ইতিহাস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ইতিহাস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ৯ জুলাই, ২০২২

টমাস ক্রমওয়েলের সংস্কারগুলি আলােচনা করো ।

একাদশ শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নোত্তর xi class 11 history Question answer টমাস ক্রমওয়েলের সংস্কারগুলি আলােচনা করো tomas chromoyeler songskarguli alochona koro


উত্তর : তার সংস্কার কার্যগুলির মধ্যে ছিল —  

জাতীয় চার্চ প্রতিষ্ঠা : মনেপ্রাণে রাজতন্ত্রের অনুরাগী ও রাজার সমর্থক ক্রমওয়েল ইংল্যান্ডের রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ইল্যান্ডে ‘জাতীয় চার্চ’ গড়ে তােলেন । এর ফলে রােমান চার্চের সঙ্গে ইংল্যান্ডের সম্পর্ক ছিন্ন হয় এবং দেশে ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব’ প্রতিষ্ঠিত হয় । 

পােপের প্রাধান্য বাতিল : টমাস ফ্রমওয়েল পার্লামেন্টের আইনের সহায়তায় ইংল্যান্ডের চার্চে পােপের প্রাধান্য বাতিল করে রাজার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেন । এর ফলে রাজা সর্বাধিক ক্ষমতার অধিকারী হন । চার্চের যাবতীয় সম্পত্তি রাজার হস্তগত হলে তাঁর আর্থিক শক্তিও বৃদ্ধি পায় । 


অ্যাক্ট অব সুপ্রিমেসি : ক্রমওয়েল ভাইকার জেনারেল বা মুখ্য ধর্মীয় আধিকারিকের পদে নিযুক্ত হয়ে ১৫৩৪ খ্রিস্টাব্দে ‘অ্যাক্ট অব সুপ্রিমেসি’ নামে একটি আইন পাস করেন । এর দ্বারা তিনি— 

[i] ইংল্যান্ডের সব চার্চকে রাজার নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নেন । 

[i] ইংল্যান্ডের বড়াে মঠগুলির ওপর রাষ্ট্রীয় আধিপত্য কায়েম করেন এবং ছােটো মঠগুলি বাজেয়াপ্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন । উল্লেখ্য যে , ‘অ্যাক্ট অব সুপ্রিমেসি’র প্রতিবাদ করায় তিনি সে যুগের বিখ্যাত দুই পণ্ডিত — স্যার টমাস মুর ও ফিশারকে প্রাণদণ্ড দেন । 

মঠের প্রাধান্য ধ্বংস : ছােটো মঠগুলি ধ্বংস করতে ক্রমওয়েল যে নীতি নেন তার বিরুদ্ধে উত্তর ইংল্যান্ডে ১৫৩৬ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ‘পিলগ্রিমেজ অব গ্রেস’ নামে এক বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে । টমাস ক্রমওয়েল কঠোর হাতে এই বিদ্রোহ দমন করেন । লর্ড ডার্সি , লর্ড হুসে, সহ কয়েকজন অ্যাবট ও বিদ্রোহী নেতাদের প্রাণদণ্ড অথবা কারাদণ্ড দেওয়া হয় । এইভাবে ক্রমওয়েল সব ধরনের মঠের ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন । 


রাজরি ক্ষমতা বৃদ্ধি : ক্রমওয়েল তার সংস্কার দ্বারা রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন । ফলে রাজতন্ত্রের সম্মান বৃদ্ধি পায় । রাজা অষ্টম হেনরি ক্ষমতা ও অর্থ উভয়েরই তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল । ক্রমওয়েলের নীতি দ্বারা রাজার উভয় আকাঙ্ক্ষাই চরিতার্থ হয় ।  

পার্লামেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি  : ক্রমওয়েল রাজতন্ত্রের সম্মান ও রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টকেও শক্তিশালী করে তােলেন । তিনি রাজাকে দিয়েই ঘােষণা করান যে , রাজার সার্বভৌম ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতেই নিহিত । ক্রমওয়েল পার্লামেন্টের সদস্যদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা , গ্রেপ্তারের হাত থেকে মুক্ত থাকা , সদস্য নির্বাচনে বিতর্কের সৃষ্টি হলে তাতে হস্তক্ষেপ করা প্রভৃতির অধিকার দেন । 
নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র : পরবর্তীকালের ইংল্যান্ডে সীমাবদ্ধ রাজতন্ত্র এবং পার্লামেন্টের সুদৃঢ় ক্ষমতার কাঠামােটি গড়ে তােলার কৃতিত্ব ক্রমওয়েলেরই । রাজা ও পার্লামেন্ট যে যুগ্মভাবে শাসনক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারে , তিনিই প্রথম সেই ধারণার জন্ম দিয়েছিলেন । এই পথ ধরেই অবশেষে ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দে গৌরবময় বিপ্লবের মাধ্যমে রাজতন্ত্র সেখানে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রে পরিণত হয় । 

উপসংহার : ইংল্যান্ডের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার বিকাশে টমাস ক্রমওয়েলের অবদান । তিনি একদিকে পােপ ও খ্রিস্টান ধর্মের প্রধান্য হ্রাস করেন , অন্যদিকে ইংল্যান্ডের রাজা ও পার্লামেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সেইদেশে নিয়মতান্ত্রিক রাজতান্ত্রিক কাঠামাে গড়ে তােলেন ।





শুক্রবার, ৮ জুলাই, ২০২২

সংক্ষেপে লেখাে নতুন রাজতন্ত্র ও টমাস ক্রমওয়েলের অবদান ।

একাদশ শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নোত্তর xi class 11 history Question answer সংক্ষেপে লেখাে নতুন রাজতন্ত্র ও টমাস ক্রমওয়েলের অবদান songkhepe lekho notun rajtontro o tomas chromoyeler abodan


উত্তর :  ইংল্যান্ড রাজ সপ্তম হেনরি প্রতিষ্ঠিত টিউডর রাজতন্ত্রকে ঐতিহাসিক জন রিচার্ড গ্রিন সর্বপ্রথম ‘নব্য রাজতন্ত্র’ আখ্যা দেন । ঐতিহাসিক ডি . এল . কেয়ার লিখেছেন যে , “সপ্তম হেনরির রাজত্বকালে রাজতন্ত্রের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয় ।” এই রাজতান্ত্রিক ধারা পরবর্তী রাজা অষ্টম হেনরির সময়কাল পর্যন্ত বজায় থাকে । অষ্টম হেনরির শাসনকালে রাজার প্রধান উপদেষ্টা এবং সচিব টমাস ক্রমওয়েলের নেতৃত্বে ইংল্যান্ড এক আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে । 

জাতীয় সার্বভৌমত্ব ধারণার প্রতিষ্ঠা : রিফরমেশন পার্লামেন্টে টমাস ক্রমওয়েল দুটি আইন পাস করিয়ে ইংল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করেন । অ্যাক্ট অব অ্যাপিলস নামে প্রথম আইনটি পাসের ( ১৫৩৩ খ্রি.) মাধ্যমে ইংল্যান্ডের রাজাকে সার্বভৌম বলে ঘােষণা করা হয় । বলা হয় ,রাজা হলেন সমস্ত ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ সামাজিক গােষ্ঠীর রাজনৈতিক প্রভু । ‘অ্যাক্ট অব সুপ্রিমেসি’ নামে দ্বিতীয় আইনটি পাস (১৫৩৪ খ্রি.) করিয়ে রাজার প্রতি আনুগত্য প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয় । 


চার্চের ওপর রাজার অধিকার তত্ত্ব : টমাস ক্রমওয়েল বলেন রাজা হলেন চার্চের (ইতিহাস ও বাইবেল অনুসারে ) প্রশাসনিক প্রধান । এই ঘােষণার পর চার্চের প্রধান হিসেবে অষ্টম হেনরি চার্চের ওপর যাবতীয় প্রশাসনিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন । চার্চের ওপর কর স্থাপন , যাজকদের নিয়ােগ , বিচার ব্যবস্থা প্রভৃতি তিনি নিজের হাতে তুলে নেন । 


 সংসদীয় আইনের প্রাধান্য : টমাস ক্রমওয়েল সর্বপ্রথম সংসদীয় আইনের গুরুত্ব অনুভব করেন । সংসদ অনুমােদিত আইনগুলিকে তিনি জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রয়ােগ করতে শুরু করেন । ফলে সংসদীয় আইনের প্রাধান্যপ্রতিষ্ঠিত হয় । 
 
জাতীয় রাষ্ট্রগঠন : ক্রমওয়েল জাতীয় প্রশাসন গঠনের মাধ্যমে জাতীয় রাষ্ট্রের প্রেক্ষাপট রচনা করেন । জাতীয় সার্বভৌমত্বের ধারণা , চার্চের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা, সংসদীয় আইনের প্রবর্তন, আর্থিক ও প্রশাসনিক বিভাগের পুনর্গঠন — এই সমস্ত কিছুর সম্মিলিত প্রভাবে ইংল্যান্ড অচিরেই এক জাতীয় রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে । 



সরকারি প্রশাসনের পুনর্গঠন : রিফরমেশনের আগে পর্যন্ত রাজা এবং তার প্রাসাদের কর্মচারীরা ছিলেন প্রশাসনিক প্রধান । কিন্তু ক্রমওয়েল এই ব্যবস্থা বদলে দিয়ে প্রশাসনিক কেন্দ্রে মন্ত্রীসভাকে স্থান দেন । উনিশজন মন্ত্রী নিয়ে তিনি গঠন করেন প্রিভি কাউন্সিল । ক্রমওয়েল রাজার একটি সচিবালয় গড়ে তােলেন এবং একটি প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পদ সৃষ্টি করে নিজে সেই পদে বসেন । 

স্থানীয় শাসনের পুনর্গঠন : জনগণের আন্দোলন মােকাবিলার জন্য ক্রমওয়েলের উদ্যোগে উত্তর ইংল্যান্ডের কাউন্সিলকে নতুনভাবে গঠন করা হয় । এই নবগঠিত কাউন্সিলকে প্রশাসনিক ও বিচারক্ষমতা দান করা হয় । এই কাউন্সিলের সক্রিয় ভূমিকায় উত্তর ইংল্যান্ডে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরে আসে । একইভাবে স্কটল্যান্ডের ওয়েলস প্রদেশে এবং পশ্চিম ইংল্যান্ডে ক্রমওয়েল আর একটি কাউন্সিল গঠন করেন । 

আর্থিক বিভাগের পুনর্গঠন : টমাস ক্রমওয়েল আর্থিক ব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করেন । তিনি অর্থবিভাগের নতুন পদ সৃষ্টিকরেন ( ১৫৩৪ খ্রি.)। পাশাপাশি চার্চের কর নির্ধারণ ও কর আদায়ের জন্য নতুন কোষাধ্যক্ষ পদ সৃষ্টি করেন । রাজস্ব বিষয়ক বিভিন্ন মামলার নিম্পত্তির জন্য গঠিত হয় রাজস্ব আদালত । 


উপসংহার : গােলাপের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সপ্তম হেনরি যে নব্য রাজতন্ত্রের সূচনা করেন তার ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যান অষ্টম হেনরির প্রধান উপদেষ্টা ও সচিব টমাস ফ্রমওয়েল । রাজার ক্ষমতা বজায় রেখেও সংসদীয় শাসনক্ষমতাকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন ধরনের শাসনব্যবস্থা প্রণয়ন, বিভিন্ন বিভাগের পুনর্গঠন এবং চার্চের ওপর রাজার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তিনি ইংল্যান্ডকে আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করেন ।





বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই, ২০২২

জিয়াউদ্দিন বারনি বর্ণিত সুলতানি যুগের নরপতিত্বের আদর্শ কী ছিল ? দিল্লি সুলতানি শাসন কি ধর্মাশ্রয়ী ছিল ?

একাদশ শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নোত্তর xi class 11 history Question answer জিয়াউদ্দিন বারনি বর্ণিত সুলতানি যুগের নরপতিত্বের আদর্শ কী ছিল দিল্লি সুলতানি শাসন কি ধর্মাশ্রয়ী ছিল jiyauddin baroni bornito sultani juger noropotitter adorsho ki chilo delhi sultani shashon ki dhormashroyi chilo

উত্তর : নরপতিত্বের আদর্শ সম্পর্কে যেসব বিষয় তিনি তুলে ধরেছেন , সেগুলি হলো – 
 

(১) ইসলামীয় কর্তব্য পালন : বারনি সুলতানকে তার শাসনকাজে ইসলামকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন । তিনি রাষ্ট্রশক্তির প্রয়ােগ ঘটিয়ে ইসলামের আদর্শ ও ভাবধারা ফিরিয়ে আনার পক্ষপাতী ছিলেন । ইসলামের আদর্শ সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য সুলতানের হাতে রাষ্ট্রের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব থাকা উচিত বলে তিনি উল্লেখ করেছেন । 


(২) বংশকৌলিন্য : বারনি তাঁর ‘ফতােয়া  -ই-জাহান্দারি’ গ্রন্থে সর্বোচ্চ ক্ষমতার ব্যবহারকারী হিসেবে সম্রাটের বংশকৌলীন্যের ওপর গুরুত্ব আরােপ করেছেন । তাঁর মতে , সম্রাট বা সুলতান যদি উচ্চ ও পরাক্রমশালী রাজবংশের হন , তবে সাধারণ প্রজাদের মনে তার সম্পর্কে উচ্চ ধারণা তৈরি হবে এবং স্বাভাবিকভাবেই তিনি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা ও আনুগত্য লাভ করবেন । 

(৩) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা : বারনি বলেছেন , শাসকের প্রধান কর্তব্য হল ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা । এর মাধ্যমে শাসক বা সুলতান ঈশ্বরের রাজ্যে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি প্রজাদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করবেন । ন্যায়বিচার বলতে বারনি সত্য , ন্যায় ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাকে বুঝিয়েছেন ।  


(৪) শরিয়তের বিধান অনুসরণ : বারনির মতে , একজন শাসক শরিয়ৎ মেনে সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন । এ প্রসঙ্গে তিনি সুলতানি রাজতন্ত্রকে পারস্যের সাসানীয় রাজতন্ত্রকে অনুকরণ করার কথা বলেছেন । অবশ্য শরিয়তের বিধান ও ভারতবর্ষের বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে পার্থক্য থাকায় বারনি ‘জাওয়াবিত’ নামে রাষ্ট্রীয় আইন প্রণয়নের কথা বলেছেন । 

(৫) মন্ত্রণা সভার সিদ্ধান্ত গ্রহণ : বারনি বলেছেন যে , রাজাকে অভিজ্ঞ ও বিচক্ষণ পারিষদদের নিয়ে একটি মন্ত্রণা সভা গঠন করতে হবে । রাজা কোনাে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে সেই সভার পরামর্শদাতাদের সঙ্গে আলােচনা করবেন । রাজা যেমন কোনাে বিষয় তাদের কাছে গােপন করবেন না, তেমন তাদের মতামতও বাইরে প্রকাশ করবেন না ।

[         ] দিল্লির সুলতানি রাষ্ট্রের প্রকৃতি কীরুপ ছিল তা নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে । ড .এ .এল . শ্রীবাস্তব, ড . ঈশ্বরী প্রসাদ, ড .রামশরণ শর্মা প্রমুখ মনে করেন যে , দিল্লির সুলতানি রাষ্ট্র ছিল ‘ধর্মাশ্রয়ী’ । অন্যদিকে , সুলতানি যুগের ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দিন বারনি দিল্লির সুলতানি রাষ্ট্রকে ‘জাহান্দারি’ বা ‘ধর্মনিরপেক্ষ ’বলে অভিহিত করেছেন । ড . সতীশ চন্দ্র, ড. মহম্মদ হাবিব প্রমুখ আধুনিক ঐতিহাসিক এই অভিমত সমর্থন করেন ।  


[       ] ‘ধর্মাশ্রয়ী’ বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তি : 

i) খলিফার প্রতি আনুগত্য : আলাউদ্দিন খলজি ছাড়া দিল্লির সব সুলতানই ইসলামি জগতের শাসক ও ধর্মগুরু খলিফার স্বীকৃতি গ্রহণ করেন এবং তার প্রতি আনুগত্য জানিয়ে শাসনকার্য পরিচালনা করতেন । 

ii) উলেমা ও শরিয়তের গুরত্ব : সুলতানি শাসনে উলেমাদের উল্লেখযােগ্য ভূমিকা ছিল । ইসলামি আইন ‘শরিয়ত’ এর ব্যাখ্যাকর্তা এই উলেমারা আশা করতেন যে , সুলতান অমুসলিমদের বিনাশসাধনে উদ্যোগ নেবেন এবং শরিয়তের বিধান মেনে ভারতবর্ষকে দার - উল - ইসলাম অর্থাৎ ইসলামের পবিত্র ভূমিতে পরিণত করবেন । 
iii) হিন্দুদের উপেক্ষা : সুলতানি রাষ্ট্রে অমুসলিম হিন্দুরা উপেক্ষিত ও দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছিল । তারা ‘জিম্মি’ হিসেবে গণ্য হত এবং তাদের কাছ থেকে ‘জিজিয়া’ কর আদায় করা হত ।


[        ] ‘ ধর্মনিরপেক্ষ ’ বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তি :  

i)  পৃথক রাজতন্ত্র : শরিয়তের বিধান অনুসারে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হলেন স্বয়ং ঈশ্বর । তার প্রতিনিধি হলেন প্রথমে হজরত মহম্মদ এবং পরে খলিফা । কিন্তু ভারতের সুলতানি রাষ্ট্রে এই নিয়ম থেকে স্বতন্ত্র রাজতন্ত্র গড়ে উঠেছিল । 

ii) খলিফার প্রতি আপাত আনুগত্য : কোনাে কোনাে সুলতান রাজনৈতিক প্রয়ােজনে খলিফার অনুমতি নিয়েছেন ঠিকই , কিন্তু সেটা ছিল একান্তই সুলতানের ইচ্ছাধীন বিষয় । 

iii) সুলতানের স্বাধীনতা : ইসলামি আইন অনুসারে খলিফা সমগ্র মুসলিম ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রধান হলেও ভারতে এই রীতি গুরুত্ব পায়নি । এখানে সুলতানগণ খলিফার নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে শাসন চালাতে পারতেন । 


iv) হিন্দুদের গুরত্ব : সুলতানি আমলে হিন্দুদের গুরুত্ব একেবারে লুপ্ত হয়ে যায়নি । তখন বহু হিন্দু উচ্চ রাজকার্যে নিযুক্ত হতেন এবং দেশের নানা স্থানে বহু হিন্দু সামন্ত রাজ্যের অস্তিত্বও ছিল ।


v) উলেমাদের সুলতান নির্ভরতা : সুলতানি আমলে উলেমারা সুলতানদের প্রভাবিত করতে পারতেন না , বরং বাস্তবে উলেমারা সুলতানের ওপর নির্ভরশীল হয়ে কাজ করতেন । 


vi) শরিয়ত বহির্ভূত নির্দেশ : সুলতানি আমলে শরিয়তের নির্দেশ লঙ্ঘন করে বহু কাজ সম্পন্ন হওয়ার উদাহরণও দেখা যায় । 


vii) ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র : উপরােক্ত বিভিন্ন যুক্তির নিরিখে অধিকাংশ পণ্ডিত সুলতানি রাষ্ট্রকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলেই অভিহিত করেন । 


উপসংহার : তাই রাষ্ট্ররূপে দিল্লি সুলতানির প্রকৃতি নির্বাচন করা কিছুটা কঠিন , কারণ ধর্মাশ্রয়ী এবং ধর্মনিরপেক্ষ এই দুই ধরনের রাজতান্ত্রিক প্রবৃত্তিই দেখা গেছে এর মধ্যে । রাজনৈতিক মাপগণ্ডির বিচারেও কেউ কেউ দিল্লি সুলতানিকে কেন্দ্রীভূত এবং কেউ বা আবার বিকেন্দ্রীভূত রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য করেছেন ।






বুধবার, ৬ জুলাই, ২০২২

রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও শাসনযন্ত্র MCQ প্রশ্ন উত্তর [ চতুর্থ অধ্যায় ]

 

একাদশ শ্রেণী ইতিহাস রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও শাসনযন্ত্র MCQ প্রশ্ন উত্তর চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্নোত্তর class xi 11 eleven history rasterer prokriti o shasonjontro mcq questions answer


১। ‘অর্থশাস্ত্রের’ লেখক হলেন ? 


ক) মেগাস্থিনিস


খ) কৌটিল্য 


গ) কালিদাস 


ঘ) সন্ধাকর নন্দী 



উত্তর : খ) কৌটিল্য


২। দক্ষিণ ভারতের এক অজানা জায়গা থেকে যিনি ‘অর্থশাস্ত্র’ আবিষ্কার করেছিলেন তিনি হলেন ?


ক) ড. শ্যাম শাস্ত্রী 


খ) নীলকণ্ঠ শাস্ত্রী


গ) হরপ্রসাদ শাস্ত্রী


ঘ) এগুলির কোনোটিই নয় 



উত্তর : ক) ড. শ্যাম শাস্ত্রী 


৩। কৌটিল্যর ‘অর্থশাস্ত্র’ গ্রন্থটি ? 


ক) ৫টি ভাগে বিভক্ত


খ) ১০টি ভাগে বিভক্ত


গ) ১৫টি ভাগে বিভক্ত


ঘ) ২০টি ভাগে বিভক্ত



উত্তর : গ) ১৫টি ভাগে বিভক্ত


৪। কৌটিল্যর আসল নাম কি ?


ক) বিষ্ণুশর্মা 


খ) চাণক্য 


গ) বিষ্ণুগুপ্ত 


ঘ) বিষ্ণুপদ



উত্তর : গ) বিষ্ণুগুপ্ত 


৫। কৌটিল্য অর্থশাস্ত্রে যে আইনবিধি রচনা করেছেন তাঁর ভাগ হল ? 


ক) ২টি


খ) ৩টি


গ) ৪টি


ঘ) ৫টি



উত্তর : গ) ৪টি 




৬। কৌটিল্য স্বামী বলতে বুঝিয়েছেন ? 


ক) রাষ্ট্রের প্রধানকে 


খ) পরিবারের প্রধানকে


গ) সমাজের প্রধানকে 


ঘ) গ্রামের প্রধানকে



উত্তর : ক) রাষ্ট্রের প্রধানকে 


৭। ‘ভারত ইতিহাসের ম্যাকিয়াভেলি’ বলা হয় ? 


ক) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে 


খ) বারণিকে 


গ) অশোককে 


ঘ) কৌটিল্যকে



উত্তর : ঘ) কৌটিল্যকে 


৮। সুলতানী যুগের ঐতিহাসিক হলেন ? 


ক) সন্ধ্যাকর নন্দী 


খ) জিয়াউদ্দিন বারনি 


গ) আমির খসরু 


ঘ) আফিফ



উত্তর : গ) আমির খসরু


৯। কোন দেশের রাজতন্ত্র দিল্লীর সুলতানীর দ্বারা অনুসৃত বলে বারণি মনে করতেন ? 


ক) মিশরের 


খ) স্পেনের 


গ) আরবের 


ঘ) পারস্যর



উত্তর : ঘ) পারস্যর


১০। দিল্লীর কোন সুলতান খলিফার স্বীকৃতি লাভ করেন ? 


ক) ইলুতুৎমিস 


খ) আলাউদ্দিন খলজি 


গ) মহম্মদ বিন তুঘলক 


ঘ) ফিরোজ তুঘলক



উত্তর : ক) ইলুতুৎমিস 




১১। সিসেরো ছিলেন ? 


ক) একজন প্রখ্যাত রোমান রাজনীতিবিদ এবং আইনজ্ঞ 


খ) অ্যারিস্টটলের একজন ছাত্র 


গ) এক গ্রিক রাজনীতিবিদ এবং আইনজ্ঞ 


ঘ) একজন রোমান বিচারক



উত্তর : ক) একজন প্রখ্যাত রোমান রাজনীতিবিদ এবং আইনজ্ঞ


১২। অষ্টম হেনরির রিফরমেশন পার্লামেন্টটি চলেছিল ?


ক) তিন বছর


খ) পাঁচ বছর


গ) সাত বছর


ঘ) নয় বছর



উত্তর : গ) সাত বছর 


১৩। ‘The Prince’ গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন ? 


ক) বোদা 


খ) সিসেরো 


গ) হবস


ঘ) ম্যাকিয়াভেলি



উত্তর : ঘ) ম্যাকিয়াভেলি


১৪। আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার জনক বলা হয় ? 


ক) লককে 


খ) রুশোকে 


গ) ম্যাকিয়াভেলিকে 


ঘ) অশোককে



উত্তর : গ) ম্যাকিয়াভেলিকে 


১৫। কৌটিল্যর অর্থশাস্ত্রের সাথে তুলনীয় গ্রন্থটি হল ?


ক) কাঁদিদ


খ) সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট 


গ) ইন্ডিকা 


ঘ) দ্য প্রিন্স



উত্তর : ঘ) দ্য প্রিন্স 




১৬। রাষ্ট্রের ‘সার্বভৌমত্ব তত্ত্বের’ প্রধান প্রবক্তা হলেন ? 


ক) জা রুশো 


খ) সিসেরো 


গ) জা বোদা 


ঘ) টমাস হবস



উত্তর : গ) জা বোদা 


১৭। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রতত্ত্বের সূচনা করেন ? 


ক) ম্যাকিয়াভেলি


খ) টমাস হবস 


গ) বোদা 


ঘ) ইরাসমাস 



উত্তর : ক) ম্যাকিয়াভেলি


১৮। উদারনীতিবাদের জন্মদাতা বলা হয় ? 


ক) টমাস হবস্ কে 


খ) জন লক কে 


গ) হেগেল কে 


ঘ) টমাস হিল গ্রিনকে



উত্তর : খ) জন লক কে


১৯। সামাজিক চুক্তি মতবাদকে রাষ্ট্রের উৎস হিসেবে বর্ণনা করেছেন ? 


ক) রুশো 


খ) জন লক


গ) হবস


ঘ) মন্তেষ্কু 



উত্তর : ক) রুশো 


২০। ঝড়ের পাখি বলা হত ? 


ক) রুশোকে 


খ) ভলতেয়ারকে 


গ) মন্তেষ্কুকে 


ঘ) দালেমবেয়ারকে 



উত্তর : ক) রুশোকে 




২১। রাষ্ট্রের স্বার্থে ক্ষমতা স্বতন্ত্রকরণ নীতি প্রবর্তন করেন ? 


ক) রুশো 


খ) মন্তেষ্কু


গ) ভলতেয়ার 


ঘ) ডিকেন্স



উত্তর : খ) মন্তেষ্কু


২২। জেরেমি বেন্থাম ছিলেন ? 


ক) ব্রিটিশ রাষ্ট্রদার্শনিক  


খ) জার্মান রাষ্ট্রদার্শনিক


গ) ফরাসী রাষ্ট্রদার্শনিক


ঘ) রুশ রাষ্ট্রদার্শনিক



উত্তর : ক) ব্রিটিশ রাষ্ট্রদার্শনিক


২৩। পারসিক প্রদেশগুলির নাম ছিল ? 


ক) সাট্রাপি


খ) এক্তা


গ) মামলাত


ঘ) মনসব 



উত্তর : ক) সাট্রাপি


২৪। ম্যান্ডারিন ব্যাবস্থা প্রচলিত ছিল ?


ক) ভারতে 


খ) চিনে 


গ) ইংল্যান্ডে 


ঘ) গ্রিসে 



উত্তর : খ) চিনে


২৫। ম্যান্ডারিনরা যে দেশের উচ্চপদস্থ আমলা ছিলেন ?


ক) চিনের


খ) পারস্যর


গ) জাপানের 


ঘ) মিশরের 



উত্তর : ক) চিনের




২৬। ইংরেজি Mandarin শব্দটি এসেছে ? 


ক) পোর্তুগিজ শব্দ থেকে


খ) লাতিন শব্দ থেকে


গ) ফরাসি শব্দ থেকে


ঘ) ডাচ শব্দ থেকে



উত্তর : ক) পোর্তুগিজ শব্দ থেকে 


২৭। চীনের কোন বংশের রাজাদের রাজত্বকালে ম্যান্ডারিনদের মর্যাদা সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছায় ? 


ক) তাং 


খ) মিং 


গ) কিং 


ঘ) ঝোঁ



উত্তর : গ) কিং


২৮। দিল্লীর কোন সুলতান সর্বপ্রথম বাগদাদের খলিফার স্বীকৃতি পান ? 


ক) কুতুবউদ্দিন আইবক


খ) ইলুতুৎমিস 


গ) বলবন 


ঘ) আলাউদ্দিন 



উত্তর : খ) ইলুতুৎমিস 


২৯। ‘ইক্তা’ প্রথার প্রবর্তক হলেন ? 


ক) ইলুতুৎমিস


খ) রাজিয়া 


গ) বলবন 


ঘ) আলাউদ্দিন খলজি



উত্তর : ক) ইলুতুৎমিস


৩০। মোগল যুগের মনসবদারি প্রথা প্রবর্তন করেন ?


ক) হুমায়ূন 


খ) আকবর 


গ) শাহজাহান


ঘ) ঔরঙজেব



উত্তর : খ) আকবর




৩১। মনসবদারি ব্যবস্থার স্তর ছিল ? 


ক) ৩৩টি


খ) ৩০টি


গ) ৩৪টি


ঘ) ৩২টি



উত্তর : ক) ৩৩টি


৩২। সওয়ার বলতে বোঝায় ? 


ক) মনসবদারের বেতন  


খ) মনসবদারের পদমর্যাদা 


গ) মনসবদারের অধীনের সেনাসংখ্যা 


ঘ) মনসবদারের অধীনস্থ কর্মচারী 



উত্তর : গ) মনসবদারের অধীনের সেনাসংখ্যা


ইতিহাস চেতনা MCQ প্রশ্ন ও উত্তর (প্রথম অধ্যায় )

 

একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস চেতনা MCQ প্রশ্ন ও উত্তর প্রথম অধ্যায় প্রশ্নোত্তর class xi 11 eleven history itihas chetona mcq questions answer

১। ইতিহাসের জনক বলা হয় ? 


ক) সক্রেটিস 


খ) হেরোডোটাস


গ) প্লেটো 


ঘ) জাস্টিন 



উত্তর : খ) হেরোডোটাস


২। ইংরেজিতে ‘প্রি হিস্ট্রি’ কথাটি প্রথম ব্যাবহার করেন ? 


ক) পল তুর্নাল 


খ) ড্যানিয়েল উইলসন 


গ) রাঙকে


ঘ) লর্ড অ্যাকটন 



উত্তর : ক) পল তুর্নাল


৩। ‘প্রাক ইতিহাস’ শব্দটির অর্থ কি ? 


ক) ‘প্রায় ইতিহাস’ ও ‘ইতিহাস’ এর মধ্যবর্তী সময়কাল 


খ) যে সময় মানুষ লিখন পদ্ধতি জানত না 


গ) যে সময় লিখিত বিবরণী ইতিহাস রচনার প্রধান উৎস ছিল না 


ঘ) যে সময় মানুষ লিখন পদ্ধতি জানত



উত্তর : খ) যে সময় মানুষ লিখন পদ্ধতি জানত না 


৪। প্রাক ইতিহাস হল ?


ক) প্রস্তর যুগ


খ) তাম্র যুগ 


গ) লৌহ যুগ 


ঘ) বরফ লুবক 



উত্তর : ক) প্রস্তর যুগ


৫। প্রাগৈতিাসিক যুগের ইতিহাসের প্রধান উপাদান হল ? 


ক) লিপি 


খ) মুদ্রা 


গ) ধর্মগ্রন্থ 


ঘ) জীবাশ্ম 



উত্তর : ঘ) জীবাশ্ম 




৬। ভারতের ঐতিহাসিক যুগের সূচনা হয় কোন সময় থেকে ? 


ক) খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতক 


খ) খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক 


গ) খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক 


ঘ) খ্রিষ্টপূর্ব অষ্টম শতক 



উত্তর : গ) খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক


৭। ‘Historia’ যে শব্দ থেকে উদ্ভুত হয়েছে তাহলো ? 


ক) গ্রিক 


খ) ইংরেজি


গ) লাতিন 


ঘ) ফরাসি



উত্তর : ক) গ্রিক 


৮। ঐতিহাসিক তথ্য বলতে বোঝায় ? 


ক) ঐতিহাসিক কাহিনি  


খ) অতীত ঘটনা 


গ) অতীতের নথিভুক্ত তথ্য 


ঘ) অতীতের গল্পকথা 



উত্তর : গ) অতীতের নথিভুক্ত তথ্য 


৯। সবচেয়ে পুরানো জীবাশ্মটি আবিষ্কৃত হয়েছে ? 


ক) অস্ট্রেলিয়ায় 


খ) উত্তর আমেরিকায়


গ) দক্ষিণ আমেরিকায় 


ঘ) আফ্রিকায় 



উত্তর : ঘ) আফ্রিকায় 



১০। কার্বন ১৪ পদ্ধতির দ্বারা কাল নির্ণয় করা হয় ? 


ক) লোহার 


খ) জৈব প্রত্নের


গ) মুদ্রার 


ঘ) পাথরের 



উত্তর : ঘ) পাথরের




১১। প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানকে ভাগ করা যায় ? 


ক) দুটি ভাগে 


খ) তিনটি ভাগে


গ) চারটি ভাগে


ঘ) কোনোটিই নয়



উত্তর : গ) চারটি ভাগে


১২। ইতিহাস রচনার মূল ভিত্তি হল ? 


ক) অর্থনৈতিক 


খ) সামাজিক 


গ) অলিখিত 


ঘ) লিখিত 



উত্তর : ঘ) লিখিত 


১৩। সবচেয়ে প্রাচীন শিলালিপিটি পাওয়া গেছে ? 


ক) রাশিয়ার কাজাস্তানে 


খ) এশিয়ার হিন্দুস্তানে


গ) ইরানের বেহিস্তানে


ঘ) পাকিস্তানে 



উত্তর : গ) ইরানের বেহিস্তানে


১৪। অশোকের শিলালিপি পাঠোদ্ধার করেন ? 


ক) জেমস প্রিন্সপ


খ) এ. এল. ব্যাসাম 


গ) দয়ারাম সাহানি


ঘ) হোমার



উত্তর : ক) জেমস প্রিন্সপ


১৫। ভারতবর্ষে যে লিপির প্রথম পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে তাহলো ? 



ক) আরামাইক লিপি 


খ) দেবনাগরী


গ) তামিল লিপি 


ঘ) ব্রাহ্মী লিপি 



উত্তর : ঘ) ব্রাহ্মী লিপি 





১৬। ‘সোহগোর তাম্রলিপি’ আবিষ্কৃত হয়েছে ? 


ক) চিনে 


খ) মিশরে 


গ) সুমেরে 


ঘ) ভারতে 



উত্তর : ঘ) ভারতে


১৭। হায়ারোগ্লিফিক প্রাচীন কোন দেশের লিপি ছিল ? 


ক) মিশরের 


খ) সুমেরের 


গ) গ্রিসের 


ঘ) মেসোপটেমিয়ার 



উত্তর : ক) মিশরের



১৮। পৃথিবীর বৃহত্তম মহাকাব্য হল ? 


ক) ইলিয়াড 


খ) ওডিসি


গ) মহাভারত  


ঘ) রামায়ণ  



উত্তর : গ) মহাভারত


১৯। পৃথিবীর প্রাচীনতম মহাকাব্য হল ? 


ক) ইলিয়াড 


খ) গিলগামেশ


গ) রামায়ণ 


ঘ) মহাভারত 



উত্তর : খ) গিলগামেশ


২০। রাজতরঙ্গিনি গ্রন্থটি থেকে কোন অঞ্চলের ইতিহাস জানা যায় ? 


ক) গুজরাট 


খ) বাংলা 


গ) মহারাষ্ট্র


ঘ) কাশ্মীর 



উত্তর : ঘ) কাশ্মীর




২১। ‘ইন্ডিকা’র রচয়িতা ছিলেন ? 


ক) মেগাস্থিনিস


খ) কৌটিল্য 


গ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য 


ঘ) সেলুকাস 



উত্তর : ক) মেগাস্থিনিস


২২। ‘রাসমালা’ গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন ? 


ক) অরিসিংহ


খ) সোমেশ্বর 


গ) মেরুতুঙ্গ 


ঘ) শ্রীধর ভট্ট



উত্তর : খ) সোমেশ্বর


২৩। ইনিড কাব্য গ্রন্থের রচয়িতা হলেন ? 


ক) হোমার


খ) ভার্জিল 


গ) টাসিটাস 


ঘ) লিভি 



উত্তর : খ) ভার্জিল


২৪। ‘গিলগামেশ’ মহাকাব্যটি লিখিত ? 


ক) মিশরীয় ভাষায় 


খ) সুমেরীয় ভাষায়


গ) ভারতীয় ভাষ্য


ঘ) চৈনিক ভাষায় 



উত্তর : খ) সুমেরীয় ভাষায় 


২৫। ‘Wealth of Nation’ গ্রন্থের লেখক ? 


ক) অ্যাডাম স্মিথ 


খ) মন্তেস্কু 


গ) জন লক 


ঘ) কোয়েসনে 



উত্তর : ক) অ্যাডাম স্মিথ




২৬। নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত ঐতিহাসিক হলেন ? 


ক) রমেশচন্দ্র মজুমদার


খ) রণজিৎ গুহ 


গ) লাদুরি 


ঘ) জন স্টুয়ার্ট মিল 



উত্তর : খ) রণজিৎ গুহ


২৭। জনশ্রুতি অনুযায়ী ভারতীয় পুরাণগুলি রচনা করেন ? 


ক) ঋষিরা 


খ) দেবতারা 


গ) রাজারা 


ঘ) লেখকরা 



উত্তর : ক) ঋষিরা


২৮। ভারতে কটি পুরান আছে ? 


ক) ১৫ টি 


খ) ১৬ টি 


গ) ১৮ টি 


ঘ) ২২ টি 



উত্তর : গ) ১৮ টি 


২৯। ভারতে যুগ বিভাজনের চতুর্থ পর্যায়টি হল ? 


ক) দ্বাপর 


খ) কলি 


গ) সত্য 


ঘ) ত্রেতা 



উত্তর : খ) কলি


৩০। কালচক্র ধারণার প্রবক্তা ছিল ? 


ক) ভারতীয়রা 


খ) চিনারা


গ) সুমেরিয়রা 


ঘ) আমেরিকানরা 



উত্তর : ক) ভারতীয়রা




৩১। ইউরোপে মধ্যযুগের সূচনা হয় ? 


ক) ৪২৬ খ্রি:


খ) ৪৪৬ খ্রি:


গ) ৪৭৬ খ্রি:


ঘ) ৪৮৬ খ্রি:



উত্তর : গ) ৪৭৬ খ্রি:


৩২। ‘অন্ধকার যুগ’ কথাটি প্রথম ব্যাবহার করেছেন ? 


ক) সেন্ট লুই 


খ) সেন্ট পল 


গ) কাল মার্কস 


ঘ) পেত্রাক



উত্তর : ঘ) পেত্রাক


৩৩। যুগ বিভাজনের ধারণাটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ? 


ক) একই রকম 


খ) দেশভিত্তিক 


গ) প্রায় একইরকম 


ঘ) পৃথক 



উত্তর : ঘ) পৃথক






আদিম মানব থেকে প্রাচীণ সভ্যতা সমূহ MCQ প্রশ্ন উত্তর [ দ্বিতীয় অধ্যায় ]

 

একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস আদিম মানব থেকে প্রাচীণ সভ্যতা সমূহ   MCQ প্রশ্ন উত্তর দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্নোত্তর class xi 11 eleven history adim manob theke prachin sovotta somuho mcq questions answer

১। আজ থেকে পৃথিবী সৃষ্টি হয় অন্তত ? 


ক) ২৫০ কোটি বছর পূর্বে 


খ) ৩০০ কোটি বছর পূর্বে 


গ) ৫০০ কোটি বছর পূর্বে 


ঘ) ৬৫০ কোটি বছর পূর্বে 



উত্তর : গ) ৫০০ কোটি বছর পূর্বে


২। সৃষ্টির পর পৃথিবীতে প্রথম কোন যুগের সূচনা হয় ? 


ক) আর্কিওজোয়িক


খ) সেনোজোয়িক


গ) প্যালিওজোয়িক


ঘ) মেসোজোয়িক



উত্তর : ক) আর্কিওজোয়িক


৩। প্লেইস্টোসিন যুগের অবক্ষেপণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে যার মাত্রা নির্ধারিত হয় , তাহলো ? 


ক) তাপমাত্রা 


খ) সময়কাল 


গ) জলবায়ু 


ঘ) ভূকম্প 



উত্তর : গ) জলবায়ু


৪। প্লেইস্টোসিন যুগের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল ? 


ক) লোহার আবিষ্কার 


খ) আধুনিক মানুষের আবির্ভাব 


গ) চাষবাসের প্রচলন 


ঘ) বাণিজ্যের প্রসার 



উত্তর : খ) আধুনিক মানুষের আবির্ভাব


৫। সর্বপ্রথম স্থলভাগে প্রাণের স্পন্দন দেখা যায় ? 


ক) আর্কিওজোয়িক যুগে 


খ) প্রোটেরোজোয়িক যুগে 


গ) প্যালিওজোয়িক যুগে 


ঘ) মেসোজোয়িক যুগে 



উত্তর : গ) প্যালিওজোয়িক যুগে




৬। মানুষের সমাজ গড়ে উঠেছিল ? 


ক) হোলোসিন যুগে


খ) কোয়াটারনারি যুগে


গ) টারসিয়ারি যুগে


ঘ) প্লেইস্টোনিস যুগে



উত্তর : ঘ) প্লেইস্টোনিস যুগে


৭। বর্তমান মানবকুল যে প্রজাতির নিম্নলিখিত কোন পর্বে তার সৃষ্টি হয় ? 


ক) প্লেইস্টোনিস


খ) আর্কিয়ান


গ) সেনোজোয়িক


ঘ) মেসোজোয়িক



উত্তর : ক) প্লেইস্টোনিস


৮। প্লেইস্টোসিন যুগে ভারতবর্ষে বিরাজ করছিল ? 


ক) উষ্ণ যুগ 


খ) তুষার যুগ


গ) বর্ষণের যুগ


ঘ) কোনোটিই নয়



উত্তর : গ) বর্ষণের যুগ


৯। নব্য প্রস্তর যুগের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল ? 


ক) আগুনের আবিষ্কার 


খ) লোহার ব্যাবহার


গ) তামার ব্যাবহার


ঘ) কৃষিপদ্ধতির ব্যাবহার



উত্তর : খ) লোহার ব্যাবহার


১০। নব্য প্রস্তর যুগের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল 


ক) পশুপালন 


খ) পশু শিকার 


গ) খাদ্য উৎপাদন


ঘ) খাদ্য সংরক্ষন 



উত্তর : গ) খাদ্য উৎপাদন




১১। ‘নব্য প্রস্তর যুগের বিপ্লব’ তত্ত্বটি প্রচার করেন ? 


ক) স্মিথ 


খ) টয়েনবি 


গ) অলচিকি 


ঘ) গর্ডন চাইল্ড 



উত্তর : ঘ) গর্ডন চাইল্ড


১২। কোথায় প্রথম খনিজ তামার ব্যাবহার শুরু হয় ? 


ক) ভারতে 


খ) সুমেরে 


গ) চিনে 


ঘ) মিশরে 



উত্তর : খ) সুমেরে


১৩। বর্তমান যুগ কোন যুগের অন্তর্গত ? 


ক) প্লেইস্টোসিন


খ) হোলোসিন


গ) প্লায়োসিন 


ঘ) মায়োসিন 



উত্তর : খ) হোলোসিন


১৪। বর্তমান কালের আধুনিক মানবকে বলা হয় ? 


ক) রোডেশীয় মানব


খ) পিকিং মানব


গ) রামাপিথেকাস মানব


ঘ) হোমো স্যাপিয়েন্স মানব



উত্তর : ঘ) হোমো স্যাপিয়েন্স মানব


১৫। পুরাতন প্রস্তর যুগে আদিম মানুষের ব্যাবহৃত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হল ? 


ক) কাটারি বা ছোড়া 


খ) ধারালো অস্ত্র 


গ) পাথরের টুকরো 


ঘ) হাতকুঠার



উত্তর : গ) পাথরের টুকরো




১৬। প্রাচীন প্রস্তর যুগে মানুষের জীবিকা ছিল ? 


ক) পশু শিকার


খ) মাছ ধরা 


গ) পশু পালন 


ঘ) চাষ আবাদ 



উত্তর : ক) পশু শিকার


১৭। কোন যুগকে ‘ক্ষুদ্র প্রস্তর যুগ’ নামে অভিহিত করা হয় ? 


ক) প্রাচীন প্রস্তর যুগকে 


খ) মধ্য প্রস্তর যুগকে 


গ) নব্য প্রস্তর যুগকে 


ঘ) তাম্র প্রস্তর যুগ



উত্তর : খ) মধ্য প্রস্তর যুগকে 


১৮। কোন যুগে মানুষ প্রথম খাদ্য উৎপাদন করতে শিখেছিল ? 


ক) প্রাচীন প্রস্তর যুগে 


খ) নব্য প্রস্তর যুগে


গ) লৌহ যুগে 


ঘ) তাম্র প্রস্তর যুগে



উত্তর : খ) নব্য প্রস্তর যুগে


১৯। মানুষ কৃষিকাজের কৌশল আবিষ্কার করে ? 


ক) প্রাচীন প্রস্তর যুগে


খ) মধ্য প্রস্তর যুগকে


গ) নব্য প্রস্তর যুগে


ঘ) তাম্র প্রস্তর যুগে



উত্তর : গ) নব্য প্রস্তর যুগে




২০। পৃথিবীর প্রাচীনতম মানব নির্দশনের সন্ধান মিলেছে কোন দেশে ? 


ক) ভারত 


খ) কেনিয়া 


গ) চিন 


ঘ) মিশর 



উত্তর : খ) কেনিয়া


২১। এ পর্যন্ত সবচেয়ে পুরানো জীবাশ্মটি আবিষ্কৃত হয়েছে ? 


ক) অস্ট্রেলিয়ায় 


খ) উত্তর আমেরিকায় 


গ) দক্ষিণ আমেরিকায়


ঘ) আফ্রিকায় 



উত্তর : ঘ) আফ্রিকায়


২২। ‘হোমো ইরেক্তাস’ শব্দটির অর্থ ? 


ক) দক্ষ মানব


খ) দন্ডায়মান মানব


গ) বুদ্ধিমান মানব


ঘ) আধুনিক মানব



উত্তর : ক) দক্ষ মানব


২৩। ‘খই খই’ হল আফ্রিকার একটি ? 


ক) আদিম জনগোষ্ঠী 


খ) আদিম ভাষা 


গ) আদিম অঞ্চল 


ঘ) আদিম ধর্মবিশ্বাস 



উত্তর : গ) আদিম অঞ্চল


২৪। ক্রোমেনিয়ান অঞ্চল কোন দেশে অবস্থিত ? 


ক) ইংল্যান্ডে 


খ) জার্মানিতে 


গ) ফ্রান্সে 


ঘ) চিনে 



উত্তর : গ) ফ্রান্সে


২৫। আদিম মানুষ সর্বপ্রথম পোষ মানাতে শিখেছিল ? 


ক) গাধাকে 


খ) কুকুরকে 


গ) ঘোড়াকে 


ঘ) গোরুকে 



উত্তর : ঘ) গোরুকে 




২৬। মেহেরগড় সভ্যতা আবিষ্কৃত হয় ? 


ক) ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে 


খ) ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে


গ) ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে


ঘ) ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে



উত্তর : খ) ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে


২৭। মেহেরগড় সভ্যতার আবিষ্কারের সাথে যুক্ত ? 


ক) জা ফ্রাসোঁয়া জারিজ


খ) রমেশচন্দ্র মজুমদার 


গ) ভিনসেন্ট স্মিথ 


ঘ) যদুনাথ সরকার 



উত্তর : ক) জা ফ্রাসোঁয়া জারিজ


২৮। সিন্ধু সভ্যতা কোন যুগের সভ্যতা ? 


ক) তাম্র প্রস্তর 


খ) লৌহ 


গ) প্রাগৈতহাসিক


ঘ) আদিম 



উত্তর : ক) তাম্র প্রস্তর


২৯। সিন্ধু সভ্যতা আবিষ্কৃত হয় ? 


ক) ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে 


খ) ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে


গ) ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে


ঘ) ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে



উত্তর : গ) ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে


৩০। মহেন - জো - দারো কথাটির অর্থ ? 


ক) পাথরের স্তূপ


খ) মৃতের স্তূপ


গ) কাঠের স্তূপ


ঘ) বালির স্তূপ



উত্তর : খ) মৃতের স্তূপ




৩১। লোথাল কোন নদীর তীরে অবস্থিত ছিল ?


ক) ভোগাবর


খ) ঘঘরা


গ) শতদ্রু


ঘ) রাভি



উত্তর : ক) ভোগাবর


৩২। নীলনদের দান বলা হয় ? 


ক) মিশরীয় সভ্যতাকে 


খ) মহেন জো দারো সভ্যতাকে


গ) সুমেরীয় সভ্যতাকে


ঘ) হরপ্পা সভ্যতাকে



উত্তর : ক) মিশরীয় সভ্যতাকে


৩৩। ভ্যালি অব কিংস কাদের সমাধিস্থল ? 


ক) মিশরের রাজাদের 


খ) মিশরের রানীদের 


গ) সুমেরের রাজাদের


ঘ) সুমেরের রানীদের



উত্তর : ক) মিশরের রাজাদের 


৩৪। মিশরের প্রাচীনতম চিকিৎসক কে ছিলেন ? 


ক) ইমহোটেপ 


খ) জুলিয়াস সিজার 


গ) তৃতীয় রামেসেস


ঘ) মেনেস 



উত্তর : ঘ) মেনেস


৩৫। মিশরের সব থেকে বড়ো পিরামিড হল ? 


ক) খুফুর 


খ) নেফরার 


গ) মেনকুরার


ঘ) রামসিস - এর 



উত্তর : ক) খুফুর




৩৬। ‘রা’ হলেন মিশরীয়দের ? 


ক) সূর্য দেবতা


খ) চন্দ্র দেবতা


গ) সমুদ্র দেবতা


ঘ) আকাশের দেবতা



উত্তর : ক) সূর্য দেবতা


৩৭। সুমেরিয়ীদের জলের দেবতাকে বলা হত ? 


ক) নাম্মা 


খ) এনকি


গ) শামস 


ঘ) আন



উত্তর : খ) এনকি


৩৮। দুই নদীর মধ্যবর্তী স্থানের সভ্যতা কোনটি ? 


ক) মেসোপটেমিয়া সভ্যতা 


খ) মিশরীয় সভ্যতা


গ) সিন্ধু সভ্যতা


ঘ) মেহেরগড় সভ্যতা



উত্তর : ক) মেসোপটেমিয়া সভ্যতা


৩৯। মেসোপটেমিয় শব্দের অর্থ হল ? 


ক) দুই সাগরের মধ্যবর্তী অঞ্চল 


খ) দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী অঞ্চল


গ) দুই নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চল


ঘ) দুই মালভূমির মধ্যবর্তী অঞ্চল



উত্তর : ঘ) দুই মালভূমির মধ্যবর্তী অঞ্চল


৪০। সুমেরীয়দের লেখা চিহ্নগুলি ছিল ? 


ক) ত্রিভুজাকার 


খ) বৃত্তাকার 


গ) অর্ধবৃত্তাকার 


ঘ) কীলকাকার



উত্তর : ক) ত্রিভুজাকার






অর্থনীতির বিভিন্ন দিক MCQ প্রশ্ন উত্তর [ পঞ্চম অধ্যায় ]

 

একাদশ শ্রেণী ইতিহাস অর্থনীতির বিভিন্ন দিক MCQ প্রশ্ন উত্তর পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্নোত্তর class xi 11 eleven history orthonitir bivinno dik mcq questions answer


১। পৃথিবীতে ক্রীতদাস প্রথার সূত্রপাত ঘটেছিল ? 


ক) আধুনিক যুগে 


খ) আদিম যুগে


গ) প্রাগৈতিহাসিক যুগে


ঘ) মধ্য যুগে



উত্তর : গ) প্রাগৈতিহাসিক যুগে


২। রোমে ক্রীতদাস হত ? 


ক) দরিদ্ররা 


খ) কৃষকেরা


গ) যুদ্ধবন্দিরা


ঘ) মহাজনরা



উত্তর : গ) যুদ্ধবন্দিরা


৩। ক্রীতদাসদের শ্রমের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা অর্থনীতিকে বলে ? 


ক) পুঁজিবাদী অর্থনীতি


খ) সাম্যবাদী অর্থনীতি


গ) দাস অর্থনীতি


ঘ) ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি



উত্তর : গ) দাস অর্থনীতি


৪। ক্রীতদাসদের যে সকল সন্তান জন্মসূত্রে ক্রীতদাসে পরিণত হয় , তাদের বলা হয় ?


ক) ভার্নি 


খ) গ্ল্যাডিয়েটর


গ) প্রাট্রিসিয়ান 


ঘ) ম্যানুমিসিও



উত্তর : ক) ভার্নি


৫। দর্শকদের মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্য ক্ষুধার্ত হিংস্র পশুর সঙ্গে লড়াই করত ? 


ক) ম্যানুমিসিওরা


খ) গ্ল্যাডিয়েটররা


গ) প্লেবিয়ানরা


ঘ) ভার্নিরা



উত্তর : খ) গ্ল্যাডিয়েটররা 




৬। মুক্তিপ্রাপ্ত ক্রীতদাসকে বলা হত ? 


ক) ভার্নি


খ) গ্ল্যাডিয়েটর


গ) ম্যানুমিসিও


ঘ) লিবারটাস



উত্তর : ঘ) লিবারটাস 


৭। পৃথিবীতে সর্বপ্রথম দাস বাজার গড়ে উঠেছিল ? 


ক) এথেন্সে 


খ) স্পাটায় 


গ) ডেলোসে


ঘ) কিওসে



উত্তর : ঘ) কিওসে


৮। রোমে পালিয়ে যাওয়া ক্রীতদাসকে কি বলা হত ? 


ক) ভার্নি


খ) গ্ল্যাডিয়েটর


গ) প্রাট্রিসিয়ান


ঘ) ম্যানুমিসিও



উত্তর : ঘ) ম্যানুমিসিও


৯। Manumissio বলতে রোমান ভাষায় বোঝায় ? 


ক) ভূস্বামী মুক্তি 


খ) দাসত্ব মুক্তি


গ) পাপ মুক্তি


ঘ) সামন্ত মুক্তি



উত্তর : খ) দাসত্ব মুক্তি 


১০। প্রথম দাস বিদ্রোহ হয় ? 


ক) ফ্লোরেন্সে 


খ) সিসিলীতে


গ) ইটালিতে


ঘ) মিশরে 



উত্তর : খ) সিসিলীতে 




১১। নিম্নলিখিত কোন বৈশিষ্ট্যটি মিশরের ও রোমের দাস প্রথাকে আলাদা করেছিল ? 


ক) মিশরের অর্থনীতি দাস নির্ভর ছিল না 


খ) মিশরের দাসদের খনি শ্রমিক হিসেবে নিযুক্ত করা হত 


গ) রোমের দাসদের বাজারে বিক্রি করা হত 


ঘ) সন্তানদের দাস হিসেবে বিক্রি করার অধিকার ছিল পিতার 



উত্তর : গ) রোমের দাসদের বাজারে বিক্রি করা হত


১২। সামন্ততন্ত্রের উদ্ভবের মূল ক্ষেত্রটি কোথায় ছিল ? 


ক) ভারত 


খ) আমেরিকা 


গ) মিশর 


ঘ) পশ্চিম ইউরোপ 



উত্তর : ঘ) পশ্চিম ইউরোপ


১৩। সামন্ততান্ত্রিক ইউরোপে কৃষকদের দেয় টাইদ করটি ছিল ? 


ক) ভুমিকর


খ) ধর্মকর


গ) বেগারশ্রম


ঘ) পরোক্ষ কর



উত্তর : খ) ধর্মকর


১৪। সামন্ত ব্যাবস্থায় কৃষকদের যে বাধ্যতামূলক শ্রমদান করতে হত তাকে বলা হত ? 


ক) করভি


খ) টাইথ


গ) ভিলিল 


ঘ) গ্রাব্রিয়েল



উত্তর : ক) করভি


১৫। নাইট বলতে বোঝায় ? 


ক) কৃষক শ্রেণী


খ) ব্রাহ্মণ শ্রেণী


গ) সামন্ত শ্রেণী 


ঘ) যোদ্ধা শ্রেণী



উত্তর : ঘ) যোদ্ধা শ্রেণী




১৬। কমিটেটাস প্রথার চালু ছিল ? 


ক) ইংল্যান্ডে 


খ) ফ্রান্সে 


গ) জার্মানিতে 


ঘ) রাশিয়াতে 



উত্তর : গ) জার্মানিতে


১৭। সামন্ততান্ত্রিক পিরামিড কাঠামোর সর্বোচ্চ স্তরে ছিল ? 


ক) নাইটরা


খ) যাজকরা


গ) অভিজাতরা


ঘ) রাজা 



উত্তর : ঘ) রাজা


১৮। ইউরোপের সামন্ত্রতান্ত্রিক সমাজে ক্ষুদ্র কৃষকদের বলা হত ? 


ক) ক্রীতদাস 


খ) ভিলেইন 


গ) ব্যরন


ঘ) ডিউক 



উত্তর : খ) ভিলেইন


১৯। সার্ফ বলতে কাদের বোঝাত ? 


ক) ভূমিদাস 


খ) সামন্ত 


গ) নাইট 


ঘ) জমিদার 



উত্তর : ক) ভূমিদাস


২০। মধ্যযুগে ইউরোপের সামন্ততান্ত্রিক পিরামিডের সর্বনিম্নস্তরের অগণিত দরিদ্র কৃষকদের বলা হত ? 


ক) সার্ফ 


খ) ভ্যাসাল 


গ) ডেমিন


ঘ) নাইট 



উত্তর : খ) ভ্যাসাল




২১। ‘কর্ভি’ ছিল ?


ক) বেগার শ্রম 


খ) সম্পত্তি কর 


গ) ধর্মকর


ঘ) উৎপাদন কর



উত্তর : ক) বেগার শ্রম


২২। ভূস্বামী ও চার্চের জমিতে বাধ্যতামূলক বেগার শ্রমকে বলে ? 


ক) করভি


খ) ডিমিন 


গ) ভিলেন 


ঘ) টেনান্ট



উত্তর : ক) করভি


২৩। দুজন সামন্তপ্রভুর মধ্যে বিনোদনমূলক তলোয়ার যুদ্ধকে বলা হত ? 


ক) টুর্নামেন্ট


খ) ফাইট


গ) ডুয়েল 


ঘ) গেম 



উত্তর : গ) ডুয়েল 


২৪। ‘ম্যানর’ কথাটির অর্থ হল ? 


ক) দেশ 


খ) খামার 


গ) রাজ্য 


ঘ) জমি 



উত্তর : খ) খামার 


২৫। ম্যানর ব্যবস্থার আর এক নাম ছিল ? 


ক) সামন্ত ব্যাবস্থা


খ) গ্রামীণ ব্যাবস্থা


গ) সিনোরিয় ব্যাবস্থা


ঘ) ইনভেস্টিচার ব্যাবস্থা



উত্তর : গ) সিনোরিয় ব্যাবস্থা




২৬। সামন্ততন্ত্রে বীর যোদ্ধাদের বলা হত ? 


ক) নাইট 


খ) শিভালরি


গ) ভ্যাসাল 


ঘ) সামন্ত প্রভু 



উত্তর : ক) নাইট


২৭। ইক্তা ব্যাবস্থাকে বংশাক্রমিক করেন ? 


ক) ইলতুৎমিস 


খ) বলবন 


গ) মহম্মদ বিন তুঘলক 


ঘ) ফিরোজ শাহ তুঘলক 



উত্তর : ঘ) ফিরোজ শাহ তুঘলক


২৮। গিল্ড ব্যাবস্থা সর্বপ্রথম কোন দেশে গড়ে উঠেছিল ? 


ক) জার্মানি 


খ) ফ্রান্স 


গ) ইটালী 


ঘ) ইংল্যান্ড 



উত্তর : ঘ) ইংল্যান্ড 


২৯। ইউরোপে কারিগরদের পৃথক গিল্ড সর্বপ্রথম গড়ে ওঠে ? 


ক) ফ্রান্সে 


খ) রাশিয়ায় 


গ) ইটালিতে 


ঘ) চিনে 



উত্তর : গ) ইটালিতে


৩০। ‘শাশ্বত নগরী’ নামে পরিচিত ছিল যে নগরীটি ? 


ক) প্যারিস 


খ) রোম 


গ) লন্ডন 


ঘ) ভারত 



উত্তর : খ) রোম




৩১। প্রাচীন ভারতে কখন দ্বিতীয় নগরায়ন শুরু হয়েছিল ? 


ক) খ্রি. পূ. প্রথম শতকে 


খ) খ্রি. পূ. তৃতীয় শতকে 


গ) খ্রি. পূ. ষষ্ট শতকে 


ঘ) খ্রিস্টীয় ষষ্ট শতকে 



উত্তর : গ) খ্রি. পূ. ষষ্ট শতকে


৩২। হরপ্পা সভ্যতার যুগের সামুদ্রিক বন্দরটি আবিষ্কৃত হয় ? 


ক) আলমগীরপুরে


খ) ধোলাভিয়ার


গ) লোথালে


ঘ) কালিবঙ্গানে



উত্তর : গ) লোথালে


৩৩। বৈদিক যুগের অনার্য ব্যাবসায়ীরা কি নামে পরিচিত ছিল ? 


ক) ব্রাত্য 


খ) নিষাদ 


গ) পনি 


ঘ) শ্রেষ্টি



উত্তর : গ) পনি


৩৪। সুলতানী যুগে অর্থনীতির মুল ভিত্তি ছিল ? 


ক) কৃষি ব্যাবস্থা 


খ) শিল্প 


গ) ব্যাবসা বাণিজ্য


ঘ) এগুলির কোনোটিই নয় 



উত্তর : ক) কৃষি ব্যাবস্থা


৩৫। চিন - রোমে বাণিজ্য কোন পথের মুখ্য ভূমিকা ছিল ? 


ক) জলপথ 


খ) স্থলপথ


গ) রেশমপথ


ঘ) আকাশপথ



উত্তর : গ) রেশমপথ







অর্থশাস্ত্রে রাজার ক্ষমতা , গুণাবলি এবং কার্যাবলি সম্পর্কে কী বলা হয়েছে ?

একাদশ শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নোত্তর xi class 11 history Question answer অর্থশাস্ত্রে রাজার ক্ষমতা গুণাবলি এবং কার্যাবলি সম্পর্কে কী বলা হয়েছে arthoshastre rajar khomota gunaboli abong karjaboli somporke ki bola hoyeche


উত্তর :  কৌটিল্য তাঁর গ্রন্থে রাজাকে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে তুলে ধরেছেন । তার মতে , রাজাই হলেন রাষ্ট্রের প্রধান অঙ্গ এবং পার্থিব জগতে চূড়ান্ত সার্বভৌম কর্তৃত্বের অধিকারী । রাজার কর্তৃত্বকে উপেক্ষা বা অমান্য করার ক্ষমতা কারও নেই । তিনিই রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু এবং সামরিক ও অসামরিক প্রশাসন , বিচারব্যবস্থা সবক্ষেত্রেই রাজার একাধিপত্য বিরাজমান । 

[        ] অবশ্য অর্থশাস্ত্রে রাজার ক্ষমতার ওপর কিছু নিয়ন্ত্রণ আরােপের কথাও বলা হয়েছে । বলা হয়েছে যে, রাজা রাষ্ট্র নয় , রাষ্ট্রের অংশ মাত্র । তাই শাসনকার্য পরিচালনায় তিনি অন্যের সাহায্য গ্রহণ করবেন । অবশ্য রাজা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে পরামর্শ করলেও তাদের পরামর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য নন । 

[         ] রাজার গুণাবলি : রাজকীয় কর্তব্য ও দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার জন্য রাজার কিছু গুণাবলির কথা অর্থশাস্ত্রে বলা হয়েছে । এগুলি হল – 

i) উত্থান গুণ : অর্থশাস্ত্র মতে , উত্থান গুণ হল রাজার সেই গুণ , যার দ্বারা রাজা সর্বদা উৎসাহ ও উদ্যম সহকারে কাজে নিযুক্ত থাকবেন । 

ii) অভিগামিক গুণ : অভিগামিক গুণ হল ধর্মপরায়ণতা , ন্যায়পরায়ণতা , নম্রতা ,বিচক্ষণতা , শত্রু দমনে দক্ষতা প্রভৃতি । 

iii) প্রজ্ঞা গুণ : অর্থশাস্ত্রে প্রজ্ঞা গুণ বলতে যেসব গুণের কথা বলা হয়েছে , সেগুলি হল — প্রখর স্মৃতিশক্তি, দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা , যে কোনাে সমস্যার সঠিক বিশ্লেষণ করা প্রভৃতি । 

iv) ব্যক্তিগত গুণ : তীক্ষ্ণ মেধা , বাকপটুতা , সংকটে সংযম ও স্থিরতা । প্রভৃতি হল ব্যক্তিগত গুণ । 

[         ]  রাজার কার্যাবলি : কৌটিল্য তাঁর ‘অর্থশাস্ত্র’ গ্রন্থে রাজার অবশ্য পালনীয় বিভিন্ন কার্যাবলির উল্লেখ করেছেন । যেমন— 

i) প্রজাকল্যাণ : অর্থশাস্ত্রে বলা হয়েছে যে ,রাজা দেশে সুশাসন ও প্রজাকল্যাণমূলক শাসনব্যবস্থা প্রণয়ন করবেন । তিনি প্রজাদের শিক্ষা , যােগ্যতা ও বুদ্ধির বিকাশে যত্নবান হবেন । তিনি বলেছেন , “ প্রজাসুখে সুখং রাজ্ঞঃ প্রজানাং চ হিতে হিতম ।”



ii) নিয়ােগ : রাজকার্য সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে রাজা বিভিন্ন মন্ত্রী, অমাত্য ও অন্যান্য কর্মচারী নিয়ােগ করবেন । তিনি যােগ্যতার বিচার করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরােহিতকে নিয়ােগ করবেন । আবার দেশের ভেতরে ও বাইরে যাবতীয় ঘটনার খবর সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রাজা বহু সংখ্যক গুপ্তচর নিয়ােগ করবেন । 

iii) রাজস্ব আদায় : রাজার প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি হল রাজকোশ । আর এই রাজকোশ সর্বদা পূর্ণ রাখতে রাজা রাজস্ব সংগ্রহ ও রাজস্ব বৃদ্ধির বিষয়ে নজর দেবেন । 

iv) সামরিক অভিযান : রাজার নিজ রাষ্ট্র যে কোনাে মুহূর্তে শত্রু রাষ্ট্র দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে । তাই শত্রু রাষ্ট্রের আক্রমণ প্রতিহত করতে শত্রুর বিরুদ্ধে রাজাকে সামরিক অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব নিতে হবে । 

v) বিচারের দায়িত্ব : অর্থশাস্ত্রে রাজাকে বিচার বিভাগের প্রধানের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে । তাই রাজার একটি অন্যতম কাজ হল বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে নিজ দায়িত্ব পালন করা । 

উপসংহার : কৌটিল্য রাজার ক্ষমতা , কার্যাবলি ও গুণাবলি সম্পর্কে যেসব পরামর্শ দিয়ে গেছেন আধুনিক যুগেও তার গ্রহণযােগ্যতা কমেনি । বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থাতেও এই প্রাচীন পণ্ডিতের বক্তব্যগুলি শাসকের কার বেশ প্রাসঙ্গিক ।




মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০২২

গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের কৃতিত্ব আলােচনা করাে ।

একাদশ শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নোত্তর xi class 11 history Question answer গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের কৃতিত্ব আলােচনা করাে gupto samrat somudrogupter krititto alochona koro

উত্তর : সমুদ্রগুপ্ত অসংখ্য সফল অভিযান পরিচালনার মধ্য দিয়ে সারা ভারতব্যাপী সাম্রাজ্য গড়ে তােলেন । ঐতিহাসিক এইচ . সি, রায়চৌধুরীর মতে , তাঁর রাজ্যজয়ের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতের রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠাকরা । 

i) উত্তর ভারত জয় : সমুদ্রগুপ্তের সভাকবি হরিষেণ রচিত এলাহাবাদ প্রশস্তি থেকে জানা যায় যে, সমুদ্রগুপ্ত উত্তর ভারতের ৯ জন রাজাকে পরাজিত করে তাদের রাজ্যগুলি নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন ।   এই ৯ জন রাজা হলেন – (১) রুদ্রদেব ,(২) মতিল , (৩) নাগদত্ত , (৪) চন্দ্রবর্মন, (৫) গণপতিনাগ , (৬) অচ্যুৎ , (৭) নাগসেন , (৮) নন্দিন ও (৯) বলবর্মন । এদের রাজ্যগুলিকে নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করার পর সমুদ্রগুপ্ত সেখানে প্রত্যক্ষ শাসন চালু করেন । 


ii) আটবিক রাজ্য জয় : উত্তর ভারত জয়ের পর সমুদ্রগুপ্ত দক্ষিণ দিকের অরণ্যসংকুল আটবিক রাজ্যগুলি জয় করেন । এরাণ শিলালিপি থেকে তার আটবিক রাজ্যজয়ের কথা জানা যায় । এই রাজ্য গুলি জয়ের মধ্য দিয়ে সমুদ্রগুপ্ত দাক্ষিণাত্যে তাঁর অভিযানের পথ প্রশস্ত করেন ।

iii) দক্ষিণ ভারত জয় : দক্ষিণ ভারতে অভিযান চালিয়ে সমুদ্রগুপ্ত সেখানকার ১২ জন রাজাকে পরাজিত করেন । এরা হলেন (১) বিষ্ণুগােপ  (২) হস্তীবৰ্মন (৩) নীলরাজ (৪) উগ্রসেন  (৫) ধনঞ্জয়  (৬) কুবের  (৭) স্বামীদত্ত (৮) দমন (৯) মহেন্দ্রগিরি (১০) মহেন্দ্র (১১) ব্যাঘ্ররাজ এবং (১২) মন্তরাজ । এক্ষেত্রে তিনি বিজিত রাজ্যগুলিকে প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে না এনে পরাজিত রাজাদের বশ্যতা ও করপ্রদানের প্রতিশ্রুতি আদায় করে তা তাদের রাজ্যগুলি ফিরিয়ে দেন । এটি ‘গ্রহণ পরিমােক্ষ’ নীতি নামে পরিচিত ।

 iv) সীমান্তবর্তী রাজ্যজয় : সমুদ্রগুপ্ত সীমান্তবর্তী ৫ টি রাজ্য জয় করেন । বিজিত এই ৫ টি রাজ্য হল -
 
 (১) নেপাল 
 
(২) কতৃপুর ( পাঞ্জাবের জলন্ধর জেলা )

(৩) সমতট ( দক্ষিণ ও পূর্ব বঙ্গ ) 

(৪) দাভক ( আসামের নওগাঁ ) ও 

(৫) কামরূপ ( উত্তর আসাম ) 
 

v) অন্যান্য রাজ্যজয় : এ ছাড়া সমুদ্রগুপ্ত আরও ৯ টি প্রজাতির রাজ্যের বশ্যতা আদায় করেন । তার সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার কৃতিত্বের জন্য ঐতিহাসিক ড . ভিনসেন্ট স্মিথ তাকে ‘ভারতের নেপােলিয়ন’ বলে অভিহিত করেছেন । 

[        ] বহির্ভারতে প্রভাব : সমুদ্রগুপ্ত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে মিত্ৰতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তােলেন । 

[i] পশ্চিম পাঞ্জাব ও আফগানিস্তানের কুষাণ বংশের রাজা দৈবপুত্র শাহী শাহানুশাহি পারসিক আক্রমণ  প্রতিরােধ করার জন্য সমুদ্রগুপ্তের সহায়তা চান । 

[ii] সিংহলের বার মেঘবর্ণ সমুদ্রগুপ্তের সভায় দূত পাঠান । 

[iii] জাভা , মালয় , সুমাত্রা, কম্বােডিয়া প্রভৃতি দেশের ওপর সমুদ্রগুপ্ত নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করেন । 

[iv] উত্তর পশ্চিম সীমান্তের কুষাণ ও শক শাসকরাও সমুদ্রগুপ্তের প্রাধান্য স্বীকার করে নেন । 

[         ] সুশাসন প্রতিষ্ঠা : কেবলমাত্র সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেই নয়, একজন সুশাসক হিসেবেও সমুদ্রগুপ্ত অসামান্য কৃতিত্বের পরিচয় দেন 

[ i ] তিনি বৈদেশিক প্রভাবমুক্ত এক সম্পূর্ণ ভারতীয় শাসনব্যবস্থা গড়ে তােলেন । শাসনকাজের সুবিধার জন্য সমুদ্রগুপ্ত তাঁর সাম্রাজাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেন । এই বিভাগগুলিকে বলা হতাে ‘দেশ‘ ও ‘ভুক্তি' । 

[ ii ] তিনি ভাগকর বা ভূমিকর , ভােগকর , চুঙ্গিকর , ভূতগ্রতায় বা আবগারি শুল্ক প্রভৃতি আদায় করতেন । ভাগ বা ভূমিকর ছিল উৎপন্ন ফসলের ১/৬ অংশ । সমুদ্রগুপ্ত তার শাসনব্যবস্থাকে জনকল্যাণের আদর্শের ওপর স্থাপন করেছিলেন । তাই ড , এইচ , সি ,রায়চৌধুরী বলেছেন , “ অশােক যেমন ধর্মপ্রচারের দ্বারা খ্যাতি অর্জন করেছেন । সমুদ্রগুপ্ত তেমনই সাম্রাজ্য স্থাপন ও সুশাসন প্রবর্তন করে স্মরণীয় হয়ে আছেন ।” 

[         ] বহুমুখী প্রতিভা : সমুদ্রগুপ্ত ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী । তিনি ছিলেন কবি ও গায়ক । সমকালীন মুদ্রায় তার বীণাবাদনরত প্রতিকৃতি থেকে তার সংগীতপ্রতিভার পরিচয় মেলে । তিনি কাব্য ও সাহিত্যচর্চার জন্য ‘কবিরাজ’ উপাধি লাভ করেন । হরিষেণ , অসঙ্গ , বসুন্ধু প্রমুখ পণ্ডিত তার রাজদরবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । তাঁর , আমলে বিভিন্ন ধরনের স্থাপত্যশিল্পের বিকাশ ঘটে । 



[        ] ধর্মসহিষ্ণুতা : সমুদ্রগুপ্ত তাঁর সাম্রাজ্যে ধর্মসহিষ্ণুতার বাতাবরণ তৈরি করেন । তিনি নিজে ব্রাত্মণ্যধর্মের অনুরাগী হলেও অন্য ধর্মের প্রতি তার যথেষ্ট শ্রদ্ধা ছিল । তাই তিনি সিংহলরাজ মেঘবর্ণকে বুদ্ধগয়ায় বৌদ্ধমঠ নির্মাণের অনুমতি দেন এবং বসুবন্ধুর মতাে বৌদ্ধ পণ্ডিতকে উচ্চ রাজপদে বসান । 

উপসংহার : সমুদ্রগুপ্তের মতাে অসাধারণ রাজনৈতিক প্রতিভাসম্পন্ন , প্রশাসনিক ক্ষেত্রে দক্ষ, সামরিক কৃতিত্বে পারদর্শী এবং শিল্পও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপােষক রাজা প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে বিরল । ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে , ভারতের ইতিহাসে সমুদ্রগুপ্ত এক নতুন যুগের উদবােধন করেছিলেন । ইতিহাসবিদ জে . বি . গােখেল তাকে যথার্থই ‘প্রাচীন ভারতের সুবর্ণ যুগের অগ্রদূত’ বলে অভিহিত করেছেন ।






সোমবার, ৪ জুলাই, ২০২২

রােমান ও গুপ্ত সাম্রাজ্যের বিস্তারনীতির তুলনামূলক আলোচনা করো ।

একাদশ শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নোত্তর xi class 11 history Question answer রােমান ও গুপ্ত সাম্রাজ্যের বিস্তারনীতির তুলনামূলক আলোচনা করো roman o gupto samraajjer bistarnitir tulonamulok alochona koro


উত্তর : রােমান কিংবদন্তি অনুসারে রােমুলাস ও রেমাস নামে দুই ভাই আনুমানিক ৭৫৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে টাইবার নদীর বাম তীরে রােম নগরীর প্রতিষ্ঠা করেন । এখানকার প্রথম রাজা হন রােমুলাস । রােমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের আমলে রােমান সাম্রাজ্যবাদের সূচনা ঘটে এবং পরে অগাস্টাস সিজারের আমলে তার চূড়ান্ত প্রসার শুরু হয় । 

জুলিয়াস সিজারের আধিপত্য : রােমান সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণে সর্বপ্রথম সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন সম্রাট জুলিয়াস সিজার । 

i) প্রথম দিকের আধিপত্য : জুলিয়াস সিজার নিজেকে এম্পারের বা একচ্ছত্র অধিপতি ঘােষণা করার পর সাম্রাজ্য বিস্তারে মন দেন । তিনি ফ্রান্সের বিভিন্ন উপজাতি গুলিকে পরাজিত করে সেখানে রােমের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন । এর ফলে রােমান সাম্রাজ্যের উত্তর পশ্চিম সীমান্ত সুরক্ষিত হয় । 

ii) মিশর দখল : নীলনদের যুদ্ধে (৪৭ খ্রি.পূ.) মিশরের রাজা ত্রয়ােদশ টলেমিকে পরাজিত করে জুলিয়াস সিজার মিশর দখল করেন । 

iii) এশিয়া মাইনরে আধিপত্য : তিনি রাজা ফারনাকেসকে পরাজিত করে এশিয়া মাইনরে রােমের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন । এভাবে তার আমলে রােমান সাম্রাজ্যের যথেষ্ট প্রসার ঘটে । তার এই অনায়াস সাফল্য সম্পর্কে তিনি নিজেই বলেন— “ আমি এলাম, আমি দেখলাম , আমি জয় করলাম । ”
[       ] অগাস্টাস সিজারের আমল : পরবর্তী রােমান সম্রাট অগাস্টাল সিজারের আমলে রােমান সাম্রাজ্যের সীমানা ইউরােপের গণ্ডি অতিক্রম করে । 

i) পূর্ব পশ্চিমে সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি : সাম্রাজ্যের নৈরাজ্য দূর করার পর অগাস্টাস সিজার সাম্রাজ্যবাদী নীতি গ্রহণ করেন । তার আমলে রােমান সাম্রাজ্যের সীমানা পশ্চিমে ফ্রান্স ও স্পেন থেকে পূর্বে ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত বিস্তৃত হয় । 

ii) উত্তর দক্ষিণে সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি : তার আমলে সাম্রাজ্যের সীমানা উত্তর দক্ষিণেও বিস্তার লাভ করে । এই সময় রােমান সাম্রাজ্যের সীমানা উত্তরে রাইন ও দানিয়ুব নদী থেকে দক্ষিণে সাহারা মরুভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত হয় । 

[        ]  গুপ্ত সম্রাটগণ সক্রিয় সাম্রাজ্যবাদী নীতি গ্রহণ করে সাম্রাজ্যের যথেষ্ট বিস্তার ঘটান । এই সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক অগ্রগতিতে সর্বাধিক কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন প্রথম চন্দ্রগুপ্ত, সমুদ্রগুপ্ত এবং দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত । 

১) প্রথম চন্দ্রগুপ্তের আমল : প্রথম চন্দ্রগুপ্ত লিচ্ছবি কন্যা কুমারদেবীকে বিবাহ করে গােটা লিচ্ছবি রাজ্যকে নিজ অধিকারে আনেন । ঐতিহাসিক ড . ভিনসেন্ট স্মিথ -এর মতে , এই বিবাহের ফলে চন্দ্রগুপ্ত মগধ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন । তাঁর আমলে উত্তরে বেনারস থেকে দক্ষিণে মধ্যপ্রদেশের কিছু অংশ এবং পশ্চিমে বকাটক রাজ্যের সীমানা থেকে পূর্বে সমতট বাদে বাংলার বাকি অংশ তার সাম্রাজ্যভুক্ত হয় ।


২) সমুদ্রগুপ্তের আমল : গুপ্তবংশের শ্রেষ্ঠ রাজা সমুদ্রগুপ্তের আমলে গুপ্ত সাম্রাজ্য ভারতের উত্তর ও দক্ষিণের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রসারিত হয় । 

i) উত্তর ও দক্ষিণ ভারত : সমুদ্রগুপ্ত উত্তর ভারতের ৯ জন রাজাকে পরাজিত করে তাদের রাজ্য দখল করেন । দক্ষিণ ভারতেও ১২ জন রাজাকে পরাস্ত করে তাদের রাজ্য দখল করেন । তবে এক্ষেত্রে তিনি ‘গ্রহণ পরিমােক্ষ’ নীতি গ্রহণ করে পরাজিত রাজাদের রাজ্যগুলি ফিরিয়ে দিয়ে সেখানে পরােক্ষ শাসন চালু করেন । 

ii) অন্যান্য রাজ্য : তিনি সীমান্তবর্তী পাঁচটি রাজ্য জয় করেন এবং আরও ৯ টি প্রজাতান্ত্রিক রাজ্যের বশ্যতা আদায় করেন । এইভাবে সমুদ্রগুপ্ত সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন । তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তারের কৃতিত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে ড. স্মিথ তাঁকে ‘ভারতের নেপোলিয়ন’ বলে অভিহিত করেছেন ।



iii) দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের আমল : পরবর্তী গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত মালব, গুজরাট ও সৌড়াস্ট্রে রাজত্বকারী বিদেশী শক রাজাদের পরাজিত ও বিতারিত করে শক রাজ্য নিজে সাম্রাজ্যভুক্ত করেন । পণ্ডিতদের মতে , তিনি বাহ্লিক দেশ জয় করেছিলেন । 


উপসংহার : রোমান ও গুপ্ত সাম্রাজ্যের বিস্তারনীতির তুলনামূলক আলোচনায় দেখা যায় যে , রোমান সাম্রাজ্যের বিস্তারের ব্যাপ্তি ছিল অনেক বেশি যা ইউরোপের ভূখণ্ডকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল । অন্যদিকে গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রসার ঘটেছিল তুলনায় কম এবং তা ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল ।