বাংলা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বাংলা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

বাড়ীর কাছে আরশিনগর MCQ প্রশ্নোত্তর

একাদশ শ্রেণী xi class bengali বাংলা বাড়ীর কাছে আরশিনগর MCQ প্রশ্নোত্তর barir kache arshinagar mcq questions answers


১। ‘ক্ষণেক ভাসে নীরে’ কার সম্বন্ধে এ কথা বলা হয়েছে ? 

ক) পড়শি 

খ) লালন

গ) সিরাজ সাঁই

ঘ) ফিরোজ সাঁই


উত্তর : ক) পড়শি 

২। ‘পড়শি’ বাস করেন ? 

ক) কবির পাশের গ্রামে

খ) আরশিনগরে 

গ) শূন্যে ও নীরে

ঘ) কবির মনে 


উত্তর : খ) আরশিনগরে 

৩। ‘গ্রাম বেড়িয়ে অগাধ পানি’ এখানে ‘বেড়িয়ে’ শব্দের অর্থ ? 

ক) পার হয়ে 

খ) বেষ্টন করে 

গ) ঘুরে ঘুরে 

ঘ) মধ্যে 


উত্তর : খ) বেষ্টন করে 

৪। ‘পড়শি যদি আমায় ছুত ।’ পড়শি ছুলে কি হবে ? 

ক) যত যাতনা দূর হবে

খ) সুবুদ্ধির বিকাশ হবে 

গ) সমাজ সচেতনতা বাড়বে 

ঘ) ভালোবাসা বোধ জাগবে 


উত্তর : ক) যত যাতনা দূর হবে

৫। লালন ও পড়শির মধ্যে দুরত্ব হল ? 

ক) কয়েক মাইল

খ) একশো যোজন

গ) হাজার যোজন 

ঘ) লক্ষ যোজন 


উত্তর : ঘ) লক্ষ যোজন



৬। আরশি শব্দের অর্থ কী ? 

ক) আয়না 

খ) পড়শি 

গ) কাচ

ঘ) ছায়া 


উত্তর : ক) আয়না 

৭। ‘ ও তার নাই কিনারা নাই তরণী পারে ’ - ‘তরণী’ শব্দের অর্থ ? 

ক) স্থলভাগ 

খ) বাসস্থান 

গ) মানুষ

ঘ) নৌকা 


উত্তর : ঘ) নৌকা 

৮। লালন আর পড়শির মধ্যে কত দূরত্ব ছিল ? 

ক) অসীম 

খ) লক্ষ যোজন 

গ) একশো যোজন 

ঘ) হাজার যোজন 


উত্তর : খ) লক্ষ যোজন 


৯। ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর’ পদটি কে লিখেছেন ? 

ক) পাঞ্জু শাহ

খ) লালন ফকির 

গ) গোঁসাই গোপাল

ঘ) দুন্দু শাহ 


উত্তর : খ) লালন ফকির

১০। বাউল লালন ফকির কোথায় জন্মগ্রহণ করেন ? 

ক) কুষ্টিয়ায়

খ) কুমাখালীতে 

গ) ভাঁড়ারায়

ঘ) সেউড়িয়ায়


উত্তর : গ) ভাঁড়ারায়



১১। বাউলরা কাকে খোঁজে ? 

ক) রাধাকৃষ্ণকে 

খ) আল্লাকে

গ) দেবী শ্যামাকে 

ঘ) মনের মানুষকে 


উত্তর : ঘ) মনের মানুষকে 

১২। লালন কত বছর জীবিত ছিলেন ? 

ক) ১১৪ বছর 

খ) ১১৫ বছর

গ) ১১৬ বছর

ঘ) ১১৭ বছর


উত্তর : গ) ১১৬ বছর

১৩। ____যদি আমায় ছুঁত ।

ক) কাছের মানুষ 

খ) মনের মানুষ

গ) প্রিয় মানুষ

ঘ) পড়শি 


উত্তর : ঘ) পড়শি

১৪। ______সে আর লালন একখানে রয় ।

ক) ফের 

খ) আবার

গ) পুনরায়

ঘ) পুনবার


উত্তর : খ) আবার

১৫। আবার ক্ষণেক ভাসে ______।

ক) জলে

খ) পানিতে

গ) নীরে 

ঘ) বারিতে


উত্তর : ক) জলে



১৬। বাউল গান প্রকৃতপক্ষে এক ধরনের ? 

ক) লোকসংগীত

খ) দরবেশি গান 

গ) আধ্যাতমিক সংগীত

ঘ) কবি গান 


উত্তর : গ) আধ্যাতমিক সংগীত

১৭। ‘বাউল’ শব্দটি এসেছে ? 

ক) সংস্কৃত শব্দ ‘বাতুল’ থেকে 

খ) হিন্দি শব্দ  ‘বাতুল’ থেকে 

গ) আরবি শব্দ  ‘বাতুল’ থেকে 

ঘ) তেলুগু শব্দ  ‘বাতুল’ থেকে 


উত্তর : ক) সংস্কৃত শব্দ ‘বাতুল’ থেকে

১৮। কবি পড়শীকে দেখেননি ? 

ক) এক দিন 

খ) কোনোদিন দেখেননি 

গ) তিন দিন 

ঘ) দু দিন 


উত্তর : খ) কোনোদিন দেখেননি

১৯। ‘লক্ষ যোজন ফাঁক রে ।’ এখানে ‘ফাঁক’ শব্দের অর্থ কী ? 

ক) শূন্য

খ) ফাঁকা 

গ) তফাত

ঘ) ব্যবধান


উত্তর : ঘ) ব্যবধান

২০। ‘আমি একদিনও না দেখিলাম তারে ’ - ‘আমি’ হলেন কে ? 

ক) ভক্ত কবি রামপ্রসাদ সেন 

খ) ভক্ত বাউল দূন্দু শাহ

গ) ভক্ত কবি কমলাকান্ত ভট্টাচার্য 

ঘ) বাউল সাধক লালন ফকির 


উত্তর : ঘ) বাউল সাধক লালন ফকির 



২১। ‘আমি একদিনও না দেখিলাম তারে ’ - ‘তারে’ বলতে কাকে ? 

ক) আরাধ্য দেবতা 

খ) মনের মানুষ

গ) আরাধ্য দেবী

ঘ) নিরাকার দেবতা


উত্তর : খ) মনের মানুষ

২২। লালন বাড়ির কাছে যে জায়গার কথা বলেছেন , তাঁর নাম কি ? 

ক) রূপক নগর

খ) আরশিনগর

গ) যশোহর

ঘ) মহানগর


উত্তর : খ) আরশিনগর

২৩। আরশিনগরে বাস কে করেন ?

ক) মুর্শিদ

খ) আল্লাহ্ বা ভগবান 

গ) মনের মানুষ 

ঘ) পড়শি 


উত্তর : ঘ) পড়শি 

২৪। লালন কোথায় যেতে চেয়েছিলেন ?

ক) গঞ্জে

খ) মাঠে 

গ) পথেঘাটে 

ঘ) গাঁয়ে


উত্তর : ঘ) গাঁয়ে

২৫। পড়শি ক্ষণেকের জন্যে যেখানে থাকতেন , সেটি কি ?

ক) বাড়িতে

খ) শূণ্যের ওপরে

গ) মাঠে

ঘ) গাঁয়ে 


উত্তর : খ) শূণ্যের ওপরে



২৬। ‘ক্ষণেক’ শব্দের অর্থ কী ? 

ক) এক মুহূর্তের জন্য

খ) ক্ষণকালের জন্য

গ) সামান্য সময়ের জন্য 

ঘ) অতি অল্প সময়ের জন্য


উত্তর : ক) এক মুহূর্তের জন্য

২৭। ‘সে আর লালন একখানে রয়’ সরলার্থ কি ? 

ক) সাধক লালন আর তাঁর পড়শি এক জায়গায় থাকেন 

খ) সাধক লালন ও তাঁর আরাধ্য একত্রে থাকেন

গ) ভক্ত ও ভগবান ভিন্ন জায়গায় থাকেন না 

ঘ) লালন আর তাঁর মনের মানুষ আলাদা আলাদা থাকেন না 


উত্তর : ক) সাধক লালন আর তাঁর পড়শি এক জায়গায় থাকেন 

মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘যিনি সব জায়গায় আপনি ধরা দিয়ে বসে আছেন তাকে একটা জায়গায় ধরতে গেলেই তাকে হারাতে হয় ।’ বক্তা কে ? মন্তব্যটির মর্মার্থ আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer যিনি সব জায়গায় আপনি ধরা দিয়ে বসে আছেন তাকে একটা জায়গায় ধরতে গেলেই তাকে হারাতে হয় বক্তা কে মন্তব্যটির মর্মার্থ আলােচনা করাে jini sob jaigai apni dhora diye bose achen take akta jaigai dhorte gelei take harate hoi bokta ke montbotor mormartho alochona koro



উত্তর : আলােচ্য উদ্ধৃতির বক্তা হলেন দাদাঠাকুর । তিনিই অচলায়তনে গুরু , যুনকপল্লিতে দাদাঠাকুর , দর্ভকদের মাঝে গোঁসাই । 

[         ] পরমাত্মা সর্বব্যাপী, সর্বভূতে তাঁর অধিষ্ঠান । নরের মধ্যে তিনি নারায়ণ । ভূমিতে অধিষ্ঠিত ভূমা । তাঁকে কোনাে সংকীর্ণ ঘেরাটোপে বাঁধা যায় না । বাঁধতে চাওয়া মস্ত ভ্রান্তি, মূর্খামির একশেষ । তিনি বন্ধন অসহিষ্ণু । তিনি কোনাে বাঁধনে বাঁধা থাকেন না । তাঁকে অচলায়তনের দুর্ভেদ্য প্রাচীরের সংকীর্ণ বেষ্টনীতে বাঁধতে গিয়ে আচার্যরা মহাভুল করেছেন । প্রাণের অবাধ প্রবেশের পথ বন্ধ করে তাঁরা পরমাত্মাকে নির্বাসিত করেছেন অচলায়তন থেকে । পুথিনির্ভরতা , আচারসর্বস্বতা , অর্থহীন মন্ত্রতন্ত্রে আস্থাস্থাপন ইত্যাদিকে প্রকৃত জ্ঞানচর্চা,সত্য উপলব্ধি ভেবে গতানুগতিক অভ্যাসের চক্রপথে কেবলই ঘুরপাক খেয়েছেন অচলায়তনের আচার্য ও তাঁর সহকর্মীরা । তাঁরা জানেন না চক্র কেবল এক জায়গায় ঘােরায় , তা সােজা পথ দেখায় না । যে পথে বিশ্বের সব যাত্রীর সহযাত্রী হওয়া যায় । ওই সহযাত্রীদের হৃদয়মন্দিরই তাে পরমাত্মার অধিষ্ঠানক্ষেত্র ।

 


সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আচার্য চরিত্রটি ‘গুরু’ নাটক অবলম্বনে বিশ্লেষণ করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আচার্য চরিত্রটি গুরু নাটক অবলম্বনে বিশ্লেষণ করাে acharjya choritroti guru natok abolombone bishleshon koro


উত্তর : অচলায়তনের আচার্য হলেন অদীনপুণ্য । তিনি জ্ঞানতাপস । গুরু তাঁকে প্রাচীন ভারতীয় আদর্শে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষায়তনের আচার্য পদে বসিয়েছিলেন । গুরু তারপর আর ফিরে আসেননি । জ্ঞানসাধনার প্রতিষ্ঠানটিকে আচার্য গুরুর নির্দেশিত আদর্শ অনুযায়ী গড়ে তােলেন । প্রতিষ্ঠানটি কালক্রমে আচার ও পুথিসর্বস্ব প্রাণহীন নীরস জ্ঞানচর্চার আখড়ায় পরিণত হয় । প্রাণহীন জ্ঞানচর্চায় আয়তনিক হয়ে পড়ে প্রাণচাঞ্চল্যহীন স্থবির । এই জড়ত্ব ও স্থবিরতা বৃদ্ধ আচার্যকে মানসিক অশান্তিতে ব্যথাতুর করে । তিনি বুঝতে পারেন নিষ্প্রাণ জ্ঞানচর্চার অসাফল্যের কথা । নিরুপায় বৃদ্ধ অন্তদাহে প্রতিটি মুহূর্তে জর্জরিত হতে থাকেন । 


[        ]  পঞকের সুদূরপিয়াসি মুক্ত প্রাণশক্তি আচার্যকে উদ্বুদ্ধ করে । পরম সত্যকে তিনি পঞকের মধ্যে খুঁজে পান । অচলায়তনের পাষাণকারায় দম বন্ধ করা বন্ধন থেকে মুক্তির দুরন্ত ক্ষমতাকে দেখতে পান । তিনি সােচ্চারে বলতে পারেন , ‘দরকার নেই— সুভদ্রকে কোনাে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে না ।’ ‘যদি কোনাে অপরাধ ঘটে সে আমার ।’


[          ] বৃদ্ধ আচার্য আয়তনিকদের কাছে অকপটে স্বীকার করেছেন , শিক্ষার মধ্যে তাদের চাওয়া অমৃতবাণী দিতে না পারার অক্ষমতা ও অপরাধের কথা । সেজন্য তিনি প্রায়শ্চিত্ত করতে চান । ‘অপরাধের অন্ত নেই , অন্ত নেই , তার প্রায়শ্চিত্ত আমাকেই করতে হবে ।’ তাই গুরুর কাছে মুক্তিপিয়াসি বৃদ্ধ আচার্যের বিনীত প্রার্থনা— ‘এবার নিয়ে এসাে সেই বাণী, গুরু , নিয়ে এসাে হৃদয়ের বাণী । প্রাণকে প্রাণ দিয়ে জাগিয়ে দিয়ে যাও ।’ দর্ভকপলিতে নির্বাসিত জীবনে তিনি ফিরে পান হারিয়ে যাওয়া প্রাণের সজীবতা , জীবনের পূর্ণ আস্বাদ ।





রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘উনি আমাদের সব দলের শতদল পদ্ম’ - ‘উনি’ কে ? ‘ আমাদের ’ বলতে কাদের ? উক্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করাে । তাঁকে ‘ শতদল ’ বলার কারণ কী ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer উনি আমাদের সব দলের শতদল পদ্ম উনি কে আমাদের বলতে কাদের উক্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করাে  তাঁকে শতদল বলার কারণ কী uni ke amder bolte kader uktir proshonge ullekh koro take shotodol bolar karon ki


উত্তর : ‘উনি’ হলেন নাট্যকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘গুরু' নাটকের যুনকদের একান্ত প্রাণের মানুষ দাদাঠাকুর । 
 আমাদের বলতে যুনকদের । 
 
যুনক সম্প্রদায়ের মধ্যে দাদাঠাকুরের উপস্থিতি ঘটে । পঞ্চক মাঝে মাঝে অচলায়তনের ঘেরাটোপ টপকে যুনকপল্লিতে চলে আসে । সেই সূত্রে যুনকদের সঙ্গে পঞকের পরিচয় । যুনকদের সঙ্গে মেলামেশার ব্যাপারে পঞ্চক দোটানার মধ্যে রয়েছে । এই পরিস্থিতিতে যুনকদের মাঝে এসেছেন তাদের খুবই প্রিয় ও কাছের মানুষ দাদাঠাকুর । পঞ্চক যুনকদের মতাে ‘ দাদাঠাকুর ’ বলেই ডাক দেয় । ডাকে দাদাঠাকুর ‘ কী ভাই, পঞক যে !’ বলে সাড়া দেন । পঞ্চক স্পষ্টত দাদাঠাকুরকে বলে দাদাঠাকুর বলে যে , যুনকরা তাঁকে  ডাকছে ‘দাদাঠাকুর’ বলে ডাকছে । সেজন্য তারও ডাকতে ইচ্ছে হল । সে যতই ভাবছে যুনকদের দলে মিশবে না, ততই আরও জড়িয়ে পড়ছে । এ কথা শুনে প্রথম যুনক বলে যে , দাদাঠাকুর কোনাে বিশেষ দলের নন । এই প্রসঙ্গে আলােচ্য উক্তির উপস্থাপনা ।

[         ] দাদাঠাকুর সব গােষ্ঠীর, সব সম্প্রদায়ের , সব দলের , সব মানুষের । তাই অচলায়তনে তিনি গুরু , যুনকদের তিনি দাদাঠাকুর , দর্ভকপল্লির মানুষজনের গোঁসাই । তাঁর উপস্থিতি সর্বত্র । তাঁর প্রেমপ্রীতি ভালােবাসা সর্বজনে । তিনি কারও বিশেষ নন , তিনি সর্বজনীন । তাই প্রথম যুনকের কথা হল ‘ দাদাঠাকুরকে নিয়ে আবার দল কীসের ?’ অর্থাৎ তিনি কোনাে বিশেষ দলভুক্ত নন । সে - সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে তিনি । সব গােষ্ঠী সব সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের তিনি , সেজন্য শতদলভুক্ত । ‘শত ’, ‘সহস্র’ এগুলি বহুত্বজ্ঞাপক শব্দ । সেই অর্থে সর্বজনের । আবার পদ্মের অপর নাম শতদল । শত পাপড়িবিশিষ্ট । ‘ দল ’ অর্থে পাপড়ি । পদ্মের সৌরভ বা সুগন্ধ শত পাপড়ির মধ্যেই আবদ্ধ থাকে না , তা ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে । তা আমােদিত করে পারিপার্শ্বিক পরিবেশকে । দাদাঠাকুরের প্রেমপ্রীতি, ভালােবাসা , তাঁর প্রাণের উদারতা , মুক্ত প্রাণের ব্যাপ্তি সর্বব্যাপী । জগন্ময় । তা পদ্মের সৌরভের সঙ্গে তুলনীয় ।




শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

পঞক প্রথমে যুনকের ছোঁয়াছুঁয়ির ব্যাপারে দোলাচলে থাকলেও পরে পরে তার মনে হয় , সে যুনকদের দলের হয়ে যাচ্ছে এবং ওই সূত্রে দাদাঠাকুরের সঙ্গে তার পরিচয় হয় । পঞকের এই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দাও ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer পঞক প্রথমে যুনকের ছোঁয়াছুঁয়ির ব্যাপারে দোলাচলে থাকলেও পরে পরে তার মনে হয় সে যুনকদের দলের হয়ে যাচ্ছে এবং ওই সূত্রে দাদাঠাকুরের সঙ্গে তার পরিচয় হয় পঞকের এই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দাও junok o dadathakurer songe tar porichoy hoi ponchoker ai abhigottar bornona dao

উত্তর : পাহাড় মাঠে পঞ্চক আপন মনে গান গাইছিল । খেয়াল করেনি তার পিছনে কখন থেকে যুনকের দল গানের তালের সঙ্গে পা মিলিয়ে নাচছিল । তাদের দেখে পঞ্চক অবাক হয় । যুনকরা তাকে কাঁধে করে নিয়ে নাচতে চাইলে সে তাদের ছুঁতে নিষেধ করে । কথা প্রসঙ্গে পঞ্চক তাদের জানায়, অচলায়তনে গুরু আসবে । যুনকরা বলে তাদের গুরু নেই । তারা হল দাদাঠাকুরের দলের লােক । পঞ্চক তার পূর্বপুরুষ থেকে জেনে এসেছে , যুনকরা সবরকম কাজ করে । এটাই তাদের সবচেয়ে বড়াে দোষ । এজন্যই নাকি তারা অচ্ছুত । কাঁকুড় , খেসারি এসব চাষ করা নাকি পাপ কাজ । দাদাঠাকুরের কোনাে কিছুতেই নিষেধ নেই । কোনাে বিধিবিধান নেই । তিনি কোনাে বিশেষ দলের নন , তিনি সব দলের শতদল পদ্ম । 

[        ] পঞ্চকের ক্রমশ মনে হয় , দোলাচল অবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে সে যেন যুনক দলের হয়ে যাচ্ছে । দাদাঠাকুর আসায় পঞ্চকের পুথিপত্র পড়া হচ্ছে না । পঞ্চক যুনকদের জানায়, দাদাঠাকুরকে একান্তে পেয়ে সে কথা বলতে চায় । দাদাঠাকুরের কাছে পঞ্চকের একান্ত আবেদন যে , তাকে হয় ওই পাহাড়- মাঠের খােলা হাওয়ায় ছেড়ে রাখা হােক , নয়তাে পুথির চাপে তাকে আগাগােড়া সমান চ্যাপটা করে ফেলা হােক । এমন সময় প্রথম যুনক খবর নিয়ে আসে যে , স্থবিরপত্তনের রাজা তাদের যুনক চণ্ডককে মেরে ফেলেছে । দাদাঠাকুর আশ্বস্ত করেন এই বলে যে, পাপ প্রাচীরের আকার নিলে তাকে ভেঙে ধুলােয় মিশিয়ে দেবেন । পঞ্চক দাদাঠাকুরের কাছে জানতে চায় দাদাঠাকুরকে সে দাদাঠাকুর , না গুরু কী বলে ডাকবে । উত্তরে দাদাঠাকুর বলেন যে, যাকে তিনি চালনা করছেন , সে জানতে না চাইলে তিনি তার দাদাঠাকুর । যে তাঁর আদেশ নিয়ে চলে তিনি তার গুরু । পঞ্চক দাদাঠাকুর ও গুরু দুই - ই চায় । সে দাদাঠাকুরের বােঝা মাথায় নিয়ে বেরিয়ে পড়তে চায় । দাদাঠাকুর পঞ্চকের জন্য জায়গা ঠিক করে রেখেছেন । তা হল অচলায়তন । শুনেই পঞ্চক আঁতকে ওঠে । অচলায়তন ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবেন তিনি । সেখানে পঞ্চককে মন্দির গড়তে হবে ।  





শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘দুর্লক্ষণ’ শব্দের অর্থ কী ? কে , কাকে তাদের ‘দুর্লক্ষণ’ বলে মনে করেছেন ও কেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer দুর্লক্ষণ শব্দের অর্থ কী কে কাকে তাদের দুর্লক্ষণ বলে মনে করেছেন ও কেন ke kake tader durlokhon bole mone korechen o keno

উত্তর : ‘দুর্লক্ষণ’ শব্দের অর্থ হল ‘অশুভ চিহ্ন',‘দুগ্রহ’ । 

[         ] বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ‘ গুরু ' নাটকের অন্যতম চরিত্র উপাচার্য সূতসােম অচলায়তনের শিক্ষার্থী পঞককে তাঁদের অচলায়তন প্রতিষ্ঠানের ‘অশুভ লক্ষণ‘ ‘দুর্লক্ষণ’ বলে অভিহিত করেছেন । 


[         ] পঞককে অচলায়তনের ‘ দুর্লক্ষণ ’ বলার কারণ হল পঞক অচলায়তনের আয়তনিকদের মধ্যে এক ব্যতিক্রমী চরিত্র । অচলায়তনের রুদ্ধ ও দম বন্ধ করা নিষ্প্রাণ পরিবেশে সে যেন মূর্তিমান বিদ্রোহ । আচার - অনুষ্ঠানসর্বস্ব অন্ধ সংস্কারের মায়াজালে তার যুক্তিবাদী মন বাঁধা থাকতে নারাজ । শুষ্ক কঠিন জ্ঞানচর্চার পরিবেশে , নিস্প্রান যান্ত্রিকতার গতানুগতিক জীবনাচরণে সে যেন প্রাণের বন্যা । সে যেন এক দুরন্ত ঝােড়াে হাওয়া । সে যেন মুক্ত প্রাণের স্পন্দন । সত্যের সন্ধানী । সুদূরের পিয়াসী । অচলায়তনের কঠিন পাষাণ প্রাচীর তাকে বেঁধে রাখতে অক্ষম । বাইরের পরিবেশ ও মানুষজনের সঙ্গে তার অবাধ মেলামেশা । মন্ত্রতন্ত্র জপতপ তার কাছে অর্থহীন রসহীন কঠিন পীড়নের শামিল । এমন একটি স্বভাবচরিত্র ও মানসিক গঠনের আয়তনিক অচলায়তনের নিয়মনিষ্ঠা , বিধিনিষেধের বিরুদ্ধবাদী হবে , সরল উদার মনের হবে , সহানুভূতি ও মমত্বপরায়ণ হবে —এটাই স্বাভাবিক । 


[           ]  সেজন্য পদে পদে নিয়মনিষ্ঠা লঙ্ঘনের কারণে তাকে প্রায়শ প্রায়শ্চিত্ত করতে হয় । প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে সে গতানুগতিকতার বৈচিত্র্যের আস্বাদন পায় । সুভদ্র উত্তরের জানালা খুলে আয়তনের চিরাচরিত সংস্কারের বশে নিজেকে পাপী বলে কান্নাকাটি করলে তাকে পঞ্চক সান্ত্বনা দেয় । তাকে উপাধ্যায় , উপাচার্য ও মহাপঞকদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বুক দিয়ে আগলে রাখে । তার প্রায়শ্চিত্তের জন্য মহাতামস সাধনের ব্যবস্থা হলে আচার্যের পরামর্শক্রমে পঞক তাকে কোলে তুলে নিয়ে প্রস্থান করে । পঞকের এসব কাজ অচলায়তনের বিরােধী কাজ বলে মনে করেন আয়তনের উপাচার্য । সেজন্য তাঁর চোখে পঞক আয়তনের দুর্লক্ষণ বা অশুভ চিহ্ন । 





বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

রবীন্দ্রনাথের রচিত ‘গুরু’ নাটকের ‘গুরু’ নামকরণ সংগত ও যথাযথ কি না আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer রবীন্দ্রনাথের রচিত গুরু নাটকের গুরু নামকরণ সংগত ও যথাযথ কি না আলােচনা করাে guru namkoron songoto o jothartho kina alochona koro

উত্তর :  বিষয়বস্তু অনুসরণে নয়, রচনার অন্তর্নিহিত ভাবসত্যের ওপর দৃষ্টি রেখে নামকরণের পক্ষপাতী ছিলেন রবীন্দ্রনাথ । রবিরশ্মির ২ য় খণ্ডে নাটকটির নামকরণ প্রসঙ্গে চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন , “প্রথমে যেদিন অচলায়তন নাটকটি পাঠ করেন , সেদিনই উহার ‘গুরু’ নাম রাখিবার ইচ্ছা কবি প্রকাশ করিয়াছিলেন , কিন্তু আমরা অচলায়তন নামটিতেই অধিক সমর্থন করাতে তাহাই বহাল থাকিয়াছিল ।” পরে ‘ অচলায়তন ’ নাটকটিকে ‘সহজে অভিনয়যােগ্য করিবার অভিপ্রায়ে’  নাটকটি ‘গুরু' নামে এবং ‘কিঞ্চিৎ রূপান্তরিত এবং লঘুতর আকারে প্রকাশ করার’ সময়ে কবি তাঁর পূর্ণ ইচ্ছাকে বহাল রাখেন । এখন আলােচ্য বিষয় হল নাটকটির ‘গুরু’ নামকরণ সংগত ও যথাযথ কি না । 

[         ] নাটকের শুরুতেই প্রথম বালক জানিয়েছে , উপাধ্যায়মশায় নিজে তাকে জানিয়েছেন অচলায়তনে গুরু আসছেন । সেজন্য অচলায়তনে সাজসজ্জার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। গুরু আসছেন বলে পঞক তাে সব পুথিপত্র সরিয়ে খােলসা হওয়ার চেষ্টায় আছে । গুরু কেন আসছেন তার কারণ অনুসন্ধানের আলােচনায় উপাচার্য বলেছেন যে, আয়তনের নিষ্ঠায় ও কার্যকলাপে তিনি প্রসন্ন হয়েছেন বলেই আসছেন । আচার্য কিন্তু মনে করেন , অপরাধের মাত্রা পূর্ণ হয়েছে বলেই তিনি আসছেন । কারণ , আচার - অনুষ্ঠান ও মন্ত্রতন্ত্রের আধিক্য, পদে পদে বিধিনিষেধের নির্দয় শিকল , পাপ খণ্ডনের নামে প্রাণঘাতী প্রায়শ্চিত্তের বিধান , বাইরের প্রকৃতি থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে নীরস জীবনযাপন আয়তনিক জীবনকে করেছে শুষ্ক ও প্রাণহীন । অচলায়তনের আয়তনিকরা জ্ঞানমার্গের সাধক হয়েও চারিদিকে পাষাণপ্রাচীর গড়ে প্রাণহীন স্থবির হয়ে পড়েছে । যুনকরা কর্মমার্গে ও দর্ভকরা ভক্তিমার্গে আটকা পড়ে চারিদিকে অচলায়তন গড়েছে । এই তিন ধরনের আয়তনিকদের রসময়পূর্ণ প্রাণে উত্তীর্ণ হওয়ার পথ দেখাতেই গুরু আসছেন । কাজেই নাটকের ‘গুরু’ নামকরণ সংগত ও যথাযথ , সার্থকও বটে ।

 



বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘গুরু’ নাটকের উৎস নির্ণয় করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer রবীন্দ্রনাথের লেখা গুরু নাটকের উৎস নির্ণয় করাে robindronather lekha guru natoker utsoho nirnay koro


উত্তর : ‘অচলায়তন ’ নাটকটিকে অভিনয়ের উপযােগী সহজ করার উদ্দেশ্যে নাট্যকার রবীন্দ্রনাথ নাটকটিকে কিছুটা রূপান্তরিত করে , কিছুটা লঘুতর করে নতুন রূপ দেন । নাটকটির নাম দেন ‘ গুরু'। ‘গুরু’ নাটকের ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথ ছােট্ট একটি বাক্যে লিখেছেন , “সহজে অভিনয় করিবার অভিপ্রায়ে অচলায়তন নাটকটি ‘ গুরু ' নামে এবং কিঞ্চিৎ রূপান্তরিত এবং লঘুতর আকারে প্রকাশ করা হইল ।” ‘ অচলায়তন ' নাটকটি লেখা হয়েছিল ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের মে -জুন মাসে । ওই বছরই প্রবাসীর আশ্বিন সংখ্যায় ‘অচলায়তন’ প্রকাশিত হয় । গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ২ আগস্ট ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে । ‘ অচলায়তন ’ প্রকাশের প্রায় পাঁচ বছর পরে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট - সেপ্টেম্বর মাসে ‘ অচলায়তন ’- এর রূপান্তরিত ও নতুন নাট্যরূপ ‘গুরু’ রচনা করেন রবীন্দ্রনাথ । ‘ অচলায়তন ’- এর ছাপা একখানা বইয়ের ওপর পরিমার্জন করে ও প্রয়ােজনে সাদা কাগজে লিখে নাট্যরূপটি গড়ে তােলা হয় । ‘ গুরু ' নাটকের সম্পূর্ণ অংশটি ‘পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ’ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করে একাদশ শ্রেণির পাঠ্য করা হয়েছে ।





মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘যদি সব শ্রেণি শেষ হয়ে যায়’ , / আমি তবু পরের । শ্রেণিতে যাব ।’ — পঙক্তি দুটি ব্যঞ্জনার্থ ব্যাখ্যা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer যদি সব শ্রেণি শেষ হয়ে যায় আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব পঙক্তি দুটি ব্যঞ্জনার্থ ব্যাখ্যা করাে jodi sob sreni sesh hoye jai ami tobu porer srenite jabo ponktoti banjonatho bakkha koro


উত্তর : আলােচ্য দুটি উদ্ধৃতি প্রখ্যাত মালয়ালম কবি আইয়াপ্পা পানিকরের লেখা ‘শিক্ষার সার্কাস’ কবিতা থেকে গৃহীত । 

[           ] এদেশীয় বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে পরীক্ষা পাসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে । একজন অপরজনকে টপকে ক্লাসের সিড়ির ধাপ ভেঙে ওপরে উঠতে থাকে পরীক্ষায় পাস করে । প্রথম জন প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলে , দ্বিতীয় জন দ্বিতীয় শ্রেণি পার হয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে যায় । এভাবে পরীক্ষায় পাসের খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভালােই জমে ওঠে । তাতেই ‘এক , দুই , তিন ....চার’ গণনা চলে ক্লাস অতিক্রমের । চতুর্থ শ্রেণিতে এসে প্রাথমিকের পর্যায় শেষ হয়ে যায় । ধাপ -ভাঙা অঙ্কের মতাে শিক্ষার্থী পরের ধাপে ওঠার জন্য মনের দৃঢ়তা নিয়ে বলে , ‘ যদি সব শ্রেণি শেষ হয়ে যায়,/ আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব । প্রাথমিকের পর মাধ্যমিক , উচ্চমাধ্যমিক , কলেজীয় শিক্ষার কত স্তর কত শ্রেণি ! পরীক্ষায় পাসের পর পাস করতে করতে শিক্ষার্থীর চলমানতা অব্যাহত থাকে । কবি এভাবেই প্রশ্নের দুটি উদ্ধৃতির অর্থগত পরম্পরা চমৎকারভাবে রক্ষা করেছেন ।

   প্রশ্নের শেষ উদ্ধৃতির পরেই কবি বলেছেন
           ‘ সব শিক্ষা একটি সার্কাস 
       যার সাহায্যে আমরা পরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হই ।’
       
[         ]  অর্থাৎ , কবি সব শিক্ষাকে সার্কাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন । শিক্ষা হল ক্রীড়াচক্র । সার্কাসে চক্রাকার ক্রীড়াঙ্গনে ঘুরে ঘুরে খেলা দেখানাে হয় । ওভাবেই পরীক্ষার মাধ্যমে শ্রেণির পর শ্রেণি টপকে উত্তীর্ণ হয় শিক্ষার্থীরা । প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনােভাব নিয়ে  ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার যেন খেলা চলতে থাকে । প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক , মাধ্যমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক এভাবে বিভিন্ন শিক্ষাস্তর অতিক্রম করে বিদ্যার্থীরা । শিক্ষাস্তর অতিক্রম করাই হল তাদের ধ্যান - জ্ঞান । জ্ঞানার্জন হল কিনা তা তাদের লক্ষ্য নয় ।




সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

“ শিক্ষার সার্কাস ” কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer শিক্ষার সার্কাস কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা আলােচনা করাে sikkhar sarkas kobitatir namkoroner sarthokota alochona koro


উত্তর : খ্যাতনামা মালয়ালম কবি আইয়াপ্পা পানিকর কবিতার নাম দিয়েছেন ‘শিক্ষার সার্কাস’। কবিতার নামকরণটি কতখানি যথাযথ ও সার্থক,তা আমাদের আলােচ্য বিষয় । 

[       ] কবি সাম্প্রতিক ভারতীয় শিক্ষার চালচিত্র খানিকটা অপ্রত্যক্ষ প্রতিযােগিতার শর্তসাপেক্ষে ও হেঁয়ালির রহস্যঘন ভঙ্গিতে উপস্থাপিত করেছেন । প্রথম শিক্ষার্থীর প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার শর্তসাপেক্ষে দ্বিতীয় শিক্ষার্থীর দ্বিতীয় শ্রেণিতে পৌছানাের ব্যাপারটা নির্ভর করছে । একইভাবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে পাসের ব্যাপারটাও যেন পারস্পরিক শর্তনির্ভর । একটাই ভালাে লক্ষণ যে , একটা চোরা স্রোতের মতাে অপ্রত্যক্ষ প্রতিযােগিতা ভিতরে ভিতরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রিয়াশীল । অবশ্য প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের সব শ্রেণি অতিক্রমের পরেও শিক্ষার্থীর শিক্ষা ব্যাপারে চলমানতা অব্যাহত । কারণ তারপরও শিক্ষার্থীর উক্তি :‘ আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব ।’ অবশ্যই যাবে । কারণ তারপরও মাধ্যমিক , উচ্চমাধ্যমিক , কলেজীয় প্রভৃতি শিক্ষার কত স্তর, কত শ্রেণিই তখনও বাকি ।
[        ] কবি এদেশীয় সাম্প্রতিক শিক্ষা সম্পর্কে ব্যঙ্গ্যোক্তি করলেন : ‘সব শিক্ষা একটি সার্কাস ।’ সার্কাস হল ক্রীড়াচক্র । অর্থাৎ , চক্রাকার বা বৃত্তাকার ক্রীড়াক্ষেত্রে অশ্বাদি ক্রীড়া উপাদান নিয়ে ক্রীড়াবিদরা ক্রীড়া প্রদর্শন করে থাকেন । এদেশীয় শিক্ষার্থীরা যেন সার্কাসের মতাে বৃত্তাকার ক্ষেত্রে শ্রেণির পর শ্রেণি টপকে এগিয়ে চলেছে । শিক্ষার এই চক্রাকার বাঁধাধরা পথটাই হল নীরস , নিরানন্দ , সে অর্থে প্রাণহীন জ্ঞানহীন , পুথিসর্বস্ব । বৃত্তাকার ঘূর্ণায়মান চলমান শক্তি শিক্ষার স্তর ও শ্রেণি টপকাতে সাহায্য করছে ঠিকই । শিক্ষাও হচ্ছে , কিন্তু শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জ্ঞানার্জন, চেতনার বিকাশ — তা অর্জিত হচ্ছে না । শিক্ষার্থীর ব্যর্থতার এই যে ধোকাসর্বস্ব মহা ফাঁকি , সে -কথা কে মনে রাখে ? সবাই আপাতদৃষ্টিতে দেখছে , শিক্ষা এগিয়ে চলেছে চক্রাকার বাঁধাধরা যান্ত্রিক পথে সার্কাসের বৃত্তাকার ক্ষেত্রে ‘মা ফলেষু কদাচন’ ঔদাস্যে । কাজেই ব্যঙ্গার্থে হলেও কবিতার ‘শিক্ষার সার্কাস’ নামকরণ যথাযথ ও সার্থক ।




রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘ আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব । ’ — উদ্ধৃত চরণের মধ্যে কবি - ভাবনার প্রতিফলন বুঝিয়ে দাও ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব উদ্ধৃত চরণের মধ্যে কবি ভাবনার প্রতিফলন বুঝিয়ে দাও ami tobu porer sreenite jabo udhrito choroner modhey kobi vabnar protifolon bujhiye dao


উত্তর : উদ্ধৃত চরণটি প্রখ্যাত মালয়ালম কবি আইয়াপ্পা পানিকরের লেখা ‘ শিক্ষার সার্কাস ' কবিতার অংশবিশেষ । কবি দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেছেন । ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে ওতপ্রােতভাবে জড়িত ছিলেন । শিক্ষাসংক্রান্ত তাঁর কবি -ভাবনা ‘শিক্ষার সার্কাস’ কবিতাটিতে চমৎকার প্রকাশিত হয়েছে । আলােচ্য উদ্ধৃত পঙক্তিটিতে তার প্রতিফলন লক্ষ্যণীয় । 

[         ] এদেশীয় বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে পরীক্ষা পাসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে । একজন অপরজনকে অতিক্রম করে ক্লাসের সিঁড়ির ধাপ ভেঙে ওপরে উঠতে থাকে পরীক্ষায় পাস করে । প্রথম জন প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলে , দ্বিতীয় জন দ্বিতীয় শ্রেণি পার হয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে যায় । এভাবে পরীক্ষায় পাসের খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভালােই জমে ওঠে । তাতেই ‘এক , দুই, তিন ......চার’ গণনা চলে ক্লাস অতিক্রমের । চতুর্থ শ্রেণিতে এসে প্রাথমিক স্তর শেষ হয়ে যায় । ধাপ -ভাঙা অঙ্কের মতাে শিক্ষার্থী পরের ধাপে ওঠার জন্য মনের দৃঢ়তা নিয়ে বলে , ‘ যদি সব শ্রেণি শেষ হয়ে যায়,/আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব ।’ প্রাথমিকের পর মাধ্যমিক , উচ্চমাধ্যমিক , কলেজীয় শিক্ষার কত স্তর, কত শ্রেণি । পরীক্ষায় পাসের পর পাস করতে করতে শিক্ষার্থীর চলমানতা অব্যাহত থাকে ।




শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘গুরু’ নাটক অবলম্বনে ‘গুরু’ চরিত্রের স্বরুপ বিশ্লেষণ করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer গুরু নাটক অবলম্বনে গুরু চরিত্রের স্বরুপ বিশ্লেষণ করাে guru natok abolombone guru choritrer swarup bishleshon koro


উত্তর : ‘ গুরু ’ নাটকে গুরুর উপস্থিতি নেপথ্যে কিংবা স্বশরীরে নাটকের শুরু থেকে শেষ অবধি । তাঁরই নামে নাটকের নামকরণ । তিনি অসীম , অনন্ত  ও সর্বশক্তির আধার । অন্যায়- অবিচারের বিরুদ্ধে, জীর্ণ প্রাণহীন সমাজকে ধ্বংস করার কাজে তিনি খরগহস্ত রুদ্র । জ্ঞান-কর্ম ভক্তির সমন্বয়ে সাধনাকে সফল করে জগৎ ও জীবনকে গতিশীল করার কাজে তিনি শক্তিমান পরমসুন্দর । একাধিক রূপে তাঁর প্রকাশ । তিনি গুরু, তিনি দাদাঠাকুর , তিনিই গোঁসাই । অথচ তিনি একই । জ্ঞানমার্গের আয়তনিকদের কাছে তিনি গুরু, কর্মমার্গের যুনকদের কাছে তিনি দাদাঠাকুর , আর ভক্তিমার্গের দর্ভকদের কাছে তিনি গোঁসাই । প্রকৃতপক্ষে তিন মার্গের মানুষই নিজ নিজ ক্ষেত্রে অচলায়তনের ঘেরাটোপে আবদ্ধ । গুরু তিন রূপে হাজির হয়ে তিনেরই সাধনপথের বাধা সরিয়ে জ্ঞান-কর্ম- ভক্তির ত্রিবেণি সংগম ঘটিয়েছেন । তিনি জ্ঞানমার্গীদের অচলায়তনের পাষাণ প্রাচীর গুঁড়িয়ে দিয়েছেন যােদ্ধৃবেশে । দীর্ঘদিনের প্রথা ও সংস্কারের মূল উপড়ে ফেলেন তিনি । বাইরের জগৎ ও জীবনের সঙ্গে মিলন ঘটিয়ে শুষ্ক প্রাণহীন জ্ঞানচর্চায় তিনি এনেছেন সরসতা ও জীবনের প্রাণােচ্ছ্বাস। 



বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ‘গুরু ’ নাটক অনুসরণে পঞ্চক চরিত্র আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গুরু নাটক অনুসরণে পঞ্চক চরিত্র আলােচনা করাে guru natok anusorone ponchok choritroti alochona koro


উত্তর :  অচলায়তনের মহানিষ্ঠ সাধক মহাপঞ্চকের ভাই । ভাই হলেও পঞক স্বভাবধর্মে মহাপঞকের বিপরীত । অচলায়তনের রুদ্ধ ও দম বন্ধ করা  নিস্প্রাণ পরিবেশের ব্যতিক্রমী চরিত্র । যেন মূর্তিমান বিদ্রোহ । আচার - অনুষ্ঠান  সর্বস্ব অন্ধ সংস্কারের মায়াজালে তার যুক্তিবাদী মন বাঁধা থাকতে নারাজ । শুষ্ক নীরস কঠিন জ্ঞানচর্চার পরিবেশে , নিষ্প্রাণ যান্ত্রিকতার গতানুগতিক জীবনাচরণে সে যেন প্রাণের বন্যা । সে যেন দুরন্ত এক ঝােড়াে হাওয়া । সে যেন মুক্ত প্রাণের স্পন্দন । সত্যের সন্ধানী । সুদূরের পিয়াসি । বাইরের পরিবেশ ও মানুষজনের সঙ্গে তার অবাধ মেলামেশা । যুনক ও দর্ভকপল্লির সঙ্গে তার আত্মিক যােগ । অন্তরের ভাবভাষায় জারিত গান তার কণ্ঠস্থ । সুরের শত ধারায় সে স্বচ্ছন্দে নিজেকে , নিজের অন্তরকে মেলে ধরতে পারে । তখন মনে হয়, সে যেন প্রাণের মূর্ত প্রতীক । প্রাণের রাজ্যে বুঝি তার অবাধ আনাগােনা । 

[        ] আবার এই পঞকই অচলায়তনে যেন শানিত ব্যঙ্গস্ত্র । দাদা মহাপঞকের কঠোর সংযম -নিষ্ঠা, অর্থহীন মন্ত্রাভ্যাস, নীরস জপতপ ও জ্ঞানচর্চার বিরােধী বলেই , ওই সংক্রান্ত প্রসঙ্গ উঠলেই পঞ্চকের ব্যঙ্গাস্ত্র ঝলসে ওঠে । 


[         ] পঞ্চকের ব্যঙ্গের মধ্যেও আছে হাস্যরসের ফল্গুধারা । যেমন— “তােমরা বােঝা বয়ে মর , আমি হালকা হয়ে বসে আছি ।” অথবা “তিনদিনের দিন যে সাপটা এসে আমাকে নিশ্চয় কামড়াবে কথা ছিল , সে আজ পর্যন্ত আমাকে খুঁজে বের করতে পারে নি ।” 


[       ] পঞ্চক স্নেহশীল , মমত্বপরায়ণ । মহাপাপের আশঙ্কায় কান্নায় ভেঙে পড়া সুভদ্রকে সে পরম স্নেহভরে সান্ত্বনা দিয়েছে । ‘চুপ চুপ ! ভয় নেই সুভদ্র, কাঁদছিস কেন ভাই ?’ তাকে আশ্বস্ত করে বলেছে ‘তােমার জয়জয়কার হবে সুভদ্র । তিন - শাে পঁয়তাল্লিশ বছরের আগল তুমি ঘুচিয়েছ ।’


[       ] পঞক বিনম্র স্বভাবেরও । সে দাদাঠাকুরকে বিনীতভাবে বলেছে , “প্রভু,তুমি তাহলে আমার দুইই । আমাকে আমি চালাচ্ছি , আর আমাকে তুমিই চালাচ্ছ ..........।”

 রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘গুরু' নাটকে পঞক একটি অনন্য চরিত্র।


মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

“ আমি তার কান্না আমার বুকের মধ্যে করে এনেছি । ” —বক্তা কে ? কোন্ প্রসঙ্গে, কাকে উদ্দেশ্য করে বক্তা এ কথা বলেছেন ? এই বক্তব্যের মধ্যে বক্তার চরিত্রের কোন্ দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer আমি তার কান্না আমার বুকের মধ্যে করে এনেছি বক্তা কে কোন্ প্রসঙ্গে কাকে উদ্দেশ্য করে বক্তা এ কথা বলেছেন এই বক্তব্যের মধ্যে বক্তার চরিত্রের কোন্ দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে ami tar kanna amar buker modhye kore anechi bokta ke kon prosonge kake uddeshya kore bokta akotha bolechen


উত্তর . : অচলায়তনের আচার্য অদীনপুণ্য এই উক্তির বক্তা । 

[         ] আচার্য অদীনপুণ্য দকপল্লীতে নির্বাসিত । সেখানে নির্বাসিত পঞকও হাজির । পঞক ও আচার্যের মধ্যে কথা হচ্ছে । আচার্য বলছেন , তাঁর যেন মনে হচ্ছে অচলায়তনে সুভদ্র কাঁদছে । পঞকের বক্তব্য হল অচলায়তন থেকে এতদূরে কান্না শুনতে পাওয়ার কথা নয় । আচার্য মশাই অন্য কিছু শুনছেন । আচার্য আদীনপুণ্য তা মেনে নিলেন , কিন্তু তিনি তাে সুভদ্রের কান্না বুকে করে এনেছেন । এই হল তাঁর উক্তির প্রসঙ্গ ।

[         ] আচার্য অদীনপুণ্যের বক্তব্যের মধ্যে তাঁর চরিত্রের এই দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে যে, বালক সুভদ্রকে প্রায়শ্চিত্তের জন্য । প্রাণহননকারী কঠিন মহাতামস ব্রতের মধ্যে আচার্য বসাতে চান না । কারণ অচলায়তনের পাষাণকারায় দমবন্ধ করা বন্ধন থেকে মুক্তির ডাক তিনি শুনেছেন । তাঁর হৃদয় এখন স্নেহ ও করুণায় কোমল ও দ্রবীভূত । সুভদ্রের অপরাধকে আচার্য নিজের অপরাধ বলে মনে করেছেন । তাই প্রায়শ্চিত্তের প্রতিবাদ করে তিনি বলেছেন , ‘যদি কোনাে অপরাধ ঘটে সে আমার ।’ তিনি নির্বিকার  চিত্তে সুভদ্রের কান্না বুকে নিয়ে দভকপল্লীতে নির্বাসিত হয়েছেন । 






সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘তাঁর রাগটা কীরকম সেইটা দেখার জন্যেই তো একাজ করেছি !’ - বক্তা কে ? এখানে কার রাগের কথা বলা হয়েছে ? তিনি রেগে গেলে কী হয় ? তাঁর রাগের ধরন দেখার জন্য বক্তা কী করেছিল ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer তাঁর রাগটা কীরকম সেইটা দেখার জন্যেই তো একাজ করেছি বক্তা কে এখানে কার রাগের কথা বলা হয়েছে তিনি রেগে গেলে কী হয় তাঁর রাগের ধরন দেখার জন্য বক্তা কী করেছিল tar ragta kirokom seita dekhar jonnoi to akaj korechi bokta ke


উত্তর : এই উক্তির বক্তা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘গুরু’ নাটকের অন্যতম চরিত্র পঞ্চক । 

এখানে মহাময়ূরী দেবীর রাগের কথা বলা হয়েছে ।
 মহাময়ূরী দেবী রেগে গেলে যার ওপর রুষ্ট হন, তাকে তিন দিনের দিন সাপ এসে দংশন করে ।
 

[        ] মহাময়ূরী দেবীর রাগের ধরন দেখার জন্য পঞ্চক ইচ্ছা করে ও মাসে শনিবারে যেদিন মহাময়ূরী দেবীর পুজোর দিন ছিল, সেদিন সে কাঁসার থালায় ইঁদুরের গর্তের মাটি রেখে ,তার ওপর পাঁচটা শেয়ালকাঁটার পাতা আর তিনটে মাসকলাই সাজিয়ে নিজে আঠারাে বার ফু দিয়েছিল । পঞক মহাময়ূরী দেবীর রাগ দেখেনি । তিন দিনের দিন সাপ এসে কামড়ানাের কথা । সাপ এসে তাকে দংশনও করেনি ।
 



রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

‘তােমার এই অসামান্য সাহস দেখে উপাধ্যায়মশায়ের মুখে আর কথা নেই ।’ এখানে কার সাহসের কথা বলা হয়েছে ? সে কীভাবে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিল ? উপাধ্যায়ের মুখে কথা নেই কেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer তােমার এই অসামান্য সাহস দেখে উপাধ্যায়মশায়ের মুখে আর কথা নেই এখানে কার সাহসের কথা বলা হয়েছে সে কীভাবে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিল উপাধ্যায়ের মুখে কথা নেই কেন tomar ai asamanno sahosh dekhe upadhyaymoshaiyer mukhe ar kotha nei akhane kar sahoser kotha bola hoyeche se kivabe sahosikotar porichoy diyechilo


উত্তর : এখানে যার সাহসের কথা বলা হয়েছে , সে হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘গুরু’ নাটকের ‘ অচলায়তন ’- এর অন্যতম শিক্ষার্থী সুভদ্র । 

[        ] সুভদ্র কৌতূহলবশে অচলায়তনের উত্তরদিকের জানালা খুলে বাইরের দৃশ্য দেখে ।অচলায়তনের বিধান অনুযায়ী এ এক ভয়ানক পাপ কাজ । আচলায়তনের উত্তরদিক একজটা দেবীর । জানালা খােলার ফলে উত্তরদিকের প্রবেশ করা বাতাস নাকি ওদিকের সমস্ত যজ্ঞপাত্রকে কলুষিত করেছে । এজন্য সুভদ্র নাকি মহাপাপী । তাকে কঠোর প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে । কিন্তু পঞকের অভিমত হল ওই কাজ সুভদ্রের পাপকাজ নয়, বরং তার সাহসিকতার পরিচয় । সে ওই কাজের দ্বারা তিনশাে পঁয়তাল্লিশ বছরের আগল দিয়েছে ঘুচিয়ে । অচলায়তনে গুরুর আসার পথ করেছে প্রশস্ত ।  

[        ] উপাধ্যায় কিন্তু পঞকের মতাে উদার ও খােলা মনের মানুষ নন । তিনি নানাবিধ সংস্কারের জালে আবদ্ধ । কাজেই সুভদ্রের অত বড়াে পাপ কাজের কথা শুনে তিনি স্তম্ভিত ও বাকরুদ্ধ । তিনি ভেবে পাচ্ছেন না ওই মহাপাপের কী প্রায়শ্চিত্ত হতে পারে ! অচলায়তনই বা কতখানি অশুচি হয়েছে ? অশুচিতা দূর করে কীভাবে শুচিতা ফিরে আসবে ।
 


শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

মহাপঞকের সঙ্গে আচার্য অদীনপুণ্যের বিরােধ বাধল কেন ? কে , কোথায় অদীনপুণ্যের নির্বাসন দিলেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer মহাপঞকের সঙ্গে আচার্য অদীনপুণ্যের বিরােধ বাধল কেন কে কোথায় অদীনপুণ্যের নির্বাসন দিলেন mohaponchoker songe adinpunner birodh badhlo keno ke kothay adinpunner nirbashon dilen


উত্তর : একটি সমস্যাই নাট্যকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘গুরু' নাটকের শুরু থেকে শেষ অবধি প্রবহমান ঘটনাবলিকে প্রত্যক্ষ কিংবা পরােক্ষভাবে প্রভাবিত করেছে । ঘটনাটি হল অচলায়তনের বালক সুভদ্র খানিকটা কৌতহূলের বশে আয়তনের উত্তরদিকের জানালা খুলে বাইরের দৃশ্য দেখে ফেলেছে । ওদিকটা হল একজটা দেবীর । খােলা জানালা ওদিকের আলাে -বাতাস অচলায়তনের মন্ত্রপূত বাতাসকে নাকি কলুষিত করেছে । অশুচি হয়েছে অচলায়তন ও আয়তনিকরা । কাজেই এই মহাপাপের জন্য বালক পুরােপুরি দায়ী । মহাপাপী সুভদ্রকে প্রায়শ্চিত্ত করে পাপক্ষালন করতে হবে । প্রায়শ্চিত্তের বিধান উপাধ্যায়, উপাচার্য কারও জানা নেই বা স্মৃতিতে নেই । মহাপঞক একমাত্র ভগবান জ্বলনানন্তকৃত আধিকর্মিক বর্ষায়ণে পেয়েছেন ওই পাপের প্রায়শ্চিত্তের বিধান । পাপীকে ছ -মাস ধরে মহাতামস সাধন করতে হবে । এই প্রায়শ্চিত্তের সমস্যা নাটকের উল্লিখিত সমস্যা , যার কথা প্রথমেই বলা হয়েছে । 

[         ] মহাতামস সাধন প্রায়শ্চিত্ত বড়ােই কঠিন । ছ- মাস অন্ধকার বন্ধ ঘরে থাকতে হবে বন্দি হয়ে । আলাের এক কণা রশ্মিও যেন সেখানে ঢুকতে না পারে । কারণ আলাে দিয়ে যে পাপ কাজ করা হয়েছে অন্ধকার দিয়ে তার ক্ষালন হবে । প্রায়শ্চিত্ত নিঃসন্দেহে প্রাণঘাতী । পঞ্চক প্রথম থেকেই সুভদ্রকে রক্ষা করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । আয়তনের কর্তৃত্বে থাকা আচার্যও হয়েছেন প্রায়শ্চিত্তের বিরােধী । কারণ আচার্য জানেন অচলায়তনে অনেক ভুল - ত্রুটিও অন্যায় কাজ হচ্ছে । কিন্তু তা সংশােধনের মতাে সাহসী পদক্ষেপ নিতে তিনি পারেননি । সে- পরিতাপ ও অনুশােচনা তাঁকে মনের দিক থেকে বিদ্ধ করেছে । এবার আর সমর্থন করে অন্যায়ের বােঝা  বাড়াতে চান না । তিনি সুভদ্রের প্রায়শ্চিত্তের ব্যাপারে সম্মতি দিলেন না । 
[          ] তাতেই বিরােধ বাধল উপাধ্যায়, উপাচার্য ও মহাপঞকের সঙ্গে । উপাধ্যায় বললেন , ‘তুচ্ছ  মানুষের প্রাণ আজ আছে কাল নেই , কিন্তু সনাতন ধর্মবিধি তাে চিরকালের ।’ মহাপঞ্চক প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে মন্তব্য করলেন যে ,সুভদ্রকে বাঁচাতে গিয়ে আচার্য সনাতন ধর্মকে বিনাশ করবেন । আচার্যের এরকম বুদ্ধিবিকার বিস্ময়কর । তাঁকে আচার্য বলে আর গণ্য করাই চলে না । আচার্য বুঝতে পারলেন আয়তনিকদের সামনে তাঁর বিচারের দিন এসেছে । তিনি তাঁর অপরাধের কথা স্বীকার করে প্রায়শ্চিত্ত করতে প্রস্তুত বলে জানালেন । তবে তিনি সুভদ্রের প্রায়শ্চিত্তের আদেশ দিলেন না । 

[        ] স্থবিরপত্তনের রাজার কাছে আচার্যের শাস্ত্রবিরােধী কাজের অভিযােগ উঠল । রাজা আচার্যকে দর্ভকপল্লিতে নির্বাসিত করলেন । অচলায়তনের আচার্যের পদ পেলেন মহাপঞ্চক । শেষাবধি মহাপঞক ও আচার্যের বিরােধের ফল দাঁড়াল এই । 

 




বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

“একটু উৎপাত হলে যে বাঁচি ”—কে বলেছে ? কোন্ উৎপাত ? সে উৎপাত চায় কেন ?

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer একটু উৎপাত হলে যে বাঁচি কে বলেছে কোন্ উৎপাত সে উৎপাত চায় কেন aktu utpat hole je bachi ke boleche kon utpat se utpat chai keno

উত্তর : এ কথা বলেছে পঞ্চক ।
[       ] ‘উৎপাত’ বলতে গুরুর উপস্থিতিতে প্রবল আলােড়ন । পঞক উৎপাত চায়, কারণ পুথিসর্বস্ব শিক্ষার  চায় জগদ্দল পাথর শিক্ষার্থীদের মনের ওপর চেপে বসেছে । পুথিনির্ভর শুষ্ক নীরস শিক্ষা জীবনের আনন্দ - উল্লাস, সরসতা ও সজীবতাকে গ্রাস করে জীবনকে জড়বৎ নিষ্প্রাণ করে তুলেছে । পদে পদে নানা বিধান ও নিয়মকানুনের শিকল আঁটোসাঁটো করে চেপে ধরে প্রাণ ওষ্ঠাগত করেছে । তাই অচলায়তনের ভিত ধরে প্রচণ্ড কম্পন বা উৎপাতের প্রয়ােজন । এই প্রচণ্ড নাড়া বা কম্পনই স্থবিরত্ব দূর করে প্রাণের স্পন্দন ফিরিয়ে আনবে । গুরুই পারেন ওই কাক্ষিত বাসনা পূর্ণ করতে । 




বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২

“উনি গেলে তােমাদের অচলায়তনের পাথরগুলাে সুদ্ধ নাচতে আরম্ভ করবে , পুঁথিগুলাের মধ্যে বাঁশি বাজবে । ” — বক্তা কে ? ‘উনি’ বলতে কাকে চিহ্নিত করা হয়েছে ? উক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer উনি গেলে তােমাদের অচলায়তনের পাথরগুলাে সুদ্ধ নাচতে আরম্ভ করবে পুঁথিগুলাের মধ্যে বাঁশি বাজবে বক্তা কে উনি বলতে কাকে চিহ্নিত করা হয়েছে উক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে uni gele tomader acholaitoner pathorgulo sudho nachte aromvo korbe puthigulor modhey banshi bajbe


উত্তর : এই উক্তির বক্তা হল প্রথম যুনক । 

‘ উনি ’ বলতে দাদাঠাকুরকে চিহ্নিত করা হয়েছে ।
[        ] দাদাঠাকুর উদার ও মুক্তপ্রাণের প্রতীক । তিনি সবরকম আচার অনুষ্ঠান , মন্ত্রতন্ত্র, বিধিবিধানের আগল বা বাধা ভেঙে প্রাণের প্রবাহ বইয়ে দেন । প্রথম যুনকের কথা হল দাদাঠাকুর অচলায়তনে গেলে তাঁর স্পর্শে পাথরগুলি নাচতে শুরু করবে । পুথিগুলিতে বাঁশির সুর ধ্বনিত হবে । অর্থাৎ, তাঁর ছোঁয়ায় অচলায়তনের নিষ্প্রাণ পাথর ও পুথিগুলি প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে । আচার - অনুষ্ঠানের আধিক্য , জপতপ , মন্ত্রতন্ত্রের পেষণ ও শুষ্ক পুথিসর্বস্বতার যে নিষ্প্রাণতা তা নতুন প্রাণের স্পর্শে ও শিহরণে সঞ্জীবিত হয়ে উঠবে । 



মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২

‘গুরু’ নাটকে মােট কটি গান আছে ? নাটকটিতে সংগীতের ভূমিকা আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী বাংলা প্রশ্নোত্তর xi class 11 Bengali Question answer গুরু নাটকে মােট কটি গান আছে নাটকটিতে সংগীতের ভূমিকা আলােচনা করাে guru natoke mot koti gan ache natoktite songeeter bhumika alochona koro

উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ‘গুরু’ নাটকে সাতটি গান আছে । 

[          ] রবীন্দ্রনাথের ‘ অচলায়তন ’ নাটকে তেরােটি গান আছে । অচলায়তনের রূপান্তরিত ‘ গুরু’ নাটকে অচলায়তনের ছটি গান নেওয়া হয়েছে । একটি নতুন গান সংযােজিত হয়েছে ‘গুরু’নাটকের শেষে । ‘গুরু’ নাটকে নাট্যকার গানের সংখ্যা কমিয়ে এনেছেন সম্ভবত নাটককে সংক্ষিপ্ত, গতিময় ও নাট্যদ্বন্দ্বকে তীক্ষ্ণতর করার উদ্দেশ্যে । 


[        ] ‘গুরু’ নাটকের প্রথম গানটি পঞকের । গান গাইতে গাইতে পঞকের প্রবেশ । গানটি আট চরণের । চারভাগে গানটি গাওয়া 1হয়েছে সংলাপের মাঝে মাঝে । দীর্ঘদিন পরে গুরু যে অচলায়তনে আসছেন , পঞকের গানের মধ্যে তা আভাসিত । গুরুর জন্য, ব্যাকুলতা , তা প্রকাশিত আকাশে । তাঁর আগমনের বার্তা বাতাসে । এভাবে গুরুর আগমনবার্তা অচলায়তনের সর্বত্র প্রচারিত । 

[        ] প্রথম গানের মতাে দ্বিতীয় গানটিও পঞকের একক কণ্ঠে । অপূর্ব এক নাটকীয় পরিস্থিতিতে গানটি গেয়েছে পঞ্চক , অবশ্য আরও অন্যান্য আয়তনিকদের সঙ্গে নৃত্য সহযােগে । অচলায়তনের জীর্ণ পুথিসর্বস্ব নীরস নিষ্প্রাণ জীবন থেকে মুক্তির জন্যে আচার্য গুরুর কাছে কামনা করেছেন হৃদয়ের বাণী ,প্রাণকে প্রাণ দিয়ে জাগিয়ে তােলার শক্তি । পঞকেরও একই কামনা । তাই তার নৃত্যসহ উদাত্ত কণ্ঠে গান : ‘ওরে ওরে ওরে আমার মন মেতেছে ......’  তৃতীয় গানও পঞকের একক কণ্ঠে, অবশ্য তার পিছনে যুনকরা দলবদ্ধ হয়ে নৃত্য করেছে । পাহাড়- মাঠের মুক্ত পরিবেশে মুক্তির সন্ধানে পঞক । পরের গান যুনকের । তারা মনের আনন্দে চাষ করে । চাষ করাই তাদের কর্ম ও ধর্ম । পরের গানও তাদের । যার মর্মার্থ হল তাদের কাজের বাছবিচার নেই । তারা সব কাজেই হাত লাগায় ।কর্মমার্গই হল তাদের সাধন পথ । দর্ভকদের গান পরের গান । তারা শাস্ত্র জানে না, তারা নামগান করে । সেই নামগানই তারা শােনায় । নাটকের শেষ গান একেবারে সমাপ্তি লগ্নে । যুনক ও দর্ভকেরা গুরুকে প্রদক্ষিণ করে গুরুর জয়গান গেয়েছে — ‘ভেঙেছে দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়/তােমার হউক জয় ।’