‘যদি সব শ্রেণি শেষ হয়ে যায়’ , / আমি তবু পরের । শ্রেণিতে যাব ।’ — পঙক্তি দুটি ব্যঞ্জনার্থ ব্যাখ্যা করাে ।
উত্তর : আলােচ্য দুটি উদ্ধৃতি প্রখ্যাত মালয়ালম কবি আইয়াপ্পা পানিকরের লেখা ‘শিক্ষার সার্কাস’ কবিতা থেকে গৃহীত ।
[ ] এদেশীয় বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে পরীক্ষা পাসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে । একজন অপরজনকে টপকে ক্লাসের সিড়ির ধাপ ভেঙে ওপরে উঠতে থাকে পরীক্ষায় পাস করে । প্রথম জন প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলে , দ্বিতীয় জন দ্বিতীয় শ্রেণি পার হয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে যায় । এভাবে পরীক্ষায় পাসের খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভালােই জমে ওঠে । তাতেই ‘এক , দুই , তিন ....চার’ গণনা চলে ক্লাস অতিক্রমের । চতুর্থ শ্রেণিতে এসে প্রাথমিকের পর্যায় শেষ হয়ে যায় । ধাপ -ভাঙা অঙ্কের মতাে শিক্ষার্থী পরের ধাপে ওঠার জন্য মনের দৃঢ়তা নিয়ে বলে , ‘ যদি সব শ্রেণি শেষ হয়ে যায়,/ আমি তবু পরের শ্রেণিতে যাব । প্রাথমিকের পর মাধ্যমিক , উচ্চমাধ্যমিক , কলেজীয় শিক্ষার কত স্তর কত শ্রেণি ! পরীক্ষায় পাসের পর পাস করতে করতে শিক্ষার্থীর চলমানতা অব্যাহত থাকে । কবি এভাবেই প্রশ্নের দুটি উদ্ধৃতির অর্থগত পরম্পরা চমৎকারভাবে রক্ষা করেছেন ।
প্রশ্নের শেষ উদ্ধৃতির পরেই কবি বলেছেন
‘ সব শিক্ষা একটি সার্কাস
যার সাহায্যে আমরা পরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হই ।’
[ ] অর্থাৎ , কবি সব শিক্ষাকে সার্কাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন । শিক্ষা হল ক্রীড়াচক্র । সার্কাসে চক্রাকার ক্রীড়াঙ্গনে ঘুরে ঘুরে খেলা দেখানাে হয় । ওভাবেই পরীক্ষার মাধ্যমে শ্রেণির পর শ্রেণি টপকে উত্তীর্ণ হয় শিক্ষার্থীরা । প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনােভাব নিয়ে ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার যেন খেলা চলতে থাকে । প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক , মাধ্যমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক এভাবে বিভিন্ন শিক্ষাস্তর অতিক্রম করে বিদ্যার্থীরা । শিক্ষাস্তর অতিক্রম করাই হল তাদের ধ্যান - জ্ঞান । জ্ঞানার্জন হল কিনা তা তাদের লক্ষ্য নয় ।
কোন মন্তব্য নেই