন্মাবে । মানুষ লােভ , ক্রোধ, মােহ ও কামের বশবর্তী হয়ে পরস্পর পরস্পরের প্রতি জিঘাংসু হয়ে উঠবে । সমস্ত জগৎ হয়ে উঠবে ম্লেচ্ছ । যাগযজ্ঞাদি ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে । মানুষ নিরানন্দ ও নিরুৎসাহ হয়ে উঠবে । জাতিবৈষম্য একেবারে দূরীভূত হবে এবং সকল মানুষ একজাতি হয়ে যাবে । সর্ব বিষয়ে নৈরাজ্য দেখা যাবে । 


[       ]  সমগ্র পৃথিবীতে যখন এরূপ বিপর্যয় দেখা যাবে তখন শম্ভল গ্রামে বিষ্ণুযশ নামে এক ব্রাত্মণ জন্মগ্রহণ করবেন । সেই বংশেই কল্কিদেবের আবির্ভাব হবে । তিনি ভার্গবের সকল শাস্ত্র শিক্ষা করে তপস্যার দ্বারা মহাদেবের নিকট সর্বগ অশ্ব ও সর্বজ্ঞ শুক লাভ করবেন । অতঃপর সেই দেবদত্ত অশ্বে আরােহণ করে এবং দেবদত্ত অসি ধারণ করে ম্লেচ্ছদিগকে সমূলে নির্মূল করবেন । তিনি অশ্বমেধ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করে দক্ষিণস্বরূপ ব্রাত্মণদিগকে সমগ্র পৃথিবী দান করবেন । তারপর

মহাপ্রলয়ে পৃথিবী লয়প্রাপ্ত হলে কল্কিদেবও অন্তর্হিত হবেন । পরিশেষে পুনরায় সত্যযুগের আবির্ভাব হবে । 


 

মঙ্গলবার, ২২ মার্চ, ২০২২

তােমাদের পাঠ্যাংশে মেঘের উৎপত্তি ও বংশপরিচয় সম্বন্ধে কবির বক্তব্য আলােচনা করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh তােমাদের পাঠ্যাংশে মেঘের উৎপত্তি ও বংশপরিচয় সম্বন্ধে কবির বক্তব্য আলােচনা করাে megher utpotti o bongshoporichoy sombondhe kobir boktobbo alochona koro



উত্তর : ‘ মেঘদূতম্ ’ গীতিকাব্যে কবি আমাদের পাঠ্যাংশে পূর্বমেঘের সূচনায় মেঘের উৎপত্তি এবং তার বংশ - পরিচিতির এক সুন্দর আলেখ্য তুলে ধরেছেন । মেঘ ধূম, জ্যোতিঃ , বায়ু এবং সলিল এই চারটি জড়পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত । বাতাস তাকে বহন করে । সুতরাং , বিরহী যক্ষের ‘স্বকুশলময়ী’ বার্তা বহন করার ক্ষমতা নেই । তথাপি কবি যক্ষের মুখ দিয়ে মেঘকেই ওই বার্তা বয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুরােধ জানিয়েছেন । সুস্থ -সমর্থ মানুষের কাজ জড়পদার্থকে দিয়ে করাতে যাওয়া বাতুলতা । তথাপি কবির এ প্রয়াস কেন ? প্রেমপরবশ যক্ষ চেতন - অচেতন ভেদবুদ্ধিরহিত । কামার্তরা এমনই হয়ে থাকে । যক্ষের এখন উন্মাদ দশা চলছে । পাগল আর প্রেমিক –একই গােত্রেরই হয়ে থাকে । সেইজন্য যক্ষ অচেতনে চেতনত্ব আরােপ করেছে । অতএব , মেঘ এখন অচেতন নয় , সচেতন । শুধু সচেতনই নয়, মেঘ অধিগুণসম্পন্ন , সংবেদনশীল । 



[         ]  কবি মেঘকে ত্রিভুবনবিখ্যাত পুষ্করাবর্তক নামক বংশজাত বলে উল্লেখ করেছেন । কিন্তু মেঘ চার প্রকার । আবর্ত , সংবর্ত , পুষ্কর এবং দ্ৰোণ । মেঘ চার প্রকার হলে একই মেঘের পুষ্কর ও আবর্তক - দুই বংশ হয় কীভাবে ? ব্ৰণ্ডপুরাণে পুষ্কর মেঘেরই না মান্তর পুষ্করাবর্তক । তা ছাড়া পুষ্করাশ্চতে আবর্তকাশ্চ — এইভাবে কর্মধারয় সমাস করলে পুষ্করাবর্তক একই মেঘকে বােঝাবে । ইন্দ্র ভূতগণের মঙ্গল কামনায় যথেচ্ছগামী মহাতেজসম্পন্ন পর্বতসমূহের পক্ষ ছেদন করতে থাকলে তা থেকে বিপুলকায় জলময় পুষ্কর মেঘসমূহ উৎপন্ন হয় । এই কারণে পক্ষজ এই মেঘকে পুষ্করাবর্তক বলে । এই মেঘ সকল নানা রূপধর , অতি ঘােরতর , কল্পান্তকালে বৃষ্টিপ্রদ । 

[         ] মেঘ বংশে অভিজাত , শক্তিতে অতুলনীয় । সে কামরূপ , ইচ্ছাধীন বিগ্রহ । সে কখনও ক্ষুদ্রাকার —কখনও অতিমহান । কখনও ঘাের মসীবর্ণ —কখনও শুভ্রবর্ণ । কখনও বায়বীয় কখনও গলিত ধারা । মেঘ ইন্দ্রের প্রধান সহায় । মেঘ থেকে হয় বর্ষণ - বর্ষণ থেকে অন্ন । আবার অন্ন থেকে প্রাণধারণ । সুতরাং , দেবরাজের প্রজার জীবনরক্ষায় মেঘ অপরিহার্য । তাই কবি মেঘকে “ প্রকৃতিপুরুষং কামরূপং মঘােনঃ ” বলে উল্লেখ করেছেন ।

সোমবার, ২১ মার্চ, ২০২২

শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গে নরেন্দ্রনাথের প্রথম সাক্ষাৎকারের ঘটনা বিবৃত করাে

একাদশ শ্রেণী সংস্কৃত প্রশ্নোত্তর সাজেশন class 11 Sanskrit question answer class xi class eleventh শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গে নরেন্দ্রনাথের প্রথম সাক্ষাৎকারের ঘটনা বিবৃত করাে sriramkrishner songe norendronather prothom sakkhatkaarer ghotona bibrito koro

উত্তর : শ্রী যতীন্দ্রবিমলচৌধুরী বিরচিত ‘ভারতবিবেক’ নাট্যাংশে শ্রীরামকৃয়দেব কলিকাতার সিমুলিয়া অঞ্চলে গিয়েছেন গৃহীভক্ত সুরেন্দ্রনাথ মিত্রের গৃহে । সঙ্গে আছেন ভক্তবৃন্দ ।সেদিন ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের এক মধুর সন্ধ্যা । সন্ধ্যা সাত ঘটিকা । শ্রীরামকৃষ্ণ সাধক — জগজ্জননী ভবতারিণীর পূজারী । ভবতারিণীই তাঁর ধ্যান - জ্ঞান । শয়নে -স্বপনে -নিদ্রায়-জাগরণে তিনি শ্রীশ্রীমাতার পুণ্য স্মরণে তন্ময় । সুরেন্দ্রনাথের গৃহেও সেই ভাবােদয় । তিনি মাতৃকাস্তুতি শােনার জন্য ব্যাকুল । তিনি সুরেন্দ্রনাথকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলেন যে ,তাঁরই ( সুরেন্দ্রের) প্রতিবেশী নরেন্দ্রনাথ নামে এক তরুণ গায়ক আছেন । তিনি দত্তকুলােদ্ভব, অধ্যয়নরত এবং ব্রাহ্বসমাজের সঙ্গে যুক্ত । তরুণ হলেও তিনি সত্যই সংগীতনিপুণ । নরেন্দ্রের নাম শােনামাত্র শ্রীরামকৃষ্ণদেব ব্যাকুল হয়ে পড়লেন ।নরেন্দ্র অর্থাৎ নরশ্রেষ্ঠ । শ্রীরামকৃষ্ণ যে তাঁর হৃদয়রাজ্যে একজন যথাযােগ্য , সর্বলােকবরেণ্য উত্তরসাধককে খুঁজে বেড়াচ্ছেন , এই কি সেই জটাজুটধারী ! জগতের কল্যাণকারী ! মন্দাকিনীর কলকলধারায় সুস্নাত শিবশংকর — যাঁর অপেক্ষায় শ্রীশ্রীঠাকুর (রামকৃষ্ণদেব ) দিন গুনছেন — যাঁর পথ চেয়ে অধীর আগ্রহে সময় কাটাচ্ছেন ? শ্রীরামকৃয় অধীর হয়ে উঠলেন ওই যুবকটিকে দেখার জন্য , তাঁর সুমধুর কণ্ঠে মাতৃস্তুতি শােনার জন্য শ্রীরামকৃষ্ণের আগ্রহাতিশয্যে সুরেন্দ্রনাথ তাঁকে আনার জন্য সত্বর যাত্রা করলেন এবং নরেন্দ্র সমভিব্যাহারে প্রত্যাবর্তন করলেন ।


শ্রীরামকৃষ্ণদেবের সঙ্গে সাক্ষাৎকার ঘটল নরেন্দ্রনাথের । হল মণিকাঞ্চনযােগ । উভয়ে উভয়কে প্রত্যক্ষ করলেন । প্রথম দর্শনেই নরেন্দ্রনাথকে কিছুটা পর্যাকুল দেখা গেল । শ্রীরামকৃষ্ণ সেই কোমলকুঞ্চিতকেশী , সুসজ্জশিরস্ক ,ইন্দীবরতুল্য আকৰ্ণবিস্তৃত চক্ষুবিশিষ্ট যুবকের প্রতি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন । নরেন্দ্রনাথেরও মন সন্দিগ্ধ হলেও তার মন যেন তাকে বলে দিচ্ছে ইনিই তাঁর হৃদয়ানন্দকারী   স্নিগ্ধ-সুন্দর চন্দ্র । উভয়েই উভয়ের প্রতি আকৃষ্ট । শ্রীরামকৃষ্ণের হৃদয়তটিনী নরেন্দ্ররূপ সাগরের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য দ্রুতগতিতে ছুটে চলেছে । সে -গতি অবাধ - অপ্রতিরােধ্য । নরেন্দ্রনাথেরও তদ্রুপ অবস্থা । তিনি নিজেকে সংযত করতে পারছেন না । তাঁরও হৃদয়চকোর শ্রীরামকৃষ্ণরূপ পূর্ণশশীর আনন্দরশ্মি আশা মিটিয়ে পান করছে । নরেন্দ্রের চোখে শ্রীরামকৃষ্ণ কোটি সূর্যসমপ্রভ কোটি চন্দ্র সুশীতল । চুম্বক যেমন লােহাকে আকর্ষণ করে  শ্রীরামকৃষ্ণও তেমনি নরেন্দ্রকে আকর্ষণ করছেন ।

তথাপি নরেন্দ্র নব্য শিক্ষায় শিক্ষিত । তিনি সম্বিত ফিরে পেলেন । অবলম্বন করলেন মানসিক দৃঢ়তা । মানবশরীরে ভাগবতসত্তা তিনি আরােপ করার ব্যাপারে অবিশ্বাসী । মানুষ ভগবান হতে পারে না । ভগবানও মানুষ হয়ে আসেন না । ক্ষণিকের চিত্তচাঞ্চল্যের জন্য তিনি নিজেকে ধিক্কার দিলেন । ধিক্কার দিলেন তাঁর অধীত বিদ্যাকে । শ্রীরামকৃষ্ণের মন ইঙ্গিত দিচ্ছে যে , এই ব্যঢ়োরস্ক, করিকরনিন্দিত ভুজযুগধারী , আয়তনয়ন এই যুবকই তাঁর কাঙ্ক্ষিত উত্তরসাধক । মা ভবতারিণী সুযােগ্য সন্তানকেই তাঁর কাছে পাঠিয়েছেন । 

অতঃপর চিত্তবিনােদনের জন্য তিনি নরেন্দ্রকে গান গাইতে অনুরােধ করলে নরেন্দ্র গান শুরু করলেন । গানের বিষয়বস্তু শ্মশানবাসিনী , নৃমুণ্ডমালিনী , শক্তিস্বরূপিনী শ্যামা । নরেন্দ্রের কণ্ঠ মধুবর্ষী, ভাষা ভক্তিরসাপ্লুত । শ্রীরামকৃষ্ণ অভিভূত । মা ভবতারিণীর কাছে তাঁর পুনরায় প্রার্থনা এই যুবকই যেন তাঁর , উত্তরসাধক হয় , যে হবে সর্বজনবরেণ্য এবং দেশের কালিমা দূর করতে সক্ষম ।