দণ্ডীকৃত মঙ্গলাচরণটির অর্থ বিবৃত করাে
উত্তর : কবি দণ্ডী বিরচিত ‘ দশকুমারচরিতম্ ’ গদ্যাংশে গ্রন্থারম্ভের পূর্বে গ্রন্থের বিঘ্নবিনাশ কামনায় সংস্কৃত কবিগণ একটি স্তুতিমূলক শ্লোকের অবতারণা করে থাকেন । একে বলে নান্দী ।
এই নান্দী চারপ্রকার - আশীঃ , নমস্ক্রিয়া, মাঙ্গলিকী এবং পত্রাবলি । দণ্ডী তাঁর কাব্যে ‘আশীঃ নান্দীটি গ্রহণ করেছেন । তিনি পাঠক -পাঠিকাবৃন্দকে আশীর্বাদ জানিয়েছেন যে , বামনরূপী নারায়ণের নাভিদেশ থেকে নির্গত তৃতীয় চরণটি যেন সকলকে মঙ্গল দান করেন ।
[ ] বামনাবতারের তৃতীয় চরণটি কেমন তাই এখানে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে । জগৎকে যদি একটি ছত্ররূপে কল্পনা করা হয় তাহলে সেই পদ ওই ছত্রের ধারণদণ্ড । পদ্মযােনি ব্রহ্মা যে পদ্মের ওপর সমাসীন , ওই পদ সেই পদ্মের নালদণ্ড তথা অবলম্বন । পৃথিবীকে একটি নৌকারূপে কল্পনা করলে নারায়ণের ওই তৃতীয় পদ তার মাস্তুল যা নৌকাকে ঠিক পথে পরিচালিত করে । স্বর্গগঙ্গা মন্দাকিনীকে একটি পতাকারূপে কল্পনা করলে সেই পদ পতাকার ধ্বজযষ্টি তথা অবলম্বন । ওই পদ নক্ষত্রচক্রের মধ্যসংলগ্ন দারু অর্থাৎ চক্রের অর (spoke ) যা চক্রকে সচল রাখে । বলিযজ্ঞে নারায়ণ যে ত্রিভুবন পরিব্যাপ্ত করেছিলেন তাঁর সেই ত্রিভুবন জয়ের ওটি জয়স্তম্ভ । অতএব বিশ্বব্রহ্লাণ্ডে যা কিছু আছে , বামনদেবের ওই তৃতীয় চরণটি সবকিছুরই অবলম্বন । তাঁর ওই চরণই হল দেবহিংসক অসুরগণের কাছে কালদণ্ডস্বরূপ অর্থাৎ মূর্তিমান মৃত্যু । বামনাবতারের সেই তৃতীয় চরণ জগৎকে তথা জগৎবাসীকে মঙ্গল প্রদান করুক — এটিই কবির প্রার্থনা ।
কোন মন্তব্য নেই